Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

থিয়েটার তারকা হওয়ার জায়গা না, ভালো মানুষ হওয়ার জায়গা

এস আর সম্পদ

২০১২ সালে থিয়েটার আর্ট ইউনিটের মাধ্যমে মঞ্চাঙ্গনে পথচলা শুরু এস আর সম্পদের। এরপর অনেকে মিলে গড়ে তুললেন অনুস্বর নাট্যদল। ‘তিনকড়ি’, ‘স্বপ্নভূক’, ‘হুতাশ মরণ’, ‘রায়মঙ্গল’, ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’ ‘বিবিধ শোক অথবা সুখ’ ও ‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকে প্রশংসিত হয়েছে তাঁর অভিনয়। মঞ্চনাটক প্রসঙ্গে সম্পদের সঙ্গে কথা বলেছেন শ্রাবণী রাখী

শ্রাবণী রাখী

থিয়েটারে এক যুগ পার করলেন। এখন নিজেকে নিয়ে ভাবলে কোন কথাগুলো মনে হয়?

কিশোরবেলার কথা মনে পড়ে। তখন আমরা বুয়েটের আজাদ স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতাম। বুয়েট অডিটরিয়ামে কর্মচারীদের এক অনুষ্ঠানের নাটিকায় বাউলের ভূমিকায় অভিনয়ের পাশাপাশি ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটি পড়ার কথা ছিল আমার। আমি মঞ্চেও উঠেছিলাম। নাম ঘোষণার পর বাবা গর্ব করে আমাকে দেখিয়ে তাঁর স্যারকে বলেছিলেন, এটা আমার ছেলে! কিন্তু আমি সবকিছু গুবলেট করে ফেলি। বাবা সেদিন সেই একতারা দিয়ে আমাকে পেটাতে-পেটাতে বাসায় নিয়ে আসেন। বাবার মৃত্যুর পর আমি বাবাকে খুঁজতাম। বাবা অভিনয়টা পছন্দ করতেন। একদিন আমি থিয়েটারটা শুরু করি। এখন মনে হয়, বাবা থাকলে ভালো হতো, তিনি দেখতে পারতেন, তাঁর স্বপ্নটা ধীরে ধীরে পূরণ হচ্ছে।

প্রথম দিন মঞ্চে ওঠার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

জহির রায়হানের ‘সময়ের প্রয়োজনে’ ছিল থিয়েটারে আমার প্রথম কাজ। মোহাম্মদ বারীর নির্দেশনায় গ্রামবাসীর চরিত্রে অভিনয় করি। সেখানে আমার সমস্বরে ডায়লগ ছিল ‘কোনদিকে যাব’। এই সংলাপ দিয়েই আমার জার্নি শুরু। এতগুলো বছর পরও আমার নিজের কাছে একই প্রশ্ন ‘কোনদিকে যাব’! আমার প্রথম শোতে যে রকম অনুভূতি হয়েছিল, প্রত্যেকটা শোতে সে রকমই অনুভূতি হয়। প্রথম সংলাপের আগে পর্যন্ত পায়ের নিচে সুড়সুড়ির মতো অনুভূতি হয়, আর মাথায় চলতে থাকে, আমি বোধহয় সংলাপটা ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে পারব না। তবে প্রথম সংলাপটা দিয়ে ফেলার পর থেকেই আমি ওই চরিত্রটার সঙ্গে মিশে যেতে পারি।

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘আমিনা সুন্দরী’, ‘সময়ের প্রয়োজনে’, ‘না মানুষি জমিন’-এর মতো নাটকে কাজ করেছেন। আপনার পছন্দের কাজ কোনটি?

এ দলের যতগুলো নাটকে কাজ করেছি, প্রত্যেকটা নাটকেই আলাদা অনুভূতি কাজ করে। আমার প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘না মানুষি জমিন’। ‘আমিনা সুন্দরী’তে আমি ছোট্ট একটা চরিত্র করলেও আমার খুব ভালো লাগত। থিয়েটার আর্ট ইউনিটের সব নতুন ছেলেমেয়ের স্বপ্ন থাকে ‘কোর্টমার্শাল’ ও ‘গোলাপজান’ নাটকে অভিনয় করা। সেই আক্ষেপ আমার ঘুচবে না!

থিয়েটার আর্ট ইউনিট ছেড়ে অনুস্বরের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। মঞ্চে কারা আপনাকে তৈরি করেছেন বলে মনে করেন?

থিয়েটার আর্ট ইউনিটে যখন জয়েন করি, তখন আমার কোর্স কো-অর্ডিনেটর ছিলেন সাইফ সুমন ভাই। থিয়েটারে আমার গুরু তিনি। রোকেয়া রফিক বেবি, মোহাম্মদ বারী ও সাইফ সুমন—এই তিনজন মানুষের কাছে আমি বেশি শিখেছি। অনুস্বর গঠনের পর সাইফ সুমন ভাই আরও টেক কেয়ার করলেন, সুযোগ দিলেন, আমাকে নিয়ে কাজ করলেন, আমাকে তৈরি করলেন।

অনেকেই বলেন আপনি অনুস্বরের ‘সম্পদ’। দলের কাছে নিজের এতটা আস্থা বা নির্ভরতা তৈরি কতটা কঠিন ছিল?

কঠিন কখনোই ছিল না। অনুস্বর এমন একটা দল, যেখানে সবার একটা স্পেস অলরেডি ক্রিয়েট করা। যেমন, অনুস্বরের নিজস্ব ফ্লোর আছে, স্টুডিও আছে, লাইব্রেরি আছে, এখানে বাচিকের ক্লাস হয়। আমরা গানের স্বর নিয়ে কাজ করি। নিজেকে যদি একটা মানুষ থিয়েটারে তৈরি করতে চাই, আমি মনে করি অনুস্বরের চেয়ে ভালো দল কমই আছে। আমি অনুস্বরের ‘সম্পদ’, কথাটা আমাকে গর্বিত করে। আমি এখন অনুস্বরের সহকারী দপ্তর হিসেবে আছি। আমার বস প্রশান্ত হালদার। তিনি শিখিয়েছেন থিয়েটারের সার্বিক কাজ কীভাবে হয়, কীভাবে ভালো করা যায়।

অনুস্বরের বেশির ভাগ প্রযোজনায় আপনাকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যায়। কোন চরিত্রটি আপনার বেশি পছন্দের?

আমার করা সব চরিত্রই আমার পছন্দের। তবে ‘মহাশূন্যে সাইকেল’ করার আগ পর্যন্ত ‘স্বপ্নভূক’-এর কবিছায়া চরিত্রটা আমাকে খুব টানত। আমার প্রথম কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘তিনকড়ি’ আমাকে টানত যতক্ষণ পর্যন্ত আমি ‘স্বপ্নভূক’ করিনি। কিন্তু ‘মহাশূন্যে সাইকেল’ করার পর থেকে রেজাউল করিম আমাকে টানছে।

নতুন চরিত্রে অভিনয়ের আগে নিজেকে কীভাবে তৈরি করেন?

প্রথমে খোঁজার চেষ্টা করি চরিত্রটির কথা বলার স্টাইল কেমন। কোনো নাটকেই আমার ডায়লগ ডেলিভারি প্যাটার্ন এক রকম থাকে না। চেষ্টা করি কথা বলার ধরনটা যেন আলাদা হয়। চরিত্রটা কীভাবে হাঁটবে, কীভাবে হাত-পা নাড়াবে, কীভাবে লুক দেবে—এসব ভাবতে ভাবতে যখন আমি পেয়ে যাই চরিত্রটা এইভাবে কথা বলে, তারপর থেকেই আমি বাকিগুলো গুছিয়ে ফেলতে পারি।

নাট্যমঞ্চে অভিনয়ের সময় কোন মুহূর্তটাকে সবচেয়ে কঠিন মনে হয়?

যখন ব্ল্যাংক হয়ে যাই! দৃশ্যে হয়তো আমার কো-অ্যাক্টরও নেই, আমার স্বগতউক্তি চলছে আর আমি ডায়লগ ভুলে গেছি! সেই অবস্থা থেকে বের হওয়ার যে ব্যাপারটা। এমন মুহূর্তে মনে হয় যেন পুরো পৃথিবীটা জগদ্দল পাথর হয়ে আমার মাথার ওপর চেপে বসেছে, পায়ের নিচে মাটি ভেদ করে আমি ডেবে যাচ্ছি!

‘বিবিধি শোক অথবা সুখ’ একটি স্টুডিও প্রডাকশন। মঞ্চে আর স্টুডিওতে মঞ্চায়নের তফাতটা কী?

যখন মঞ্চে কাজ করি তখন একটু লাউডলি কথা বলি আর স্টুডিওতে দেখবেন দর্শক মাত্র দুই ফুট দূরে বসা, এই নাটকটি যেমন একটা ড্রয়িংরুমে। সেখানে আমরা পাশাপাশি যেভাবে কথা বলি সেইভাবে মেইনটেন করার চেষ্টা করি। এখানে ৩৫ জন দর্শক বসতে পারেন। আমরা চেষ্টা করি সবাই যেন শুনতে পান। যেন লাইভ মনে হয়, দর্শকের যেন মনে হয় তাঁরা এই ঘরেরই অংশ।

অভিনেতা না হলে কী হতেন?

অভিনেতা না হলে আমি হয়তো একজন কামলা হতাম।

জীবিকার জন্য আর কী করছেন?

দীর্ঘ ১৬ বছর রিয়েলএস্টেটে কাজ করেছি, সাইবার ক্যাফের ম্যানেজারের কাজ করেছি, ব্যবসা করার চেষ্টা করেছি, আরজে হিসেবে কাজ করেছি, এখন চাকরি করছি পাশাপাশি ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করি বঙ্গ বিডি, ধ্বনিচিত্র, সাউন্ড প্রিন্টার, সিভিএম, দুরন্ত টিভি ও দীপ্ত টিভিতে।

কয়েকটি সিনেমার পাশাপাশি টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। পর্দায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে আছে?

অবশ্যই আছে। বিষয়টা এমন নয় যে আমি কাজ পাচ্ছি তবু করছি না। সুযোগের অপেক্ষায় আছি। টুকটাক কাজ করার চেষ্টা করছি। যেখানেই অডিশন কল পাই, যাই। আমি ভালো কনটেন্টে কাজ করতে চাই, ভালো ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে চাই, একটু সময় নিয়ে গুছিয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

থিয়েটারে যারা আসতে চায় তাদের কী বলবেন?

থিয়েটারে আসতে চাইলে মেনে নিতে হবে, এখানে দৃশ্যমান কিছু পাওয়া যায় না। অনেকেই থিয়েটারে আসেন তারকা হওয়ার আশায়। কিন্তু থিয়েটার তারকা হওয়ার জায়গা না, ভালো মানুষ হওয়ার জায়গা। থিয়েটারে এসে শিখেছি মানুষ কীভাবে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায়, মানুষ কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। নতুন যারা থিয়েটার করতে চায়, তারা যেন মনোযোগ দিয়ে থিয়েটারটা করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘রাক্ষস’-এর গল্প বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে সুস্মিতাকে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

মেহেদী হাসান হৃদয়ের ‘রাক্ষস’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ের। এ মাসের শুরুতেই শোনা গিয়েছিল এমন খবর। জানা গিয়েছিল দেশের বাইরে রাক্ষস সিনেমার দ্বিতীয় লটের শুটিংয়ে যোগ দেবেন তিনি। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে গত বুধবার বিএফডিসিতে রাক্ষস সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় উপস্থিত হলেন নায়িকা। জানালেন রাক্ষসের গল্পই তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে রাক্ষস সিনেমায় যুক্ত হওয়ার কারণ জানিয়ে সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্মাতা হৃদয়ের কাছ থেকে গল্পটা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। গল্পের জন্যই এ সিনেমায় যুক্ত হওয়া। কারণ এই গল্পে নায়িকার অনেক কিছু করার আছে। চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে নিজের ২০০ ভাগ দিয়ে চেষ্টা করব।’

প্রথমবার ঢাকাই সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি ভীষণ এক্সাইটেড, এই প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছি, সিনেমায় অভিনয় করছি। এই দিনটা আমার কাছে ভীষণ স্পেশাল। অনেকবার সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভালো একটি টিমের সঙ্গে প্রথমবার বাংলাদেশি সিনেমায় অভিনয় করতে চলেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’

ঢাকাই সিনেমায় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং মনে করলেও সবার সহায়তায় সেই চ্যালেঞ্জকে জয় করতে চান সুস্মিতা। পেতে চান বাংলাদেশের দর্শকদের ভালোবাসা। সুস্মিতা বলেন, ‘যখন সিনেমায় নাম লেখাই তখন কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কাউকেও চিনতাম না। অডিশন দিয়ে অনেক কষ্ট করে সিনেমায় এসেছি। ওটাও যেমন আমার জন্য কঠিন ছিল, তেমনি এই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রথম কাজটা চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু এখানে এসে টিমের সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জটা উতরে যেতে পারব। তাঁরা একবারের জন্য আমাকে মনে করতে দিচ্ছে না যে আমি অন্য দেশ থেকে এসেছি। আমি এ দেশের দর্শকদের ভালোবাসা নিতে এসেছি, আশা করছি অনেক ভালোবাসা পাব।’

ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছেন সুস্মিতা। পড়াশোনায়ও ছিলেন খুব ভালো। তাই পরিবারের চাওয়া ছিল আগে পড়াশোনা শেষ হবে, তারপর অন্য কাজ। মা-বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন সুস্মিতা। পড়াশোনা শেষে বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু চাকরিটা করা হয়নি। তিনি হেঁটেছেন ছোটবেলার স্বপ্নের দিকে, অভিনেত্রী হতে।

২০২১ সালে ‘প্রেম টেম’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে অভিষেক হয় সুস্মিতার। এরপর কাজ করেছেন ‘চেঙ্গিজ’, ‘মানুষ’সহ একাধিক সিনেমায়। এবার নাম লেখালেন ঢাকাই সিনেমায়। রুপালি পর্দায় নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুস্মিতা বলেন, ‘প্রেম টেম সিনেমার সুস্মিতা আর রাক্ষসের সুস্মিতার মধ্যে অনেক পার্থক্য। চার বছর হয়ে গেছে প্রেম টেম সিনেমার। এই সময়ে অনেক ম্যাচিউরিটি এসেছে আমার কাজে, ব্যক্তিত্বে। আশা করছি পর্দায় সেটা বুঝতে পারবেন সবাই।’

রাক্ষস সিনেমায় সুস্মিতার বিপরীতে আছেন সিয়াম আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় সিনেমার অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভয়ংকর এক সিয়ামকে দেখা গেল। ফ্লোরের চারদিকে রক্তের ছোপ, রক্তমাখা সাদা স্যুট পরা সিয়ামের এক হাতে চায়নিজ কুড়াল অন্য হাতে পিস্তল। কামড়ে ধরে আছেন একটি গোলাপ। হাতের অস্ত্র উঁচিয়ে বাথটাবে পড়ে থাকা একটি মৃত বাঘের দিকে গুলি ছুড়লেন।

টিজার দেখে বোঝাই যাচ্ছে বরবাদ সিনেমার মতো রাক্ষসেও ভরপুর অ্যাকশন, ভায়োলেন্স দেখাবেন নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয়। নির্মাতা জানালেন, এ সিনেমায় একটি প্রেমের গল্প আছে, যে প্রেমের কারণে সিয়াম অভিনীত চরিত্রটি রাক্ষস হয়ে ওঠে। এতে আরও অভিনয় করছেন বাপ্পারাজ, আলীরাজ প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রিয়েল অ্যানার্জি প্রোডাকশনের ব্যানারে। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে শুটিং। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের রোজার ঈদে মুক্তি পাবে রাক্ষস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় দুই কনসার্টে গাইলেন আতিফ আসলাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এ মাসে ঢাকায় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী আতিফ আসলামের দুটি কনসার্টের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে শঙ্কা জেগেছিল অনুমতি নিয়ে। স্থগিত হওয়ার শঙ্কা আছে জেনে দুটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে যৌথভাবে ১৩ ডিসেম্বর একটি কনসার্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেইন স্টেজ ও স্পিরিটস অব জুলাই। তাতেও হয়নি শেষরক্ষা। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাতিল করা হয় সেই কনসার্ট। তবে কনসার্ট বাতিল হলেও ঢাকায় এসেছেন আতিফ আসলাম। একের পর এক প্রাইভেট কনসার্টে গান শোনাচ্ছেন তিনি।

গতকাল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) আয়োজিত ‘মিউজিক বিয়ন্ড বাউন্ডারিজ’ শীর্ষক কনসার্টে গান শোনান আতিফ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এ কনসার্টে প্রবেশের সুযোগ ছিল শুধু এআইইউবির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের। বহিরাগতদের প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি।

আতিফের কনসার্ট ঘিরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল এআইইউবিতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কনসার্ট দেখতে মাঠে প্রবেশ করতে ছিল দীর্ঘ লাইন। বেলা ২টায় অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত হলেও সকাল থেকেই কনসার্টের স্থলে ভিড় করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তিল ধরার জায়গা ছিল না মাঠে। আতিফও নিরাশ করেননি তাঁদের। গেয়ে শোনান তাঁর জনপ্রিয় গানগুলো। আতিফের আগে এই কনসার্টে গান শোনান দেশের সংগীতশিল্পী মিনার রহমান।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য ফাইনাল নোট’ শিরোনামের আরেকটি কনসার্টে গান শোনান আতিফ আসলাম। ওই কনসার্টে শুধু গুলশান ক্লাবের সদস্যরাই আমন্ত্রিত ছিলেন। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকায় আতিফের ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্রিকেট খেলায় মেতেছেন তিনি।

এর আগে পাকিস্তানের আলী আজমত ও ব্যান্ড কাভিশের কনসার্ট বাতিল হলেও তাঁরাও বাংলাদেশে এসেছিলেন। শোনা গেছে, তাঁরাও ঢাকায় একাধিক প্রাইভেট কনসার্টে পারফর্ম করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের ওটিটি: ‘সাবা’সহ মুক্তির তালিকায় যেসব সিনেমা-সিরিজ

প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য দর্শকদের নজর থাকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এ সপ্তাহেও মুক্তি পাচ্ছে নানা দেশের, নানা ভাষার কনটেন্ট। বাছাই করা এমন কিছু কনটেন্টের খোঁজ থাকছে এ প্রতিবেদনে।

বিনোদন ডেস্ক
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সাবা (বাংলা সিনেমা)

  • মুক্তি: হইচই (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মেহজাবীন চৌধুরী, মোস্তফা মনওয়ার, রোকেয়া প্রাচী
  • গল্পসংক্ষেপ: মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সাবা। বাবা গত হয়েছে। মা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন মেয়ে সাবা। পরিবার আর মায়ের সেবায় নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়ে উঠতে পারেনি সাবা। অর্থের টানাটানিতে দিনরাত এক করে মাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা তার।

রাত আকেলি হ্যায়: দ্য বানসাল মার্ডারস (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী, রাধিকা আপ্তে, চিত্রাঙ্গদা সিং
  • গল্পসংক্ষেপ: ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া ক্রাইম থ্রিলার ‘রাত আকেলি হ্যায়’ সিনেমার সিকুয়েল এটি। ইন্সপেক্টর জটিল যাদব এবার ফিরছে নতুন মামলা নিয়ে। কানপুরের ধনী ও প্রভাবশালী বানসাল পরিবারে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পড়ে জটিল যাদবের ওপর। ঘটনার অন্তরালের লোভ, বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রের জাল উন্মোচন করে সে।

মিসেস দেশপান্ডে (হিন্দি সিরিজ)

  • মুক্তি: জিওহটস্টার (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মাধুরী দীক্ষিত, প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি, সিদ্ধার্থ চান্দেকর
  • গল্পসংক্ষেপ: ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায় তৈরি এ সিরিজে মাধুরীকে দেখা যাবে একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছর সাজা হয় মিসেস দেশপান্ডের। তার খুন করার ধরন কপি করছে আরেকজন। তাকে ধরতে পুলিশ সহায়তা নেয় মিসেস দেশপান্ডের।

এমিলি ইন প্যারিস সিজন ৫ (ইংরেজি সিরিজ)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৮ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: লিলি কুপার, ফিলিপাইন লেরয়-বিউলিউ, অ্যাশলে পার্ক
  • গল্পসংক্ষেপ: চতুর্থ সিজনে এমিলি কুপারের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে অনেক কিছু অমীমাংসিত ছিল। সেসব প্রশ্ন ও কৌতূহল নিয়েই শুরু হচ্ছে পঞ্চম সিজন। এবার শুধু প্যারিসে নয়, এমিলির জার্নি বিস্তৃত হবে রোম শহরেও।

থাম্মা (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: প্রাইম ভিডিও (১৬ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: আয়ুষ্মান খুরানা, রাশমিকা মান্দানা, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী
  • গল্পসংক্ষেপ: ভৌতিক গল্পের এ সিনেমার শুরুতে পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে গিয়ে বিপদে পড়ে অলোক নামের এক সাংবাদিক। পথ ভুলে পৌঁছায় এমন এক ডেরায়, যেখানে অতিপ্রাকৃত শক্তির বাস। সেখানেই অলোকের দেখা হয় মানুষরূপী এ প্রেতাত্মার সঙ্গে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের সিনেমা

আজ থেকে হল মাতাবে ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’

বিনোদন ডেস্ক
আজ থেকে হল মাতাবে ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’

অ্যাভাটার সিরিজের দ্বিতীয় সিনেমা ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ মুক্তি পেয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। প্রথম পর্বের মতো এটি নিয়েও দর্শকদের উন্মাদনা ছিল অবাক করার মতো। আয় করেছিল ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তিন বছর ধরে দর্শকের কৌতূহল অ্যাভাটারের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। সেই অপেক্ষা ফুরাল এত দিনে। আজ ১৯ ডিসেম্বর বিশ্বজুড়ে মুক্তি পাবে ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’। বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও আজ থেকে দেখা যাবে সিনেমাটি।

অ্যাভাটারের তৃতীয় পর্বে নতুন অনেক কিছু যুক্ত করেছেন জেমস ক্যামেরন। এসেছে নতুন গোষ্ঠী, নতুন চরিত্র। ভিলেন হিসেবে দেখা যাবে ভারাং নামের একটি চরিত্রকে। অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সংযোজন বলা হচ্ছে এ চরিত্রকে। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন ‘গেম অব থ্রোনস’খ্যাত অভিনেত্রী ওনা চ্যাপলিন। জানা গেছে, ভারাং হলো অ্যাশ পিপল গোত্রের নেত্রী, আগ্নেয়গিরিতে যে গোত্রের বসবাস। যারা অবিশ্বাস্য কষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে। এ কারণে ভারাং অনেক কঠোর। নিজের জাতির জন্য সে যেকোনো কিছু করতে পারে।

নির্মাতা জানিয়েছেন, প্যান্ডোরার ভিন্ন এক দিক উঠে এসেছে অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশে। নাভি জাতি মানেই ভালো, আর মানুষ জাতি মানেই খারাপ—এই সরল অঙ্কের বাইরে তিনি যেতে চেয়েছেন এই পর্বে। জেমস ক্যামেরন বলেন, ‘এ পর্বের কেন্দ্রে থাকবে অ্যাশ জাতি। নাভি জাতিকে ভিন্ন এক দিক থেকে দেখিয়েছি। কারণ, আগের পর্বগুলোতে শুধু তাদের ভালো দিকই দেখিয়েছি। আর নেতিবাচক চরিত্রে দেখিয়েছি মানুষ জাতিকে। অ্যাভাটার থ্রিতে চিত্রটা সম্পূর্ণ উল্টে যাবে।’

দ্য ওয়ে অব ওয়াটারের ঘটনার পরপরই শুরু হয় ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশের গল্প। জ্যাক সুলি (স্যাম ওয়ার্থিংটন) ও নিতিরি (জো সালদানা) বড় সন্তানের মৃত্যুশোক সামলাতে সামলাতে নতুন বিপদের মুখে পড়ে। অ্যাশ উপজাতির নেতা ভারাং পুরোনো শত্রুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নাভিদের ওপর আক্রমণ চালায়। পরিবার, জনগোষ্ঠী ও গ্রহ রক্ষার লড়াই—এটাই রয়েছে কাহিনির কেন্দ্রে।

হলিউডের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভিজ্যুয়ালের দিক থেকে আগের দুই পর্বকে ছাড়িয়ে গেছে ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ। বিশেষ করে শেষ ৩০ মিনিটের যুদ্ধের দৃশ্যে গ্রাফিকস দর্শকদের নিয়ে যাবে অন্য জগতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত