ছাত্রলীগ নেতার কবজি বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষ

প্রতিনিধি, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ২০: ২৭
Thumbnail image

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলামের (২৫) ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় পাল্টা হামলায় ওই ইউনিয়নের ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুলের ভাই রায়হান (২৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া বাজার সংলগ্ন হাজিমুদ্দিন কালভার্ট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

রাকিবুল মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাকিবুলের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাকিবুল ও রায়হানকে প্রথমে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহত রাকিবুল জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে সে তেগাছিয়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ সময় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ডান হাতের কবজি কেটে ফেলে ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ও তাঁর ভাই রায়হানসহ বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ ছাড়া তাঁর বাম হাত এবং মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়।

রাকিবুল ইসলামের মামা গাজি মইনুল ইসলাম জানান, রাতে রাকিবুল তেগাছিয়া বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। সেখানে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রায়হান, নবী হোসেন, বাদশা খলিফা, জাকারিয়া জমাদ্দার, রুবেল শিকদার, মাসুম হাওলাদারসহ ১০ / ১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাকিবুলের ওপর হামলা চালায়। তাঁকে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। তাঁর ডান হাত একটি কাঠের ওপর রেখে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তাঁরা।  

এ ব্যাপারে আহত রায়হানের মামা মোমিন বিশ্বাস জানান, দুই বছর আগে রাকিবুল রায়হানকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ নিয়ে একটি মামলা পটুয়াখালী জেলা আদালতে চলমান। ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য রায়হানকে চাপ প্রয়োগ করে রাকিবুল। মামলা প্রত্যাহার না করায় রাকিবুল তাঁর দলবল নিয়ে রায়হানকে বুধবার সন্ধ্যায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।   

অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।  

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে রায়হান জানান, আমি বা আমার কোন আত্মীয় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। বরং রাকিবুল আজকে আমার ওপর হামলা করে জখম করেছে।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাইনুল হাসান বলেন, রাকিবুল ও রায়হান দু’জনের অবস্থাই গুরুতর। রাকিবুলের ডান হাতের কবজি কেটে চামড়া ঝুলে আছে। এ ছাড়া মাথা পিঠে একাধিক জখম রয়েছে। আহত রায়হানের দুই হাতের কাটা চিহ্ন রয়েছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম আশিক তালুকদার জানান, গত বছর মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলামের সঙ্গে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। তারই রেশ ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছে।  

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। রাতে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত