আশিকুর রিমেল, ঢাকা
গত শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বজুড়ে নতুন দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় দর্শকদের। সেই নয়া দুনিয়ার নাম ছিল ‘ম্যাট্রিক্স’। রূপালি পর্দায় এক কল্পিত দুনিয়ার বিস্তার শুরু হয়েছিল সে সময়, যা দর্শক জনপ্রিয়তায় শীর্ষে উঠেছিল। রাতারাতি তারকা খ্যাতি পেয়ে গিয়েছিল নিও-ট্রিনিটি-মরফিয়াস-ওরাকল নামের চরিত্রগুলো। আর চোখধাঁধানো অ্যাকশন তো ছিলই।
তবে ক্রিয়েটরের সঙ্গে নিওর দেখা-সাক্ষাতের পর মনে হয়েছিল ম্যাট্রিক্সের দুনিয়ায় হয়তো ইতি টানা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর আবার ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া হাজির হচ্ছে দর্শকদের সামনে। নতুন পর্বের নাম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’। নতুন পর্বে কী হতে পারে, তা নিয়ে ম্যাট্রিক্স ফ্র্যাঞ্চাইজির ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। চলুন এবার সেই কৌতূহল মেটাতে চষে আসা যাক ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া।
‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ নিয়ে কিছু কথা
বিষ্ময়কর এই পৃথিবীতে মানুষ শ্রেষ্ঠ প্রাণী, যারা দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীতে রাজত্ব করে আসছে। প্রতিনিয়ত একেকটি বিস্ময়কর সৃষ্টির সুবাদে সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে জীবনযাপন। প্রায়শই মেলে চমকানো খবর। নতুন করে আশা, শঙ্কা, আনন্দ, উত্তেজনার জন্ম দেয়। ঠিক এমন প্রেক্ষাপটের চিত্রনাট্যেই ম্যাট্রিক্সের আবির্ভাব। মানুষের কাছে যা কিছু বাস্তব, সেই ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’। একদল মানুষ এই বাস্তবতাকে একটি ‘সিস্টেম’ হিসেবে আবিষ্কার করে। তারা জেনে যায়, বাস্তব নামে যে জীবন পৃথিবীর মানুষ যাপন করছে, তা একটা ‘ছক’ মাত্র। মানবজাতিকে ‘দাস’ বানিয়ে রাখা হয়েছে। তারা জানল, চেনা পৃথিবী বিংশ শতাব্দীতেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এর পর থেকেই মানুষ যা কিছু বাস্তব হিসেবে দেখছে, যা কিছুর সঙ্গে আছে, তা কেবল মানুষের মস্তিষ্কে ঢোকানো কিছু প্রোগ্রাম!
দ্য ম্যাট্রিক্সে এই প্রশ্নও অবশ্য সবার ছিল না। বাস্তব ও কল্পনা নিয়ে প্রতিনিয়তই তৈরি হতো সংশয়। যে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া চলমান সমস্ত বিষয়ের মধ্যেই একটা কোথাও সমস্যা খুঁজে পায়, একটা ধারাবাহিকতা খুঁজে পায় এবং তার মধ্যে এমন কিছু অনুভূতি কাজ করে, যার নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কিন্তু সেসব ঘটে চলেছে অবিরাম। সিনেমায় এমন ব্যক্তিরা দুটি দলে থেকে চিহ্নিত হয়। একদিকে সিস্টেমের পরিচালনাকারী একটি দল, অন্যদিকে আছে সিস্টেম থেকে সবশেষ মানবগোষ্ঠীকে রক্ষার চেষ্টায় থাকা একটি দল।
এমনই একটি চরিত্র অ্যান্ডারসন। একটি প্রসিদ্ধ সফটওয়্যার কোম্পানিতে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করে সে। ব্যক্তিগত জীবনে সে একজন ‘হ্যাকার’। যেখানে ‘নিও’ নামেই তার পরিচিতি। কিছু প্রশ্ন, প্রচলিত ধারণার ওপর অবিশ্বাস, অচেনা কিছু অনুভূতির সমন্বয়ে সেই স্বপ্ন ও বাস্তবের সঙ্গে নিজের অস্তিত্বকে গুলিয়ে ফেলতে থাকে। সিনেমার গল্প অনুযায়ী এই সময়ের জন্য নিও সেই ব্যক্তি, যার ম্যাট্রিক্সের গোড়া পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তার ওপর এই বিশ্বাস রাখে ‘মরফিয়াস’। সে নিজেও ম্যাট্রিক্সের ভেতরে ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে ওই সিস্টেম থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার একটি দল রয়েছে, যারা ওই সিস্টেম থেকে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে এবং সার্বক্ষণিক ম্যাট্রিক্সে নজর রাখে। সিস্টেমের বিরোধিতা করার কারণে তারা বিদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত। নিও তার জানার অদম্য আগ্রহ থেকে যুক্ত হয়ে পড়ে এই দলের সঙ্গে। এদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয় সিস্টেমের প্রতিনিধি ‘এজেন্ট স্মিথ’ নামের চরিত্রটির।
নিওর অজানা একে একে দূর করতে থাকে মরফিয়াস। তবে তার আগে মরফিয়াস ‘নীল’ ও ‘লাল’ রঙের দুটো বড়ি নিওর সামনে দেয়। বেছে নিতে বলে যেকোনো একটি। নীল রঙের বড়িটা তাকে তার যাপিত জীবনে ফিয়িয়ে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে লাল বড়িটি তাকে নিয়ে যাবে অজানা এক বাস্তবতার দিকে।
নিও বেছে নেয় লাল বড়ি। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার অজানার পথে যাত্রা। ‘সিস্টেম’ ও এর কাজের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে নিওর। দেখতে থাকে বিস্ময়কর সবকিছু, ঘটতে থাকে অবিশ্বাস্য সব বিষয়। একপর্যায়ে নিজের মৃত্যুর ধারণাকেও ছাপিয়ে যায় নিও।
নিওর অজেয় হয়ে ওঠার যাত্রায় যুক্ত হয় ট্রিনিটি ও ওরাকল। ছবিতে ওরাকলের ভবিষ্যদ্বাণী মূল সূত্র হিসেবে উঠে আসে।
আমেরিকান নির্মাতা লানা ও লিলি ওয়াচোস্কি নির্মিত ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ চলচ্চিত্রটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়। মুক্তির কিছুদিনের মধ্যে ৬ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত সিনেমাটি আয় করে সাড়ে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর ঠিক চার বছরের মাথায়, ২০০৩ সালে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’ নামের আরো দুটি সিকুয়্যাল মুক্তি পায়। আলোচক-সমালোচকেরা এই সিনেমাকে একেকটি তত্ত্বের আলোকে দেখেছেন, কেউ কেউ তুলে ধরেছেন এর দার্শনিক ভিত্তি। এই সিনেমা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে।
একই বছর মুক্তি ম্যাট্রিক্স ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’
‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এর চরিত্রগুলো সিরিজটির পরবর্তী ছবিগুলোতে আরও পরিণত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’-এ ওরাকলের ভূমিকা তুলনামূলক বেশি প্রাধান্য পেয়েছে প্রথম পর্বের তুলনায়। সিস্টেমের নিরাপত্তার প্রধান ভূমিকায় থাকা ‘এজেন্ট স্মিথ’ নিজেই সিস্টেমকে ধ্বংষ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। দ্বন্দ্ব অন্য মাত্রায় রূপ নেয়।
‘ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশন’-এ নিও পৌঁছে যায় এই সিস্টেমের ‘ক্রিয়েটর’ কাছে। ওরাকলের নির্দেশনা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এই পর্বে। এদিকে ভারতীয় উপমাহাদেশের এক দম্পতি ও ‘সতী’ নামে তাদের একটি শিশুকন্যা পরিস্থিতি আরও রহস্যময় করে তোলে। ওদিকে প্রেমিকা ট্রিনিটির মৃত্যু নিওকে একগুঁয়ে করে তোলে। অবশেষে ক্রিয়েটরের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে নিও। ওরাকল ও ক্রিয়েটরের মধ্যকার সম্পর্ক ও তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দর্শকদেরও বৈপ্লবিক বিস্ময়ের দিকেই নিয়ে যায়।
কী অপেক্ষা করছে ‘ম্যাট্রিক্স রেজারেশনসে’?
ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলার মুক্তি পায় গত ৯ সেপ্টেম্বর। এ বছরের ২২ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
ট্রেলার মুক্তির জন্য আয়োজিত মঞ্চে এবার ভক্তদের দাঁড় করানো হয়েছিল ‘নিও’ চরিত্রে। প্রথম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এ নিও যেমন ক্যাপসুলটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী অজানাকে জানার জীবন বেছে নিয়েছিল, তেমনি দর্শকদেরও ট্রেলার দেখার নির্বাচন করা হয় এই লাল ও নীল ক্যাপসুল দিয়ে।
সিনেমার অন্যতম চরিত্র আব্দুল মাতিনের কণ্ঠে দর্শক-ভক্তরা জানতে পেরেছেন, ‘বর্তমান সময়েই আমাদের বেশি ভরসা। এর বাইরে কিছু নেই।’ এ থেকে কিছু আন্দাজ করা যায়?
ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলারেও গুরুত্ব পেয়েছে ক্যাপসুল নেওয়ার বিষয়টি। দেখা গেছে, সিরিজের প্রথম পর্বের মতোই ‘হোয়াইট র্যাবিট’ ট্যাটু। তবে কি নতুন করে গল্পটা গোড়া থেকে শুরু হতে যাচ্ছে?
বলিউড তারকা প্রিয়াংকা চোপড়াকেও দেখা গেছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের পর্বেই সতীকে দেখেছে দর্শক। এই পর্বে সতীর চরিত্রে প্রিয়াঙ্কাকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনাও বাদ দেওয়া যায় না।
নিও চরিত্রে যথারীতি আছেন কিয়ানু রিভস। এই ট্রিলজি সিরিজের আগের পর্বগুলোতে নিও চরিত্রটি ছিল অনুসন্ধিৎসু। তবে এই কনক্লুশন পর্বের ট্রেলারে নিওর চোখে জিজ্ঞাসার বদলে হতাশা দেখা যায়। যে কিনা বাস্তব জীবনকে খুঁজে পেতে শরণাপন্ন হয়েছে চিকিৎসকের।
এদিকে নিল প্যাট্রিক্সকে একজন এনালিস্ট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। সেই সঙ্গে ট্রিনিটি হিসেবে দেখা যাবে ক্যারি অ্যানি মসকেই। যদিও ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশনে মরে যেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। ম্যাট্রিক্স ট্রিলজির আসন্ন পর্বে ট্রিনিটি তাই একটি চমক হিসেবে এসেছে দর্শকদের কাছে। মরফিয়াস চরিত্রে লরেন্স ফিশবার্নের বদলে দেখা যাবে ইয়াহিয়া আব্দুল মাতিনকে।
ম্যাট্রিক্সের নতুন পর্বে নিও-ট্রিনিটির ভাগ্যে আসলে কী হবে, তা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের শেষ নেই। সেই প্রশ্নের উত্তর এখন হয়তো অনুমান করা যেতে পারে, কিন্তু নিশ্চিত হতে আর কটা দিন সবুর যে করতেই হয়!
গত শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বজুড়ে নতুন দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় দর্শকদের। সেই নয়া দুনিয়ার নাম ছিল ‘ম্যাট্রিক্স’। রূপালি পর্দায় এক কল্পিত দুনিয়ার বিস্তার শুরু হয়েছিল সে সময়, যা দর্শক জনপ্রিয়তায় শীর্ষে উঠেছিল। রাতারাতি তারকা খ্যাতি পেয়ে গিয়েছিল নিও-ট্রিনিটি-মরফিয়াস-ওরাকল নামের চরিত্রগুলো। আর চোখধাঁধানো অ্যাকশন তো ছিলই।
তবে ক্রিয়েটরের সঙ্গে নিওর দেখা-সাক্ষাতের পর মনে হয়েছিল ম্যাট্রিক্সের দুনিয়ায় হয়তো ইতি টানা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর আবার ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া হাজির হচ্ছে দর্শকদের সামনে। নতুন পর্বের নাম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’। নতুন পর্বে কী হতে পারে, তা নিয়ে ম্যাট্রিক্স ফ্র্যাঞ্চাইজির ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। চলুন এবার সেই কৌতূহল মেটাতে চষে আসা যাক ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া।
‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ নিয়ে কিছু কথা
বিষ্ময়কর এই পৃথিবীতে মানুষ শ্রেষ্ঠ প্রাণী, যারা দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীতে রাজত্ব করে আসছে। প্রতিনিয়ত একেকটি বিস্ময়কর সৃষ্টির সুবাদে সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে জীবনযাপন। প্রায়শই মেলে চমকানো খবর। নতুন করে আশা, শঙ্কা, আনন্দ, উত্তেজনার জন্ম দেয়। ঠিক এমন প্রেক্ষাপটের চিত্রনাট্যেই ম্যাট্রিক্সের আবির্ভাব। মানুষের কাছে যা কিছু বাস্তব, সেই ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’। একদল মানুষ এই বাস্তবতাকে একটি ‘সিস্টেম’ হিসেবে আবিষ্কার করে। তারা জেনে যায়, বাস্তব নামে যে জীবন পৃথিবীর মানুষ যাপন করছে, তা একটা ‘ছক’ মাত্র। মানবজাতিকে ‘দাস’ বানিয়ে রাখা হয়েছে। তারা জানল, চেনা পৃথিবী বিংশ শতাব্দীতেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এর পর থেকেই মানুষ যা কিছু বাস্তব হিসেবে দেখছে, যা কিছুর সঙ্গে আছে, তা কেবল মানুষের মস্তিষ্কে ঢোকানো কিছু প্রোগ্রাম!
দ্য ম্যাট্রিক্সে এই প্রশ্নও অবশ্য সবার ছিল না। বাস্তব ও কল্পনা নিয়ে প্রতিনিয়তই তৈরি হতো সংশয়। যে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া চলমান সমস্ত বিষয়ের মধ্যেই একটা কোথাও সমস্যা খুঁজে পায়, একটা ধারাবাহিকতা খুঁজে পায় এবং তার মধ্যে এমন কিছু অনুভূতি কাজ করে, যার নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কিন্তু সেসব ঘটে চলেছে অবিরাম। সিনেমায় এমন ব্যক্তিরা দুটি দলে থেকে চিহ্নিত হয়। একদিকে সিস্টেমের পরিচালনাকারী একটি দল, অন্যদিকে আছে সিস্টেম থেকে সবশেষ মানবগোষ্ঠীকে রক্ষার চেষ্টায় থাকা একটি দল।
এমনই একটি চরিত্র অ্যান্ডারসন। একটি প্রসিদ্ধ সফটওয়্যার কোম্পানিতে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করে সে। ব্যক্তিগত জীবনে সে একজন ‘হ্যাকার’। যেখানে ‘নিও’ নামেই তার পরিচিতি। কিছু প্রশ্ন, প্রচলিত ধারণার ওপর অবিশ্বাস, অচেনা কিছু অনুভূতির সমন্বয়ে সেই স্বপ্ন ও বাস্তবের সঙ্গে নিজের অস্তিত্বকে গুলিয়ে ফেলতে থাকে। সিনেমার গল্প অনুযায়ী এই সময়ের জন্য নিও সেই ব্যক্তি, যার ম্যাট্রিক্সের গোড়া পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তার ওপর এই বিশ্বাস রাখে ‘মরফিয়াস’। সে নিজেও ম্যাট্রিক্সের ভেতরে ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে ওই সিস্টেম থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার একটি দল রয়েছে, যারা ওই সিস্টেম থেকে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে এবং সার্বক্ষণিক ম্যাট্রিক্সে নজর রাখে। সিস্টেমের বিরোধিতা করার কারণে তারা বিদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত। নিও তার জানার অদম্য আগ্রহ থেকে যুক্ত হয়ে পড়ে এই দলের সঙ্গে। এদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয় সিস্টেমের প্রতিনিধি ‘এজেন্ট স্মিথ’ নামের চরিত্রটির।
নিওর অজানা একে একে দূর করতে থাকে মরফিয়াস। তবে তার আগে মরফিয়াস ‘নীল’ ও ‘লাল’ রঙের দুটো বড়ি নিওর সামনে দেয়। বেছে নিতে বলে যেকোনো একটি। নীল রঙের বড়িটা তাকে তার যাপিত জীবনে ফিয়িয়ে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে লাল বড়িটি তাকে নিয়ে যাবে অজানা এক বাস্তবতার দিকে।
নিও বেছে নেয় লাল বড়ি। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার অজানার পথে যাত্রা। ‘সিস্টেম’ ও এর কাজের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে নিওর। দেখতে থাকে বিস্ময়কর সবকিছু, ঘটতে থাকে অবিশ্বাস্য সব বিষয়। একপর্যায়ে নিজের মৃত্যুর ধারণাকেও ছাপিয়ে যায় নিও।
নিওর অজেয় হয়ে ওঠার যাত্রায় যুক্ত হয় ট্রিনিটি ও ওরাকল। ছবিতে ওরাকলের ভবিষ্যদ্বাণী মূল সূত্র হিসেবে উঠে আসে।
আমেরিকান নির্মাতা লানা ও লিলি ওয়াচোস্কি নির্মিত ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ চলচ্চিত্রটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়। মুক্তির কিছুদিনের মধ্যে ৬ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত সিনেমাটি আয় করে সাড়ে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর ঠিক চার বছরের মাথায়, ২০০৩ সালে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’ নামের আরো দুটি সিকুয়্যাল মুক্তি পায়। আলোচক-সমালোচকেরা এই সিনেমাকে একেকটি তত্ত্বের আলোকে দেখেছেন, কেউ কেউ তুলে ধরেছেন এর দার্শনিক ভিত্তি। এই সিনেমা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে।
একই বছর মুক্তি ম্যাট্রিক্স ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’
‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এর চরিত্রগুলো সিরিজটির পরবর্তী ছবিগুলোতে আরও পরিণত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’-এ ওরাকলের ভূমিকা তুলনামূলক বেশি প্রাধান্য পেয়েছে প্রথম পর্বের তুলনায়। সিস্টেমের নিরাপত্তার প্রধান ভূমিকায় থাকা ‘এজেন্ট স্মিথ’ নিজেই সিস্টেমকে ধ্বংষ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। দ্বন্দ্ব অন্য মাত্রায় রূপ নেয়।
‘ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশন’-এ নিও পৌঁছে যায় এই সিস্টেমের ‘ক্রিয়েটর’ কাছে। ওরাকলের নির্দেশনা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এই পর্বে। এদিকে ভারতীয় উপমাহাদেশের এক দম্পতি ও ‘সতী’ নামে তাদের একটি শিশুকন্যা পরিস্থিতি আরও রহস্যময় করে তোলে। ওদিকে প্রেমিকা ট্রিনিটির মৃত্যু নিওকে একগুঁয়ে করে তোলে। অবশেষে ক্রিয়েটরের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে নিও। ওরাকল ও ক্রিয়েটরের মধ্যকার সম্পর্ক ও তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দর্শকদেরও বৈপ্লবিক বিস্ময়ের দিকেই নিয়ে যায়।
কী অপেক্ষা করছে ‘ম্যাট্রিক্স রেজারেশনসে’?
ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলার মুক্তি পায় গত ৯ সেপ্টেম্বর। এ বছরের ২২ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
ট্রেলার মুক্তির জন্য আয়োজিত মঞ্চে এবার ভক্তদের দাঁড় করানো হয়েছিল ‘নিও’ চরিত্রে। প্রথম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এ নিও যেমন ক্যাপসুলটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী অজানাকে জানার জীবন বেছে নিয়েছিল, তেমনি দর্শকদেরও ট্রেলার দেখার নির্বাচন করা হয় এই লাল ও নীল ক্যাপসুল দিয়ে।
সিনেমার অন্যতম চরিত্র আব্দুল মাতিনের কণ্ঠে দর্শক-ভক্তরা জানতে পেরেছেন, ‘বর্তমান সময়েই আমাদের বেশি ভরসা। এর বাইরে কিছু নেই।’ এ থেকে কিছু আন্দাজ করা যায়?
ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলারেও গুরুত্ব পেয়েছে ক্যাপসুল নেওয়ার বিষয়টি। দেখা গেছে, সিরিজের প্রথম পর্বের মতোই ‘হোয়াইট র্যাবিট’ ট্যাটু। তবে কি নতুন করে গল্পটা গোড়া থেকে শুরু হতে যাচ্ছে?
বলিউড তারকা প্রিয়াংকা চোপড়াকেও দেখা গেছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের পর্বেই সতীকে দেখেছে দর্শক। এই পর্বে সতীর চরিত্রে প্রিয়াঙ্কাকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনাও বাদ দেওয়া যায় না।
নিও চরিত্রে যথারীতি আছেন কিয়ানু রিভস। এই ট্রিলজি সিরিজের আগের পর্বগুলোতে নিও চরিত্রটি ছিল অনুসন্ধিৎসু। তবে এই কনক্লুশন পর্বের ট্রেলারে নিওর চোখে জিজ্ঞাসার বদলে হতাশা দেখা যায়। যে কিনা বাস্তব জীবনকে খুঁজে পেতে শরণাপন্ন হয়েছে চিকিৎসকের।
এদিকে নিল প্যাট্রিক্সকে একজন এনালিস্ট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। সেই সঙ্গে ট্রিনিটি হিসেবে দেখা যাবে ক্যারি অ্যানি মসকেই। যদিও ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশনে মরে যেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। ম্যাট্রিক্স ট্রিলজির আসন্ন পর্বে ট্রিনিটি তাই একটি চমক হিসেবে এসেছে দর্শকদের কাছে। মরফিয়াস চরিত্রে লরেন্স ফিশবার্নের বদলে দেখা যাবে ইয়াহিয়া আব্দুল মাতিনকে।
ম্যাট্রিক্সের নতুন পর্বে নিও-ট্রিনিটির ভাগ্যে আসলে কী হবে, তা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের শেষ নেই। সেই প্রশ্নের উত্তর এখন হয়তো অনুমান করা যেতে পারে, কিন্তু নিশ্চিত হতে আর কটা দিন সবুর যে করতেই হয়!
আগামী ৪ ডিসেম্বর শুরু হবে ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের উৎসবে অংশ নেবে বিভিন্ন দেশের ২০০টির বেশি সিনেমা। তবে রাখা হয়নি না বাংলাদেশের কোনো সিনেমা।
১ ঘণ্টা আগেঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও অভিষেক বচ্চন দম্পতির ঘর ভাঙার গুঞ্জন এখন বলিউডের লোকের মুখে মুখে। এই তারকা দম্পতির বিচ্ছেদের গুঞ্জন ঘিরে একের পর এক তথ্য সামনে আসছে। কখনো সংসারে বনিবনা না হওয়া কখনোবা তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশের কথাও শোনা যাচ্ছে। যদিও এ নিয়ে কুলুপ এঁটে ছিলেন পুরো বচ্চন পরিবার। এসবের মধ্যেই নিজের ব্ল
৩ ঘণ্টা আগেশুধু কিং খানই নন, তাঁর নিশানায় ছিলেন বাদশাপুত্র আরিয়ান খানও। শাহরুখের নিরাপত্তাবলয়ের বিষয়েও খুঁটিনাটি তথ্য ইন্টারনেট ঘেঁটে জোগাড় করেছিলেন ফয়জান। এমনকি শাহরুখ এবং আরিয়ান নিত্যদিন কোথায়, কখন যেতেন, কী করতেন সমস্ত গতিবিধির ওপর নজর ছিল ধৃতর। পুলিশি সূত্রে খবর, রীতিমতো আটঘাট বেঁধে শাহরুখ খানকে খুনের হুম
৬ ঘণ্টা আগেগত বছরের শেষ দিকে ‘নীলচক্র’ সিনেমার খবর দিয়েছিলেন আরিফিন শুভ। এতে শুভর বিপরীতে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। শুটিং শেষে মুক্তির জন্য প্রস্তুত সিনেমাটি। ট্রেন্ডি ও সমসাময়িক গল্পে নীলচক্র বানিয়েছেন মিঠু খান।
৮ ঘণ্টা আগে