রাহুল শর্মা, ঢাকা
শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে ১ জানুয়ারি। অথচ এখনো সব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক স্তরের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পাঠ্যবই হাতে পেলেও মাধ্যমিকের অবস্থা নাজুক। মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দু-তিনটি করে পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে, বাকিগুলো আসেনি। এমন সংকটের মধ্যেও বই চলে যাচ্ছে কালো বাজারে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নীলক্ষেতের বই বাজারে গিয়ে মিলেছে পাঠ্যবই। এ বই অবশ্য দুই ধরনের। একটি পিডিএফ থেকে প্রিন্ট করা পাঠ্যবই, অন্যটি ছাপানো পাঠ্যবই।
পরিচয় গোপন করে এক সেট পাঠ্যবই চাইলে এক দোকানদার আগে দাম নির্ধারণের কথা বলেন। বই দেখতে চাইলে বলেন, আগে দাম ঠিক করুন, পরে ‘ভেতর’ থেকে এনে দেব। দাম কেমন এমন– প্রশ্নে তিনি বলেন, পিডিএফ সেট ২ হাজার ৫০০ আর ছাপানো বই ৪ হাজার টাকা।
নীলক্ষেতে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আসিফ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি জানান, সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের জন্য পাঠ্যবই কিনতে এসেছেন। অনেক দরদাম শেষে ৩,৮০০ টাকায় এক সেট ছাপানো বই কিনেছেন তিনি।
বিনা মূল্যের পাঠ্যবই লাইব্রেরিতে বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রায়ই বিভিন্ন লাইব্রেরি ও বইয়ের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার সেট বই জব্দ করা হয়েছে।
গত বুধবার পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে বিনা মূল্যের দুই ট্রাক বই (প্রায় ১০ হাজার) উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই সময় বই বিক্রি ও মজুতের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিনে শেরপুর সদর উপজেলায় বইভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করে পুলিশ। এতে সরকারিভাবে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত মাধ্যমিক পর্যায়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ৯ হাজার সরকারি বই পাওয়া গেছে।
এখনো ৫৪ শতাংশ বই বিতরণ সম্ভব হয়নি : রাজধানী ঢাকার একাধিক বিদ্যালয় এবং সারা দেশে খোঁজখবর নিয়ে পাঠ্যবই বিতরণের নাজুক চিত্রের কথা জানা গেছে। বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্যও বলছে, এখনো ৫৪ শতাংশ বই বিতরণ সম্ভব হয়নি।
ঢাকার একাধিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণির তিনটি, সপ্তম শ্রেণির তিনটি, অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুটি এবং দশম শ্রেণির চার বিষয়ের বই বিতরণ করা হয়েছে। আর প্রাথমিকের বাংলা ভার্সনের সব পাঠ্যবই বিতরণ হয়েছে। তবে ইংরেজি ভার্সনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো আসেনি।
ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুটি অথবা তিনটি করে পাঠ্যবই পেয়েছে। আর প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা বই পেয়েছে। একই অবস্থা মগবাজারে অবস্থিত ইস্পাহানি বালিকা মহাবিদ্যালয়ের। এ বিদ্যালয়েরও মাধ্যমিক শ্রেণির বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো অধিকাংশ বই পায়নি।
ইংরেজি ভার্সনের বিদ্যালয় বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে গিয়ে জানা গেল, চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বই এসেছে। তবে পঞ্চম শ্রেণির বই এখনো পাওয়া যায়নি।
ঢাকার বাইরের চিত্রও মোটামুটি একই রকম। অন্তত ১০টি উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের কোনো শ্রেণিতেই সব বই এখনো পৌঁছায়নি। তবে প্রাথমিক স্তরের অবস্থা তুলনামূলক ভালো।
২০১০ সাল থেকে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছে। এ বছরের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৩০ কোটি ৯৫ লাখ ৪১ হাজার ৪৮৬টি এবং প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই রয়েছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
এনসিটিবির ২২ জানুয়ারির তথ্য বলছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৪৬ শতাংশ পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৭৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি আর এখনো বাকি রয়েছে ১২ কোটির বেশি বই।
এনসিটিবি সূত্র বলছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্র, পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়ায় এবার অনেক দেরি হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বইয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। এতে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অক্টোবরে। কয়েকটি বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া এখনো চলছে। অন্যান্য বছর দরপত্র প্রক্রিয়া জুনে শেষ হয়েছিল। এ ছাড়া এবার মানসম্মত কাগজ ও কালির ব্যাপক সংকট ছিল। সব মিলিয়ে সময়মতো বই ছাপানো শুরু করা যায়নি।
পড়াশোনা চলছে ঢিমেতালে:
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, বই না আসায় এখনো পুরোদমে ক্লাস শুরু করা হয়নি। ফলে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। সব বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাসও হচ্ছে না। অনেক বিদ্যালয়ে দুটি বা তিনটি করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি সময়টুকু খেলাধুলা, স্কাউটিংসহ এ-সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যয় করা হচ্ছে।
ওই শিক্ষকেরা আরও জানান, কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়েবসাইট থেকে পাঠ্যবই ডাউনলোড করে ক্লাস নিচ্ছেন। তবে এতে মনোযোগী হচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিভিন্ন কারণে এবার দেরিতে পাঠ্যবই ছাপানো শুরু হয়েছে। তবে এখন যে গতিতে পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে, তাতে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই পাবে শিক্ষার্থীরা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন দশম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপানোতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এ শ্রেণির বই ছাপানো শেষ হলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বই ছাপানোয় গতি আসবে।’
তবে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন কার্যাদেশ পাওয়া একটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে। ওই সময় প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক বই নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এরপর মার্চে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। সব মিলিয়ে মনে হয় না এপ্রিলের আগে পাঠ্যবই ছাপানো শেষ হবে।
এদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই না পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকে ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বইয়ের পেছনে ছুটছেন। অনেক জায়গায় খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই; যা চড়া দামে কিনছেন অভিভাবকেরা।
শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে ১ জানুয়ারি। অথচ এখনো সব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক স্তরের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পাঠ্যবই হাতে পেলেও মাধ্যমিকের অবস্থা নাজুক। মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দু-তিনটি করে পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে, বাকিগুলো আসেনি। এমন সংকটের মধ্যেও বই চলে যাচ্ছে কালো বাজারে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নীলক্ষেতের বই বাজারে গিয়ে মিলেছে পাঠ্যবই। এ বই অবশ্য দুই ধরনের। একটি পিডিএফ থেকে প্রিন্ট করা পাঠ্যবই, অন্যটি ছাপানো পাঠ্যবই।
পরিচয় গোপন করে এক সেট পাঠ্যবই চাইলে এক দোকানদার আগে দাম নির্ধারণের কথা বলেন। বই দেখতে চাইলে বলেন, আগে দাম ঠিক করুন, পরে ‘ভেতর’ থেকে এনে দেব। দাম কেমন এমন– প্রশ্নে তিনি বলেন, পিডিএফ সেট ২ হাজার ৫০০ আর ছাপানো বই ৪ হাজার টাকা।
নীলক্ষেতে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আসিফ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি জানান, সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের জন্য পাঠ্যবই কিনতে এসেছেন। অনেক দরদাম শেষে ৩,৮০০ টাকায় এক সেট ছাপানো বই কিনেছেন তিনি।
বিনা মূল্যের পাঠ্যবই লাইব্রেরিতে বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রায়ই বিভিন্ন লাইব্রেরি ও বইয়ের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার সেট বই জব্দ করা হয়েছে।
গত বুধবার পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে বিনা মূল্যের দুই ট্রাক বই (প্রায় ১০ হাজার) উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই সময় বই বিক্রি ও মজুতের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিনে শেরপুর সদর উপজেলায় বইভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করে পুলিশ। এতে সরকারিভাবে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত মাধ্যমিক পর্যায়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ৯ হাজার সরকারি বই পাওয়া গেছে।
এখনো ৫৪ শতাংশ বই বিতরণ সম্ভব হয়নি : রাজধানী ঢাকার একাধিক বিদ্যালয় এবং সারা দেশে খোঁজখবর নিয়ে পাঠ্যবই বিতরণের নাজুক চিত্রের কথা জানা গেছে। বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্যও বলছে, এখনো ৫৪ শতাংশ বই বিতরণ সম্ভব হয়নি।
ঢাকার একাধিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণির তিনটি, সপ্তম শ্রেণির তিনটি, অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুটি এবং দশম শ্রেণির চার বিষয়ের বই বিতরণ করা হয়েছে। আর প্রাথমিকের বাংলা ভার্সনের সব পাঠ্যবই বিতরণ হয়েছে। তবে ইংরেজি ভার্সনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো আসেনি।
ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুটি অথবা তিনটি করে পাঠ্যবই পেয়েছে। আর প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা বই পেয়েছে। একই অবস্থা মগবাজারে অবস্থিত ইস্পাহানি বালিকা মহাবিদ্যালয়ের। এ বিদ্যালয়েরও মাধ্যমিক শ্রেণির বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো অধিকাংশ বই পায়নি।
ইংরেজি ভার্সনের বিদ্যালয় বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে গিয়ে জানা গেল, চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বই এসেছে। তবে পঞ্চম শ্রেণির বই এখনো পাওয়া যায়নি।
ঢাকার বাইরের চিত্রও মোটামুটি একই রকম। অন্তত ১০টি উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের কোনো শ্রেণিতেই সব বই এখনো পৌঁছায়নি। তবে প্রাথমিক স্তরের অবস্থা তুলনামূলক ভালো।
২০১০ সাল থেকে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছে। এ বছরের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৩০ কোটি ৯৫ লাখ ৪১ হাজার ৪৮৬টি এবং প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই রয়েছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
এনসিটিবির ২২ জানুয়ারির তথ্য বলছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৪৬ শতাংশ পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৭৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি আর এখনো বাকি রয়েছে ১২ কোটির বেশি বই।
এনসিটিবি সূত্র বলছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্র, পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়ায় এবার অনেক দেরি হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বইয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। এতে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অক্টোবরে। কয়েকটি বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া এখনো চলছে। অন্যান্য বছর দরপত্র প্রক্রিয়া জুনে শেষ হয়েছিল। এ ছাড়া এবার মানসম্মত কাগজ ও কালির ব্যাপক সংকট ছিল। সব মিলিয়ে সময়মতো বই ছাপানো শুরু করা যায়নি।
পড়াশোনা চলছে ঢিমেতালে:
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, বই না আসায় এখনো পুরোদমে ক্লাস শুরু করা হয়নি। ফলে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। সব বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাসও হচ্ছে না। অনেক বিদ্যালয়ে দুটি বা তিনটি করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি সময়টুকু খেলাধুলা, স্কাউটিংসহ এ-সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যয় করা হচ্ছে।
ওই শিক্ষকেরা আরও জানান, কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়েবসাইট থেকে পাঠ্যবই ডাউনলোড করে ক্লাস নিচ্ছেন। তবে এতে মনোযোগী হচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিভিন্ন কারণে এবার দেরিতে পাঠ্যবই ছাপানো শুরু হয়েছে। তবে এখন যে গতিতে পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে, তাতে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই পাবে শিক্ষার্থীরা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন দশম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপানোতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এ শ্রেণির বই ছাপানো শেষ হলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বই ছাপানোয় গতি আসবে।’
তবে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন কার্যাদেশ পাওয়া একটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে। ওই সময় প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক বই নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এরপর মার্চে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। সব মিলিয়ে মনে হয় না এপ্রিলের আগে পাঠ্যবই ছাপানো শেষ হবে।
এদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই না পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকে ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বইয়ের পেছনে ছুটছেন। অনেক জায়গায় খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই; যা চড়া দামে কিনছেন অভিভাবকেরা।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সরাসরি সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ‘ইউসিবিডি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ইয়ার (ইউআইএফওয়াই)’ শীর্ষক একটি প্রোগ্রাম...
৪ ঘণ্টা আগেমাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স (সিপিএস) বিভাগের ৫ শিক্ষক একসঙ্গে অধ্যাপক হয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগেগ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় নামে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি সংস্থা—গ্রামীণ ট্রাস্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করেছে। রাজধানীর উত্তরায় হবে এ বিশ্ববিদ
৮ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) জুতা পরা অবস্থায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ওঠার প্রতিবাদ করায় রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে মার্কেটিং বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ হামলায়...
৯ ঘণ্টা আগে