টিকটক তারকা বানানোর লোভ দেখিয়ে নারী পাচার, মূল হোতার স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২১, ২০: ০৯
আপডেট : ০৮ জুন ২০২১, ২০: ১৭

ঢাকা: টিকটকের মডেল বানানো ও উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নারী পাচার করত টিকটককেন্দ্রিক একটি চক্র। এ চক্রের মূল হোতা আশরাফুল ইসলাম ওরফে বস রাফি। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আশরাফুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী আবদুর রহমান শেখ ওরফে আরমান শেখ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার বস রাফিসহ চারজনকে চার দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। অন্যরা হলেন আবদুর রহমান শেখ ওরফে আরমান শেখ, ম্যাডাম সাহিদা ওরফে সাহিদা বেগম ও ইসমাইল সরদার।

তদন্ত কর্মকর্তা দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করতে আবেদন জানান। মহানগর হাকিম সত্যব্রত সিকদার আরমান শেখের ও মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম বস রাফির জবানবন্দি নেন। অন্য দুজনের রিমান্ডের আবেদন না থাকায় তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে ১ জুন অভিযান চালিয়ে যশোর, ঝিনাইদহ ও বেনাপোল থেকে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বস রাফি ও আরমান শেখ স্বীকার করেন, রাফি এই নারী পাচার চক্রের মূল হোতা। কিশোরী–তরুণীদের টিকটক তারকা বানিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনের লোভ দেখাতেন তিনি। প্রথমে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতেন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন রিসোর্টে তাঁদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। ঢাকায় টিকটক হৃদয় বাবুও এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। এসব অনুষ্ঠানে কিশোরী–তরুণীদের মোটিভেট করার পর উচ্চ বেতনে ভারতে চাকরির লোভ দেখানো হতো। ২০১৭ সাল থেকে তাঁরা এইভাবে ভারতে নারী পাচার করে আসছেন।

বস রাফি আদালতকে জানান, তাঁদের তৎপরতা ছিল মূলত রাজধানীর হাতিরঝিলের লেকের পাড়কে ঘিরেই। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কে ৭০/৮০ জনকে নিয়ে এবং সেপ্টেম্বরে গাজীপুরের আফরিন পার্কে টিকটক হ্যাংআউট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন হৃদয়। পরে কুষ্টিয়ায় লালন শাহের মাজারেও এ ধরনের অনুষ্ঠান করার কথা বলে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আরেক চক্রের মাধ্যমে তাঁদের ভারতে পাচার করা হয়।

আরমান শেখ আদালতকে বলেন, তাঁর বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। তিনি ছিলেন এই চক্রের এজেন্ট। তার একটি গ্রুপ আছে বেনাপোল সীমান্তের আশপাশে। ঢাকা থেকে হৃদয় বাবু ও বস রাফিসহ আরও কয়েকজন নিয়মিত নারীদের নিয়ে সীমান্তে পৌঁছে দিতেন। আরমান চক্রের কাজ ছিল তাদের বিভিন্ন বাসায় রাখা। এরপর মূল চক্রের সঙ্গে দরাদরি সম্পন্ন হওয়ার পর তাঁরা ভারতে পাচারের জন্য অন্য একটি গ্রুপের কাছে এই নারীদের তুলে দিতেন। এই চক্রের সঙ্গে আরমান শেখ ২০১৭ সাল থেকে জড়িত বলে আদালতকে জানান।

সূত্রে জানা গেছে, রাফি ও আরমান দুজনই স্বীকার করেছেন, যাঁদের পাচার করা হতো তাঁদের কোনো চাকরি দেওয়া হতো না। বিক্রি করা হতো। ভারতে তাদের দেহব্যবসায় ব্যবহার করা হতো। এই নারীরা সেখানে শারীরিক নির্যাতনেরও শিকার হন।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, দুজনই তাঁদের বেশ কয়েকজন সহযোগীর নাম বলেছেন। তবে গ্রেপ্তার ও তদন্তের স্বার্থে সূত্রটি তাঁদের নাম প্রকাশ করতে  চায়নি।

এদিকে ভারত থেকে ফিরে আসা এক তরুণীর করা মামলায় সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার আমিরুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম মোল্লাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদ পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত