নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।
তেল আর ডলারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার শোরগোলে নীরবে তলিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। বড় বড় ইস্যুর ডামাডোলে সরকার, নীতিনির্ধারক আর গণমাধ্যমের মনোযোগের বাইরে থাকা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কষ্টের টাকা নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গাটি এখন চরম অনিরাপদ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জোরাজুরিতে মাঝেসাজে বাজারটিকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা হলেও তা টেকসই হয়নি। এক দিন বাজারে সূচকের উত্থান হলে এর পরে টানা কয়েক দিন চলতে থাকে পতন।
কোরবানির ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার বলতে গেলে পতনের বৃত্তই ভাঙতে পারছে না। পর্যালোচনা বলছে, পতনে পতনে বিপর্যস্ত বাজারটি গত এক সপ্তাহেই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজি হারিয়েছে। একই সময়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত এক বছরে অন্তত ৭ লাখ বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও হিসাব বন্ধ করেছেন। ত্যক্ত-বিরক্ত আর হতাশ লাখো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বেশির ভাগই এখন বাজার নিয়ে নির্বিকার।
জানা যায়, সুশাসনের বিচারে বিশ্বের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এটি নিরাপদ বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবেও দাঁড়াতে পারছে না। সংকট দেখা দিলে সরকারকে তহবিল ও নীতিসহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিগত কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির পর নানা পদক্ষেপেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি যখন বিভিন্ন সংকটের মধ্যে, তখন পুঁজিবাজারটিও একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
দফায় দফায় সূচক ও লেনদেন কমে বাজারটি প্রতিদিনই পুঁজি আর বিনিয়োগকারী হারাচ্ছে। বড় বড় ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর ক্ষতের বিষয়টি সবার নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। সিডিবিএলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২৯ জুন পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১, এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৭। গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ৭ লাখ। এমনকি গত জুনের শেষ দিনেও বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪২২। দুই মাসে হিসাবের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সপ্তাহের শুরুতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা নিয়ে বাজারের লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। সূচক ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্ট থেকে নেমেছে ৬ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল পুঁজিবাজারের পুরোনো দুই সমস্যা। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে পড়ন্ত বাজারে বিনিয়োগ করে সূচক বাড়ায়, আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজারের শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভের টাকা ডলারের মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যায়। এতে বাজার পড়ে যায়, আবার ডলারও পাচার হয়। তবে এবার আগের দুটি উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের অস্বাভাবিক দাম। এতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ জন্য বাজার উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
মুহাম্মদ মহসিন বলেন, এই বাজারকে কৃত্রিমভাবে ঠিক করতে যাওয়া বোকামি। ফ্লোর প্রাইস ও এক্সপোজার লিমিট পরিবর্তনও ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। শেয়ারের দামে এক্সপোজার লিমিট হিসাব করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ফ্লোর প্রাইসের কারণে দুর্বল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ সিদ্ধান্তগুলো মোটেও বাজারের স্বাভাবিকতার জন্য ভালো নয়।
জানা যায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন এবং ফ্লোর প্রাইসে ভর করে কয়েক মাসের টানা দরপতনে নুয়ে পড়া পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। ঠিক এই সময়ে শুরু হয় ডলার ও তেলের ঝড়। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ‘কোমর শক্ত’ না হতেই আবার পতন শুরু হয় বাজারে। আগের সপ্তাহে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, গত এক সপ্তাহে তার অর্ধেকের বেশিই হারিয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক ছিল নিম্নমুখী। লেনদেনও কমে অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের দাবি ছিল বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের হিসাব করা হোক। এত দিন তা শেয়ারের প্রতিদিনের মূল্যে হিসাব করা হতো। এতে দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিত হতো ব্যাংকগুলোকে। সীমা পরিবর্তনের দাবিও পূরণ হয়েছে। বড় পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার সীমাও ঠিক করা হয়েছে। আবার শেয়ারের মূল্য কতটুকু কমতে পারবে, সেই সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এতে আশা করা হয়েছিল বাজার আবারও ইতিবাচক হবে, বিক্রির চাপ কমবে। কিন্তু দেশের সার্বিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে নানা ধরনের গুজব-গুঞ্জনও ডালপালা মেলছে। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির বিপুল চাপ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। এই অবস্থায় শেয়ারের মূল্য আরও কমছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের নিচে শেয়ারের দর নামছে না। এই অবস্থাতেও অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার কিনতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ডলার ও তেলের দাম বেড়ে গেছে। এতে বাজারে একটা প্যানিক (ভীতি) দেখা গেছে। অনেকের অ্যাক্টিভিটি কমে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে সাইডলাইনে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আবার পুঁজিবাজারের টাকা তুলে ডলারে বিনিয়োগ করছেন। দিনে দিনে ডলার কিনে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ডলারের বাজার স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার বাজারে ফিরে আসবেন। তবে আমার মনে হচ্ছে, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। বাজার যদি কয়েক দিন ইতিবাচক হয়। আবারও সবার মধ্যে কনফিডেন্স ফিরে আসবে।’
৬ আগস্ট থেকে দেশে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। তার পরদিন থেকেই পতন শুরু হয় বাজারে। এই সপ্তাহেই ডলারের দামও খোলাবাজারে রেকর্ড ১১৯-১২০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্যও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া বা ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও তা এই মুহূর্তে কাজে আসছে না। তেল ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সামনে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, আমদানি মূল্য বাড়বে, এতে জিনিসপত্রের দামও আরও বাড়বে। তিনি বলেন, আগে থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় করবে, না বিনিয়োগ করবে? তাই শেয়ারের মূল্য কমার পরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ে আশা করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্যদের জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্র্যাক ব্যাংক এবং বেসিস-এর মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
১ ঘণ্টা আগেদেশে গত বোরো মৌসুমের পরই বাড়তে থাকে চালের দাম। ক্রেতাদের আশা ছিল, আমন মৌসুম শুরু হলে দাম কমবে। কিন্তু আশা দুরাশাই রয়ে গেছে এখন পর্যন্ত। মোকামে আমন ধান আসতে শুরু করলেও চালের বাজারে খুব একটা প্রভাব নেই। শুধু তা-ই নয়, সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েও পণ্যটির দাম কমিয়ে আনতে পারছে না।
২ ঘণ্টা আগেআসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যের ওপর থাকা অগ্রিম করও পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে খেজুর আমদানির অযৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু...
১১ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ফের সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ ক্যারেট সোনার ভরির নতুন দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। দাম বৃদ্ধির কারণ ও বিস্তারিত জানতে পড়ুন।
১১ ঘণ্টা আগে