সাখাওয়াত ফাহাদ ও ফারুক ছিদ্দিক
গত ৫ আগস্টের বিশাল রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষাঙ্গনের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে জোরেশোরে। এর মধ্যে সবার নজর থাকে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনের দিকে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হলসহ ক্যাম্পাসজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার কাজ চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, তারা আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। তবে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, প্রশাসনের এ কথা নিছক ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনের বিশদ পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আগে এসব বিষয়ের সমাধান করা দরকার।
ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক ও অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থী, টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী, ক্যাম্পাসভিত্তিক সাংবাদিক সবার মুখেই ডাকসু নির্বাচনের কথা। ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা শিক্ষার্থীদের চায়ের আড্ডার আলোচনার অন্যতম জনপ্রিয় বিষয় এখন ডাকসু।
দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। সেই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। সেবারের নির্বাচনের আগেও ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, ছাত্রনেতাদের কারও কারও ছাত্রত্ব-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে নানা সংস্কারের দাবি উঠেছিল। তবে কোনো রকম সংস্কার ছাড়াই একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেবার। তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন। তখন থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি।
ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ডাকসুসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বেড়েছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের অধিকারের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ডাকসু নির্বাচন চান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডাকসুসহ সারা দেশে ছাত্র সংসদ শুরু হয়ে যাক, এটি আমাদের প্রত্যাশা, কারণ মার্চে রোজা। দীর্ঘ সময় ডাকসু বন্ধ ছিল, সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে নিয়ন্ত্রিতভাবে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন থেকে বেরিয়ে সুন্দর নির্বাচন হোক।’ নির্বাচন আয়োজনের জন্য যৌক্তিক সংস্কারগুলো এ সময়ের মধ্যেই করা সম্ভব বলে মত দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
নির্বাচনের আগে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসন ফেব্রুয়ারির কথা বলেছে। তা হবে তাড়াহুড়ো। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা হওয়া উচিত। সংস্কারের ক্ষেত্র এবং নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন; কিন্তু এসব বিষয়ে কোনো ধরনের আলোচনাই এখন পর্যন্ত হয়নি।’
ছাত্র সংসদ নির্বাচন যত দ্রুত হবে, ছাত্রদের সমস্যাগুলো তত দ্রুত নিরসন হবে বলে মনে করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাকসুর নিয়মনীতির মধ্যে কিছু সংশোধনীর কাজ আছে। এ ছাড়া নির্বাচন কার্যক্রমের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্বাচনের সময়সূচি নিশ্চয়ই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে। অন্তত তিন-চার মাস সময় দিয়ে কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না মন্তব্য করে শিবির নেতা সাদেক আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত বলছি, সবাই বসে একটা গাইডলাইন ঠিক করতে হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্বাচন দেবে, কিন্তু তার জন্য তো প্রস্তুতি, সংস্কারের বিষয় আছে। সেগুলো এখনো শুরু হয়নি।’
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ডাকসুর নীতিমালা এবং ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিবেশের সংস্কারের ওপর জোর দেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষিত সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের গবেষণা, আলোচনা, মতবিনিময় ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। নিশ্চিতভাবে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে সংস্কার সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ‘ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রে পদাধিকার বলে সভাপতি (উপাচার্য) সব মিটিংয়ের অ্যাজেন্ডা ঠিক করে দিতে পারেন; এমনকি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বহিষ্কারও করতে পারেন। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক ধারাগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। ছাত্র সংসদের সভাপতি অবশ্যই ছাত্রনেতৃত্বের মধ্য থেকেই হওয়া উচিত।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছেন, যাতে সব সংগঠন সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে। তাঁর মতে, নির্বাচনের আগে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করে অগণতান্ত্রিক ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষণা ইতিবাচকভাবে দেখছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তবে এ-সংক্রান্ত কার্যক্রমের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসন এ ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখছে না। তাঁরা এমন একটি পলিসির দিকে এগোচ্ছেন, যেখানে একটা গোষ্ঠী ছাড়া বাকিরা মাইনাস হবে।’
প্রশাসন যা যা করেছে
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান পদক্ষেপ বলতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির প্রকৃতি ও ধরন’বিষয়ক একটি কমিটি করেছে। কমিটির আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল মতিন। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি কেমন হবে, তা নিয়ে সুপারিশ করবে। ৯ ডিসেম্বর দুই ধাপে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে কমিটি। তবে ১৯৯০ সালের পরিবেশ পরিষদের চুক্তি অনুযায়ী ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ থাকা ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেওয়ায় সভা ছেড়ে চলে যায় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ)।
ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবার সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ করতে চাই। ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে, বৈধ নেতৃত্ব সৃষ্টি হলে তা কেটে যাবে। আমরা একটা কমিটি করেছি। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি জানতে চাইলে নির্দিষ্ট সময় বলা সম্ভব নয় বলে জানান উপাচার্য। তবে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
গত ৫ আগস্টের বিশাল রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষাঙ্গনের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে জোরেশোরে। এর মধ্যে সবার নজর থাকে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনের দিকে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হলসহ ক্যাম্পাসজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার কাজ চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, তারা আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। তবে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, প্রশাসনের এ কথা নিছক ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনের বিশদ পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আগে এসব বিষয়ের সমাধান করা দরকার।
ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক ও অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থী, টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী, ক্যাম্পাসভিত্তিক সাংবাদিক সবার মুখেই ডাকসু নির্বাচনের কথা। ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা শিক্ষার্থীদের চায়ের আড্ডার আলোচনার অন্যতম জনপ্রিয় বিষয় এখন ডাকসু।
দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। সেই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। সেবারের নির্বাচনের আগেও ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, ছাত্রনেতাদের কারও কারও ছাত্রত্ব-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে নানা সংস্কারের দাবি উঠেছিল। তবে কোনো রকম সংস্কার ছাড়াই একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেবার। তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন। তখন থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি।
ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ডাকসুসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বেড়েছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের অধিকারের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ডাকসু নির্বাচন চান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডাকসুসহ সারা দেশে ছাত্র সংসদ শুরু হয়ে যাক, এটি আমাদের প্রত্যাশা, কারণ মার্চে রোজা। দীর্ঘ সময় ডাকসু বন্ধ ছিল, সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে নিয়ন্ত্রিতভাবে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন থেকে বেরিয়ে সুন্দর নির্বাচন হোক।’ নির্বাচন আয়োজনের জন্য যৌক্তিক সংস্কারগুলো এ সময়ের মধ্যেই করা সম্ভব বলে মত দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
নির্বাচনের আগে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসন ফেব্রুয়ারির কথা বলেছে। তা হবে তাড়াহুড়ো। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা হওয়া উচিত। সংস্কারের ক্ষেত্র এবং নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন; কিন্তু এসব বিষয়ে কোনো ধরনের আলোচনাই এখন পর্যন্ত হয়নি।’
ছাত্র সংসদ নির্বাচন যত দ্রুত হবে, ছাত্রদের সমস্যাগুলো তত দ্রুত নিরসন হবে বলে মনে করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডাকসুর নিয়মনীতির মধ্যে কিছু সংশোধনীর কাজ আছে। এ ছাড়া নির্বাচন কার্যক্রমের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্বাচনের সময়সূচি নিশ্চয়ই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে। অন্তত তিন-চার মাস সময় দিয়ে কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না মন্তব্য করে শিবির নেতা সাদেক আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত বলছি, সবাই বসে একটা গাইডলাইন ঠিক করতে হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্বাচন দেবে, কিন্তু তার জন্য তো প্রস্তুতি, সংস্কারের বিষয় আছে। সেগুলো এখনো শুরু হয়নি।’
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ডাকসুর নীতিমালা এবং ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিবেশের সংস্কারের ওপর জোর দেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষিত সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের গবেষণা, আলোচনা, মতবিনিময় ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। নিশ্চিতভাবে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে সংস্কার সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ‘ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রে পদাধিকার বলে সভাপতি (উপাচার্য) সব মিটিংয়ের অ্যাজেন্ডা ঠিক করে দিতে পারেন; এমনকি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বহিষ্কারও করতে পারেন। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক ধারাগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। ছাত্র সংসদের সভাপতি অবশ্যই ছাত্রনেতৃত্বের মধ্য থেকেই হওয়া উচিত।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছেন, যাতে সব সংগঠন সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে। তাঁর মতে, নির্বাচনের আগে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করে অগণতান্ত্রিক ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষণা ইতিবাচকভাবে দেখছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তবে এ-সংক্রান্ত কার্যক্রমের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসন এ ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখছে না। তাঁরা এমন একটি পলিসির দিকে এগোচ্ছেন, যেখানে একটা গোষ্ঠী ছাড়া বাকিরা মাইনাস হবে।’
প্রশাসন যা যা করেছে
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান পদক্ষেপ বলতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির প্রকৃতি ও ধরন’বিষয়ক একটি কমিটি করেছে। কমিটির আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল মতিন। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি কেমন হবে, তা নিয়ে সুপারিশ করবে। ৯ ডিসেম্বর দুই ধাপে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে কমিটি। তবে ১৯৯০ সালের পরিবেশ পরিষদের চুক্তি অনুযায়ী ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ থাকা ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেওয়ায় সভা ছেড়ে চলে যায় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ)।
ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবার সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ করতে চাই। ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে, বৈধ নেতৃত্ব সৃষ্টি হলে তা কেটে যাবে। আমরা একটা কমিটি করেছি। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি জানতে চাইলে নির্দিষ্ট সময় বলা সম্ভব নয় বলে জানান উপাচার্য। তবে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ গত মঙ্গলবার ‘দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট: বিল্ডিং এ্যা মোর জাস্ট ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেছে। এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
১ দিন আগেঅস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খ্যাতি, গবেষণার আধুনিকতা এবং উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুযোগের কারণে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা দিন দিন সেখানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ ছাড়া স্নাতক শেষে চাকরি পাওয়ার সুযোগ এবং স্থায়ী বাসস্থানের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া আরও আ
১ দিন আগেবাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
১ দিন আগেআইইএলটিএস পরীক্ষায় একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে বাংলাদেশে আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান।
১ দিন আগে