Ajker Patrika

সাভারে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের গলাকাটা লাশ: গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া

ঠাকুরগাঁও ও পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ০৩
সাভারে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের গলাকাটা লাশ: গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া

ঢাকার সাভারে স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের সন্তানের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁদের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ায় বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে গতকাল শনিবার তাঁদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত তিনজন হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের গরুড়া (ফুলবাড়ী) গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে মুক্তার হোসেন বাবুল (৪৮), তাঁর স্ত্রী শাহিদা বেগম (৩৫) ও তাঁদের ছেলে মেহেদী হাসান জয় (১২)। স্বামী-স্ত্রী দুজনই আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।  

আজ রোববার নিহতদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। একসঙ্গে ভাই, ভাতিজা ও ভাবিকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ বাবুলের ভাইয়েরা। 

নিহত বাবুলের স্কুলজীবনের বন্ধু ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মান্নান বলেন, ‘বাবুল অভাব-অনটনে বড় হয়েছে। তার বাবা স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। ২০ বছর আগে তিনি মারা যান। ওই সময় বাবুল এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় চলে যায় কাজের সন্ধানে। সেখানে গার্মেন্টসে কাজ নেয় বলে জানি। তবে ছোটবেলা থেকে সে শান্তশিষ্ট ও মিশুক প্রকৃতির ছিল।’ 

বাবুলের বড় ভাই ইউসুফ আলী বলেন, ‘২০০৩ সালে সুমি আক্তার নামে এক গার্মেন্টস কর্মীকে বিয়ে করে বাবুল। ২০০৭ সালে ওই ঘরে তাদের এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। এরপর বাবুলের ওই স্ত্রী কাউকে কিছু না বলে নিখোঁজ হয়ে যায়। তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।’ 

নিহত স্বামী–স্ত্রী ও সন্তানদাম্পত্যজীবনে কলহ ছিল কি না, জানতে চাইলে ইউসুফ আলী জানান, তাদের মধ্যে কখনো ঝগড়া হয়েছে বলে তাঁর জানা নেই। এরপর ২০০৮ সালে শাহিদা আক্তার নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন বাবুল। তাঁকে নিয়ে ঈদ উৎসবে গ্রামে বেড়াতে আসতেন। ছয়-সাত দিন থেকে আবার ঢাকায় চলে যেতেন। 

বাবুলের বড় ভাবি জুলেখা বেগম বলেন, ‘আগের স্ত্রীর রেখে যাওয়া সন্তান মেহেদীকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে লালন করতেন শাহিদা। বিয়ের অনেক বছর পার হলেও তাঁদের এই ঘরে কোনো সন্তান আসেনি। গেল রোজার ঈদে তাঁরা বেড়াতে এসেছিলেন। এ সময় ছেলে মেহেদীকে গ্রামের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস সেভেনে ভর্তি করিয়ে দিয়ে তাঁরা দুজনে ঢাকায় চলে যান। কয়েক মাস পর মেহেদীও বাবা-মাকে দেখতে ঢাকায় গেলে সেখানে থেকে যায়।’ 

বাবুলের প্রতিবেশী খোরশেদ আলী, জহিরুল ইসলাম, নরেশ সরকার, সাইফুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবুলের বাবা আব্দুল হালিম গ্রামের মসজিদের ইমাম ছিলেন। তাঁর চার ছেলে ও তিন মেয়ে। বাবুল ছিলেন সবার ছোট। বসতভিটা ছাড়া তাঁদের কিছুই ছিল না। ২০ বছর আগে খোরশেদ আলী বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। এর পাঁচ বছর পর তাঁর স্ত্রী হামিদা খাতুনও মারা যান। তাঁদের পরিবারে অভাব-অনটন লেগে থাকত। বাবা মসজিদের ইমাম হওয়ার কারণে ছেলেরা চক্ষুলজ্জায় অন্যের বাড়িতে কাজে যেতেন না। বাবুল এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় চলে যান। তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশীদের কখনো বিরোধ ছিল না বলেও দাবি করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত