বালিয়াডাঙ্গীতে এক রাতে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর 

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯: ৫৫
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০: ৫৭

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এক রাতে তিন ইউনিয়নের ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার রাতের কোনো এক সময় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানান বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম। 

ওসি খায়রুল আনাম জানান, উপজেলার ৩ নম্বর ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিণ্ডি গ্রামে ৮টি মন্দিরের ১০টি প্রতিমা, ১ নম্বর পাড়িয়া ইউনিয়নের জাউনিয়া কলেজপাড়ায় ৩টি মন্দিরের ৩টি এবং ২ নম্বর চাড়োল ইউনিয়নের সাহবাজপুর গ্রামের নাথপাড়া মোড়ে ১টি মন্দিরে ১টি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় আজ রোববার বিকেলে সিন্দুরপিন্ডি হরিবাসর পরিচালনা কমিটির সভাপতি যতীন্দ্র নাথ সিংহ একটি মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে। 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অপূর্ব কুমার জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মন্দির পরিচালনা কমিটির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। মন্দিরগুলোতে কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মনসার প্রতিমা ছিল। অনেক মন্দিরে প্রতিমার মাথা, হাত-পা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এসব মন্দিরের বেশির ভাগ চলাচলের রাস্তার ধারে স্থাপন করা। 

ধনতলা ইউনিয়নের পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিন্দুরপিন্ডি মন্দির কমিটির সভাপতি জোতিময় সিংহ বলেন, ‘প্রায় অর্ধশত বছর ধরে আমরা মন্দিরে পূজা করে আসছি। কোনো দিন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুর্বৃত্তদের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় অত্র এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।’ 

খবর পেয়ে আজ রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম, চাড়োর ইউপি চেয়ারম্যান দিলিপ কুমার চ্যাটার্জি, ধনতলা ইউপি চেয়ারম্যান সমর চ্যাটার্জি নুপুর, পাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী রুবেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেবে।’ 

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দেশের শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ ঘটনা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে ঘটিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার কথা বলেন তিনি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৬৫টি দুর্গামণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে, রাস্তার ধারে, বাজারের পাশে কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মনসার অসংখ্য ছোট ছোট মন্দির রয়েছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত