অনলাইন ডেস্ক
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নারীর সম-অধিকার, সমসুযোগ, এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’। ১৯০৯ থেকে ১৯১১ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে দিবসটি উদ্যাপন করা শুরু হয়। পরে তৎকালীন বামপন্থী শিবিরের সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোও দিনটি ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা শুরু করে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে দিবসটি উদ্যাপন করে আসছে। বর্তমানে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান প্রশংসনীয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা এই দিবসটি নিয়ে জানিয়েছেন তাঁদের ভাবনার কথা।
এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর জয়জয়কার নেই
নারী দিবসের সূচনা হয়েছিল তাঁদের আর্থিক ও সামাজিক অধিকার রক্ষা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে। সেই সময় থেকে নারীর ক্ষমতায়ন যেমন হয়েছে, তেমনি তাঁরা প্রমাণ করতে পেরেছেন, তাঁরা চাইলে সবই করতে পারেন। শিক্ষা, সাহিত্য, ব্যবসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি—এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর জয়জয়কার নেই। তবু এখনো নারীর সম-অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এখনো নারীদের বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয়। এখনো কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নারীরা যেমন আর্থিক বৈষম্যের শিকার হন, তেমনি হয়রানির শিকার হন। নারীকে এখনো ভিন্ন চোখে দেখা হয়। তাই এবারের নারী দিবসের থিম হলো ‘ইন্সপায়ার ইনক্লুশান’। এটি নারীর সম-অধিকার অর্জনে অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয়। এটি বাধার প্রাচীর ভেঙে ফেলে এমন একটি পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানায়, যেখানে নারীর সত্যিকার মূল্যায়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। আমরা চাই, নারী দিবসে শুধু একটি দিন নয়, বরং সব সময়ের জন্য নারী অধিকার রক্ষায় সচেতন হই, আর নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াই।
কিবো মাহজেবিন খান
শিক্ষার্থী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
নারীর অধিকার নিশ্চিতেই নারী দিবস পাবে পূর্ণতা
দেবী, ঈশ্বরী, মা—এই তিন রূপেই নারিত্বের প্রকাশ ঘটে। নিজেদের স্বভাবসুলভ শান্ত ও মহিমান্বিত রূপে যেমন সবাইকে মোহিত করে, একইভাবে রুদ্রমূর্তি যুগ যুগ ধরে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় দৃঢ় চিত্তে। নারী দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সেই নারীদের, যাঁরা তাঁদের সর্বস্ব দিয়ে আমাদের পৃথিবীকে করেছে সমুন্নত।
আজকের এদিনে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় নারী দিবস। ১৯১১ সাল থেকে দিবসটি উদ্যাপন শুরু হলেও ঘটনার মূল সূত্রপাত ঘটে ১৮৫৭ সালে। এদিনে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। ফলস্বরূপ তাঁদের ওপর নেমে আসে নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের একটি নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন পালন করা হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে।
নারী দিবসে নারী অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি সবাইকে মনে রাখতে হবে। নারী অধিকার নিশ্চিতকরণে সবাই সচেষ্ট থাকলেই নারী দিবস পাবে পূর্ণতা।
সালমা নাবিলা সুলতান
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নারীরা
একটা সময় ছিল, যখন নারীদের কেউ আলাদাভাবে গণ্য করত না। গ্রিক সভ্যতায় নারীরা ছিল শুধুই পণ্যের মতো। অথচ গ্রিক সভ্যতাকে গণ্য করা হয় শতাব্দীর সেরা সভ্যতাগুলোর একটি হিসেবে। কিন্তু দিন পাল্টেছে, পাল্টেছে মানুষের মন মানসিকতাও। নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণে বিশ্বব্যাপী এগিয়ে এসেছে সচেতন মানুষেরা। নারীর অধিকার আদায়ে জাতিসংঘের রয়েছে বিরাট অবদান। এ ছাড়া অবদান রেখেছেন মালালা ইউসুফজাই, নাদিয়া মুরাদ, নার্গিস মোহাম্মদী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বেগম রোকেয়াসহ আরও অনেকে। জার্মান রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিনের উদ্যোগে প্রতিবছর ৮ মার্চ সারা বিশ্বে পালিত হয় নারী দিবস। নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনে প্রণীত হয়েছে সিডও সনদ। আজ নারীরা সব পদক্ষেপে পরিচয় দিচ্ছেন নৈপুণ্যের। পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলস, গড়ে তুলছেন ভারসাম্যপূর্ণ, সুস্থ ও সুন্দর সমাজ। এভাবে সমাজের বজ্র শিকল ভেঙে নারীদের এই অগ্রযাত্রা চলতে থাকুক, সমাজে নিজেদের পছন্দমতো প্রতিষ্ঠা পাক, জয়তু নারী!
রাদিয়া শানজান ইশমা
শিক্ষার্থী, কুমুদিনী সরকারি কলেজ, টাঙ্গাইল
নারী এগিয়ে যাওয়ার অর্থই হলো দেশ এগিয়ে যাওয়া
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের পেছনে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস থাকলেও বর্তমানে সব নারীর শক্তি। নারীরা এখন নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন। লড়াই করছে সমাজে এবং এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর। নারীকে বাদ দিয়ে পৃথিবীকে ভাবা যায় না। নারী ছাড়া প্রতিটি ঘর যেন অচল। একটা পরিবারে নারীর অবদান অপরিসীম। নারী এক অনুপ্রেরণার নাম। অথচ একজন নারী কতটুকু নিরাপদ আমাদের সাধারণ মানুষের ভিড়ে! শকুনের অশুভ চোখের মতো নারীও খারাপ নজরের শিকার হয় প্রতিনিয়ত। নির্যাতিত হয় নিজ ঘরে, ধর্ষিত হয় পথেঘাটে। নারী এখনো অনিরাপদ। তবু জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে নেই নারী, অটুট নিজ অধিকারের জন্য, নিজ সম্মানের জন্য। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিশ্বের সব নারীকে জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। নারীর এগিয়ে যাওয়ার অর্থই হলো সমাজ তথা দেশ এগিয়ে যাওয়া। নারী সম্মান এবং সম্পূর্ণ অধিকারের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে, এমনটা প্রত্যাশা।
তারানা তানজিনা মিতু
শিক্ষার্থী, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি কোনো অংশেই আজ নারী পিছিয়ে নেই
১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেত্রী ক্লারা জেটকিন আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণা দেন। ১৯৭৫ সালে মেক্সিকোতে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিনে নারী জাগরণ ও সংগ্রামী নারীদের কারুকাজ উন্মোচন করা হয়। নারীরা জাতীয়, পেশাগত, ভাষাগত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কৃতিত্বকে তুলে ধরেন। নারীরা তাঁদের লিঙ্গবিষয়ক সমতা, প্রজনন অধিকার, নারী নির্যাতন ও নারীর সমান অধিকার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর জোর দেন। প্রতিটি নারী তাঁর স্বাবলম্বী হওয়ার অধিকার রাখেন। নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে সমষ্টিগত পদক্ষেপ এবং সহযোগিতার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে নারী দিবস। এখনো সমাজে ও গ্রাম্য এলাকায় নারীদের হেয় করে দেখা হয়। তাঁদের চাহিদার গুরুত্ব দেওয়া হয় না। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে নারীদের প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বিচ্যুত করা হয়। লিঙ্গবৈষম্যের মাধ্যমে সমাজের অনেক পুরুষ নারীদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকেন। নারী দিবসটি এ কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি কোনো অংশেই আজ নারী পিছিয়ে নেই। প্রতিটি জায়গায় নারী তাঁর সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান রেখেছেন।
মমতাজ জাহান মম
শিক্ষার্থী, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
নারীদেরও আছে নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার
এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে পুরো বিশ্বের মানুষ। শ্রমিক আন্দোলন থেকেই উদ্ভূত হয় নারী দিবসের ধারণা। পরবর্তীকালে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায় এবং প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী উদ্যাপিত হতে থাকে। ক্লারা জেটকিন, যাঁর হাত ধরে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণা প্রতিষ্ঠা পায়। একজন নারী মা, বোন ও স্ত্রী—এই পরিচয়ের বাইরে তাঁকে একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। তাঁরও আছে নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের অধিকার। কেননা, নারী ঘরে বা বাইরে যা করছেন, সেই পরিবারের জন্য তা কোনো অংশেই একজন পুরুষের চেয়ে কম নয়। বরং নারীকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে। আমরাই সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারি, যেখানে নারী-পুরুষ সবাই মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। আনন্দ-বেদনায় একে অন্যের পাশে থাকবে। শুধু নারী দিবস বলেই একটি নির্দিষ্ট দিনে নারীদের নিয়ে ভাবব, তাঁকে সম্মান দেব, তা নয়। নারীকে তাঁর সদিচ্ছা পূরণের অধিকার, তাঁকে ভাবতে শিখি স্বতন্ত্র একজন মানুষ হিসেবে।
নুসরাত জাহান ফিমা
শিক্ষার্থী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নারীর সম-অধিকার, সমসুযোগ, এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’। ১৯০৯ থেকে ১৯১১ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে দিবসটি উদ্যাপন করা শুরু হয়। পরে তৎকালীন বামপন্থী শিবিরের সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোও দিনটি ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা শুরু করে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে দিবসটি উদ্যাপন করে আসছে। বর্তমানে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান প্রশংসনীয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা এই দিবসটি নিয়ে জানিয়েছেন তাঁদের ভাবনার কথা।
এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর জয়জয়কার নেই
নারী দিবসের সূচনা হয়েছিল তাঁদের আর্থিক ও সামাজিক অধিকার রক্ষা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে। সেই সময় থেকে নারীর ক্ষমতায়ন যেমন হয়েছে, তেমনি তাঁরা প্রমাণ করতে পেরেছেন, তাঁরা চাইলে সবই করতে পারেন। শিক্ষা, সাহিত্য, ব্যবসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি—এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর জয়জয়কার নেই। তবু এখনো নারীর সম-অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এখনো নারীদের বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয়। এখনো কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নারীরা যেমন আর্থিক বৈষম্যের শিকার হন, তেমনি হয়রানির শিকার হন। নারীকে এখনো ভিন্ন চোখে দেখা হয়। তাই এবারের নারী দিবসের থিম হলো ‘ইন্সপায়ার ইনক্লুশান’। এটি নারীর সম-অধিকার অর্জনে অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয়। এটি বাধার প্রাচীর ভেঙে ফেলে এমন একটি পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানায়, যেখানে নারীর সত্যিকার মূল্যায়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। আমরা চাই, নারী দিবসে শুধু একটি দিন নয়, বরং সব সময়ের জন্য নারী অধিকার রক্ষায় সচেতন হই, আর নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াই।
কিবো মাহজেবিন খান
শিক্ষার্থী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
নারীর অধিকার নিশ্চিতেই নারী দিবস পাবে পূর্ণতা
দেবী, ঈশ্বরী, মা—এই তিন রূপেই নারিত্বের প্রকাশ ঘটে। নিজেদের স্বভাবসুলভ শান্ত ও মহিমান্বিত রূপে যেমন সবাইকে মোহিত করে, একইভাবে রুদ্রমূর্তি যুগ যুগ ধরে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় দৃঢ় চিত্তে। নারী দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সেই নারীদের, যাঁরা তাঁদের সর্বস্ব দিয়ে আমাদের পৃথিবীকে করেছে সমুন্নত।
আজকের এদিনে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় নারী দিবস। ১৯১১ সাল থেকে দিবসটি উদ্যাপন শুরু হলেও ঘটনার মূল সূত্রপাত ঘটে ১৮৫৭ সালে। এদিনে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। ফলস্বরূপ তাঁদের ওপর নেমে আসে নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের একটি নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন পালন করা হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে।
নারী দিবসে নারী অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি সবাইকে মনে রাখতে হবে। নারী অধিকার নিশ্চিতকরণে সবাই সচেষ্ট থাকলেই নারী দিবস পাবে পূর্ণতা।
সালমা নাবিলা সুলতান
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নারীরা
একটা সময় ছিল, যখন নারীদের কেউ আলাদাভাবে গণ্য করত না। গ্রিক সভ্যতায় নারীরা ছিল শুধুই পণ্যের মতো। অথচ গ্রিক সভ্যতাকে গণ্য করা হয় শতাব্দীর সেরা সভ্যতাগুলোর একটি হিসেবে। কিন্তু দিন পাল্টেছে, পাল্টেছে মানুষের মন মানসিকতাও। নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণে বিশ্বব্যাপী এগিয়ে এসেছে সচেতন মানুষেরা। নারীর অধিকার আদায়ে জাতিসংঘের রয়েছে বিরাট অবদান। এ ছাড়া অবদান রেখেছেন মালালা ইউসুফজাই, নাদিয়া মুরাদ, নার্গিস মোহাম্মদী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বেগম রোকেয়াসহ আরও অনেকে। জার্মান রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিনের উদ্যোগে প্রতিবছর ৮ মার্চ সারা বিশ্বে পালিত হয় নারী দিবস। নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনে প্রণীত হয়েছে সিডও সনদ। আজ নারীরা সব পদক্ষেপে পরিচয় দিচ্ছেন নৈপুণ্যের। পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলস, গড়ে তুলছেন ভারসাম্যপূর্ণ, সুস্থ ও সুন্দর সমাজ। এভাবে সমাজের বজ্র শিকল ভেঙে নারীদের এই অগ্রযাত্রা চলতে থাকুক, সমাজে নিজেদের পছন্দমতো প্রতিষ্ঠা পাক, জয়তু নারী!
রাদিয়া শানজান ইশমা
শিক্ষার্থী, কুমুদিনী সরকারি কলেজ, টাঙ্গাইল
নারী এগিয়ে যাওয়ার অর্থই হলো দেশ এগিয়ে যাওয়া
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের পেছনে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস থাকলেও বর্তমানে সব নারীর শক্তি। নারীরা এখন নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন। লড়াই করছে সমাজে এবং এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর। নারীকে বাদ দিয়ে পৃথিবীকে ভাবা যায় না। নারী ছাড়া প্রতিটি ঘর যেন অচল। একটা পরিবারে নারীর অবদান অপরিসীম। নারী এক অনুপ্রেরণার নাম। অথচ একজন নারী কতটুকু নিরাপদ আমাদের সাধারণ মানুষের ভিড়ে! শকুনের অশুভ চোখের মতো নারীও খারাপ নজরের শিকার হয় প্রতিনিয়ত। নির্যাতিত হয় নিজ ঘরে, ধর্ষিত হয় পথেঘাটে। নারী এখনো অনিরাপদ। তবু জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে নেই নারী, অটুট নিজ অধিকারের জন্য, নিজ সম্মানের জন্য। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিশ্বের সব নারীকে জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। নারীর এগিয়ে যাওয়ার অর্থই হলো সমাজ তথা দেশ এগিয়ে যাওয়া। নারী সম্মান এবং সম্পূর্ণ অধিকারের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে, এমনটা প্রত্যাশা।
তারানা তানজিনা মিতু
শিক্ষার্থী, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি কোনো অংশেই আজ নারী পিছিয়ে নেই
১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেত্রী ক্লারা জেটকিন আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণা দেন। ১৯৭৫ সালে মেক্সিকোতে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিনে নারী জাগরণ ও সংগ্রামী নারীদের কারুকাজ উন্মোচন করা হয়। নারীরা জাতীয়, পেশাগত, ভাষাগত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কৃতিত্বকে তুলে ধরেন। নারীরা তাঁদের লিঙ্গবিষয়ক সমতা, প্রজনন অধিকার, নারী নির্যাতন ও নারীর সমান অধিকার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর জোর দেন। প্রতিটি নারী তাঁর স্বাবলম্বী হওয়ার অধিকার রাখেন। নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে সমষ্টিগত পদক্ষেপ এবং সহযোগিতার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে নারী দিবস। এখনো সমাজে ও গ্রাম্য এলাকায় নারীদের হেয় করে দেখা হয়। তাঁদের চাহিদার গুরুত্ব দেওয়া হয় না। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে নারীদের প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বিচ্যুত করা হয়। লিঙ্গবৈষম্যের মাধ্যমে সমাজের অনেক পুরুষ নারীদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকেন। নারী দিবসটি এ কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি কোনো অংশেই আজ নারী পিছিয়ে নেই। প্রতিটি জায়গায় নারী তাঁর সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান রেখেছেন।
মমতাজ জাহান মম
শিক্ষার্থী, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
নারীদেরও আছে নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার
এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে পুরো বিশ্বের মানুষ। শ্রমিক আন্দোলন থেকেই উদ্ভূত হয় নারী দিবসের ধারণা। পরবর্তীকালে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায় এবং প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী উদ্যাপিত হতে থাকে। ক্লারা জেটকিন, যাঁর হাত ধরে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণা প্রতিষ্ঠা পায়। একজন নারী মা, বোন ও স্ত্রী—এই পরিচয়ের বাইরে তাঁকে একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। তাঁরও আছে নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের অধিকার। কেননা, নারী ঘরে বা বাইরে যা করছেন, সেই পরিবারের জন্য তা কোনো অংশেই একজন পুরুষের চেয়ে কম নয়। বরং নারীকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে। আমরাই সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারি, যেখানে নারী-পুরুষ সবাই মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। আনন্দ-বেদনায় একে অন্যের পাশে থাকবে। শুধু নারী দিবস বলেই একটি নির্দিষ্ট দিনে নারীদের নিয়ে ভাবব, তাঁকে সম্মান দেব, তা নয়। নারীকে তাঁর সদিচ্ছা পূরণের অধিকার, তাঁকে ভাবতে শিখি স্বতন্ত্র একজন মানুষ হিসেবে।
নুসরাত জাহান ফিমা
শিক্ষার্থী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ ‘ইউআইইউ সিএসই ফেস্ট ২০২৫’ শিরোনামে আন্তকলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্লক চেইন অলিম্পিয়াড, আইসিটি অলিম্পিয়াড, প্রজেক্ট শো, লাইন ফলোয়িং রোবট (এলএফআর), প্রোগ্রামিং কনটেস্টসহ মোট ছয়টি বিষয়ে দুই দি
৩ ঘণ্টা আগেজীবনের প্রতিটি ধাপে ছোট-বড় অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে আপনার অস্তিত্ব শুরু হয়েছিল অসাধারণ জয় দিয়ে। আমরা ৪০ কোটি শুক্রাণুর মধ্যে একমাত্র বিজয়ী হয়ে জন্মেছি।
৩ ঘণ্টা আগেঅনেকে মনে করেন, জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির সময়। কারণ, সামনের চার-পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময়ের পড়ালেখার বিষয় নিশ্চিত করতে হয় এই সময়ে। তাই প্রথমে নির্ধারণ করুন—কী করতে চান, কী নিয়ে এগোতে চান এবং পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান। এভাবে লক্ষ্য ঠিক করুন।
১৬ ঘণ্টা আগেএতক্ষণ প্রশ্নপত্র দেখেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন এবং সম্ভাব্য উত্তর ধরে নিয়েছেন। এখন রেকর্ডিং শোনার পালা। এবার রেকর্ডিং শুনে প্রশ্নপত্রের ওপর নোট নিতে থাকুন। যেহেতু সম্ভাব্য উত্তর কী হবে তা আগে থেকে জানেন, তাই সঠিক উত্তর ধরতে পারা সহজ হবে। তবে যতটা সম্ভব নোট নিতে থাকুন। প্রয়োজন না হলে বাদ দেওয়া যাবে...
১৬ ঘণ্টা আগে