‘আমার ছেঁড়া জামাটায় আপনাদের বাংলাদেশ’, নীলক্ষেতে হেনস্তার শিকার তরুণী 

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২২, ২০: ৫৯
আপডেট : ১২ জুন ২০২২, ১৫: ৫৯

রাজধানীর নীলক্ষেতের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হলের ফটকের সামনে এক তরুণী যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। পুলিশ অভিযুক্তকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।

এ ঘটনা নিয়ে ‘এই যে আমার ছেঁড়া জামাটা দেখতেছেন, এটাই আপনাদের বাংলাদেশ!!’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ভুক্তভোগী তরুণী। তিনি একটি বেসরকারি এফএম রেডিও স্টেশনে রেডিও জকি (আরজে) হিসেবে কর্মরত। 

ছবি: ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়াগত বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তরুণী। পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওই হেলমেটধারীকে খুঁজছে পুলিশ। তবে এখনো সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পায়নি বলে জানিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। এখনো সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পাইনি। নিয়মতান্ত্রিকতার মধ্য দিয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করব। আমরা কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। তবে অভিযুক্ত ওই হেলমেটধারীকে খুঁজছি, আমাদের অভিযানের কাজ চলমান।’ 

ভুক্তভোগী তরুণী ফেসবুকে করা পোস্টে উল্লেখ করেন, যৌন হয়রানির পর চলে যাওয়ার সময় ওই বখাটে খুব রাগ নিয়ে তাঁকে কিছু বলছিলেন। কানে হেডফোন থাকায় তিনি কিছুই বুঝতে পারেননি। হেলমেট পরা থাকলেও ওই বখাটের চেহারা দেখেছেন বলে জানান ওই তরুণী। তাঁর দাবি, ওই ব্যক্তিকে সামনাসামনি দেখলে চিনতে পারবেন। 

তরুণী সাংবাদিকদের বলেন, ব্যক্তিগত কারণে বিষণ্ন থাকায় মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটটিও খেয়াল করেননি। তিনি ধানমন্ডিতে ভাইয়ের বাসা থেকে রিকশায় করে পুরান ঢাকায় নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। তবে পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি। 

তরুণী আরও বলেন, ‘আমার হাতে মুঠোফোন ও কানে হেডফোন ছিল। আমার গলায় কোনো ধরনের গয়না ছিল না। এএফ রহমান হলের সামনে পেছন থেকে একটা মোটরসাইকেল আসে। আমার কানে হেডফোন এবং ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে বিষণ্ন থাকায় অন্য কোনো দিকে আমার মনোযোগ ছিল না। মোটরসাইকেলে থাকা হেলমেটধারী ওই ব্যক্তি হঠাৎ এক হাত মোটরসাইকেলে রেখে অন্য হাতে বাঁ পাশ থেকে আমার গায়ে হাত দেয়। জোরে টান দেওয়ার কারণে আমার জামা ছিঁড়ে যায়। তখন আশপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চিৎকার করলেও কেউ সেভাবে খেয়াল করেনি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু উন্মুক্ত তাই পথচারীদের কেউ যদি কোনো বখাটের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মানবিকতার দিক বিবেচনায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতা করবে। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেছি। বাকি বিষয়গুলো পুলিশ প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত