ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজকে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটি গঠনের এক সপ্তাহের মধ্যে সাত কলেজের স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাস থেকে আসা ২০ সদস্যের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি। ইউজিসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এসব সভায় সবগুলো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে সমস্যা সমাধানে নিজেদের পরামর্শ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ০৭ জানুয়ারি সকাল ও বিকেল দুই বেলায় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসে এই কমিটি। পরেরদিন ০৮ জানুয়ারি মতবিনিময় করে সরকারি বাঙলা কলেজ। একইভাবে ০৯ জানুয়ারি সরকারি তিতুমীর কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ১০ জানুয়ারি ইডেন মহিলা কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল ইউজিসির সঙ্গে মতবিনিময় করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ সভাকে তাদের কার্যক্রমের ‘প্রথম পর্ব’ বলছে কমিটি। দ্বিতীয় পর্বে ঢাবি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে বসবেন তারা।
ঢাকা কলেজের সঙ্গে ইউজিসির মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজটির স্নাতত্তোরের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাত কলেজের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে অন্তত একজন করে টিম বানিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে ডিপার্টমেন্টগুলোর সমস্যা জানানো হয়েছে। সমস্যাগুলো সঙ্গে সঙ্গে রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর ৪–৫টি গ্রুপে বিভক্ত করে সমাধানের পথ কেমন হতে পারে, তা বড় কাগজে লিখতে দেওয়া হয়েছে। এভাবে করে প্রত্যেকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল দাবিকে সামনে রেখে তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা শুনেছেন ও রেকর্ড করেছেন।
আব্দুর রহমান বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটির কর্মপদ্ধতি অসাধারণ। আমরা বিশ্বাস করি, এ কমিটির মাধ্যমে অল্প সময়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন জাতির সামনে ফুটে উঠবে।
এর আগে, সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় গত ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। এ কমিটিকে আগামী এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে ইউজিসি ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, কোনো সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন খোলাখুলি আলোচনা নজিরবিহীন। তবুও আমরা সাহস করে এ উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। কারণ আমরা সমস্যার কথা শুনতে চাই। আমাদের ধারণা, এ শোনার মাধ্যমে একটা কার্যকর সমাধানও উঠে আসতে পারে। আমরা নিজেরা শিক্ষার্থীদের উপর আমাদের নিজেদের কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা যে ওপেন ডিসকাশন শুরু করেছি, আমাদের বিশ্বাস এখান থেকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য একটা উত্তম সমাধান বের করে নিয়ে আসতে পারবো।
দীর্ঘদিন থেকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধীনে অ্যাকাডেমিক পাঠদানে সমন্বয়হীনতা, পরীক্ষার খাতার অবমূল্যায়ন ও ফল বিপর্যয়সহ নানা ধরনের অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করে অধিভুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের দাবি, ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যদিকে ঢাবি শিক্ষার্থীরাও সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চাচ্ছেন। দুপক্ষের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এরপরই মূলত শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশনায় এ সমস্যা সমাধানে গত ৩০ ডিসেম্বর ইউজিসির নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়।
বিশেষজ্ঞ কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি ও ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান বলেন, সাত কলেজ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে, সেটার আমরা ‘প্রথম পর্ব’ শেষ করেছি। এ পর্বে আমরা গত ৭ জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে সাত কলেজের প্রতিটি কলেজ থেকে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। গত ১০ জানুয়ারি এ পর্ব শেষ হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীরা মন খুলে তাদের সমস্যার ও সম্ভাবনার কথা বলেছেন। প্রতিটি মতবিনিময় সভায় কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও পরামর্শগুলো পর্যালোচনা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্বে আমরা ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সাংবাদিকসহ শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবো। এ পর্ব আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে। সাত কলেজের এ সংকট কোন প্রক্রিয়ায় সমাধান সম্ভব, এ বিষয়ে আমরা সব পক্ষের কথা শুনতে চাই। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কার্যকর সমাধান বের করে আনা হবে।’
সাত কলেজের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ ও বাঙলা কলেজ। তবে সভায় সবগুলো কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউজিসিতে তাদের সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সমন্বিত সমাধানের কথা বললেও সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা একক সমাধানের দাবি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ৯ জানুয়ারি সরকারি তিতুমীর কলেজের সঙ্গে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন রাব্বী। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে তার কাছে কলেজটির শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কথা জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউজিসি ডাকে আমরা কমিশনে গিয়েছি। সেখানে ইউজিসি চেয়ারম্যান, সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়েছি। এ সমস্যা সমাধানে প্রস্তাবনাও দিয়েছি। ইউজিসিকে জানিয়েছি ‘সমন্বিত নয়, তিতুমীর কলেজকে একক বিশ্ববিদ্যালয়’ করতে হবে। এটা এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি। এ দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত (৭ দিনের) সময় দেওয়া হয়েছে। ১২–১৯ জানুয়ারি এ সময়ের মধ্যে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবো।
এপ্রিলের আগেই কাজ শেষ করার আশা কমিটির
ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও আমাদের অনেক লম্বা সময় দেওয়া হয়েছে, তবে আমরা কোনো সময় নষ্ট না করে এগিয়ে যাবো। আমার মনে হয়, এ সময়ের আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারবো। এ কমিটি তাদের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আর দীর্ঘ অপেক্ষার মধ্যে রাখতে চাই না। আমরা সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা মঙ্গলজনক হবে... শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে যেটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে– এমন সমাধান বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজকে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটি গঠনের এক সপ্তাহের মধ্যে সাত কলেজের স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাস থেকে আসা ২০ সদস্যের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি। ইউজিসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এসব সভায় সবগুলো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে সমস্যা সমাধানে নিজেদের পরামর্শ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ০৭ জানুয়ারি সকাল ও বিকেল দুই বেলায় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসে এই কমিটি। পরেরদিন ০৮ জানুয়ারি মতবিনিময় করে সরকারি বাঙলা কলেজ। একইভাবে ০৯ জানুয়ারি সরকারি তিতুমীর কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ১০ জানুয়ারি ইডেন মহিলা কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল ইউজিসির সঙ্গে মতবিনিময় করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ সভাকে তাদের কার্যক্রমের ‘প্রথম পর্ব’ বলছে কমিটি। দ্বিতীয় পর্বে ঢাবি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে বসবেন তারা।
ঢাকা কলেজের সঙ্গে ইউজিসির মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজটির স্নাতত্তোরের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাত কলেজের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে অন্তত একজন করে টিম বানিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে ডিপার্টমেন্টগুলোর সমস্যা জানানো হয়েছে। সমস্যাগুলো সঙ্গে সঙ্গে রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর ৪–৫টি গ্রুপে বিভক্ত করে সমাধানের পথ কেমন হতে পারে, তা বড় কাগজে লিখতে দেওয়া হয়েছে। এভাবে করে প্রত্যেকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল দাবিকে সামনে রেখে তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা শুনেছেন ও রেকর্ড করেছেন।
আব্দুর রহমান বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটির কর্মপদ্ধতি অসাধারণ। আমরা বিশ্বাস করি, এ কমিটির মাধ্যমে অল্প সময়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন জাতির সামনে ফুটে উঠবে।
এর আগে, সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় গত ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। এ কমিটিকে আগামী এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে ইউজিসি ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, কোনো সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন খোলাখুলি আলোচনা নজিরবিহীন। তবুও আমরা সাহস করে এ উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। কারণ আমরা সমস্যার কথা শুনতে চাই। আমাদের ধারণা, এ শোনার মাধ্যমে একটা কার্যকর সমাধানও উঠে আসতে পারে। আমরা নিজেরা শিক্ষার্থীদের উপর আমাদের নিজেদের কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা যে ওপেন ডিসকাশন শুরু করেছি, আমাদের বিশ্বাস এখান থেকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য একটা উত্তম সমাধান বের করে নিয়ে আসতে পারবো।
দীর্ঘদিন থেকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধীনে অ্যাকাডেমিক পাঠদানে সমন্বয়হীনতা, পরীক্ষার খাতার অবমূল্যায়ন ও ফল বিপর্যয়সহ নানা ধরনের অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করে অধিভুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের দাবি, ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যদিকে ঢাবি শিক্ষার্থীরাও সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চাচ্ছেন। দুপক্ষের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এরপরই মূলত শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশনায় এ সমস্যা সমাধানে গত ৩০ ডিসেম্বর ইউজিসির নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়।
বিশেষজ্ঞ কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি ও ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান বলেন, সাত কলেজ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে, সেটার আমরা ‘প্রথম পর্ব’ শেষ করেছি। এ পর্বে আমরা গত ৭ জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে সাত কলেজের প্রতিটি কলেজ থেকে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। গত ১০ জানুয়ারি এ পর্ব শেষ হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীরা মন খুলে তাদের সমস্যার ও সম্ভাবনার কথা বলেছেন। প্রতিটি মতবিনিময় সভায় কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও পরামর্শগুলো পর্যালোচনা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্বে আমরা ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সাংবাদিকসহ শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবো। এ পর্ব আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে। সাত কলেজের এ সংকট কোন প্রক্রিয়ায় সমাধান সম্ভব, এ বিষয়ে আমরা সব পক্ষের কথা শুনতে চাই। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কার্যকর সমাধান বের করে আনা হবে।’
সাত কলেজের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ ও বাঙলা কলেজ। তবে সভায় সবগুলো কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউজিসিতে তাদের সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সমন্বিত সমাধানের কথা বললেও সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা একক সমাধানের দাবি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ৯ জানুয়ারি সরকারি তিতুমীর কলেজের সঙ্গে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন রাব্বী। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে তার কাছে কলেজটির শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কথা জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউজিসি ডাকে আমরা কমিশনে গিয়েছি। সেখানে ইউজিসি চেয়ারম্যান, সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়েছি। এ সমস্যা সমাধানে প্রস্তাবনাও দিয়েছি। ইউজিসিকে জানিয়েছি ‘সমন্বিত নয়, তিতুমীর কলেজকে একক বিশ্ববিদ্যালয়’ করতে হবে। এটা এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি। এ দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত (৭ দিনের) সময় দেওয়া হয়েছে। ১২–১৯ জানুয়ারি এ সময়ের মধ্যে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবো।
এপ্রিলের আগেই কাজ শেষ করার আশা কমিটির
ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও আমাদের অনেক লম্বা সময় দেওয়া হয়েছে, তবে আমরা কোনো সময় নষ্ট না করে এগিয়ে যাবো। আমার মনে হয়, এ সময়ের আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারবো। এ কমিটি তাদের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আর দীর্ঘ অপেক্ষার মধ্যে রাখতে চাই না। আমরা সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা মঙ্গলজনক হবে... শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে যেটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে– এমন সমাধান বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো।
এইচএসসি পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন থাকে, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আসন নিশ্চিত করার। কীভাবে একজন ভর্তি-ইচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নেবেন, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সেই পরামর্শ দিচ্ছেন ২০২১-২২ সেশনে ‘ঘ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের...
৬ ঘণ্টা আগেকানাডায় ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফ প্রেসিডেন্টস বৃত্তি ২০২৫-২৬-এর আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দেশটির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
৬ ঘণ্টা আগেইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশের (ইউসিবিডি) অধীনে এখন দেশে বসেই যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ারে (ইউসিএলএএন) সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার সাইবার সিকিউরিটি ডিগ্রির প্রথম ব্যাচ এবং বিজনেস ও মার্কেটিং ডিগ্রির
১৩ ঘণ্টা আগেসোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ডাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তাঁরা উপাচার্যের কার্যালয়ে যান। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে উপরিউক্ত কথা বলেন।
২ দিন আগে