রাজধানীতে লিভটুগেদারে থাকা তরুণীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, পুলিশ হেফাজতে দুই যুবক

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪, ০১: ২৭
আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ০১: ২০

রাজধানীর উত্তরায় চৈতী মজুমদার (২৫) নামের এক তরুণীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। স্বজনদের দাবি, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর কথিত প্রেমিক অভিষেক দাস (৩২) ও তাঁর বন্ধু সাগরকে (৩১) হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। 

উত্তরা ৫ নং সেক্টরের ৩ নং সড়কের ৪০ নম্বর বাড়িতে শনিবার (৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টায় চৈতীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকৃত মৃত ঘোষণা করেন। 

পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে অভিষেক ও তাঁর বন্ধু সাগরকে হেফাজতে নেয়। 

চৈতী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। সাভারের জিরাবো এলাকার মিলেনিয়াম টেক্সটাইলস সাউদার্ন গার্মেন্টসে প্ল্যানিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন ফতেপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের চিত্তরঞ্জন মজুমদারের মেয়ে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরা ৫ নং সেক্টরের ওই বাসায় স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে দুই মাস ধরে বসবাস করে আসছিলেন চৈতী ও অভিষেক দাস। বাসার মালিক সরকারি প্রকৌশলী মো. শাহিদুল ইসলাম। 

থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চৈতী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে চৈতী অভিষেককে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো। 

ভবনটির আশেপাশের বাসিন্দা ও দোকানদারেরাও একই তথ্য জানিয়েছেন। 

ভবনটির বাসিন্দারা জানান, অভিষেক ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। তাঁর চিৎকার শুনে দরজার তালা ভেঙে চৈতীকে জানালার সঙ্গে চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

চৈতীর বাবা চিত্তরঞ্জন মজুমদার বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার মেয়ে নাই! মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম চৈতী তার বান্ধবীর সঙ্গে থাকে। কিন্তু আসলে যে অন্য ঘটনা, সেটি বুঝতে পারিনি। আমি হত্যার বিচার চাই। এটি শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’ 

এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘নিহতের গলা ছাড়া অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’ 

একই থানার এসআই মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের বাবাও অভিযোগ দিচ্ছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।’ 

এদিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার সময় অভিষেকের বন্ধু সাগর আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘অভিষেক ও চৈতী গার্লফ্রেন্ড–বয়ফ্রেন্ড ছিল। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অভিষেক ফোন দিয়ে বলে একটু ঝামেলা হয়েছে। তুই আয়। পরে আমি এসে দেখি চৈতী নেই!’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত