নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন অব্যাহত রাখা, সুশাসন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অটোমেশন ও সংস্কার এবং সহায়ক বাণিজ্য নীতি সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা উন্নতি ও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ চান তাঁরা।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ দাবি জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, শিল্প খাত অনেক কঠিন সময় পার করছে। সরকার বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছে। কিন্তু যথেষ্ট উন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন না হলে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দেশে আর কোনো বিনিয়োগ হবে না। শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে সমস্যা সমাধানে একটা রোডম্যাপ করতে হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিয়ে শিল্প খাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ করার প্রস্তাব দেন তাঁরা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে অর্থনৈতিক খাতে যে ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৫-১০ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। অন্তর্বর্তী সরকার এগুলো থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ১৫ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি তিন-চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে এবং আরও ক্ষয় থেকে বাংলাদেশ রক্ষা পেয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘গত চার মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ৩০টির মতো বৈঠক করেছি। তাদের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে, তারা দিতে রাজিও হয়েছে। এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল হয়েছে। মূল্যস্ফীতি একটা বড় চ্যালেঞ্জ, রিজার্ভ স্থিতিশীলতা ও সুদের হার সন্তোষজনক পর্যায়ে আনার মাধ্যমে এ অবস্থারও উত্তরণ হবে।’ তিনি বলেন, এনবিআর নিয়ে বেসরকারি খাতের অভিযোগ রয়েছে। এনবিআরের কার্যক্রমে অটোমেশন করার প্রক্রিয়া চলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ট্যাক্স পলিসি ও ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে আলাদা করা হবে, প্রক্রিয়া চলমান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় আবশ্যক এবং বিদ্যমান অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতির জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্য সম্প্রসারণেও নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে কবে নাগাদ গ্র্যাজুয়েশন করা যৌক্তিক হবে, সে বিষয়ে আরও ডায়ালগ প্রয়োজন। কেননা এলডিসি-পরবর্তী সময়ে আমরা বেশ কিছু অগ্রাধিকার হারাব।’ একই পণ্যের একাধিক বাণিজ্য সংগঠন থাকা উচিত নয় জানিয়ে এ সময় তিনি এগুলো একে অপরের সঙ্গে মার্জ করার পরামর্শ দেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী বছরের শুরুতেই নীতি সুদহার ক্রমান্বয়ে কমানোর পাশাপাশি সরকারি ব্যয় হ্রাস, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, পণ্য সরবরাহব্যবস্থায় চাঁদাবাজি রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কেননা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি; আছে জ্বালানি সমস্যা। এতে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়াই কঠিন।’
সম্মেলনে প্যানেল আলোচক ছিলেন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিএবির সভাপতি আব্দুল হাই সরকার, বিটিএমএর শওকত আজিজ রাসেল, ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার, এবিবির সভাপতি সেলিম আর এফ হোসেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির।
আব্দুল মোক্তাদির বলেন, ‘বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে। শিল্পকারখানায় অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট সময়সীমাসহ রোডম্যাপ থাকতে হবে। বিভিন্ন পণ্যের উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ছোট ব্যবসায়ীরা কঠিন পরিস্থিতি পার করছে। আমাদের বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। তাই কয়লার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিলেই শিল্প খাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে।’
আহসান খান চৌধুরী বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে ব্যবসার উন্নয়ন আসবে। এ ছাড়া এলসি সমস্যাও রয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের নিরিখে এলসি খুলতে না পারলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুটোই ব্যাহত হয়। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি খাতের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি পার্শিয়াল বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণের সুদের হার কমানো প্রয়োজন।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। প্রতিটি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ছেয়ে গেছে–এগুলো থামাতে হবে। সব খাতে আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিই যথেষ্ট নয়। বরং পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে চাঁদাবাজি বন্ধসহ বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিক খাতের মামলাজট নিরসনে আরও বেশি হারে আদালত ও বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘২০২৬ সালে আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত করা উচিত। কারণ আমরা এখনো বেঁচে থাকার চেষ্টায় রয়েছি। তা ছাড়া এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল বেশ কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। আমাদের আমদানি ক্রমাগত কমছে, পাশাপাশি কমেছে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন। গ্যাস-সংকটে আমরা ফেব্রিকস তৈরি করতে পারছি না। ফলে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে।’ তিনি বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে রাজনীতির বাইরে রাখার আহ্বান জানান।
জাভেদ আখতার বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা, ধারাবাহিকতা ও সক্ষমতা একান্ত অপরিহার্য। এলডিসি উত্তরণের বিষয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি নিজেদের সক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত ছাড়া শিল্পোন্নয়ন সম্ভব নয়। এ অবস্থার উন্নয়ন জরুরি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনগুলোয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। ব্যবসা পরিচালনব্যয় হ্রাসে, বিশেষ করে দুর্নীতি কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
বাণিজ্য সম্মেলনে আরও অংশ নেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা, সাবেক সভাপতিসহ বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন অব্যাহত রাখা, সুশাসন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অটোমেশন ও সংস্কার এবং সহায়ক বাণিজ্য নীতি সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা উন্নতি ও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ চান তাঁরা।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ দাবি জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, শিল্প খাত অনেক কঠিন সময় পার করছে। সরকার বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছে। কিন্তু যথেষ্ট উন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন না হলে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দেশে আর কোনো বিনিয়োগ হবে না। শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে সমস্যা সমাধানে একটা রোডম্যাপ করতে হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিয়ে শিল্প খাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ করার প্রস্তাব দেন তাঁরা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে অর্থনৈতিক খাতে যে ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৫-১০ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। অন্তর্বর্তী সরকার এগুলো থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ১৫ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি তিন-চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে এবং আরও ক্ষয় থেকে বাংলাদেশ রক্ষা পেয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘গত চার মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ৩০টির মতো বৈঠক করেছি। তাদের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে, তারা দিতে রাজিও হয়েছে। এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল হয়েছে। মূল্যস্ফীতি একটা বড় চ্যালেঞ্জ, রিজার্ভ স্থিতিশীলতা ও সুদের হার সন্তোষজনক পর্যায়ে আনার মাধ্যমে এ অবস্থারও উত্তরণ হবে।’ তিনি বলেন, এনবিআর নিয়ে বেসরকারি খাতের অভিযোগ রয়েছে। এনবিআরের কার্যক্রমে অটোমেশন করার প্রক্রিয়া চলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ট্যাক্স পলিসি ও ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে আলাদা করা হবে, প্রক্রিয়া চলমান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় আবশ্যক এবং বিদ্যমান অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতির জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্য সম্প্রসারণেও নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে কবে নাগাদ গ্র্যাজুয়েশন করা যৌক্তিক হবে, সে বিষয়ে আরও ডায়ালগ প্রয়োজন। কেননা এলডিসি-পরবর্তী সময়ে আমরা বেশ কিছু অগ্রাধিকার হারাব।’ একই পণ্যের একাধিক বাণিজ্য সংগঠন থাকা উচিত নয় জানিয়ে এ সময় তিনি এগুলো একে অপরের সঙ্গে মার্জ করার পরামর্শ দেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী বছরের শুরুতেই নীতি সুদহার ক্রমান্বয়ে কমানোর পাশাপাশি সরকারি ব্যয় হ্রাস, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, পণ্য সরবরাহব্যবস্থায় চাঁদাবাজি রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কেননা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি; আছে জ্বালানি সমস্যা। এতে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়াই কঠিন।’
সম্মেলনে প্যানেল আলোচক ছিলেন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিএবির সভাপতি আব্দুল হাই সরকার, বিটিএমএর শওকত আজিজ রাসেল, ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার, এবিবির সভাপতি সেলিম আর এফ হোসেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির।
আব্দুল মোক্তাদির বলেন, ‘বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে। শিল্পকারখানায় অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট সময়সীমাসহ রোডম্যাপ থাকতে হবে। বিভিন্ন পণ্যের উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ছোট ব্যবসায়ীরা কঠিন পরিস্থিতি পার করছে। আমাদের বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। তাই কয়লার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিলেই শিল্প খাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে।’
আহসান খান চৌধুরী বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে ব্যবসার উন্নয়ন আসবে। এ ছাড়া এলসি সমস্যাও রয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের নিরিখে এলসি খুলতে না পারলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুটোই ব্যাহত হয়। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি খাতের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি পার্শিয়াল বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণের সুদের হার কমানো প্রয়োজন।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। প্রতিটি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ছেয়ে গেছে–এগুলো থামাতে হবে। সব খাতে আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিই যথেষ্ট নয়। বরং পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে চাঁদাবাজি বন্ধসহ বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিক খাতের মামলাজট নিরসনে আরও বেশি হারে আদালত ও বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘২০২৬ সালে আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত করা উচিত। কারণ আমরা এখনো বেঁচে থাকার চেষ্টায় রয়েছি। তা ছাড়া এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল বেশ কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। আমাদের আমদানি ক্রমাগত কমছে, পাশাপাশি কমেছে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন। গ্যাস-সংকটে আমরা ফেব্রিকস তৈরি করতে পারছি না। ফলে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে।’ তিনি বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে রাজনীতির বাইরে রাখার আহ্বান জানান।
জাভেদ আখতার বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা, ধারাবাহিকতা ও সক্ষমতা একান্ত অপরিহার্য। এলডিসি উত্তরণের বিষয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি নিজেদের সক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত ছাড়া শিল্পোন্নয়ন সম্ভব নয়। এ অবস্থার উন্নয়ন জরুরি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনগুলোয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। ব্যবসা পরিচালনব্যয় হ্রাসে, বিশেষ করে দুর্নীতি কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
বাণিজ্য সম্মেলনে আরও অংশ নেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা, সাবেক সভাপতিসহ বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘খেলাপি ঋণের বেশির ভাগই ব্যালেন্স শিটনির্ভর। ব্যাংকগুলো ব্যালেন্স শিটনির্ভর অর্থায়নে মগ্ন। এই ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় লাঞ্চ বা ডিনারে বসে। বেক্সিমকো ও এস আলম এখন বেতন দিতে পারছে না। অথচ ব্যালেন্স শিট দেখে এ
৮ ঘণ্টা আগেসরকার আইপিপির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার নীতি বদলে গ্রাহকদের কাছে সরাসরি বিক্রির সুযোগ সৃষ্টির উদ্যোগ নিচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব নীতিমালা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চলছে অভিযোগ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের কথা ভাবছে। একই অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও ত্রিপুরার আগরতলার দুটি হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দ
৯ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহারকে স্পর্শকাতর দুই বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের পর ১৩টি বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। গত ২৮ নভেম্বর এই আদেশ জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ।
৯ ঘণ্টা আগে