‘পাতালঘর’ একটু ভিন্ন ধারার সিনেমা, যা ওটিটির দর্শকদের জন্য ভালো

শিহাব আহমেদ
Thumbnail image

দুই বাংলায় সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন নুসরাত ফারিয়া। সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘পাতালঘর’। এতে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া কোরবানির ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমায় প্রথমবার পারফর্ম করেছেন আইটেম গানে। নতুন সিনেমা ও সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে ফারিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

ওটিটিতে মুক্তি পেল ‘পাতালঘর’। সিনেমাটি সম্পর্কে বলুন। 
দর্শক আমাকে সব সময় কমার্শিয়াল সিনেমায় দেখেছে। সে বিবেচনায় পাতালঘর একেবারেই ভিন্নধর্মী সিনেমা। এটাই আমার প্রথম অফ ট্র্যাক সিনেমা। তাই কাজটার জন্য উৎসুক ছিলাম। প্রযোজক আবু শাহেদ ইমনের কাছ থেকে গল্প শোনার পরই গল্পটার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। কোভিডের মধ্যে আমরা সবাই অদ্ভুত একটা সময় পার করেছি। সে সময়ের গল্প নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন নূর ইমরান মিঠু। শুটিংও হয়েছে কোভিডের সময়। 

একজন নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাস্তব জীবনেও আপনি নায়িকা। চরিত্রটি কতটা উপভোগ করেছেন? 
ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সুবাদে একজন অভিনয়শিল্পীর স্ট্রাগল সম্পর্কে জানি। তাই চরিত্রটার সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পারছিলাম। শুটিংয়ে চরিত্রটায় ডুবে গিয়েছিলাম।

আপনার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফসানা মিমি। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? 
অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। মিমি আপু অনেক হেল্পফুল। উনি বড় মাপের একজন অভিনয়শিল্পী। অথচ, সেটে সবার সঙ্গেই কী সাবলীল ছিলেন! প্রথম প্রথম একটু টেনশন হচ্ছিল, কিন্তু কখন যে আমরা মা-মেয়ে হয়ে গেলাম বুঝতেই পারিনি। প্রতিটি দৃশ্যের আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। দৃশ্য শেষ হওয়ার পর ইউনিটের সবাই প্রশংসা করেছেন। ডাবিংয়ের সময় দৃশ্যগুলো দেখে নিজের কাছেও ভালো লাগছিল। অনেকেই বলে, আমাকে দেখতে মিমি আপুর মেয়ের মতোই লাগে। 

মুক্তির পর কেমন সাড়া পাচ্ছেন? 
মাত্র দুদিন হলো রিলিজ হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের কাছ থেকে ফোন পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। 

সিনেমাটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। আপনিও গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন। সেখানে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন? 
এটা আমার প্রথম সিনেমা, যেটা কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছে। সিনেমাটা নিয়ে গত বছর গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়া আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম অর্জন। এর আগে কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমার যাওয়া হয়নি। গোয়ায় প্রদর্শনীর পর সবাই অনেক প্রশংসা করেছেন। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আশা করি, আমার এ যাত্রাটা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।

প্রেক্ষাগৃহের জন্য নির্মিত সিনেমা ওটিটিতে মুক্তি পেল। কারণ কী? 
এটা আমার তৃতীয় সিনেমা, যেটা ওটিটিতে মুক্তি পেল। এর আগে ‘যদি কিন্তু তবুও’ ও ‘ভয়’ সিনেমা দুটি জি ফাইভে মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাগুলো হলের জন্যই তৈরি হয়েছিল। পরে নির্মাতা-প্রযোজক মনে করেছেন ওটিটিতে ভালো যাবে, তাই সেখানে রিলিজ দিয়েছেন। 

সিনেমা হলে মুক্তি না পাওয়ায় কি আপনার মন খারাপ হয়েছে? 
নাহ্, মন খারাপ হয়নি। আমার কাছে কনটেন্ট বড় বিষয়, কোন মাধ্যমে মুক্তি পাচ্ছে সেটা বড় নয়। দর্শকের কাছে ভালো লাগলেই কাজের সার্থকতা, সেটা যে মাধ্যমেই হোক। আমার মনে হয়, ‘পাতালঘর’ একটু ভিন্ন ধারার সিনেমা, যা ওটিটির দর্শকদের জন্যই ভালো। 

‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার ‘কলিজা আর জান’ আইটেম গানটিতে কেমন সাড়া পেলেন? 
দর্শকের প্রচুর সাড়া পেয়েছি। ওপার বাংলা থেকেও খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে তাঁদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন। সিনেমাটাও ভালো চলছে। সব মিলিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ও পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। 

সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে আইটেম গার্ল শব্দ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। 
কোনো শিল্পীকেই এ ধরনের কোনো শব্দে সংজ্ঞায়িত করা ঠিক নয়। সিনেমার একটা গানে পারফর্ম করেছি। মেয়ে বলে আমাকে আইটেম গার্ল বলতে হবে, এটা ঠিক নয়। এ ধরনের কথা শুনলে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। ছেলেদের যদি আইটেম বয় বলা না হয়, তাহলে মেয়েদের কেন আইটেম গার্ল বলা হবে! 

ভবিষ্যতে এমন আরও গানে দেখা যাবে কি না? 
সুড়ঙ্গ সিনেমা ছাড়া কলকাতার ‘আবার প্রলয়’ ওয়েব সিরিজের একটি গানে পারফর্ম করেছি। আপাতত আর পরিকল্পনা নেই। দু-তিন বছরে একটা-দুটা গানে পারফর্ম করাই যথেষ্ট। তবে ভবিষ্যতে যদি কোনো বড় বাজেটের ভালো সিনেমা হয়, যেটা আমার স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায়, সে ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। আমার উপস্থিতি যদি সিনেমার জন্য ভালো হয়, তাহলে কেন কাজ করব না! 

দুই বাংলায় নিয়মিত অভিনয় করছেন, গান গাইছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে কাজ করছেন। এত কিছু কীভাবে সামলান? 
আমি এখন অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে কাজ করছি। এর মাধ্যমে মানুষের কাছাকাছি যাওয়া যায়। আর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে আমার ভালো লাগে। কাজ আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যত দিন বেঁচে আছি, সততা আর শ্রদ্ধা নিয়ে আমার কাজগুলো করতে চাই। সেটা অভিনয়, গান কিংবা অ্যাম্বাসেডর—যা হোক না কেন। 

দুই বাংলাতেই নতুন কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছিলেন। কোনো আপডেট আছে? 
তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় ‘সে আসে ধীরে’ সিনেমার কাজ শুরু করব আগামী মাস থেকে। এরপর সেপ্টেম্বরের শেষে শুরু হবে বাবা যাদবের সিনেমা। সেই সিনেমার নাম এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এ ছাড়া আবরার আতাহারের নতুন সিনেমায় সাইন করেছি। এ বছরেই সিনেমাটির কাজ শুরু হওয়ার কথা আছে। 

আপনার নতুন গানের কী খবর? 
এ বছর আমার ‘বুঝি না তো তাই’ রিলিজ হয়েছে। প্রায় ৮০ লাখ মানুষ গানটি দেখেছেন। আপাতত এ গান নিয়েই থাকতে চাই। ইচ্ছা আছে আগামী রোজার ঈদে নতুন গান প্রকাশ করার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত