হ্রদের পানি প্লাস্টিকমুক্ত করার অভিনব উদ্যোগ

ডয়চে ভেলে
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৩: ০১
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৩: ০৪

বিশ্বের কিছু প্রান্তে জঞ্জাল ব্যবস্থাপনার অভাবে পরিবেশ দূষণের মারাত্মক পরিণতি দেখা যাচ্ছে। আফ্রিকায় বেসরকারি উদ্যোগে কিছু অ্যাকটিভিস্ট সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি এক অভিনব প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। 

জোসাফাট রুবেঙ্গার মনমেজাজ বেশ ভালো রয়েছে। যদিও তাঁর বর্তমান কাজ মোটেই আনন্দ দেয় না। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি নিজের ডিঙি নৌকা নিয়ে নিয়মিত কিভু হ্রদে যাচ্ছেন। গ্রিন হেলমেট টিমের বাকি সদস্যদের সঙ্গে তিনি সেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেন। জোসাফাট বলেন, ‘এটা এখন আমার জন্য রুটিন হয়ে উঠেছে। প্রতি সপ্তাহে আমি লেক কিভু পরিষ্কারের জন্য চার ঘণ্টা সময় দিই। আমি এই হ্রদ লালন করি। আমি এখানেই জন্মেছি, বড় হয়ে উঠেছি। সেটা আজ আমার অংশ হয়ে উঠেছে।’

কিন্তু সেই হ্রদ প্লাস্টিকে ভরে উঠেছে। বুকাভু শহরে কাওয়া নদী যেখানে হ্রদে গিয়ে মেশে, সেখানেও নদীর তীরে জঞ্জাল ভরে গেছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইভল্যাঁ নাতামপাকা বহুকাল ধরে এই সমস্যা পর্যবেক্ষণ করছেন। তাঁর মতে, শুধু মানুষ নয়, এমন প্রবণতার ফলে পানির জীবদের জন্যও মারাত্মক পরিণতি দেখা যাচ্ছে। এই হ্রদ আসলে মাছ ও সেগুলির শাবকদের নার্সারি হওয়া উচিত ছিল। মাছ সেখানে এসে বংশবৃদ্ধি করবে, এখানে এমন পরিবেশ থাকা উচিত ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই জায়গা দূষিত হয়ে যাওয়ায় মাছও এই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোয় বর্জ্য সংগ্রহের কোনো প্রণালি চালু নেই। প্রতিদিন হাজার হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য বেআইনি আবর্জনার স্তূপে জমা হয় বা চারপাশে ফেলে দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একই রকম বিপর্যয় দেখা যায়। 

স্থানীয় মানুষ সম্প্রতি লেক কিভুর নিজস্ব ‘সাম্বাসা’ সার্ডিন মাছের অভাব স্পষ্ট লক্ষ্য করছেন। সেই হ্রদ পরিষ্কার না করা হলে মাছের সংখ্যা আরও কমে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সেখানকার পেশাদারি জেলেদের জন্য এর সুদূরপ্রসারী পরিণতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

সে কারণে গ্রিন হেলমেট গোষ্ঠীর অ্যাকটিভিস্টদের কাজ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। অনেক জঞ্জালকুড়ানি শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে এক কালেকশন পয়েন্টে নিয়ে যাচ্ছেন। পরিমাণ অনুযায়ী তাঁরা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। এক বস্তা জঞ্জালের জন্য এক ইউরোর সামান্য কম অর্থ উপার্জন করা যায়। প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহকারী হিসেবে মুনগাঙ্গা অ্যানোসঁ বলেন, ‘এই কাজ আমাকে অনেক সাহায্য করে। কারণ বোতল সংগ্রহ করে আমি আমার পরিবারকে সাহায্য করতে পারছি।’

বোতলগুলি ব্র্যান্ড অনুযায়ী আলাদা করা হয়। প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে এই উদ্যোগে সহায়তা করানোই হলো লক্ষ্য। তারপর সংগ্রহ করা প্লাস্টিক নির্মাণের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 

তরুণ অ্যাকটিভিস্টরা বোতল দিয়ে ভাসমান এক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন। তাঁদের মডেলের ভিত্তিতে আরও বড় প্রকল্প সৃষ্টি করাই তাঁদের লক্ষ্য। ১,২০০ বর্গ মিটারের চেয়েও বড় জায়গা জুড়ে লেকের মাঝখানে ‘তিলাটোপিয়া’ নামের কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করতে চান তাঁরা। 

জোসাফাট রুবেঙ্গা বলেন, ‘এখানেই আমরা তিলাটোপিয়া উদ্যোগ কার্যকর করতে চাই। সেটা এক হোটেল কমপ্লেক্স হবে। সেখানে ছয়জন অতিথির থাকার ঘর থাকবে। বহুমুখী এক হলে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।’

কিন্তু সেই উদ্যোগ কার্যকর করতে তাঁদের প্রায় ২৫ লাখ প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করতে হবে। সেটা এক বিশাল কর্মকাণ্ড। গ্রিন হেলমেট গ্রুপ অবশ্য নিজেদের প্রত্যয়ে অটল রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত