Ajker Patrika

ভুয়া বিয়ে, বিয়ে এরপর তালাক: গাজীপুরের সাবেক ওসি–এসপির বিরুদ্ধে তরুণীর মামলা

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩: ৩৭
ভুয়া বিয়ে, বিয়ে এরপর তালাক: গাজীপুরের সাবেক ওসি–এসপির বিরুদ্ধে তরুণীর মামলা

সাজানো বিয়ে করে তরুণীকে (১৯) নিয়ে রিসোর্টে রাত কাটান গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম। পরে মামলা থেকে বাঁচতে তাঁকে বিয়ে করেন। কিন্তু তাঁকে নিয়ে সংসার করেননি। পরে তালাক দেন।

এসব অভিযোগে আজ রোববার গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গাজীপুরের পিবিআইকে আদেশ দিয়েছেন। মামলায় সাবেক এসপি, ওসিসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

ওই তরুণীর বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কুমুল্লি এলাকায়।

বাদীর আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালত শুনানি নিয়ে অভিযোগটি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে গাজীপুর পিবিআইকে আদেশ দিয়েছেন।

আসামিরা হলেন জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মো. মিজানুর রহমান, সাবেক পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম, ওসি (ডিবি) দেলাওয়ার হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার মো. আব্দুল করিম।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীকে মানিকগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পরে সৈয়দ মিজানুর ইসলাম গাজীপুরের জয়দেবপুরে বদলি হন। গত ১৭ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ থেকে তরুণী এলে একটি রিসোর্টে তাঁরা রাত কাটান।

রিসোর্টে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে মিজান বলেন, তাঁদের বিয়েটা ভুয়া। তরুণীকে মানিকগঞ্জে ফিরে যেতে চাপ দেন তিনি।

এ সময় তরুণী ৯৯৯–এ কল করলে রিসোর্ট থেকে ডিবি পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে (১৮ জানুয়ারি) তৎকালীন এসপি কাজী শফিকুল আলম ও ডিবির ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে তরুণীকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান।

বিয়ের পর মিজান এক দিনের জন্যও তরুণীর সঙ্গে সংসার করেননি এবং খোঁজখবর নেননি। একপর্যায়ে গত এপ্রিলে তরুণীকে গোপনে একতরফা তালাক দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

তরুণী জানান, রিসোর্ট থেকে পুলিশ উদ্ধার করে তাঁকে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে গেলে তাঁর কাছে সব জেনে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিচার না করে উল্টো মিজানের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ধর্ষণ মামলা থেকে তাঁকে রক্ষা করেন।

পরে পুলিশ সদর দপ্তরে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ওসি–ডিবিকে দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। তদন্ত কমিটি ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা প্রতিবেদন দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

তরুণী অভিযোগ করেন, এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য তাঁদের বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছি। বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আইন মেনে তালাক দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত