Ajker Patrika

ফেব্রুয়ারির বেতন দেয়নি ১২২ কারখানা, বোনাস ৭২৩টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক। ফাইল ছবি
তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক। ফাইল ছবি

তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ২ হাজার ৭৬৮টি কারখানা শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারির বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফেব্রুয়ারির বেতন দেয়নি ১২২টি (৪.২২ শতাংশ) কারখানা। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঈদের বোনাস দেয়নি ৭২৩টি (১৯ শতাংশ) কারখানা। জানুয়ারি বা তারও আগের বেতন বকেয়া রয়েছে ৩০টি কারখানায়।

অর্থাৎ ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নির্বিঘ্ন করতে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ সভার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। শিল্প পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ এবং বেপজার অধীন মোট ২ হাজার ৮৯০টি পোশাক কারখানা বর্তমানে চালু রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ফেব্রুয়ারির বেতন পরিশোধ করেছে ২ হাজার ৭৬৮টি প্রতিষ্ঠান।

মার্চ মাসের ৪২২টি (২১ শতাংশ) কারখানা শ্রমিকদের অর্ধেক বেতন অগ্রিম পরিশোধ করেছে। শ্রমিকদের বেতন পরবর্তী মাসের প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধের কথা থাকলেও এখনো কিছু কারখানা তা মানতে পারেনি। শ্রম আইনে এ বিধি রয়েছে।

বর্তমানে বিজিএমইএর সদস্য সচল কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৯৭টি (৯৫ শতাংশ) কারখানা শ্রমিকের ঈদ বোনাস দিয়েছে। মার্চ মাসের অর্ধেক বেতন দিয়েছে ১ হাজার ৭৫৩টি (৮৩.২০ শতাংশ) কারখানা। ১০টি কারখানা এখনো ফেব্রুয়ারির বেতন দেয়নি। তবে এগুলোর বেতন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সচল সদস্য কারখানা ৬১৩ টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কারখানা ঈদ বোনাস দিয়েছে। চলতি মাসের অর্ধেক বেতন প্রায় ৫০ শতাংশ কারখানা দিয়েছে। দুটি কারখানা এখনো ফেব্রুয়ারির বেতন দেয়নি।

ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবিতে গতকালও শ্রম ভবনের সামনে আন্দোলন করেন বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা। অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট, টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের শতাধিক শ্রমিক এই আন্দোলনে অংশ নেন।

শিল্প পুলিশের গতকাল পর্যন্ত পরিদর্শন অনুযায়ী, ১১টি কারখানায় সমস্যা হতে পারে।

শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গতকাল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, যার যা পাওনা পেয়ে যাবেন। বাকিরা যারা না পান, আজকে বা কাল সকালে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করব। প্রায় সব সমস্যাই সমাধান হয়ে গেছে।’

শ্রম মন্ত্রণালয় বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানায়, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য রোয়ার ফ্যাশনের অনুকূলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিলের আপৎকালীন হিসাব থেকে ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে এ উদ্যোগ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রসারিত করা যাবে না।

শ্রম উপদেষ্টা জানান, ২৫ মার্চের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে টিএনজেড গ্রুপের অ্যাপারেলস ইকো লিমিটেডের গাড়ি বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। এটা এর আগে বাংলাদেশে হয়েছে কি না, তাঁর জানা নেই। মালিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ সহায়তা বাবদ ১১ কোটি টাকা ছাড় করেছে বলে জানান তিনি।

উপদেষ্টা জানান, স্টাইলক্রাফট অ্যান্ড ইয়াংওয়ান বিডি লিমিটেডের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে সভায় পাওনা পরিশোধের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে।

শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না করায় গত মঙ্গলবার বন্ধ থাকা ১২টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এগুলো হলো রোর ফ্যাশন, স্টাইলক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান্স, ডার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান, মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান, টিএনজেড গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে শুধু স্টাইলক্রাফট চালু রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত