পাট রপ্তানি কমে অর্ধেক

শামিমুজ্জামান, খুলনা
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৫
Thumbnail image

এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কাঙ্ক্ষিত পাট উৎপাদন হয়নি। এর প্রভাব পড়েছে রপ্তানিতে।

মোংলা বন্দরে খুলনার দৌলতপুরের কাঁচা পাট রপ্তানি নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে। ফলে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা পাট রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না।

পাট অধিদপ্তরের খুলনার মুখ্য পরিদর্শক সরোজিত সরকার জানান, গেল বছরের আম্ফানের ধাক্কায় দক্ষিণাঞ্চলের পাটে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। ফরিদপুর, রংপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনার পাইকগাছা ও ডুমুরিয়ায় কাঙ্ক্ষিত পাট উৎপাদন হয়নি। গত পাঁচ বছরে কৃষক পাটের ন্যায্যমূল্য পাননি। প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছিল আড়াই হাজার টাকায়। ফলে তাঁরা পাটের চাষ কমিয়ে দেন।

এই মৌসুমে খুলনায় ৩৩ হাজার ৭৫০ বেল, বাগেরহাটে ২২ হাজার ৭২৫ বেল এবং সাতক্ষীরা জেলায় ২ লাখ ১০ হাজার বেল পাট উৎপাদন হয়। উৎপাদন কমের প্রভাব পড়েছে রপ্তানিতে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৮ কোটি ৪৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা মূল্যের ৮১ হাজার ২৫৬ বেল পাট রপ্তানি হয়। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে ১৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের ১ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ বেল পাট রপ্তানি হয়।

দৌলতপুরের পাট রপ্তানিকারক শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, আম্ফানের কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় সেখানে পাট রপ্তানি কমেছে। অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাটকলগুলো বাংলাদেশের কাঁচা পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারত গোল্ডেন ফাইবারস কোয়ালিটির পাট ক্রয় করে, যা এশিয়ার মধ্যে শুধু ফরিদপুর অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়। মূলত উৎপাদন কমের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা বলে তাঁর অভিমত।

শেখ শহিদুল আরও বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি কাঁচা পাটের চাহিদা আছে, তবে দেশি বাজারে সংকট থাকায় রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে চললে ভবিষ্যতে এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

পাট রপ্তানিকারক সৈয়দ আলী বলেন, ‘বাজারের অভাবে পণ্য রপ্তানি সম্ভব হয় না। আর পাটের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। চাহিদা আছে, কিন্তু পণ্য না থাকায় রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখতে হবে। তিনি বলেন, পাটচাষিদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ৩০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বেলজিয়াম, পাকিস্তান, চীন ও আইভরি কোস্টে মোংলা বন্দর দিয়ে পাট রপ্তানি করে। সবচেয়ে বেশি পাট রপ্তানি হয়েছে পাকিস্তানে।

খুলনার দৌলতপুরের আকুঞ্জী ব্রাদার্স, রোশনি কবির, এস আর জুট, নামফা ট্রেড ইন্টাঃ, ইয়াসিন ব্রাদার্স, মামুন জুট, রিপন এন্টারপ্রাইজ ও রিফাত এন্টারপ্রাইজ রপ্তানি করছে।

এদিকে গত মে মাসে ঈদের পর খুলনা অঞ্চলের ১৭টি বেসরকারি পাটকল বন্ধ ছিল। তবে জুলাইয়ের পর থেকে সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। পাট উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গেল মৌসুমে প্রতি মন পাট ৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়।

এবারে প্রকারভেদে তা ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যশোর, সাতক্ষীরা ও ফরিদপুর থেকে খুলনার দৌলতপুর মোকামে প্রতিদিনই পাট আসছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত