Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ আবার শুরু করেছি’

পেয়ার আহমেদ

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ। সম্প্রতি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর কথাগুলো শুনেছেন ইলিয়াস শান্ত

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩: ০৭

প্রশ্ন: দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় বন্ধের পর গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান শুরু হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কেমন দেখছেন?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি ইউজিসির পরামর্শে ক্লাস শুরু করার ব্যবস্থা করেছি। আমাকে একসঙ্গে অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে হচ্ছে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমি একটি বিভাগের শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেছি। সেখানে আমি শিক্ষার্থীদের চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি দেখেছি। শিক্ষকেরাও নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে আসছেন। আশা করছি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে পুরো ক্যাম্পাস।

প্রশ্ন: স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজায় ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু পরে সেটা শুনেছি বাতিল হয়ে গেছে। ওই জায়গায় আর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি কেন হলো?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকায় এসেছে। পত্রিকা মারফত যত দূর জেনেছি, জমির দলিল এবং প্রাক্কলন মূল্য নিয়ে আইনি জটিলতা ছিল। পরে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, জমির অধিগ্রহণ সরকার বাতিল করেছে।

প্রশ্ন: তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়টি অনুমোদন পেয়েছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নিজ জেলায় হলেও চাঁবিপ্রবি কেন বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠতে পারেনি?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: একটি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দক্ষ জনবল, স্থায়ী অবকাঠামো, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নেই। এখানে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করেনি।

প্রশ্ন: এখন চাঁদপুর শহরের খলিশাডুলি এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। স্থায়ী ক্যাম্পাস আর কত দূর?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী অবকাঠামো না থাকাটা সত্যিকার অর্থেই হতাশার বিষয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্থানীয় সরকার প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ শুরু করেছি। সরকারি এবং স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগিতা পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করা সহজ হবে।

প্রশ্ন: নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে আপনি কোনো তথ্য পেয়েছেন কি না, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ কবে শুরু হতে পারে?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: জেলা প্রশাসক সূত্রে জানতে পেরেছি, পূর্বের জমি অধিগ্রহণ বাতিল হয়েছে, বিধায় নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জমির প্রস্তাবনা পাঠানোর অনুরোধ করেছেন। তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে দ্রুত জমি দেখার কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক বলেছেন, দ্রুততম সময়ে জমি অধিগ্রহণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনে নিজে জমি দেখতে যাবেন। আমি আশা করি, সবার সহযোগিতায় দ্রুত জমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন করতে পারব।

campus-1

প্রশ্ন: আবাসিক হল তো পরে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তো স্থায়ী কোনো অ্যাকাডেমিক ভবনই নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা কীভাবে জীবন ধারণ করছেন?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: স্থায়ী অবকাঠামো না থাকাতে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় জানতে পেরেছি, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের আশপাশে বিভিন্ন বাসায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মেস করে অবাসনের ব্যবস্থা করেছে। তবে আমরা প্রশাসনিকভাবে শিক্ষার্থীদের আবাসনের বিষয়টিও মাথায় রেখে পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী হলের চাহিদা তৈরি করে ইউজিসিতে পাঠিয়েছি।

প্রশ্ন: ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। চাঁবিপ্রবি ভর্তি নিয়ে কী ভাবছে?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: ভর্তি পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

প্রশ্ন: চাঁবিপ্রবি কি গুচ্ছে থাকবে? আমরা দেখেছি, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ঝামেলা লাঘব করেছে। শিক্ষার্থীদের অর্থ সাশ্রয় করছে। যদিও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কিছু অসুবিধাও রয়েছে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা, ইউজিসি এবং অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করব। আমরাও শুনেছি, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমরা আমাদের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

প্রশ্ন: সম্প্রতি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপনা করেছেন। গণিত নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

পেয়ার আহমেদ
পেয়ার আহমেদ

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: গণিত নিয়ে আমার ভাবনায় প্রথম যে বিষয়টি আসে তা হলো, গণিতের ভীতি দূর করা। গণিতকে প্রান্তিক পর্যায়ে সহজ বিষয় হিসেবে ছড়িয়ে দিতে হবে। গতানুগতিক ধারায় গণিত শিক্ষা না দিয়ে গণিতকে সবার জন্য ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা গণিত শেখায়, তারা অনেকেই গণিত বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করেনি। গণিত শেখানোর জন্য গণিত বিষয়ের শিক্ষকই নিয়োগ দিতে হবে। গণিতকে বাস্তবজীবনে এমনভাবে উপযোগী করতে হবে, যাতে একজন দিনমজুর, রিকশাওয়ালাও গণিতকে বাস্তবজীবনে ব্যবহার করতে পারেন।

প্রশ্ন: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে আপনার গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। আপনি বিভিন্ন সেমিনার ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন। আপনার প্রকাশিত বই রয়েছে। শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: আমাদের শিক্ষার্থীরা এখনো প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে রয়েছে। চতুর্থ বর্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রিসার্চ প্রজেক্টে কাজ করে। আমরা রিসার্চে আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য গবেষণার ওপর সেমিনারের আয়োজন করব। রিসার্চ কনফারেন্স আয়োজন করব। গবেষণায় আগ্রহ সৃষ্টির জন্য আমি ফান্ডের ব্যবস্থা করব। শিক্ষকেরা যাতে শিক্ষা ও গবেষণায় মনোযোগী হতে পারেন, এ জন্য তাঁদের প্রয়োজনীয় গবেষণা ভাতার ব্যবস্থা করব। শিক্ষকদের পাঠদান এবং গবেষণার মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করব। যাতে তাঁরা শিক্ষার্থীদের ভালো মানের গবেষণায় যুক্ত করতে পারেন।

প্রশ্ন: চাঁবিপ্রবির সামগ্রিক উন্নয়নে আপনার কী পরিকল্পনা রয়েছে?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কারিকুলাম আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসেপ্ট হবে আন্তর্জাতিক মানের। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাঁবিপ্রবিকে আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে সামনের দিকে নিয়ে আসাই আমার প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চাই। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ইন্টারেস্ট ফ্রি কার লোনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত? গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মন খুলে কথা বলার মতো কোনো শিক্ষক পান না। অনেক শিক্ষার্থী হতাশায় ভোগেন। শেষ পরিণতি হিসেবে অনেকে হতাশা থেকে আত্মহননের পথ বেছে নেন। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুসম্পর্ক নিশ্চিতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হওয়া উচিত সহযোগিতাপূর্ণ। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েই জ্ঞান তৈরি এবং বিতরণে একে অপরকে সহযোগিতা করবেন। আমি ইতিমধ্যে শিক্ষকদের আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্ব সচেতন হওয়া পরামর্শ দিয়েছি। সবাই নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হবে বন্ধুসুলভ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হবে মধুর। যেখানে শিক্ষার্থীরা তার শিক্ষাজীবনে শিক্ষককে পাবেন একজন প্রকৃত অভিভাবক হিসেবে। আমি শিক্ষকদের বলেছি, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের দিকে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষার্থীদের বলেছি, শিক্ষকের কাছ থেকে বৈশ্বিক মানের জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করতে। মান্ধাতার আমলের শিক্ষা প্রদান এবং গ্রহণের দিন শেষ হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হতে হবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত এবং স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৪
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান শাখার প্রথম বর্ষের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধা, শরিফ ওসমান হাদি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন করা হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল জুলাই যোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। যা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয় ও বিষয়গুলো এক থেকে চার বিষয়ে ২০২৫ সালে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয় ও বিষয়গুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরে সাদা কাগজে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে।

আরও বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আরও বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি (চতুর্থ বিষয় ছাড়া) ২ হাজার ৪৩৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ হিসেবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে।কোনো শিক্ষার্থীর নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট ২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যা ‘প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক’ খ্যাত—আইসিপিসির এই রিজিওনাল পর্বটি ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বিইউবিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার গৌরব অর্জন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য ড. এ বি এম শওকত আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের এবং এই আয়োজনের গর্বিত স্পনসরদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশ থেকে বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রামারদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া।’

শওকত আলী আরও জানান, এবারের আয়োজনে সারা বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। মোট ৩১৩টি টিমের ৯৩৯ জন মেধাবী প্রোগ্রামার এই চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন, যা বাংলাদেশে আইসিপিসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য মো. শামসুল হুদা এফসিএ।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর আরসিডি (RCD) এবং বিইউবিটির সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান এবং আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ও এনএসইউর ইসিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল লায়েস এম এস হক।

এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস বিচারক (২০০৩-২০১৮) শাহরিয়ার মঞ্জুর এবং বিইউবিটির প্রকৌশল ও ফলিতবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের ‎আসন্ন নির্বাচনে ক্যাম্পাসে প্রচার শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তফসিল অনুযায়ী টানা ১৩ দিন চলবে এই প্রচার। তবে প্রচার শুরুর পর তিন দিন পার হলেও প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।

‎‎তফসিল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর। প্রচারণার ১৩ দিন সময়ের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচারণায় বাধার অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা।

‎‎শিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল’ থেকে ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যালট নম্বর না থাকায় প্রচার ও পেপার ছাপাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নাম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

‎ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল’ থেকে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচার ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণিত হয়। দ্রুত ব্যালট নম্বর প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‎স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দায়িত্বহীন। প্রার্থিতা ও আচরণবিধি-সংক্রান্ত অভিযোগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি ব্যালট নম্বর না দেওয়ায় প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

‎‎এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রার্থীদের নাম সংশোধনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন এসেছে অনেকগুলো। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নাম সংশোধন বা নিকনেম রাখার জন্য কাজ করছি। ফলে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’

‎এর আগে ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহারকৃত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর, ভোট গণনা ৩০ ডিসেম্বর (ভোট গ্রহণ শেষে) এবং ফলাফল ঘোষণা ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত