গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুরে গরু চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপরের নিহত হাফিজার রহমানের স্ত্রী মালতী বেগম বাদী হয়ে সাদুল্যাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ে করেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছ সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায়। 

এর আগে গতকাল সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙ্গামোড় (যুগিপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজার রহমান গাইবান্ধা সদর উপজেলার চকমামরোজপুর গ্রামের সলিম উদ্দিনের ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে ওই গ্রামের নুরু মিয়ার বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে ৫ / ৬ জনের একটি দল তিনটি গরু বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী বুঝতে পেরে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে গরু তিনটি ছেড়ে দিয়ে পিকআপভ্যান নিয়ে চোর দল পালিয়ে যায়। পালানোর সময় ওই পিকআপভ্যানটি স্থানীয় কয়েকজনকে চাপা দেয়। এ সময় হাফিজার নামে একজনকে আটক করেন গ্রামবাসী। পরে গ্রামবাসী তাঁকে কৃষক নুরু মিয়ার একটি ঘরে আটকে রেখে পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে খবর দেয়। 

এদিকে এলাকাবাসী জানতে পায়, চোরগুলো শুধু তিনটি গরু নয় এর আগে ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তার একটি বসতঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন মালামালও চুরি করে। এই এসব ঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে আটকে রাখা হাফিজারকে টেনেহিঁচড়ে বের করে গণপিটুনি দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

• সাদুল্যাপুরে চুরির অভিযোগে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চোরের দলের কয়েকজন পিকআপভ্যানটি নিয়ে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনজনকে পথচারীদের চাপা দেয়। আহত ওই তিন ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’ 

এ ব্যাপারে সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, ‘নিহত হাফিজারের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় অসংখ্য চুরি-ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত হাফিজার গ্রামের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’