Ajker Patrika

পুঁজিবাজারে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৪, ১১: ৩৬
পুঁজিবাজারে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার পালাবদলের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, তাতে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে দেশের পুঁজিবাজারের দৈনন্দিন লেনদেনে। প্রতিদিনই উড়ন্ত সূচনার পর শেয়ারের দাম এবং সূচক ওঠানামা করলেও সেটি ফের ঊর্ধ্বমুখী ধারায় অব্যাহত থাকছে দিন শেষেও। গতকাল রোববারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দিন শেষে সূচক বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। আর লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। এ পরিমাণ লেনদেন গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমে অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশায় আস্থা বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। মূলত তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই এমন ঊর্ধ্বমুখী ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে পুঁজিবাজারে।  

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক কমিশনার আরিফ খান দাবি করেছেন, পুঁজিবাজারে এমন উত্থান অনেক দিন দেখা যায়নি। এটা সম্ভব হয়েছে বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই। মানুষ মনে করে, অর্থনীতিতে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার সামাল দিতে পারবে। অর্থনীতি ভালো হবে। কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসা করবে। সেই কারণে এই উত্থান।’

এ ছাড়াও ভালো কোম্পানির শেয়ারদর কমে যাওয়ায় (অবমূল্যায়িত) এখন ক্রেতা তৈরি হয়েছে। এ কারণেও লেনদেন বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি। 

গতকাল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কার্যদিবস ছিল। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১০ কোটি ৮ লাখ টাকা, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৪০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। ওই দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের।

সরকার পতনের পর প্রথম কর্মদিবসেই (মঙ্গলবার) সূচক বাড়ে ১৯৭ পয়েন্ট, পরের দিন বুধবার ১৯২ পয়েন্ট এবং বৃহস্পতিবার রেকর্ড ৩০৬ পয়েন্ট। ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের যাত্রা শুরু হওয়ার পর কখনোই এক দিনে এত বড় উত্থান হয়নি। এরপর গতকালও লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। একপর্যায়ে সূচক বাড়ে ২৯১ পয়েন্ট। তবে বিক্রির চাপে তা স্থায়ী হয়নি। শেষ পর্যন্ত লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৩টির, কমেছে ২০৭টির এবং আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ২০টির। এর প্রভাবে সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স ৯১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।  

এতে করে সরকার পতনের পর চার দিনে সূচকে যোগ হলো ৭৮৬ পয়েন্ট। ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৫ পয়েন্টে। এর মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ মাস পরে সূচক ফের ৬ হাজার পয়েন্টের ঘরে পৌঁছাল। চলতি বছরের ১৩ মার্চ সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। তবে সূচকের অবস্থান গতকালের চেয়ে বেশি ছিল ১১ মার্চ, ৬ হাজার ৫৮ পয়েন্ট।

এদিকে, কয়েক ধাপে তুলে নেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার অবশিষ্ট ছয় কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন সীমা) প্রত্যাহারের নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। তবে গতকাল রোববার সেটি স্থগিত করা হয়েছে। ওই স্থগিত আদেশে সই করেছেন বিএসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত