Ajker Patrika

কাটা হলো নিলামের অতিরিক্ত গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক (সাভার) ও সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৩
কাটা হলো নিলামের অতিরিক্ত গাছ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে নিলামের অতিরিক্ত গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়ক প্রশস্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে সড়কের পাশের গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল। সেই সুযোগে অতিরিক্ত গাছ কেটে নিয়েছেন হীরা করপোরেশনের মালিক মীর সাইফুল্লাহ।

প্রাথমিক তদন্তে নিলামের অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে গত সোমবার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গি-কাটিগ্রাম সড়কে ৩১ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ ও সাটুরিয়া-দড়গ্রাম সড়কের একপাশে ৫ হাজার ৮৫০ মিটার সড়ক ৫ ফুট করে প্রশস্ত করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বর্তমান পাকা সড়ক থেকে পাঁচ ফুটের মধ্যে থাকা ৫৪৩টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিলামে বিক্রি করে।

এর আগে নিলামের গাছ চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ার হীরা করপোরেশনের মালিক মীর সাইফুল্লাহ নিলামে অংশ নিয়ে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় ওই সব গাছ কিনে নেন। কিন্তু হীরা করপোরেশনের মালিক শর্ত ভঙ্গ করে নিলামের অতিরিক্ত গাছ কেটে নেয়।

জানা গেছে, গত বছর অক্টোবর মাসে নিলাম অনুমোদন হওয়ার পর থেকে হীরা করপোরেশনের লোকজন উভয় প্রকল্পের গাছ কাটতে শুরু করেন। তাঁরা চিহ্নিত করে দেওয়া গাছের পাশাপাশি অতিরিক্ত গাছ কেটে নেন। এভাবে সাটুরিয়া-দড়গ্রাম সড়কের একপাশ থেকে নিলামবহির্ভূত দেড় শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া হয়, যার মূল্য কয়েক লাখ টাকা।

বিষয়টি জানতে পেরে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী এ এফ এম তৈয়াবুর রহমান গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এক পত্রে নিলামকারীকে নিলামের গাছ কাটা বন্ধ রাখতে বলেন। কিন্তু নিলামকারীর লোকজন গাছ কাটা অব্যাহত রাখেন। এরপরও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সাটুরিয়া-দড়গ্রাম সড়কের পাশের বাসিন্দা কুষ্টিয়া গ্রামের শুকুর আলী বলেন, তাঁর বাড়ির পেছন থেকে একটি বড় মেহগনি গাছ কাটা হয়। গাছটি প্রকল্প এলাকার বাইরে পাকা সড়ক থেকে প্রায় আট ফুট দূরে, যা নিলামে বিক্রি করা হয়নি। গাছটির স্থানীয় বাজারমূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা বলে দাবি তাঁর।

পশ্চিম কুষ্টিয়ার মুকুল মিয়ার জমির পাশ থেকে চারটি বড় মেহগনি গাছ কাটা হয়েছে মাসখানেক আগে, যার একটিও প্রকল্প এলাকার ভেতরের না। তাঁর জমির পাশে পাকা সড়ক থেকে আট থেকে ১০ ফুট দূরে থাকা গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।

গাছনগর কবরস্থানের পাশে ১০টি মেহগনি গাছ ছিল। নিলামের কথা বলে মাসখানেক আগে সবক’টি গাছ কেটে নেওয়া হয়।

একই রকম অভিযোগ করেন বিলপুলির আব্দুস সাত্তার। তাঁর জমির পাশ থেকে বেশ কয়েকটি কাঠের গাছ কেটে নিয়ে গেছে, যা পাকা সড়কের ৮ থেকে ১০ ফুট দূরে ছিল।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাটুরিয়া উপজেলা বন কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সহকারী নজরুল ইসলাম গত রোববার সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে গত সোমবার সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনে তাঁরা নিলামের অতিরিক্ত গাছ কেটে নেওয়ার বিষয়টি অবহিত করেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জানতে চাইলে হীরা করপোরেশনের মালিক মীর সাইফুল্লাহ বলেন, তিনি নিলামে গাছ কিনে এক ব্যক্তির কাছে তা বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই ব্যক্তি নিলামের অতিরিক্ত গাছ কেটে নিয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী এ এফ এম তৈয়াবুর রহমান বলেন, বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।

দীর্ঘদিনের ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তৈয়াবুর রহমান কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত