Ajker Patrika

সুইডেনে কোরআন পোড়ানো ইরাকি যুবককে গুলি করে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৪৬
সালওয়ান মোমিকা। ছবি: সংগৃহীত
সালওয়ান মোমিকা। ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপের দেশ সুইডেনে ২০২৩ সালে পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন ইরাকি যুবক সালওয়ান মোমিকা। সেই সালওয়ান মোমিকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সুইডিশ গণমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সহিংস প্রতিবাদের সূত্রপাত করা সালওয়ান মোমিকা সুইডেনে গুলিতে নিহত হয়েছেন। ৩৮ বছর বয়সী মোমিকা গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের সোদারতেলিয়ে এলাকায় এক অ্যাপার্টমেন্টে নিহত হন বলে জানা গেছে।

এর আগে, ২০২৩ সালে স্টকহোম কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে কোরআন শরিফের একটি কপি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার পর সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনার আঁচ পড়ে মধ্যপ্রাচ্যেও। এর সূত্র ধরে ইরাকে সুইডিশ দূতাবাসে হামলা হয়। সুইডেনে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়। এমনকি সুইডেন থেকে মোমিকাকে বহিষ্কারের খবরও ছড়িয়েছিল। এর সূত্র ধরে প্রতিবেশী ডেনমার্ক আইন করে কোরআনসহ ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়াকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা।

স্টকহোম পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৪০-এর কোঠায় বয়স এমন এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুইডেনে বসবাসরত ইরাকি নাগরিক মোমিকার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে চারবার ‘একটি নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার’ অভিযোগ আনা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও, ‘আসামিদের একজনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ায়’ তা স্থগিত করা হয়েছে বলে স্টকহোম জেলা আদালত জানিয়েছে।

মোমিকা একাধিকবার ইসলামবিরোধী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছিলেন, যা বহু মুসলিমপ্রধান দেশে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। এ ঘটনার জেরে বাগদাদে অবস্থিত সুইডিশ দূতাবাসে দুই দফা বিক্ষোভ হয় এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হয়।

সুইডিশ সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা-সংক্রান্ত আইনের আওতায় মোমিকাকে ওই বিক্ষোভের অনুমতি দিলেও মোমিকা কোরআন পোড়ান পুড়িয়ে কোটি কোটি মানুষের মনে আঘাত হানেন। তবে পরে সরকার নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর মতো বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করার আইনি উপায় খুঁজে দেখার প্রতিশ্রুতি দেয়।

ইরাকের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের যুবক মোমিকার সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। তাঁর কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরাকি বিক্ষোভকারীরা দেশটিতে সুইডিশ দূতাবাসে ভাঙচুর চালায়। এমনকি দ্বিতীয় দফায় বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে আগুনই ধরিয়ে দেয়।

মোমিকা অভিবাসনপ্রত্যাশী হিসেবে সুইডেনে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরে সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সি তাঁর বসবাসের অনুমতি বাতিল করে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, মোমিকা তাঁর আবেদনের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। সে সময় সালওয়ান মোমিকা বলেছিলেন, তাঁর ইরাকে ফিরতে গেলে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। পরে মোমিকা নরওয়েতে গেলে সেখানে তাঁকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ এবং তাঁকে সুইডেনে ফেরত পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত