নরসিংদীতে মো. ইসলাম মিয়া (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় শহরের কাউরিয়াপাড়ার হোসেন বাজার এলাকায় ঘটনা ঘটে। নিহত ইসলাম শহরের কাউরিয়াপাড়ার চৈতালপাড়া এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, কাউরিয়াপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রুপ মাদক ব্যবসায় জড়িত। এর একটির নাম ইসলাম গ্রুপ। বেশ কিছুদিন ধরে এই গ্রুপের প্রধান মো. ইসলাম মিয়ার সঙ্গে তাঁরই সহযোগী দেলোয়ার হোসেনের দ্বন্দ্ব চলছিল। গত বৃহস্পতিবার সকালে মো. ইসলাম মিয়ার লোকজন দুই নারীসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে। এর জের ধরেই মো. ইসলাম মিয়াকে কুপানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, সন্ধ্যার একটু আগে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে কাউরিয়াপাড়া পানির ট্যাংকের সামনে এসে নামেন ইসলাম। এ সময় একদল দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে তাঁদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড় দেন ইসলাম। দৌড়ের মধ্যেই তাঁকে লক্ষ্য করে চাপাতি ছুড়ে মারেন দুর্বৃত্তদের একজন। ওই চাপাতি তাঁর শরীরে আঘাত করে। এই অবস্থায়ই তিনি দৌড়ে পার্শ্ববর্তী হোসেন বাজারে চলে যান। দুর্বৃত্তরাও তাঁর পিছু পিছু সেখানে চলে আসেন। কঠোর লকডাউন চলমান থাকার কারণে বাজারে তেমন লোকজন ছিল না। এই সুযোগে বাজারের মধ্যেই তাঁকে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। 

ইসলামের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদী এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। 

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিরুল আমিন জানান, ওই ব্যক্তির সারা শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাঁর পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা ঢাকায় রেফার্ড করি। পরে জেনেছি ঢাকায় নেওয়ার পথে মাধবদী এলাকায় তিনি মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম জানান, এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে। তদন্ত শেষে এই বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।