নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম
১৪ আগস্ট ২০২২
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম
১৪ আগস্ট ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম
১৪ আগস্ট ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম
১৪ আগস্ট ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে