আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়াল এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ২৬
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ৪০
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি

ব্যক্তি ও কোম্পানি— উভয় শ্রেণির করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ব্যবসায়ী ও করদাতাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একমাস সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর। সময় বাড়ানোর ফলে এখন আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। অন্যদিকে কোম্পানি করদাতাদের জন্য শেষ সময় ছিল ১৫ জানুয়ারি, এখন তাঁরা ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।

আল আমিন আজকের পত্রিকা’কে বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে করদাতাদের সুবিধার্থে ব্যক্তিশ্রেণির ও কোম্পানির সব করদাতার অনলাইনে ই-রিটার্ন ও অফলাইনে কাগজের রিটার্ন দাখিল— উভয় ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়ে এনবিআর থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।

উভয় আদেশে সই করেছেন এনবিআরের করনীতি উইংয়ের দ্বিতীয় সচিব (কর আইন-১) এইচ এম শাহরিয়ার হাসান।

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য বিষয়ে আদেশে বলা হয়, আয়কর আইন, ‘২০২৩ এর ধারা ৩৩৪ এর উপ-ধারা (খ) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, জনস্বার্থে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোম্পানি ব্যতীত সকল করদাতার ২০২৪-২০২৫ করবর্ষের জন্য নির্ধারিত করদিবস ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের পরিবর্তে ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ নির্ধারণ করিল।’

অন্যদিকে একই আয়কর আইনের উপ-ধারা (ক) এর ক্ষমতাবলে কোম্পানির জন্য জারি করা আদেশে এনবিআর বলছে, ‘সংজ্ঞায়িত কোম্পানি করদাতাদের ২০২৪-২৫ করবর্ষের জন্য নির্ধারিত করদিবস ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখের পরিবর্তে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ নির্ধারণ করিল।’

জনগণকে করদানে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস উদযাপন করে আসছে এনবিআর। তবে জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপিত হয়নি। যদিও ওই দিবস বাতিল বা পরিবর্তন করা হয়নি।

তবে এবার ভিন্ন কোনো দিনকে জাতীয় আয়কর দিবস ঘোষণার পরিকল্পনার কথা জানিয়েও সেটা করেনি এনবিআর। ফলে আয়কর দিবস নিয়ে সাধারণ জনগণতো বটেই কর কর্মকর্তারাও কিছুটা অস্পষ্ট অবস্থানে আছেন।

এর আগে ৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিনকে আয়কর দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। তবে ওই দিন কর অফিসগুলো যথেষ্ট ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সে কারণে আমরা ভাবছি ভিন্ন কোনো দিন জাতীয়ভাবে আয়কর দিবস হলে উদযাপন ও উৎসবের আমেজ বৃদ্ধি পাবে।

২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বরকে আয়কর দিবস হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে। এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস উদযাপিত হতো। অর্থাৎ, গত ১৬ বছর থেকে রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপিত আসছে। ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আয়কর দিবস পালন করা হয়। ওই বছর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস হিসেবে উদযাপিত হতো।  

এরপর রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করছে এনবিআর। এদিন ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ারও শেষ দিন। তবে চলতি বছরে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছিল, যা নতুন করে বাড়ানো হলো।  

আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২৪ অনুযায়ী ৪৪ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করে এনবিআর। যে কারণে রিটার্ন দাখিলের বিকল্প নেই ই-টিআইএনধারীদের। তা না হলে পড়তে হবে নানা জটিলতায়।

দেশে বর্তমানে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) করদাতা রয়েছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪৪ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেন, যার মধ্যে মাত্র ৫ লাখ রিটার্ন অনলাইনে জমা দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত