ভিজিডির সঞ্চয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

অভিজিৎ সাহা, নালিতাবাড়ী
Thumbnail image

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে দুস্থ গোষ্ঠীর উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির ১৮৭ জন কার্ডধারীর এক বছরের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

জনপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা করে মোট ২ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলায় ১৮৭ দুস্থ নারীকে রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে কার্ড দেওয়া হয়। ভিজিডি কার্ডধারী এক ব্যক্তিকে দুই মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়। এর বিপরীতে ২০০ টাকা সঞ্চয় হিসাবে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে জমা করা হতো। পরে এই অর্থ উপজেলা পরিষদের এশিয়া ব্যাংকে জমা করার কথা ছিল।

এভাবে গত এক বছরে ছয়বার চাল উত্তোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একেকজন কার্ডধারী এক বছরে সঞ্চয় হিসাবে ১ হাজার ২০০ টাকা জমা দেন। অধিকাংশ কার্ডধারী সঞ্চয়ের অর্থ তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানের কাছে জমা দেন। সেই টাকা নিয়ম অনুযায়ী এশিয়া ব্যাংকের নালিতাবাড়ী শাখায় জমা রাখার কথা। গত বুধবার ভিজিডির এ কর্মসূচির চাল দেওয়ার কার্যক্রম শেষ হয়।

এরপর গত বৃহস্পতিবার কার্ডধারী ব্যক্তিরা তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা নিতে ইউপিতে যান। এ সময় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল-আল-মামুন কার্ডধারীদের উপজেলা পরিষদ চত্বরের এশিয়া ব্যাংকে খোঁজ নিতে বলেন। পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ব্যাংকে যান। সেখানকার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা রূপনারায়ণকুড়া ইউপির ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের অর্থ জমা দেওয়া হয়নি বলে জানান। পরে তাঁরা ইউএনও খৃস্টফার হিমেল রিছিলের কাছে অভিযোগ করেন। বিষয়টির খোঁজ নিতে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সঞ্চয়ের টাকার কোনো সুরাহা না পেয়ে তাঁরা নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, এই টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকে জমা দিতে ইউপি সচিবের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর কাছেও কয়েকজনের সঞ্চয়ের টাকা রয়েছে। তিনি তাঁদের সেই টাকা দ্রুত দিয়ে দেবেন বলে জানান।

জানতে চাইলে তৎকালীন দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা চেয়ারম্যান নিজে উত্তোলন করেছেন। কার্ডের পেছনে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর রয়েছে। আমাকে চেয়ারম্যান সঞ্চয়ের কোনো টাকা-পয়সা দেননি। তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আমাকে বদলি করা হয়। যদি আমার কাছে টাকা জমা দিতেন তাহলে সেই টাকা তো তিনি রেখে দিতেন।’

উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘অভিযোগটি নিয়ে ভুক্তভোগীরা আমার কাছে এসেছিলেন। সাবেক চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, ভিজিডির কার্ডধারী দুস্থদের সঞ্চয়ের অর্থ আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দ্রুত কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত