Ajker Patrika

২০৫ প্রভাবশালীর নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে শেয়ারবাজার

  • আওয়ামী লীগ আমলে পুঁজিবাজার থেকে ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ
  • ২০৫ প্রভাবশালীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বড় নেটওয়ার্ক
  • সবচেয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ছিল ফ্লোরপ্রাইস পদ্ধতি
  • পুঁজিবাজারে আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের
  • এশিয়ায় শুধু কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ২৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরও চক্রের সদস্যদের নির্লজ্জ দায়মুক্তি পুঁজিবাজারকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে নিয়ে এসেছে বলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কারসাজি চক্রের সদস্যরা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কোম্পানি বাজারে আসার সময় জালিয়াতি করেছে। নামে-বেনামে প্রতারণা, প্লেসমেন্ট-বাণিজ্য এবং শেয়ার কারসাজি করেছে। এসবের মাধ্যমে জনগণের ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিগত বছরে যা হয়েছে, বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সহযোগিতায় হয়েছে। বিএসইসি সরকারের বিভিন্ন মহলকে সুবিধা দিতে বাজারে এত বেশি হস্তক্ষেপ করেছে; যা বলার মতো নয়। এমন কিছু নির্দেশ সকালে এক রকম এসেছে, বিকেলে আরেক রকম। ২০১০ সালের ধসের পর দুটি কমিশন বাজার দেখভাল করছে, তারাই ভুয়া কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছে। প্লেসমেন্ট বাণিজ্য করায় উৎসাহিত করেছে। আর শেয়ার কারসাজিতে জড়িতদের দায়মুক্তি দিয়েছে। বাজার পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। তার ফলই হচ্ছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার, এশিয়ার খারাপ বাজারের একটি।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত বছরে অনিয়মের কারণে পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা এখন স্তব্ধ হয়ে আছেন। কারণ, ২০১০ সালের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি; বরং তদন্ত প্রতিবেদনে যাঁদের নাম এসেছিল, তাঁদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতি শুধু বিনিয়োগকারীদেরই নয়; বরং বাজার মূলধনের দিক থেকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে দেশের পুঁজিবাজার।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ী বলছেন, পুঁজিবাজারে কারসাজির মাধ্যমে লেনদেন হয়। ৫৩ দশমিক ১ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন, বাজার পরিচালনায় বিএসইসির কার্যক্রমে দুর্বলতা রয়েছে। বাজারের ৫০ শতাংশ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম রয়েছে। এ ছাড়া আইপিওর মাধ্যমে বাজারে আসা কোম্পানির মধ্যে ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ দুর্বল কোম্পানি। দুর্বল কোম্পানি আসার শীর্ষে থাকা বছরটি হলো ২০২২ সাল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে ১৫ বছরের দুর্নীতি, অনিয়ম তুলে ধরায় কমিটিকে ধন্যবাদ। আগের সরকারের সময় দুর্বল কোম্পানিকে আইপিও অনুমোদন না দেওয়ার পাশাপাশি শেয়ার কারসাজি চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সব স্টেকহোল্ডার কথা বলেছি, কিন্তু কর্ণপাত করেনি; বরং নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করে অধ্যাপক খায়রুল হোসেন এবং শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের কমিশন অসাধু চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে খারাপ কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছেন। শেয়ার কারসাজি চক্রকে দায়মুক্তিও দিয়েছেন। পুঁজিবাজার খারাপ হওয়ার পেছনে এই দুই ব্যক্তি দায়ী। আমি তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত বছরে পুঁজিবাজারে ২০৫ প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীর মধ্যে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। বাজারের মধ্যস্থতাকারী দেউলিয়া হয়েছে, তাদের ইক্যুইটি ৩০ হাজার কোটি টাকা নেতিবাচক হয়েছে। যারা ব্যাংক খাতের অপরাধী, তারা পুঁজিবাজারে আস্থা নষ্ট করার পেছনেও ছিল।

কারসাজি সম্পর্কে শ্বেতপত্রে বলা হয়, শক্তিশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা কীভাবে শেয়ারের দাম কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক ক্ষতি করে, তা এই বিপর্যয়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। জনরোষ এবং তদন্ত সত্ত্বেও এই কারসাজির পেছনের মূল খেলোয়াড়দের অনেকে রাজনৈতিক সুরক্ষায় বিচার এড়িয়ে গেছেন।

কীভাবে পুঁজিবাজারে কারসাজি করা হয়, সে বিষয়ে শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, বেশ কিছু প্রভাবশালী বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে নিজেদের মধ্যে একের পর এক লেনদেন করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়ায়। তারা ‘টার্গেটেড’ কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন করে, যেখানে কিছু বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনেন। এভাবেই ওই কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের সক্রিয় চেহারা দেখানো হয়। বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় এমনভাবে কারসাজি করা হয়, যাতে কোম্পানির মূল্যায়ন বোঝা না যায়।

শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কিছু বড় মিউচুয়াল ফান্ড দখল করেছে। এ ক্ষেত্রে বিএসইসি অন্যদিকে তাকিয়ে ছিল। খায়রুল কমিশন বন্ধ থাকা মিউচুয়াল ফান্ডের সময়কাল অতিরিক্ত ১০ বছর বর্ধিত করে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে নামে।

শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মার্জিন ঋণের অনুপাত বাড়ানোর নিয়ম করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উত্থানে ইন্ধন দেওয়া হয়। বিএসইসি প্রায়ই শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিকে উপেক্ষা করে সূচক বজায় রাখার চেষ্টা করে। যখনই দাম কমতে শুরু করে, তখনই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকলাপ শুরু হয়। সবচেয়ে বিতর্কিত ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে পুঁজিবাজারের সুনামকে কলঙ্কিত করেছে। এর মাধ্যমে ভালো কোম্পানির লেনদেন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাজারে কারসাজিকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শ্বেতপত্রের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সবাই পুঁজিবাজারে গত ১৫ বছর কী হয়েছিল, তা জানতে পারল। বিগত সময়ের অরাজকতার ফলে বিনিয়োগকারী এবং পুঁজিবাজার যে ক্ষতির সম্মুখীন হলো, তা পোষাতে সরকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। নতুন পরিকল্পনায় বাজার কীভাবে ভালো রাখা যায়, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো যায়, সেই নির্দেশনা থাকতে হবে। তাহলেই আমরা বিনিয়োগকারী আনতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাব এ তথ্য জানায়।

ক্যাব জানায়, গতকাল রোববার বিএসটিআইয়ের কাউন্সিল সভা শেষে আয়োজিত এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ক্যাবের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ও বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া ও বিএসটিআইয়ের কাউন্সিলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে মানসম্মত ও নিরাপদ পণ্য নিশ্চিতকরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও তদারকি কার্যক্রমে সহযোগিতা, নকল ও ভেজালবিরোধী উদ্যোগ জোরদার, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ এবং তথ্যভিত্তিক উদ্যোগ যৌথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায্য বাজারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

দেশে মূলধারার বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি থ্রি-হুইলার রিকশা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে চলাচল করছে এসব যান। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এসব থ্রি-হুইলার নিয়ন্ত্রণে অনেক আওয়াজ উঠছে। কিন্তু কার্যত বন্ধ বা সামনে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে নীতিমালা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই নীতিমালার বাস্তবায়ন হলে থ্রি-হুইলার দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে অর্থনীতির গতি আরও বেগবান হবে।

আজ সোমবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘স্টাডি অন ইন্টিগ্রিটিংস ইলেকট্রনিক থ্রি-হুইলার ইনটু ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়েফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির প্রোগ্রাম সহযোগী মো. খালিদ মাহমুদ বলেন, দেশে লাখ লাখ যানবাহন চলে। কিন্তু নিবন্ধিত আছে মাত্র সাড়ে ২২ হাজার। এর বাইরে থ্রি-হুইলার রিকশা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। সেবা নিচ্ছেন ১১২ কোটি মানুষ, যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এত বড়সংখ্যক যানের রেজিস্ট্রেশন নেই। যারা চালান, তাঁদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ। এতে দক্ষতা বাড়ছে না। মুখের কথায় চলে এসব যান। যদি প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা যায়, তখন একটা আয় পাবে সরকার। আবার নীতিমালার কারণে ক্ষতি কমবে। যাঁরা এর সঙ্গে জড়িত, তাঁদের আয় বাড়বে। যার বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।

খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘নীতিমালা ছাড়া লাখ লাখ থ্রি-হুইলার চলছে। এই গণপরিবহন যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে চলছে। এটার সিস্টেম দাঁড় করাতে হবে। স্ট্রাকচার থাকতে হবে। ব্যাটারি ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করতে হবে। ইলেকট্রনিক যান হওয়ায় পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কীভাবে কার অনুমোদন নিয়ে চলবে, নির্ধারণ করতে হবে। আইনের আওতায় আনা জরুরি। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি দিতে হবে ৷ তখন এলোমেলো চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে। মানুষ উন্নত সেবা পাবে।

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের যানের প্রায় ৪০ লাখ চালক, তাঁদের পরিবারসহ বিশাল জনগোষ্ঠী সুবিধাভোগী। তাঁদের রোড নেটওয়ার্ক, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক সেফটি, এয়ার কোয়ালিটির ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট কাঠামো ও নীতিমালা জরুরি।

অনুষ্ঠানে নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন এবং চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করা এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ না করা; বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধ করতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা; প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত, স্বল্পগতির ও লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস রোড/বাই লেন নির্মাণ করা; ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক জব্দ বন্ধ করা, জব্দ গাড়ি ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়া; চালকসহ সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ করা এবং চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫ জিতল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৪
ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস জিতেছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস জিতেছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) কাছ থেকে এক্সিলেন্স ইন বিজনেস পে-আউট পুরস্কার পেয়েছে নগদ। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা ৪০টি সহযোগী মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানিয়েছে।

এবার দ্বিতীয়বারের মতো ইবিএল এই আয়োজন করেছে। এবারের অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘স্কাইস্ফ্রি: ইবিএল ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫’।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি কনভেনশন হলে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইবিএল তার ব্যবসায়িক সহযোগীদের সম্মাননা জানায়।

অনুষ্ঠানে পুরস্কার দেন ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রেজা ইফতেখার। নগদের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, সহযোগী প্রশাসক আনোয়ার উল্লাহ ও নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া। এ সময় ইবিএলের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আনোয়ার, হেড অব ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস আহসান উল্লাহ চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইবিএলের এবারের আয়োজনে নগদ পে-আউট ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে, কারণ বাংলাদেশের ডিজিটাল লেনদেনকে এগিয়ে নিতে অসামান্য অবদান রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। নগদ পে-আউট সলিউশন ও ইভল্যুশনে তাদের প্রভাব রেখেছে এবং বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় চার দিনের আবাসন মেলার শুরু বুধবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেলার তথ্য জানায় রিহ্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেলার তথ্য জানায় রিহ্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) আয়োজনে ঢাকায় চার দিনব্যাপী আবাসন মেলা ‘রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৫’ আগামী বুধবার শুরু হচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত এবারের মেলায় আবাসন, নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ২২০টি স্টল থাকবে। ২৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিন দিনের সরকারি ছুটি থাকায় এবারের মেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করেন আয়োজকেরা।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানায় রিহ্যাব। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, রিহ্যাব পরিচালক ও মিডিয়া স্টানিং কমিটির চেয়ারম্যান লাবিব বিল্লাহ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের মেলায় মোট ২২০টি স্টল থাকবে। এতে অংশ নিচ্ছে চারটি ডায়মন্ড স্পনসর, সাতটি গোল্ড স্পনসর, ১০টি কো-স্পনসর, ১৪টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস প্রতিষ্ঠান ও ১২টি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। মেলায় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশ টিকিটের মূল্য সিঙ্গেল এন্ট্রি ৫০ টাকা ও মাল্টিপল এন্ট্রি ১০০ টাকা। টিকিট বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ রিহ্যাবের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে। প্রতিদিন রাত ৯টায় র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

রিহ্যাব নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে আবাসন খাত স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত নতুন ড্যাপ ও ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা-২০২৫ আবাসন খাতে নতুন গতি আনবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবাসন খাত শুধু মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করছে না; বরং সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রড-সিমেন্টসহ ২০০টির বেশি লিংকেজ শিল্পের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বর্তমানে নির্মাণ খাতের অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে প্রায় ১৫ শতাংশ এবং এ খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২ কোটি মানুষ।

রিহ্যাব নেতারা বলেন, রিহ্যাব ফেয়ার ক্রেতাদের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এক ছাদের নিচে ফ্ল্যাট ও প্লট কেনাবেচা, গৃহঋণ সুবিধা, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এবং আধুনিক নির্মাণসামগ্রী যাচাইয়ের সুযোগ পাওয়া যায়। ব্যস্ত জীবনে আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠানে ঘুরে তথ্য সংগ্রহের পরিবর্তে এ মেলা ক্রেতাদের জন্য সময় ও সিদ্ধান্ত নেওয়াকে সহজ করে।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন ড্যাপ ও ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা, ২০২৫-এ পুরোনো জটিলতা ও বৈষম্য অনেকাংশে দূর করা হয়েছে। নতুন ড্যাপ ও বিধিমালা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং আবাসন খাতকে দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীল করবে।

তিন দিন ছুটি থাকায় এবারের মেলায় লোকসমাগম অনেক বাড়বে—এমন প্রত্যাশা করেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এই ফেয়ার শুধু একটি প্রদর্শনী নয়; এটি ক্রেতা ও ডেভেলপারদের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের একটি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম। একসঙ্গে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প মান, অবস্থান, সুযোগ-সুবিধা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ রিহ্যাব ফেয়ার ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত