Ajker Patrika

তারল্যসংকট প্রকট, ধারে চলছে ব্যাংক

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ১৩: ৫০
তারল্যসংকট প্রকট, ধারে চলছে ব্যাংক

রেকর্ড খেলাপি ঋণসহ নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে দেশের ব্যাংক খাত। এসব দুর্বলতা দেখে ব্যাংকে টাকা রাখার মতো আস্থা পাচ্ছেন না অনেক গ্রাহক। অনেকেই আবার তুলে নিচ্ছেন আমানতের টাকা। এ অবস্থায় দৈনন্দিন ব্যাংকিংসেবা ও স্বাভাবিক লেনদেন চালু রাখতে ব্যাপক হারে ধার করতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর নেওয়া ঋণ বা ধারের পরিমাণ গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে এসে ধারের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৭১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকগুলোর ধার বেড়েছে ৬ হাজার ১১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন গভর্নর নিয়োগের পরেই ব্যাংক খাতে ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত হয়েছে। এ খবর গণমাধ্যমে ঘোষণার পরেই আমানত তুলে নিতে শুরু করে গ্রাহকেরা, যার ধাক্কা লাগে পুরো ব্যাংক খাতে। পরে অনেক ব্যাংক সেই চাপ সামলাতে পারলেও ইসলামি ধারার কয়েকটি ব্যাংকসহ প্রায় দুই ডজন ব্যাংক বিপদে পড়ে। একটা পর্যায়ে কয়েকটি ব্যাংকের চলতি হিসাব নেতিবাচক হয়।

এসব ব্যাংকের আস্থা ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু ব্যাংক অনিয়ম এবং উচ্চ খেলাপিতে ডুবতে বসেছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চাপানো একীভূতকরণ এবং ডলারের মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এমন পরিস্থিতিতে তাদের একমাত্র ভরসা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হাত পাতা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে ধার দেওয়ার এ চাপ পড়ছে সাধারণের ওপর। 

এদিকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। আগের প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসেই ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।

এ বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবে ব্যাংক খাতে অনিয়ম এবং লুটপাট দৃশ্যমান। নামে-বেনামে ঋণ ছাড়ের ফলে সেই টাকা আর ফিরছে না। এতে খেলাপির রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই নিয়ন্ত্রিত। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সব সহযোগিতা দিয়ে ব্যাংক খাতকে বাঁচিয়ে রাখবে এটাই স্বাভাবিক। 

পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, সরকার নিজেই এখন ঋণের দুষ্টচক্রে আটকে গেছে। এ চক্র থেকে বের হওয়া অনেক কঠিন। বাজেট ঘাটতি মেটাতে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিচ্ছে। এমনিতেই বাণিজ্যিক ব্যাংক টাকা ধার করে চলছে। আবার সরকার নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ কমবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

তখন অন্য একটা সংগঠন করতাম, এখন বলতে লজ্জা হয়: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কের অবনতিতে দায়ী মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা: কংগ্রেস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত