Ajker Patrika

দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী ‘নির্বিকার’, টিআইবির উদ্বেগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ জুন ২০২৩, ২২: ৫৭
দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী ‘নির্বিকার’, টিআইবির উদ্বেগ 

চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্য ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমার মূল কারণ লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মতো মরণব্যাধিকে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী একেবারেই স্বীকার করেননি। একইভাবে সুশাসন ও ন্যায্যতার ভাবনাকেও নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। এমন মন্তব্য করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি বলেছে, কোভিড সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধপ্রসূত বৈশ্বিক সংকটের ফলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু দেশে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে মূল অন্তরায় যে অবারিত দুর্নীতি ও গগনচুম্বী অর্থ পাচার, তা নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রকার দিকনির্দেশনাহীন উচ্চাভিলাষী বাজেট কীভাবে অর্থবহ বাস্তবায়িত হবে তা যেমন পরিষ্কার নয়, তেমনিভাবে ক্ষমতার বলয়ের বাইরে দেশের আপামর জনগণের জন্য এই বাজেট কোনো ভূমিকা রাখবে, এমন আশা একেবারেই অমূলক।  

বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় ডলার সংকট মোকাবিলা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনের জন্য আমদানিতে কঠোরতা, ঋণপত্রে নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং একাধিক মুদ্রা বিনিময় হার থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনীতির অন্তর্নিহিত মরণব্যাধি দুর্নীতি ও অব্যাহত মুদ্রা পাচারের বিষয়টিকে নির্বিকার এড়িয়ে গেলেন। অথচ সরকারের অজানা নয় যে বাংলাদেশে যদি মধ্যম মাত্রায় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতো, তাহলে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি কমপক্ষে ২-৩ শতাংশ বেশি হতো ও জনগণের জন্য অর্থবহ হতো; অন্যদিকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য প্রাক্কলন অনুযায়ী বছর গড়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে কমপক্ষে ১২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিশাল দুষ্টচক্রকে নিয়ন্ত্রণের দিকনির্দেশনাহীন বাজেট যে আরও দুর্নীতি ও অর্থ পাচার সহায়ক হবে তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।’

পাচার করা অর্থ বিনা প্রশ্নে ফেরত আনতে বিগত বাজেটে দেওয়া অনৈতিক সুবিধার মেয়াদ আর না বাড়ানোর চিন্তাকে দেরিতে হলেও সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় আখ্যা দিয়ে, প্লট ও ফ্ল্যাটে বিনিয়োগে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত না রাখার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। 

প্লট ও ফ্ল্যাটে বিনিয়োগসহ অন্য যেকোনোভাবে কালোটাকা সাদা করার অসাংবিধানিক, বৈষম্যমূলক ও দুর্নীতি সহায়ক সুযোগ যেন নতুন করে আয়কর আইনে স্থান না পায়, সে আহ্বানও জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

মূলত দুর্নীতির বৈষম্যমূলক প্রভাবে দেশে ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্যের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা এবং ভর্তুকি বরাদ্দের ব্যয় ব্যবস্থাপনার দিক থেকেও প্রস্তাবিত বাজেট ন্যায্যতা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে টিআইবি। সংস্থাটি বলছে, আয়হীন ও নিম্ন  আয়ের মানুষ যতটা চাপে রয়েছে, সে তুলনায় সামাজিক নিরাপত্তা অপ্রতুল। সরকার বাজেটে সাড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা ব্যয়ের যে প্রস্তাব রেখেছে সেখানে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকাই রাখা হয়েছে জনপ্রশাসনের জন্য। সামাজিক নিরাপত্তায় ভর্তুকি ও প্রণোদনা মাত্র পাঁচ হাজার কোটি টাকা। 

বাজেট পাসের আগেই এসব ক্ষেত্রে সরকার ন্যায্যতা বিধান করবে এবং বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিনির্ভর সুশাসন এবং দুর্নীতি ও অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণের কার্যকর পথরেখা বাজেটের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করবে বলে আশা করছে টিআইবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত