কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা হচ্ছে

মঞ্জুর আহমদ, সিলেট
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪৩
Thumbnail image

সিলেট কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে বখাটে ও ইভ টিজারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ। মহানগরে গ্যাং কালচার রোধে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফ উল্লাহ তাহের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যদের আশ্রয়দাতাদের নামের তালিকাও করা হচ্ছে। তিন স্তরের অপরাধ চক্রের সদস্যদের ডেটাবেইস তৈরি করতে কাজ করছে সিলেট মহানগর পুলিশ।

জানা গেছে, নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে সিলেটের কিশোরেরা। পাড়া-মহল্লায় দল তৈরি করে চলছে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। মাদক সেবন ও বিক্রি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুনসহ নানা অপরাধে জড়িত এসব দলের সদস্যরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের কঠোর নজরদারি এবং পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতাই কিশোর অপরাধ কমিয়ে আনতে পারে।

গত রোববার সিলেট নগরীর বাগবাড়িতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়েছে ওই এলাকার মো. লাল মিয়ার ছেলে তায়েফ আহমদ (১৭) নামে এক কিশোর। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তায়েফের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেডিকেল কলেজসংলগ্ন রাস্তার সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রাখা হয়। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে তাকে ছুরিকাঘাত করে তারই পরিচিত কয়েকজন কিশোর। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে সিলেটে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি। এটি এখন বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে মাদ্রাসাছাত্র আরমান হোসেনকে (১৭) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সিলেটে কিশোর অপরাধীদের হাতে ছুরিকাঘাতে রাজু দাস (২২) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি শহরতলির খাদিমপাড়ায় মা, বোন ও ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে ১৭ বছরের এক কিশোর। এ ছাড়া ২৩ জানুয়ারি শাহপরান থানার খাদিমনগরের একটি ডোবা থেকে ছুরিকাঘাতে নিহত অজ্ঞাত এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ মে বিকেলে দক্ষিণ সুরমা সিলভার সিটি এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের আক্রমণের শিকার হয় মোগলাবাজার থানার শিববাড়ি গোটাটিকরের অমৃকা করের ছেলে অশেষ কর (১৩)।

নিহত আরমানের বাবা আবুল কালাম আজাদ জানান, রাতে ৫ থেকে ৬ জন কিশোর তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায়। এ ঘটনায়ও এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট নগরীর আম্বরখানা, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, শাহি ঈদগাহ, টিবি গেট, টিলাগড়, দক্ষিণ সুরমার কদমতলী, টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, স্টেশন রোড, বন্দরবাজার, শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর, নবাব রোড, সুবিদবাজার, টুকেরবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় কিশোর অপরাধীরা সক্রিয়। উদ্ভট নাম নিয়ে গড়ে তোলা বিভিন্ন দলের অনেক সদস্যই স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি।

তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে কিশোর বয়সের ছিনতাই ও মাদক মামলার আসামিরাও। এলাকায় আড্ডা আর খেলার ছলে অনেক কিশোরই জড়িয়ে পড়ছে গ্যাং কালচারে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কিশোর অপরাধ কমাতে পুলিশের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। এ ছাড়া পরিবারের দেখভালও জরুরি। পরিবারের কর্তাদের খেয়াল রাখতে হবে তাঁদের সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে কী করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত