আকাশ নীলের কাছ থেকে গ্রাহকেরা পাবেন ৩২ কোটি টাকা, পরিকল্পনা ছিল দেশ ত্যাগের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২২, ১৬: ০৫

ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন মোটরসাইকেলের অফার দিয়ে যখন রমরমা ব্যবসা করছিলেন। তখন সেটা দেখেই এ ব্যবসায় আসেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীল’। প্রতিটি মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড়ে ৯ হাজার অর্ডারও পেয়ে যান। কিন্তু সেগুলো শোধ না করে টাকা আত্মসাৎ করে দামি গাড়ি, ফ্ল্যাট, জায়গা জমি কেনেন। পরে গ্রাহকের চাপে মুখে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান। র‍্যাব বলছে, পরিবার কেন্দ্রিক ব্যবসা করছিল এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির শেয়ারগুলোও পরিবারের মধ্যে ভাগাভাগি করে রেখেছিলেন তাঁরা। গ্রেপ্তারের পর তিনি নিজেই জানিয়েছেন ৩২ কোটি টাকা পাবেন গ্রাহকেরা। 

গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীলের’ প্রতারণার মূল হোতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান রনিকে গতকাল ফরিদপুর ও রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। পরে আজ সোমবার কারওয়ান বাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন বাহিনীটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

তিনি বলেন, গত ১৮ মার্চ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ভুক্তভোগী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আকাশ নীলের এমডি এবং পরিচালকসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার ছায়া তদন্তে নেমে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে দুটি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ এবং একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। মেলে ২২ মার্চ তারিখে দুবাইয়ে যাওয়ার টিকিটও। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আকাশ নীলের কারসাজির মূল হোতা মশিউর। তাঁর মাথায় অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসার চিন্তা আসে আমাজন, আলীবাবার মত অনলাইনে ব্যবসা দেখে। ২০১৯ সালে আকাশ নীল কোম্পানি নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ তৈরি করে এবং ট্রেড লাইসেন্স নেয়। প্রথমে তাঁরা রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকায় একটি অফিস চালু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কৃষকদের কাছ থেকে শাকসবজি কিনে অনলাইনে হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবসা শুরু করে। পরবর্তীতে ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন মোটরসাইকেলের অফার দিয়ে যখন রমরমা ব্যবসা শুরু করে তখন তিনি এই ধরনের ব্যবসা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০২১ সালের জুন মাসে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন অফার দিয়ে ফের ব্যবসা শুরু করেন। 

আসামিদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, তাঁরা প্রথম ক্যাম্পেইন করেছিল গত বছরে মে মাসে। যেখানে ৩০ শতাংশ ছাড়ে ২ মাসের মধ্যে ২ শতাধিক মোটরসাইকেলের অর্ডার পান। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সেই লোভনীয় ছাড়ে মোবাইল, ইলেকট্রনিকস পণ্য, গৃহস্থালির অন্যান্য পণ্যের অফার দেওয়া শুরু করে। গত সেপ্টেম্বর ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানের ফলে গ্রাহকেরা তাঁদের প্রদানকৃত অর্থ ফেরত চাইতে থাকে। তখন গ্রাহকদের চাপে গত নভেম্বরে অফিস বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয় তাঁরা। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত