খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
জাকিয়া বারী মম এমন একজন অভিনেত্রী, যাকে যেকোনো চরিত্রের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। তিনিও চ্যালেঞ্জটি লুফে নেন স্বচ্ছন্দে। অনেক দিন হলো অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। তিনি আছেন নিজের মতো। পড়ছেন, দেখছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভালো কাজের। মম এখন ব্যক্তিগত সফরে শ্রীমঙ্গলে। সঙ্গে আছেন অভিনেত্রী সুষমা সরকার। যাওয়ার আগে মম বললেন ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কথা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খায়রুল বাসার নির্ঝর
জাকিয়া বারী মম: আম্মার বাসায় গেছিলাম। অনেক দিন পর দেখা হলে যেমন হয়, আম্মা আমাকে অনেক কিছু দিলেন। আমি বললাম, কী ব্যাপার? সবকিছু দিয়ে দিচ্ছ কেন? সমস্যা কী তোমার? আম্মা বললেন, নাও, তোমার জিনিস তোমার কাছে থাকলেই হয়তো ভালো হবে। (আমি বললাম) তোমার কাছে তো ভালোই ছিল। আমার ছোটবেলার ছবির অ্যালবাম ছিল মায়ের কাছে, অ্যালবাম দেখা তো নস্টালজিক ব্যাপার আরকি! ওখান থেকে কয়েকটা ছবি ফেসবুকে দিয়েছি।
জাকিয়া বারী মম: এটা তো আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুনছি। ট্রাস্ট মি। এখন আমার বন্ধুবান্ধবেরা আমাকে ক্ষ্যাপানোর জন্য বলে, ‘এই যে তুমি তো ব্রাহ্মণবাইড়া। যেহেতু তুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, খালি মারামারি করবা।’ আমি বলি, মানে! এইটা তো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিচয় হইতেই পারে না।
যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমি জন্মাইছি, বড় হইছি, ইট ওয়াজ সো বিউটিফুল। তুমি যেটা বলতেছিলা, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হারমোনিয়ামের সাউন্ড, এগুলা কিন্তু হইতোই তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। বিকাল হইলেই গাইতে পারুক না পারুক বাচ্চারা ট্রাই করত। সবাই, কমবেশি।
জাকিয়া বারী মম: আমি যখন আলাউদ্দীন সংগীতাঙ্গনে ভর্তি হই, তখন আমার বয়স সাড়ে তিন-চার—এ রকম কিছু হবে। আমার তো আসলে তখন ওই ধরনের কোনো সেন্স কাজ করার ব্যাপার নেই। তখন আমার নাচতে ভালো লাগে, গাইতে ভালো লাগে, মিউজিক ভালো লাগে, ছবি আঁকতে ভালো লাগে। বাচ্চাদের এগুলা ডেফিনেটলি ভালো লাগবে। তো আমি ওই ‘বাচ্চাদের ভালো লাগার জায়গা থেকেই’ এগুলোর সাথে ইনভলভ হই, পড়াশোনার পাশাপাশি।
আমার চাইল্ডহুড ইজ সো কালারফুল। নাচ-গান-আর্টের ক্লাসে যাওয়া, আবার সন্ধ্যার সময় ফিরে আম্মার কাছে পড়তে বসা। তার পর একটা টাইম পর্যন্ত খেলা, টেলিভিশন দেখা—ইট ওয়াজ সো নাইস। মানে এত সিসটেমেটিক! এবং লেখাপড়ার সাথে সাথে আব্বা-আম্মা আমাকে...আমার আব্বা-আম্মা এদিক থেকে বেশ...যদি বোধের জায়গা বলি, ভালো লাগার জায়গা বলি, দে আর দ্য পারসন, যারা কিনা চাইছে তাঁদের সন্তান কালচারালি অ্যাকটিভ থাকুক।
বিকজ তাঁরা অনেক কালচারালি অ্যাকটিভ ছিলেন তাঁদের সময়। আমার বাবা তো কবিতা লেখেন। তাঁর বইও পাবলিশড হইছে দুইটা। উনি একটু পলিটিক্যাল...একটু বাম ঘেঁষা মানুষ।
আমার মা একসময় আমার নানার সঙ্গে নাটক করেছেন। আমার নানা আমার মাকে, খালাকে গান শিখাইছেন। অভিনয় শিখাইছেন। ওইখানকার সময়...লাকসামে তখন...ওই সময় মফস্বলে যে ধরনের ট্রেন্ড ছিল আরকি। টাউন হল, ক্লাব—এ ধরনের। তো ওই রকম একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আমার বাবা-মা দুজনই আসাতে তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের সন্তানকে কালচারাল অ্যাক্টিভিটিতে দেখতে। ইট ওয়াজ দেয়ার ট্রেন্ড।
আমি ছোটবেলা থেকে ইনভলভ হইছি। পরে এসে এইটা...ইটস মাই হ্যাভিট...মানে এক ধরনের জার্নির মতো হয়ে গেছে। আমি কখনোই আসলে শুধু লেখাপড়া করি নাই। আমাকে সবকিছু একসাথে করতে হতো। লটস অব কমপিটিশন আই হ্যাড। এটা আরও লম্বা জার্নি। এটা বললে আরও সময় চলে যাবে।
জাকিয়া বারী মম: এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। এটাই হওয়া স্বাভাবিক আরকি।
জাকিয়া বারী মম: ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো নাই আসলে। ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো বাচ্চাদেরকে দেওয়া এখন ডিফিকাল্ট। এখন টেকনোলজি নানাভাবে ডমিনেট করতেছে। ডোন্ট নো। আমি হয়তো এভাবে বড় হইছি বলে আমার এভাবে মনে হইছে। কিন্তু এখন যে সন্তানটা জন্মাচ্ছে, তার জন্য তো এটাই রিয়্যালিটি। ওদেরকে তো আসলে এটা বলে বোঝানো যাবে না, যেটা আমি এক্সপেরিয়েন্স করছি।
ওরা কতটুকুই বুঝতে পারে? ওরা যতটুকু বুঝতে পারে, ততটুকু পর্যন্ত গিয়ে তারা তাদের ইন্টারেস্টে ডাইভার্ট হয়ে যায়। এটাই স্বাভাবিক। এখনকার বাচ্চারা অনেক প্র্যাকটিক্যালি ভাবে। আমরা হয়তো আরও ইমোশনালি ভাবতাম—এটাও আমার কাছে মনে হইছে। এটাও সময়ের একটা ব্লেন্ডিং। চেঞ্জ হইতেছে। এভাবেই আগাবে।
জাকিয়া বারী মম: এখন তো আরও অনেক অপশন আছে। আমি প্রথমে...দ্যাখো, চিন্তা করো...যে বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে এভাবে বড় করে ছোটবেলা থেকে, তাঁরা সাডেনলি ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় আমাকে নাট্যকলায় ভর্তি হতে না দেওয়ার কারণটা কী? বিকজ ইনসিকিউরিটি। তাঁদের মেয়েকে নিয়ে তাঁরা কনসার্ন। নাট্যকলায় পড়লে সে যদি ক্যারিয়ার করতে চায়, কীভাবে ক্যারিয়ার করবে? তখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার সায়েন্স, বিবিএ—এগুলো বেশি পপুলার। আমাদের সাবজেক্টের ওই রকম ভ্যালু তখন...এখনো সোশ্যালি তো না-ই।
আমাকে তো পালাইতে হইছে বাসা থেকে। বাবার সাথে আমার দুই বছর কথা হয় নাই। আমি তো জাহাঙ্গীরনগর (বিশ্ববিদ্যালয়ে) পালাইয়া গিয়া ভর্তি হইছিলাম। ওই সব নাটক তো জীবনে অনেক করছি।
ওই তুলনায় এখন তো টেকনোলজি অনেক ওপেন করে দিছে। ঘরে বসেই এখন ইউ ক্যান রিড লটস অব স্টাফ, যা আমরা তখন অ্যাফোর্ড করতে পারি নাই। এখন তো কত টিউটোরিয়াল, কত এক্সারসাইজ! এখন যদি কেউ অ্যাক্টর হতে চায়, তাহলে সে ঘরে বসে তো তার প্রাইমারি লেসনটা নিতেই পারে।
জাকিয়া বারী মম: প্রচুর হচ্ছে তো। প্রচুর হলে সুবিধা-অসুবিধা দুটোই থাকবে। জালালুদ্দিন রুমির একটা কথা সম্ভবত এমন যে, কোনো কিছু অতিরিক্ত হলেই তা বিষ। ‘হোয়াট ইজ পয়জন?’ এ রকম প্রশ্নের উত্তরে তিনি সম্ভবত এমন কিছু বলেছিলেন। ভালোবাসা বেশি হলেও সেটা বিষ।
জাকিয়া বারী মম: এটাতে বেশি আক্রান্ত হয় কারণ, মানুষ আবেগতাড়িত হয় তো। ইমোশনাল ব্যালেন্স করাটা ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ, ভালোবাসলেই তো ঘৃণা করা সম্ভব। আদারওয়াইজ হাউ ইউ ডিজার্ভ ইট?
জাকিয়া বারী মম: দ্যাখো, আমি অ্যাক্টর হইতে চাইছি। আমি জানি না এই অ্যাক্টর ব্যাপারটা কী? আমি জানি না অ্যাক্টিংটা কী? এত কিছুর পরও আমি বুঝি না, হোয়াট ইজ ইট? এত জানা-দেখার পরও। এত অ্যাফোর্ট থাকার পরেও। তো আমার কাছে মনে হয় যে, বিয়ন্ড সামথিং মাই আন্ডারস্ট্যান্ডিং, হোয়াট ইজ ইট? দিস ইজ লাভ।
আমার ভীষণ ভালো লাগে, আমি অভিনয় করতে চেষ্টা করি—এটা ভেবে। আমি ভীষণ ভালোবাসি এই কাজটাকে, এবং কাজটা করতেও পারি, দ্যাটস হোয়াই আই অ্যাম ফরচুনেট। মানে আমি কাজের সাথেই থাকতে চাই।
ইটস নট যে, আমি কোনো স্ট্র্যাটেজিক্যালি কিছু ফিল করে বললাম, ইটস নট দ্যাট।
এই যে দিলারা (জামান) মা, আমাদের দেশে তো উনিই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী। তিনি কীভাবে এত অ্যাফোর্ট দেন! কাজের প্রতি ওনার যে ডেডিকেশন, যে ভক্তি—এমন শিল্পী হতে পারলেই তো জীবনে অনেক বড় পাওয়া হয়ে যায়। শিল্পী হওয়ার যে চেষ্টা, এটা কিন্তু দারুণ ব্যাপার।
কাজ করতে চাইলে তো সারা জীবনই করা যায়, যে যেভাবে চায়। কিন্তু সেটাও তো নানা ফরম্যাটে নানা সময়ে বদল হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে আমি অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। সবার প্রতিই আমার কৃতজ্ঞতা। ইটস লং টাইম। কোভিড আসার পর একটু থেমেছি। থামা যে জীবনে জরুরি, এটা অনুভব করেছি।
জাকিয়া বারী মম: এখন বরং পড়তে, নিজের সাথে থাকতে, দেখতে, এক্সারসাইজ করতেই আমার বেশি ভালো লাগছে। একটাই ব্যাপার, আমি যখন কাজ করতে গেছি, কাজের জায়গাটা অনেক বেশি নয়েজি মনে হয়েছে। আমি আসলে নেহাতই ভালোবেসে কাজটা করতে আসছিলাম। ভালোবেসে কাজ করতে করতে একটা লম্বা সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি কী কী শেখা যায়, লেখাপড়া করা যায়। সব মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে, আই ডোন্ট নো, হচ্ছে না আরকি! এটা এক ধরনের আমার না-পারাই। আমি পেরে উঠছি না। বাসায় বসে এই দুই বছরে টুকিটাকি লেখাপড়া, নিজের কিছু লেখা লিখতে ইচ্ছা করেছে। কিন্তু কোনো লেখাই শেষ করতে পারি না।
জাকিয়া বারী মম: নিজের কথা না। আমি একটা চরিত্র দাঁড় করেছিলাম রোদসী নামে। রোদসীর সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো মেয়ে নিজেকে মেলাতে পারবে। খুবই সাধারণ একটা চরিত্র। ক্যারেক্টার সিম্পল কিন্তু মানসিকভাবে বা ও যে ধরনের বোধের মানুষ, সে সবকিছু খানিকটা অন্যভাবে দেখে।
জাকিয়া বারী মম: না, না ভাই। ওই যে দেখো কী বিপদ! বাংলাদেশে যারা বানান, আমি তাঁদেরকে হাত জোড় করে স্যালুট করি। এ দেশে যারা ডিরেক্টর, ডিরেকশনের চেয়ে তাঁদেরকে অন্যান্য অনেক কিছু নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। সেগুলো ডিঙিয়ে তাঁর যে মূল নির্মাতা-সত্তা সেখানে পৌঁছতেই অনেক কষ্ট হয়।
জাকিয়া বারী মম এমন একজন অভিনেত্রী, যাকে যেকোনো চরিত্রের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। তিনিও চ্যালেঞ্জটি লুফে নেন স্বচ্ছন্দে। অনেক দিন হলো অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। তিনি আছেন নিজের মতো। পড়ছেন, দেখছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভালো কাজের। মম এখন ব্যক্তিগত সফরে শ্রীমঙ্গলে। সঙ্গে আছেন অভিনেত্রী সুষমা সরকার। যাওয়ার আগে মম বললেন ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কথা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খায়রুল বাসার নির্ঝর
জাকিয়া বারী মম: আম্মার বাসায় গেছিলাম। অনেক দিন পর দেখা হলে যেমন হয়, আম্মা আমাকে অনেক কিছু দিলেন। আমি বললাম, কী ব্যাপার? সবকিছু দিয়ে দিচ্ছ কেন? সমস্যা কী তোমার? আম্মা বললেন, নাও, তোমার জিনিস তোমার কাছে থাকলেই হয়তো ভালো হবে। (আমি বললাম) তোমার কাছে তো ভালোই ছিল। আমার ছোটবেলার ছবির অ্যালবাম ছিল মায়ের কাছে, অ্যালবাম দেখা তো নস্টালজিক ব্যাপার আরকি! ওখান থেকে কয়েকটা ছবি ফেসবুকে দিয়েছি।
জাকিয়া বারী মম: এটা তো আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুনছি। ট্রাস্ট মি। এখন আমার বন্ধুবান্ধবেরা আমাকে ক্ষ্যাপানোর জন্য বলে, ‘এই যে তুমি তো ব্রাহ্মণবাইড়া। যেহেতু তুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, খালি মারামারি করবা।’ আমি বলি, মানে! এইটা তো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিচয় হইতেই পারে না।
যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমি জন্মাইছি, বড় হইছি, ইট ওয়াজ সো বিউটিফুল। তুমি যেটা বলতেছিলা, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হারমোনিয়ামের সাউন্ড, এগুলা কিন্তু হইতোই তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। বিকাল হইলেই গাইতে পারুক না পারুক বাচ্চারা ট্রাই করত। সবাই, কমবেশি।
জাকিয়া বারী মম: আমি যখন আলাউদ্দীন সংগীতাঙ্গনে ভর্তি হই, তখন আমার বয়স সাড়ে তিন-চার—এ রকম কিছু হবে। আমার তো আসলে তখন ওই ধরনের কোনো সেন্স কাজ করার ব্যাপার নেই। তখন আমার নাচতে ভালো লাগে, গাইতে ভালো লাগে, মিউজিক ভালো লাগে, ছবি আঁকতে ভালো লাগে। বাচ্চাদের এগুলা ডেফিনেটলি ভালো লাগবে। তো আমি ওই ‘বাচ্চাদের ভালো লাগার জায়গা থেকেই’ এগুলোর সাথে ইনভলভ হই, পড়াশোনার পাশাপাশি।
আমার চাইল্ডহুড ইজ সো কালারফুল। নাচ-গান-আর্টের ক্লাসে যাওয়া, আবার সন্ধ্যার সময় ফিরে আম্মার কাছে পড়তে বসা। তার পর একটা টাইম পর্যন্ত খেলা, টেলিভিশন দেখা—ইট ওয়াজ সো নাইস। মানে এত সিসটেমেটিক! এবং লেখাপড়ার সাথে সাথে আব্বা-আম্মা আমাকে...আমার আব্বা-আম্মা এদিক থেকে বেশ...যদি বোধের জায়গা বলি, ভালো লাগার জায়গা বলি, দে আর দ্য পারসন, যারা কিনা চাইছে তাঁদের সন্তান কালচারালি অ্যাকটিভ থাকুক।
বিকজ তাঁরা অনেক কালচারালি অ্যাকটিভ ছিলেন তাঁদের সময়। আমার বাবা তো কবিতা লেখেন। তাঁর বইও পাবলিশড হইছে দুইটা। উনি একটু পলিটিক্যাল...একটু বাম ঘেঁষা মানুষ।
আমার মা একসময় আমার নানার সঙ্গে নাটক করেছেন। আমার নানা আমার মাকে, খালাকে গান শিখাইছেন। অভিনয় শিখাইছেন। ওইখানকার সময়...লাকসামে তখন...ওই সময় মফস্বলে যে ধরনের ট্রেন্ড ছিল আরকি। টাউন হল, ক্লাব—এ ধরনের। তো ওই রকম একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আমার বাবা-মা দুজনই আসাতে তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের সন্তানকে কালচারাল অ্যাক্টিভিটিতে দেখতে। ইট ওয়াজ দেয়ার ট্রেন্ড।
আমি ছোটবেলা থেকে ইনভলভ হইছি। পরে এসে এইটা...ইটস মাই হ্যাভিট...মানে এক ধরনের জার্নির মতো হয়ে গেছে। আমি কখনোই আসলে শুধু লেখাপড়া করি নাই। আমাকে সবকিছু একসাথে করতে হতো। লটস অব কমপিটিশন আই হ্যাড। এটা আরও লম্বা জার্নি। এটা বললে আরও সময় চলে যাবে।
জাকিয়া বারী মম: এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। এটাই হওয়া স্বাভাবিক আরকি।
জাকিয়া বারী মম: ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো নাই আসলে। ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো বাচ্চাদেরকে দেওয়া এখন ডিফিকাল্ট। এখন টেকনোলজি নানাভাবে ডমিনেট করতেছে। ডোন্ট নো। আমি হয়তো এভাবে বড় হইছি বলে আমার এভাবে মনে হইছে। কিন্তু এখন যে সন্তানটা জন্মাচ্ছে, তার জন্য তো এটাই রিয়্যালিটি। ওদেরকে তো আসলে এটা বলে বোঝানো যাবে না, যেটা আমি এক্সপেরিয়েন্স করছি।
ওরা কতটুকুই বুঝতে পারে? ওরা যতটুকু বুঝতে পারে, ততটুকু পর্যন্ত গিয়ে তারা তাদের ইন্টারেস্টে ডাইভার্ট হয়ে যায়। এটাই স্বাভাবিক। এখনকার বাচ্চারা অনেক প্র্যাকটিক্যালি ভাবে। আমরা হয়তো আরও ইমোশনালি ভাবতাম—এটাও আমার কাছে মনে হইছে। এটাও সময়ের একটা ব্লেন্ডিং। চেঞ্জ হইতেছে। এভাবেই আগাবে।
জাকিয়া বারী মম: এখন তো আরও অনেক অপশন আছে। আমি প্রথমে...দ্যাখো, চিন্তা করো...যে বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে এভাবে বড় করে ছোটবেলা থেকে, তাঁরা সাডেনলি ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় আমাকে নাট্যকলায় ভর্তি হতে না দেওয়ার কারণটা কী? বিকজ ইনসিকিউরিটি। তাঁদের মেয়েকে নিয়ে তাঁরা কনসার্ন। নাট্যকলায় পড়লে সে যদি ক্যারিয়ার করতে চায়, কীভাবে ক্যারিয়ার করবে? তখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার সায়েন্স, বিবিএ—এগুলো বেশি পপুলার। আমাদের সাবজেক্টের ওই রকম ভ্যালু তখন...এখনো সোশ্যালি তো না-ই।
আমাকে তো পালাইতে হইছে বাসা থেকে। বাবার সাথে আমার দুই বছর কথা হয় নাই। আমি তো জাহাঙ্গীরনগর (বিশ্ববিদ্যালয়ে) পালাইয়া গিয়া ভর্তি হইছিলাম। ওই সব নাটক তো জীবনে অনেক করছি।
ওই তুলনায় এখন তো টেকনোলজি অনেক ওপেন করে দিছে। ঘরে বসেই এখন ইউ ক্যান রিড লটস অব স্টাফ, যা আমরা তখন অ্যাফোর্ড করতে পারি নাই। এখন তো কত টিউটোরিয়াল, কত এক্সারসাইজ! এখন যদি কেউ অ্যাক্টর হতে চায়, তাহলে সে ঘরে বসে তো তার প্রাইমারি লেসনটা নিতেই পারে।
জাকিয়া বারী মম: প্রচুর হচ্ছে তো। প্রচুর হলে সুবিধা-অসুবিধা দুটোই থাকবে। জালালুদ্দিন রুমির একটা কথা সম্ভবত এমন যে, কোনো কিছু অতিরিক্ত হলেই তা বিষ। ‘হোয়াট ইজ পয়জন?’ এ রকম প্রশ্নের উত্তরে তিনি সম্ভবত এমন কিছু বলেছিলেন। ভালোবাসা বেশি হলেও সেটা বিষ।
জাকিয়া বারী মম: এটাতে বেশি আক্রান্ত হয় কারণ, মানুষ আবেগতাড়িত হয় তো। ইমোশনাল ব্যালেন্স করাটা ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ, ভালোবাসলেই তো ঘৃণা করা সম্ভব। আদারওয়াইজ হাউ ইউ ডিজার্ভ ইট?
জাকিয়া বারী মম: দ্যাখো, আমি অ্যাক্টর হইতে চাইছি। আমি জানি না এই অ্যাক্টর ব্যাপারটা কী? আমি জানি না অ্যাক্টিংটা কী? এত কিছুর পরও আমি বুঝি না, হোয়াট ইজ ইট? এত জানা-দেখার পরও। এত অ্যাফোর্ট থাকার পরেও। তো আমার কাছে মনে হয় যে, বিয়ন্ড সামথিং মাই আন্ডারস্ট্যান্ডিং, হোয়াট ইজ ইট? দিস ইজ লাভ।
আমার ভীষণ ভালো লাগে, আমি অভিনয় করতে চেষ্টা করি—এটা ভেবে। আমি ভীষণ ভালোবাসি এই কাজটাকে, এবং কাজটা করতেও পারি, দ্যাটস হোয়াই আই অ্যাম ফরচুনেট। মানে আমি কাজের সাথেই থাকতে চাই।
ইটস নট যে, আমি কোনো স্ট্র্যাটেজিক্যালি কিছু ফিল করে বললাম, ইটস নট দ্যাট।
এই যে দিলারা (জামান) মা, আমাদের দেশে তো উনিই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী। তিনি কীভাবে এত অ্যাফোর্ট দেন! কাজের প্রতি ওনার যে ডেডিকেশন, যে ভক্তি—এমন শিল্পী হতে পারলেই তো জীবনে অনেক বড় পাওয়া হয়ে যায়। শিল্পী হওয়ার যে চেষ্টা, এটা কিন্তু দারুণ ব্যাপার।
কাজ করতে চাইলে তো সারা জীবনই করা যায়, যে যেভাবে চায়। কিন্তু সেটাও তো নানা ফরম্যাটে নানা সময়ে বদল হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে আমি অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। সবার প্রতিই আমার কৃতজ্ঞতা। ইটস লং টাইম। কোভিড আসার পর একটু থেমেছি। থামা যে জীবনে জরুরি, এটা অনুভব করেছি।
জাকিয়া বারী মম: এখন বরং পড়তে, নিজের সাথে থাকতে, দেখতে, এক্সারসাইজ করতেই আমার বেশি ভালো লাগছে। একটাই ব্যাপার, আমি যখন কাজ করতে গেছি, কাজের জায়গাটা অনেক বেশি নয়েজি মনে হয়েছে। আমি আসলে নেহাতই ভালোবেসে কাজটা করতে আসছিলাম। ভালোবেসে কাজ করতে করতে একটা লম্বা সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি কী কী শেখা যায়, লেখাপড়া করা যায়। সব মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে, আই ডোন্ট নো, হচ্ছে না আরকি! এটা এক ধরনের আমার না-পারাই। আমি পেরে উঠছি না। বাসায় বসে এই দুই বছরে টুকিটাকি লেখাপড়া, নিজের কিছু লেখা লিখতে ইচ্ছা করেছে। কিন্তু কোনো লেখাই শেষ করতে পারি না।
জাকিয়া বারী মম: নিজের কথা না। আমি একটা চরিত্র দাঁড় করেছিলাম রোদসী নামে। রোদসীর সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো মেয়ে নিজেকে মেলাতে পারবে। খুবই সাধারণ একটা চরিত্র। ক্যারেক্টার সিম্পল কিন্তু মানসিকভাবে বা ও যে ধরনের বোধের মানুষ, সে সবকিছু খানিকটা অন্যভাবে দেখে।
জাকিয়া বারী মম: না, না ভাই। ওই যে দেখো কী বিপদ! বাংলাদেশে যারা বানান, আমি তাঁদেরকে হাত জোড় করে স্যালুট করি। এ দেশে যারা ডিরেক্টর, ডিরেকশনের চেয়ে তাঁদেরকে অন্যান্য অনেক কিছু নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। সেগুলো ডিঙিয়ে তাঁর যে মূল নির্মাতা-সত্তা সেখানে পৌঁছতেই অনেক কষ্ট হয়।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মোশাররফ করিমের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন কেয়া পায়েল। ‘মায়ার জালে’, ‘তুমি আমি আর ডিস্টার্ব’, ‘আমার কথা একবারও ভাবলে না’, ‘গার্লফ্রেন্ড’সহ বেশ কয়েকটি নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন দুজনে।
৩ ঘণ্টা আগেশোরুম উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসেন পরীমনি ও ডি এ তায়েব। এ সময়ও স্টেজের সামনে দর্শকদের জড়ো হতে বাধা দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। কয়েকজনের গায়ে হাত তোলা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
১৪ ঘণ্টা আগেঅক্ষয়ের স্পষ্ট জবাব, ‘আমাদের মধ্যে একতা নেই। শ্রদ্ধাবোধেরও যথেষ্ট অভাব।’ অক্ষয়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে অজয় বললেন, ‘দক্ষিণী তারকারা যেভাবে একে অপরের পাশে দাঁড়ান তা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। বলিউডে এই বিষয়টির অভাব রয়েছে।’
১৫ ঘণ্টা আগে‘ভূতপরী’ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ার (ইফি) ৫৫তম আসরে থাকবেন জয়া আহসান। একই উৎসবে দেখানো হবে মেহজাবীন অভিনীত সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’।
১৯ ঘণ্টা আগে