নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশকে কৃষিপ্রধান হয়েছে দাবি করা হলেও এ খাতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, যে ১৩ ধরনের কৃষিজাত পণ্য দেশ থেকে নিয়মিত রপ্তানি হয়, তার মধ্যে ৬ ধরনের পণ্য রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারায় নেমে গেছে। বাকি সাতটিতে ভালো করলেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে নেতিবাচক ধারায় নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় মাধ্যম হতে পারে কৃষি পণ্য। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, পণ্য রপ্তানির জন্য বিমানে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়া। এ ছাড়া বিভিন্ন পণ্যের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষাগারের অভাব, ফাইটোস্যানিটারি (আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কৃষিপণ্যের স্বাস্থ্য মান যাচাই) সনদ প্রাপ্তি, দুর্বল প্যাকেজিং ইত্যাদি।
কৃষিপণ্য রপ্তানিতে দীর্ঘদিন থেকে একটি বড় বাধা হয়ে উঠেছে ‘ফিট ফর হিউম্যান কনজাম্পশন’ (মানুষের জন্য নিরাপদ কিনা) সনদ। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই–অক্টোবর প্রান্তিকে কৃষি খাত থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৮৫ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার। এসব পণ্যের মধ্যে আছে—সবজি, চা, তামাক পণ্য, ফল, প্রক্রিয়াজাত শুকনা খাদ্য, সবজির চর্বি, পান, তেলবীজ ও খৈলসহ ১৩ ধরনের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য।
এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর জুলাই–অক্টোবর প্রান্তিকে কৃষি পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৩৬২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশ কৃষিপ্রধান হলেও এ খাতের রপ্তানি মোট রপ্তানির তুলনায় খুবই কম।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর দেশে কৃষি খাত থেকে মোট রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯৬৪ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের মোট রপ্তানির মাত্র ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। অথচ দেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১২ শতাংশের বেশি। এই অবস্থাতেও কৃষি খাতের অনেক পণ্য আশঙ্কাজন হারে রপ্তানি কমছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুসারে, বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য প্রস্তুতের ৪৮৬টি প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ২৪১ প্রতিষ্ঠান রপ্তানি ও বাকিগুলো দেশের বাজারে সরবরাহ করে।
প্রধান পণ্যগুলো রপ্তানি করা হয় মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশি থাকেন বেশি। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ইত্যাদি দেশেও আমাদের দেশে কৃষি পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছয় পণ্যে
দেশের কৃষি খাতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পণ্য হলো সবজি। কিন্তু সবজি রপ্তানি ক্রমান্বয়ে কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সবজি রপ্তানি হয়েছে ২১ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ কম। গত বছর এই সময় সবজি রপ্তানি হয়েছিল ৫৫ দশমিক ৯৫ ডলার। এ ছাড়া তেল বীজ রপ্তানিও কমেছে। আয় হয়েছে ১০ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর এই সময়ে এই খাতে রপ্তানি ছিল ১৬ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার। পণ্যটি রপ্তানি আয় কমেছে ৩৩ শতাংশ।
ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশে বাংলাদেশের পানের অনেক কদর আছে। কিন্তু পান রপ্তানিও কমছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পান রপ্তানি কমেছে ৪৫ দশমিক ১২ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছর ছিল ১২ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। দেশ থেকে খৈল রপ্তানি বন্ধ আছে। অথচ, গত বছর প্রথম প্রান্তিকে খৈল রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে যেখানে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছিল ৫১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলার সেখানে এবার ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে ৪৭ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলারে নেমেছ।
বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশের সবজি, ফল, পান ইত্যাদির প্রচুর চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু আমরা চাহিদা অনুসারে রপ্তানি করতে পারছি না। অনেক দেশের সরকারের সঙ্গে আমাদের সরকারে চুক্তি না থাকায় তারা আমাদের কোয়ারেন্টাইন সার্টিফিকেট গ্রহণ করে না। এ ছাড়া প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অতিরিক্ত ফ্রেইট কস্ট ও বিমানে স্পেস সংকট রয়েছে।’
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিমানগুলো সবজি ও ফলের মতো প্যারিশেবল (পচনধর্মী) আইটেম নিতে চায় না। এসব সমস্যায় আমাদের তৈরি করা বাজারগুলোই ধরে রাখা কষ্টদায়ক হচ্ছে। ইউরোপে আমরা চাহিদা অনুসারে সবজি রপ্তানি করতে পারছি না।’
যেসব পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে
রপ্তানির তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে তামাক পণ্য থেকে। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তামাক পণ্য থেকে আয় ১০৮ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন। গত বছর একই সময় এই খাতে রপ্তানি ছিল ৭৯ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার। তামাক পণ্য থেকে আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
পরের অবস্থানে থাকা প্রক্রিয়াজাত শুকনো খাবার রপ্তানি থেকে আয় ৭১ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময় এ খাতে রপ্তানি আয় ছিল ৬৫ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ। এর বাইরে ভেজিটেবল ফ্যাট রপ্তানি হয়েছে ৫৭ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এই খাতে আয় ছিল ৩৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৭ শতাংশ।
এ ছাড়া গত বছরের ৫ দশমিক ০৬ মিলিয়ন ডলার থেকে ফল রপ্তানি থেকে আয় ৩২২ শতাংশ বেড়ে ২১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। মসলা খাত থেকে রপ্তানি আয় ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার।
বেভারেজ ও ভিনেগার রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এই খাতে আয় ছিল ১০ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার। আর চা রপ্তানি হয়েছে ১ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার। আর গত বছর একই সময়ে চা রপ্তানি থেকে আয় ছিল দশমিক ৯৯ মিলিয়ন ডলার।
চিনি ও চিনিজাত পণ্য থেকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত আয় হয়েছে ৭ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর মাত্র চার মাস আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওই বছর কৃষি খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১০২৮ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলার।
এর আগে, ২০২২ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি পণ্য রপ্তানি বাড়াতে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল। সেখানে পণ্য রপ্তানি ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০২২-২৩ সালে ২০০১ মিলিয়ন ডলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘গত দুই বছরে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পণ্য পরিবহন খরচ বেড়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট দেশের কৃষি খাতকে প্রভাবিত করেছে।’
দেশকে কৃষিপ্রধান হয়েছে দাবি করা হলেও এ খাতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, যে ১৩ ধরনের কৃষিজাত পণ্য দেশ থেকে নিয়মিত রপ্তানি হয়, তার মধ্যে ৬ ধরনের পণ্য রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারায় নেমে গেছে। বাকি সাতটিতে ভালো করলেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে নেতিবাচক ধারায় নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় মাধ্যম হতে পারে কৃষি পণ্য। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, পণ্য রপ্তানির জন্য বিমানে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়া। এ ছাড়া বিভিন্ন পণ্যের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষাগারের অভাব, ফাইটোস্যানিটারি (আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কৃষিপণ্যের স্বাস্থ্য মান যাচাই) সনদ প্রাপ্তি, দুর্বল প্যাকেজিং ইত্যাদি।
কৃষিপণ্য রপ্তানিতে দীর্ঘদিন থেকে একটি বড় বাধা হয়ে উঠেছে ‘ফিট ফর হিউম্যান কনজাম্পশন’ (মানুষের জন্য নিরাপদ কিনা) সনদ। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই–অক্টোবর প্রান্তিকে কৃষি খাত থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৮৫ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার। এসব পণ্যের মধ্যে আছে—সবজি, চা, তামাক পণ্য, ফল, প্রক্রিয়াজাত শুকনা খাদ্য, সবজির চর্বি, পান, তেলবীজ ও খৈলসহ ১৩ ধরনের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য।
এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর জুলাই–অক্টোবর প্রান্তিকে কৃষি পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৩৬২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশ কৃষিপ্রধান হলেও এ খাতের রপ্তানি মোট রপ্তানির তুলনায় খুবই কম।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর দেশে কৃষি খাত থেকে মোট রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯৬৪ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের মোট রপ্তানির মাত্র ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। অথচ দেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১২ শতাংশের বেশি। এই অবস্থাতেও কৃষি খাতের অনেক পণ্য আশঙ্কাজন হারে রপ্তানি কমছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুসারে, বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য প্রস্তুতের ৪৮৬টি প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ২৪১ প্রতিষ্ঠান রপ্তানি ও বাকিগুলো দেশের বাজারে সরবরাহ করে।
প্রধান পণ্যগুলো রপ্তানি করা হয় মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশি থাকেন বেশি। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ইত্যাদি দেশেও আমাদের দেশে কৃষি পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছয় পণ্যে
দেশের কৃষি খাতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পণ্য হলো সবজি। কিন্তু সবজি রপ্তানি ক্রমান্বয়ে কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সবজি রপ্তানি হয়েছে ২১ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ কম। গত বছর এই সময় সবজি রপ্তানি হয়েছিল ৫৫ দশমিক ৯৫ ডলার। এ ছাড়া তেল বীজ রপ্তানিও কমেছে। আয় হয়েছে ১০ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর এই সময়ে এই খাতে রপ্তানি ছিল ১৬ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার। পণ্যটি রপ্তানি আয় কমেছে ৩৩ শতাংশ।
ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশে বাংলাদেশের পানের অনেক কদর আছে। কিন্তু পান রপ্তানিও কমছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পান রপ্তানি কমেছে ৪৫ দশমিক ১২ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছর ছিল ১২ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। দেশ থেকে খৈল রপ্তানি বন্ধ আছে। অথচ, গত বছর প্রথম প্রান্তিকে খৈল রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে যেখানে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছিল ৫১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলার সেখানে এবার ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে ৪৭ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলারে নেমেছ।
বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশের সবজি, ফল, পান ইত্যাদির প্রচুর চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু আমরা চাহিদা অনুসারে রপ্তানি করতে পারছি না। অনেক দেশের সরকারের সঙ্গে আমাদের সরকারে চুক্তি না থাকায় তারা আমাদের কোয়ারেন্টাইন সার্টিফিকেট গ্রহণ করে না। এ ছাড়া প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অতিরিক্ত ফ্রেইট কস্ট ও বিমানে স্পেস সংকট রয়েছে।’
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিমানগুলো সবজি ও ফলের মতো প্যারিশেবল (পচনধর্মী) আইটেম নিতে চায় না। এসব সমস্যায় আমাদের তৈরি করা বাজারগুলোই ধরে রাখা কষ্টদায়ক হচ্ছে। ইউরোপে আমরা চাহিদা অনুসারে সবজি রপ্তানি করতে পারছি না।’
যেসব পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে
রপ্তানির তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে তামাক পণ্য থেকে। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তামাক পণ্য থেকে আয় ১০৮ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন। গত বছর একই সময় এই খাতে রপ্তানি ছিল ৭৯ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার। তামাক পণ্য থেকে আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
পরের অবস্থানে থাকা প্রক্রিয়াজাত শুকনো খাবার রপ্তানি থেকে আয় ৭১ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময় এ খাতে রপ্তানি আয় ছিল ৬৫ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ। এর বাইরে ভেজিটেবল ফ্যাট রপ্তানি হয়েছে ৫৭ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এই খাতে আয় ছিল ৩৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৭ শতাংশ।
এ ছাড়া গত বছরের ৫ দশমিক ০৬ মিলিয়ন ডলার থেকে ফল রপ্তানি থেকে আয় ৩২২ শতাংশ বেড়ে ২১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। মসলা খাত থেকে রপ্তানি আয় ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার।
বেভারেজ ও ভিনেগার রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এই খাতে আয় ছিল ১০ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার। আর চা রপ্তানি হয়েছে ১ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার। আর গত বছর একই সময়ে চা রপ্তানি থেকে আয় ছিল দশমিক ৯৯ মিলিয়ন ডলার।
চিনি ও চিনিজাত পণ্য থেকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত আয় হয়েছে ৭ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর মাত্র চার মাস আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওই বছর কৃষি খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১০২৮ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলার।
এর আগে, ২০২২ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি পণ্য রপ্তানি বাড়াতে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল। সেখানে পণ্য রপ্তানি ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০২২-২৩ সালে ২০০১ মিলিয়ন ডলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘গত দুই বছরে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পণ্য পরিবহন খরচ বেড়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট দেশের কৃষি খাতকে প্রভাবিত করেছে।’
আসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যের ওপর থাকা অগ্রিম করও পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে খেজুর আমদানির অযৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু...
৪ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ফের সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ ক্যারেট সোনার ভরির নতুন দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। দাম বৃদ্ধির কারণ ও বিস্তারিত জানতে পড়ুন।
৪ ঘণ্টা আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন জুতা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক তিন কোম্পানির কাছে প্রস্তুতকৃত চামড়া বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড। এ লক্ষ্যে শিগগিরই হবে চুক্তি। চুক্তির আওতায় বছরে ১৬ কোটি টাকার চামড়া বিক্রি করবে এপেক্স ট্যানারি।
৪ ঘণ্টা আগেফলজাত পণ্য রপ্তানির জন্য বিশেষ সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস ও ড্রিংকস রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিকারকেরা এখন মোট রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ
৫ ঘণ্টা আগে