ফজলে আলম নিপুণ, ঢাকা
১৫ হাজার টাকা বেতনে উত্তরার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় চাকরি করতেন মোজাম্মেল হোসেন। চালাতেন পাঁচজনের সংসার। কিন্তু মহামারি শুরুর পর লকডাউনের ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যায় সব রেস্তোরাঁ। চাকরি চলে যায় মোজাম্মেলেরও। গত বছরের শেষ চার মাস জমানো আর ধারের টাকায় সংসার চলেছে তাঁর। কিডনির জটিলতায় অসুস্থ মা ছাড়াও সংসারে তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান। একা মানুষের উপার্জনে তিনি আর কুলাতে পারছিলেন না। পেট সামলাতে বেছে নিলেন নতুন পেশা। ধরলেন রিকশার হাতল। তবে তাঁর ইচ্ছা আছে সুযোগ পেলে আগের পেশায় ফিরে যাওয়ার।
আক্ষেপ নিয়ে ৪০ বছরের মোজাম্মেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০ বছর ধইরা আমি রেস্টুরেন্টে কাজ করি। এইডা ছাড়া আমি অন্য কোনো কাজ শিখি নাই। মহামারি আমার পায়ের নিচের মাটি কাইড়া নিছে। সরকার ও মালিকেরা তো দূরে থাকে, বিপদে আমাগো কেউ দেখে না।’
একই অবস্থা মোহাম্মদ জয়নালের। মতিঝিলের এক রেস্তোরাঁয় পাচ্ছেন না পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন। মালিক তাঁকে বারবার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত টাকা দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে নেমেছেন মাস্কের ব্যবসায়। রাস্তায় হকারি করেন তিনি। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই চালাচ্ছেন পরিবার।
হোটেল মালিক সমিতির হিসাবে, দেশের ৬০ হাজার রেস্তোরাঁর প্রায় ৮০ শতাংশ এখন বন্ধ। ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেশির ভাগই এখন বেকার। তাঁদের আয়ের ওপর এক থেকে দেড় কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে তাঁরা চাকরি ফিরে পাবেন কি না, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। অবশ্য সরকারি হিসাবে হোটেল-রেস্তোরাঁয় কর্মরত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ।
শ্রমিকনেতারা বলছেন, মহামারি শুরুর পর থেকে সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি জানিয়ে এলেও কোনো সাড়া মেলেনি। মালিকেরাও বেতন ও বোনাসের ব্যাপারে নিশ্চুপ।
বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুজ্জান খান বলেন, করোনা মহামারিতে এই খাতের শ্রমিকেরা বিপর্যয়ের মুখে। হোটেলমালিকেরা শ্রমিকদের কোনো খোঁজ রাখেন না। এমনকি মোবাইল ফোন পর্যন্ত ধরেন না। আন্দোলন করেও এর সুরাহা হচ্ছে না। মালিক সমিতির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার অজুহাত দেয়।
করোনার সময় রেস্তোরাঁশ্রমিকদের ১০ হাজার টাকা করে প্রণোদনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ২০২০ সালের জুন এবং ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পাঠালেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। শ্রমিক এবং মালিকদের সমন্বয় করে একত্রে সরকারের কাছে দাবি জানানোর কথা বললেও মালিকেরা সব সময় কালক্ষেপণ করে আসছেন।
রেস্তোরাঁমালিকদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন না মানারও অভিযোগও করেন আক্তারুজ্জামান। শ্রমিকদের পরিচয়পত্র না দেওয়াসহ যখন-তখন পাওনা বেতন ছাড়াই ছাঁটাইয়ের অভিযোগ তাঁর।
এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী হোটেল-রেস্টুরেন্টে শ্রমিকেরা সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার দাবি রাখেন। কিন্তু অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত হওয়ায় তাঁরা এ থেকে বঞ্চিত। শ্রম আইনের সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে আনা উচিত।
তবে রেস্তোরাঁশ্রমিকদের ক্ষেত্রে শ্রম আইন মানা হয় বলে দাবি করেন হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তাঁর দাবি, মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে টেক অ্যাওয়ে, পার্সেল ও অনলাইন ডেলিভারি করছে। কিন্তু অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে এই বিশাল খাত চালানো সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে জামানতবিহীন এবং দীর্ঘমেয়াদি এই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানান ইমরান।
হোটেলশ্রমিকেরা আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন কি না–এই বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার বলেন, বিশেষ দিবসগুলোতেও হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব শ্রমিকের আর্থিক সহায়তা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। তবে গার্মেন্টস সেক্টরের শ্রমিকেরা বেশি সহায়তা পেয়ে থাকেন।
১৫ হাজার টাকা বেতনে উত্তরার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় চাকরি করতেন মোজাম্মেল হোসেন। চালাতেন পাঁচজনের সংসার। কিন্তু মহামারি শুরুর পর লকডাউনের ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যায় সব রেস্তোরাঁ। চাকরি চলে যায় মোজাম্মেলেরও। গত বছরের শেষ চার মাস জমানো আর ধারের টাকায় সংসার চলেছে তাঁর। কিডনির জটিলতায় অসুস্থ মা ছাড়াও সংসারে তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান। একা মানুষের উপার্জনে তিনি আর কুলাতে পারছিলেন না। পেট সামলাতে বেছে নিলেন নতুন পেশা। ধরলেন রিকশার হাতল। তবে তাঁর ইচ্ছা আছে সুযোগ পেলে আগের পেশায় ফিরে যাওয়ার।
আক্ষেপ নিয়ে ৪০ বছরের মোজাম্মেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০ বছর ধইরা আমি রেস্টুরেন্টে কাজ করি। এইডা ছাড়া আমি অন্য কোনো কাজ শিখি নাই। মহামারি আমার পায়ের নিচের মাটি কাইড়া নিছে। সরকার ও মালিকেরা তো দূরে থাকে, বিপদে আমাগো কেউ দেখে না।’
একই অবস্থা মোহাম্মদ জয়নালের। মতিঝিলের এক রেস্তোরাঁয় পাচ্ছেন না পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন। মালিক তাঁকে বারবার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত টাকা দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে নেমেছেন মাস্কের ব্যবসায়। রাস্তায় হকারি করেন তিনি। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই চালাচ্ছেন পরিবার।
হোটেল মালিক সমিতির হিসাবে, দেশের ৬০ হাজার রেস্তোরাঁর প্রায় ৮০ শতাংশ এখন বন্ধ। ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেশির ভাগই এখন বেকার। তাঁদের আয়ের ওপর এক থেকে দেড় কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে তাঁরা চাকরি ফিরে পাবেন কি না, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। অবশ্য সরকারি হিসাবে হোটেল-রেস্তোরাঁয় কর্মরত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ।
শ্রমিকনেতারা বলছেন, মহামারি শুরুর পর থেকে সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি জানিয়ে এলেও কোনো সাড়া মেলেনি। মালিকেরাও বেতন ও বোনাসের ব্যাপারে নিশ্চুপ।
বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুজ্জান খান বলেন, করোনা মহামারিতে এই খাতের শ্রমিকেরা বিপর্যয়ের মুখে। হোটেলমালিকেরা শ্রমিকদের কোনো খোঁজ রাখেন না। এমনকি মোবাইল ফোন পর্যন্ত ধরেন না। আন্দোলন করেও এর সুরাহা হচ্ছে না। মালিক সমিতির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার অজুহাত দেয়।
করোনার সময় রেস্তোরাঁশ্রমিকদের ১০ হাজার টাকা করে প্রণোদনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ২০২০ সালের জুন এবং ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পাঠালেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। শ্রমিক এবং মালিকদের সমন্বয় করে একত্রে সরকারের কাছে দাবি জানানোর কথা বললেও মালিকেরা সব সময় কালক্ষেপণ করে আসছেন।
রেস্তোরাঁমালিকদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন না মানারও অভিযোগও করেন আক্তারুজ্জামান। শ্রমিকদের পরিচয়পত্র না দেওয়াসহ যখন-তখন পাওনা বেতন ছাড়াই ছাঁটাইয়ের অভিযোগ তাঁর।
এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী হোটেল-রেস্টুরেন্টে শ্রমিকেরা সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার দাবি রাখেন। কিন্তু অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত হওয়ায় তাঁরা এ থেকে বঞ্চিত। শ্রম আইনের সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে আনা উচিত।
তবে রেস্তোরাঁশ্রমিকদের ক্ষেত্রে শ্রম আইন মানা হয় বলে দাবি করেন হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তাঁর দাবি, মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে টেক অ্যাওয়ে, পার্সেল ও অনলাইন ডেলিভারি করছে। কিন্তু অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে এই বিশাল খাত চালানো সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে জামানতবিহীন এবং দীর্ঘমেয়াদি এই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানান ইমরান।
হোটেলশ্রমিকেরা আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন কি না–এই বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার বলেন, বিশেষ দিবসগুলোতেও হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব শ্রমিকের আর্থিক সহায়তা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। তবে গার্মেন্টস সেক্টরের শ্রমিকেরা বেশি সহায়তা পেয়ে থাকেন।
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের গৌতম আদানি ও তাঁর ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগপত্র দাখিল ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও আদানি গ্রুপের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। এমনটাই ধারণা করছেন ঢাকার জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের আদানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এমন এক
১৪ মিনিট আগেঅর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেছেন, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলমের আন্তর্জাতিক সালিসে যাওয়ার হুমকিতে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
১৫ ঘণ্টা আগেবেশ কিছু দিন ধরেই কেনিয়াতে ছাত্র–জনতা আদানির সঙ্গে সরকারের ‘গোপন’ চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। পরে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। অবশেষে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থমূল্যের দুটি চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
২০ ঘণ্টা আগেঘুষের নোটে সাগর আদানি ঘুষের পরিমাণ, কাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছে এবং কত মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিনিময়ে এটি হয়েছে—তার বিবরণ উল্লেখ করেছেন। তিনি মেগাওয়াট প্রতি ঘুষের হারও উল্লেখ করেছেন। ২০২০ সালে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে সাগর আদানি বলেন, ‘হ্যাঁ...কিন্তু বিষয়টা দৃশ্যমান হওয়ার ঠেকানো বেশ কঠিন।’
২১ ঘণ্টা আগে