ইশতিয়াক হাসান, ঢাকা
ইদানীং হাতি মৃত্যুর কোনো খবর পত্রিকায় বা অনলাইনে দেখলে আর পড়ার মানসিক শক্তি পাই না। মনে হয় এভাবে মরতে মরতে দ্রুতই বুঝি এরা চিরতরে হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের পাহাড় ও বন থেকে। আজ ডে অফটা যেমন নিরানন্দ হয়ে গেল কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি বুনো হাতি মৃত্যুর খবর জেনে।
এটি দুর্ঘটনা নাকি হত্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনো। তবে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম বলুন কী গারো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায়, বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতির বেশির ভাগ মৃত্যুর বেলাতেই দেখা গেছে সেগুলো আসলে ইচ্ছাকৃত পেতে রাখা বৈদ্যুতিক ফাঁদ।
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। হাতির খোঁজে চষে বেড়িয়েছি রাঙামাটির কাপ্তাই, বান্দরবানের লামা-আলীকদম, দুধুপুকুরিয়াসহ কত জঙ্গলে। কাসালং ফরেস্টের রাঙ্গীপাড়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম হাতির পালের দশ গজের মধ্যে। তখন হাতিগুলো মানুষের যন্ত্রণায় ছিল খুব অস্থির, তারপরও আমাকে কিছুই করেনি। এখন আবার পুরোনো সেই প্রশ্নটাই ঘুরেফিরে আসছে মনে সত্যি কী বুনো হাতিদের জন্য আর জায়গা নেই আমাদের বনে?
গত বেশ কয়েক বছর ধরে আশ্চর্যজনকভাবে একের পর এক হাতি মারা যাওয়ার খবর পাচ্ছি আমাদের অরণ্যগুলো থেকে। কক্সবাজার-টেকনাফ-লামা-আলীকদম এই জায়গাগুলোয় বেশ কয়েকটা বড় পাল ঘুরে বেড়াচ্ছিল হাতিদের, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। রোহিঙ্গা বসতির কারণে ওই পালগুলোর অন্তত দুটো মোটামুটি নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে আটকা পড়ে গিয়েছে। এরা আছে চরম খাবার সংকটে।
ইদানীং, চট্টগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে একের পর এক হাতি মৃত্যুর যে ঘটনা ঘটছে তার প্রায় সবগুলোই কক্সবাজার-লামার বন-পাহাড়ে। এর মধ্যে অনেকগুলোর মৃত্যু হয়েছে কীভাবে শুনবেন? বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে। আমরা মানুষেরা সুপরিকল্পিতভাবে এটা করেছি। একসময় বন্যপ্রাণীদের দারুণ এক আশ্রয় ছিল টেকনাফ গেম রিজার্ভ। কিন্তু কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আধিপত্যসহ নানা কারণে বনটির অবস্থা একেবারেই করুন এখন। এখানেও নেই হাতিদের খাবার।
অথচ বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি বুনো হাতি আছে কক্সবাজারেই। যে অবস্থা আর খুব বেশি দিন হয়তো লাগবে না কক্সবাজার থেকে এবং পুরো বাংলাদেশ থেকেই বুনো হাতি হারিয়ে যেতে।
ভাবছেন অন্য জায়গায় তাহলে হাতিরা ভালো আছে। মোটেই না, ওই সব অরণ্যে হাতির অবস্থা আগে থেকেই খারাপ। সিলেটে লাঠিটিলা বাদে আর কোথাও এখন এমনকি সীমান্ত পেরিয়েও আসে না হাতিরা।
ময়মনসিংহ বিভাগের ভারতীয় সীমান্ত এলাকার গারো পাহাড়ের হাতিদের অবস্থা রীতিমতো ভয়াবহ। খাবার না থাকায় হাতিদের সেখানে নিয়মিতই হানা দিতে হয় মানুষের খেতে। তাই হাতি-মানুষ যুদ্ধ সেখানে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। সুপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতায়িত করে এই এলাকায়ও হাতি মারা হয় নিয়মিতই।
আমাদের স্থায়ী বুনো হাতি আছে কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে হাতিদের অবস্থা অনেক দিন থেকেই খারাপ। ভয়ংকর তথ্য হলো রাঙামাটির কাসালং, কাপ্তাই মিলিয়ে সাকুল্যে বুনো হাতি আছে ৫০ টির আশপাশে। দাঁতাল হাতির সংখ্যা এতই কমছে যে এক সময় জিন পুল থেকেই এদের হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা!
অথচ আগে হাতিরা কী সুন্দর দিন কাটাত। ইউসুফ এস আহমদ, এনায়েত মাওলার বই থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় বিংশ শতকের মাঝামাঝির দিকে কাসালং, কাপ্তাই এসব জায়গায় ঘটা করে খেদার আয়োজন হতো। এক একটা খেদায় ৩০-৪০ এমনকি ৬০-৭০টা হাতিও ধরা পড়ত। বুঝুন ওই সব জঙ্গলে কত্তো হাতি ঘুরে বেড়াত তখন! মাইনিতে এক বৃদ্ধ বলেছিলেন তরুণ বয়সে কাসালংয়ের অরণ্যে ১০০ হাতির পালও দেখেছেন। ২০১১ সালেই আমি প্রায় ৩০টা হাতির দলের সন্ধান পেয়েছিলাম।
এমনকি একসময় বান্দরবানের রেমাক্রি, মোদক এসব এলাকায়ও বিচরণ ছিল বুনো হাতির। এনায়েত মাওলা গত শতকের মাঝামাঝির দিকে এক পাকিস্তানি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাসহ রেমাক্রির কাছাকাছি এলাকায় এক অভিযানের কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। সেখানে বুনো হাতির পালের ভয়ে গাছে মাচা বেঁধে থাকছিল ম্রো জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা।
এমনকি ময়মনসিংহের রাজারা গারো পাহাড়েও খেদার আয়োজন করতেন, অবশ্য ওটা বহু আগের কাহিনি! বুঝুন বুনো হাতির দিক থেকে মোটামুটি গর্ব করার জায়গায় ছিলাম আমরা!
নেট ঘাঁটাঘাঁটি করে যা বুঝেছি এশীয় হাতি আছে এখন যে ১৩টি দেশে এর সবগুলোই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। দু-একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে ওই সব এলাকার হাতিরা অনেকই ভালো আছে আমাদেরগুলোর চেয়ে!
আজকে বুনো হাতিটার মৃত্যু সংবাদ শুনে ভাবছিলাম আমারই মন এত খারাপ। এক একটা বুনো হাতির মৃত্যুতে পালের অন্য হাতিগুলো মন নিশ্চয় আরও খারাপ হয়ে যায়। ভাবছেন হাতি কী মানুষ নাকি, মন ভার হবে, দুঃখ পাবে? কিন্তু হাতিরা সত্যি খুব বুদ্ধিমান, ওদের অনুভূতিও প্রবল।
আমরা মানুষেরা যেমন কেউ মারা গেলে দুঃখ পাই, শোক প্রকাশ করি, হাতিরাও তাই করে। শুঁড় দিয়ে কখনো মৃত সঙ্গীর শরীরটা ছুঁয়ে দেখে ওরা। কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে শোক করে। এমনকি হাতিদের মধ্যে কেউ মারা গেলে অন্য হাতিরা সঙ্গীর দেহটা কবর দেওয়ার পর্যন্ত চেষ্টা করে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একবার দুর্দান্ত একটি ভিডিও করেছিল। সেখানে দেখা যায় একটা মেয়ে হাতি মৃত সঙ্গীর দাঁত শুঁড় দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে অনেক মমতায়। এভাবে সে থাকে কয়েক ঘণ্টা।
এখন আপনি হয়তো ভাবছেন তো হাতিরা জঙ্গলে থাকলেই পারে? তাদের লোকালয়ে আসার দরকার কী ধান খেতে? জঙ্গলেও যে এখন মানুষের বসতি। তা ছাড়া বনের গাছপালা কেটে বিশাল জন্তুটার খাবার জন্য তেমন কিছু রাখিনি আমরা। আবার এখন যেসব জায়গায় মানুষের বসতি, ধানখেত এসব এলাকাতেও এক সময় ছিল হাতিদের আস্তানা। ওদের এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে যাওয়ার পথও আমরা আটকে দিয়েছি নানা স্থাপনা তুলে। বলুন তো হাতিরা যাবে কোথায়?
এক যুগের বেশি আগে আগে, রাঙ্গীপাড়ার জঙ্গলে ছোট্ট এক হাতি শিশুকে দেখেছিলাম, ওটার এখন তরতাজা যুবক বা যুবতী হওয়ার কথা, কারণ হাতিরা অনায়াসে ৭০-৮০ বছর বাঁচে।
তবে যেভাবে হাতি শিকার হচ্ছে আমার আশঙ্কা হয়তো প্রিয় ওই ছোট্ট হাতিটা বড়ই হতে পারেনি, এর আগেই ওকে শেষ করে দিয়েছে নরপিশাচরা। আমার একটা ভয়, হয়তো বাঘের আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বুনো হাতি। তখন কেবল রূপকথা গল্পেই ওদের কথা পড়বে আমাদের শিশুরা।
তাই আসুন সবাই মিলে একটা শেষ চেষ্টা করি আমাদের বন-পাহাড় ও পরিবেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণীটিকে বাঁচানোর। অন্তত যদি এদের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঠেকানো যায় আর পাহাড়ে হাতিদের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা যায় তাহলেই হয়তো বা আশ্চর্য সুন্দর ও বুদ্ধিমান এই প্রাণীটিকে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারব।
ইদানীং হাতি মৃত্যুর কোনো খবর পত্রিকায় বা অনলাইনে দেখলে আর পড়ার মানসিক শক্তি পাই না। মনে হয় এভাবে মরতে মরতে দ্রুতই বুঝি এরা চিরতরে হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের পাহাড় ও বন থেকে। আজ ডে অফটা যেমন নিরানন্দ হয়ে গেল কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি বুনো হাতি মৃত্যুর খবর জেনে।
এটি দুর্ঘটনা নাকি হত্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনো। তবে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম বলুন কী গারো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায়, বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতির বেশির ভাগ মৃত্যুর বেলাতেই দেখা গেছে সেগুলো আসলে ইচ্ছাকৃত পেতে রাখা বৈদ্যুতিক ফাঁদ।
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। হাতির খোঁজে চষে বেড়িয়েছি রাঙামাটির কাপ্তাই, বান্দরবানের লামা-আলীকদম, দুধুপুকুরিয়াসহ কত জঙ্গলে। কাসালং ফরেস্টের রাঙ্গীপাড়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম হাতির পালের দশ গজের মধ্যে। তখন হাতিগুলো মানুষের যন্ত্রণায় ছিল খুব অস্থির, তারপরও আমাকে কিছুই করেনি। এখন আবার পুরোনো সেই প্রশ্নটাই ঘুরেফিরে আসছে মনে সত্যি কী বুনো হাতিদের জন্য আর জায়গা নেই আমাদের বনে?
গত বেশ কয়েক বছর ধরে আশ্চর্যজনকভাবে একের পর এক হাতি মারা যাওয়ার খবর পাচ্ছি আমাদের অরণ্যগুলো থেকে। কক্সবাজার-টেকনাফ-লামা-আলীকদম এই জায়গাগুলোয় বেশ কয়েকটা বড় পাল ঘুরে বেড়াচ্ছিল হাতিদের, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। রোহিঙ্গা বসতির কারণে ওই পালগুলোর অন্তত দুটো মোটামুটি নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে আটকা পড়ে গিয়েছে। এরা আছে চরম খাবার সংকটে।
ইদানীং, চট্টগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে একের পর এক হাতি মৃত্যুর যে ঘটনা ঘটছে তার প্রায় সবগুলোই কক্সবাজার-লামার বন-পাহাড়ে। এর মধ্যে অনেকগুলোর মৃত্যু হয়েছে কীভাবে শুনবেন? বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে। আমরা মানুষেরা সুপরিকল্পিতভাবে এটা করেছি। একসময় বন্যপ্রাণীদের দারুণ এক আশ্রয় ছিল টেকনাফ গেম রিজার্ভ। কিন্তু কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আধিপত্যসহ নানা কারণে বনটির অবস্থা একেবারেই করুন এখন। এখানেও নেই হাতিদের খাবার।
অথচ বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি বুনো হাতি আছে কক্সবাজারেই। যে অবস্থা আর খুব বেশি দিন হয়তো লাগবে না কক্সবাজার থেকে এবং পুরো বাংলাদেশ থেকেই বুনো হাতি হারিয়ে যেতে।
ভাবছেন অন্য জায়গায় তাহলে হাতিরা ভালো আছে। মোটেই না, ওই সব অরণ্যে হাতির অবস্থা আগে থেকেই খারাপ। সিলেটে লাঠিটিলা বাদে আর কোথাও এখন এমনকি সীমান্ত পেরিয়েও আসে না হাতিরা।
ময়মনসিংহ বিভাগের ভারতীয় সীমান্ত এলাকার গারো পাহাড়ের হাতিদের অবস্থা রীতিমতো ভয়াবহ। খাবার না থাকায় হাতিদের সেখানে নিয়মিতই হানা দিতে হয় মানুষের খেতে। তাই হাতি-মানুষ যুদ্ধ সেখানে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। সুপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতায়িত করে এই এলাকায়ও হাতি মারা হয় নিয়মিতই।
আমাদের স্থায়ী বুনো হাতি আছে কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে হাতিদের অবস্থা অনেক দিন থেকেই খারাপ। ভয়ংকর তথ্য হলো রাঙামাটির কাসালং, কাপ্তাই মিলিয়ে সাকুল্যে বুনো হাতি আছে ৫০ টির আশপাশে। দাঁতাল হাতির সংখ্যা এতই কমছে যে এক সময় জিন পুল থেকেই এদের হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা!
অথচ আগে হাতিরা কী সুন্দর দিন কাটাত। ইউসুফ এস আহমদ, এনায়েত মাওলার বই থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় বিংশ শতকের মাঝামাঝির দিকে কাসালং, কাপ্তাই এসব জায়গায় ঘটা করে খেদার আয়োজন হতো। এক একটা খেদায় ৩০-৪০ এমনকি ৬০-৭০টা হাতিও ধরা পড়ত। বুঝুন ওই সব জঙ্গলে কত্তো হাতি ঘুরে বেড়াত তখন! মাইনিতে এক বৃদ্ধ বলেছিলেন তরুণ বয়সে কাসালংয়ের অরণ্যে ১০০ হাতির পালও দেখেছেন। ২০১১ সালেই আমি প্রায় ৩০টা হাতির দলের সন্ধান পেয়েছিলাম।
এমনকি একসময় বান্দরবানের রেমাক্রি, মোদক এসব এলাকায়ও বিচরণ ছিল বুনো হাতির। এনায়েত মাওলা গত শতকের মাঝামাঝির দিকে এক পাকিস্তানি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাসহ রেমাক্রির কাছাকাছি এলাকায় এক অভিযানের কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। সেখানে বুনো হাতির পালের ভয়ে গাছে মাচা বেঁধে থাকছিল ম্রো জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা।
এমনকি ময়মনসিংহের রাজারা গারো পাহাড়েও খেদার আয়োজন করতেন, অবশ্য ওটা বহু আগের কাহিনি! বুঝুন বুনো হাতির দিক থেকে মোটামুটি গর্ব করার জায়গায় ছিলাম আমরা!
নেট ঘাঁটাঘাঁটি করে যা বুঝেছি এশীয় হাতি আছে এখন যে ১৩টি দেশে এর সবগুলোই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। দু-একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে ওই সব এলাকার হাতিরা অনেকই ভালো আছে আমাদেরগুলোর চেয়ে!
আজকে বুনো হাতিটার মৃত্যু সংবাদ শুনে ভাবছিলাম আমারই মন এত খারাপ। এক একটা বুনো হাতির মৃত্যুতে পালের অন্য হাতিগুলো মন নিশ্চয় আরও খারাপ হয়ে যায়। ভাবছেন হাতি কী মানুষ নাকি, মন ভার হবে, দুঃখ পাবে? কিন্তু হাতিরা সত্যি খুব বুদ্ধিমান, ওদের অনুভূতিও প্রবল।
আমরা মানুষেরা যেমন কেউ মারা গেলে দুঃখ পাই, শোক প্রকাশ করি, হাতিরাও তাই করে। শুঁড় দিয়ে কখনো মৃত সঙ্গীর শরীরটা ছুঁয়ে দেখে ওরা। কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে শোক করে। এমনকি হাতিদের মধ্যে কেউ মারা গেলে অন্য হাতিরা সঙ্গীর দেহটা কবর দেওয়ার পর্যন্ত চেষ্টা করে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একবার দুর্দান্ত একটি ভিডিও করেছিল। সেখানে দেখা যায় একটা মেয়ে হাতি মৃত সঙ্গীর দাঁত শুঁড় দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে অনেক মমতায়। এভাবে সে থাকে কয়েক ঘণ্টা।
এখন আপনি হয়তো ভাবছেন তো হাতিরা জঙ্গলে থাকলেই পারে? তাদের লোকালয়ে আসার দরকার কী ধান খেতে? জঙ্গলেও যে এখন মানুষের বসতি। তা ছাড়া বনের গাছপালা কেটে বিশাল জন্তুটার খাবার জন্য তেমন কিছু রাখিনি আমরা। আবার এখন যেসব জায়গায় মানুষের বসতি, ধানখেত এসব এলাকাতেও এক সময় ছিল হাতিদের আস্তানা। ওদের এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে যাওয়ার পথও আমরা আটকে দিয়েছি নানা স্থাপনা তুলে। বলুন তো হাতিরা যাবে কোথায়?
এক যুগের বেশি আগে আগে, রাঙ্গীপাড়ার জঙ্গলে ছোট্ট এক হাতি শিশুকে দেখেছিলাম, ওটার এখন তরতাজা যুবক বা যুবতী হওয়ার কথা, কারণ হাতিরা অনায়াসে ৭০-৮০ বছর বাঁচে।
তবে যেভাবে হাতি শিকার হচ্ছে আমার আশঙ্কা হয়তো প্রিয় ওই ছোট্ট হাতিটা বড়ই হতে পারেনি, এর আগেই ওকে শেষ করে দিয়েছে নরপিশাচরা। আমার একটা ভয়, হয়তো বাঘের আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বুনো হাতি। তখন কেবল রূপকথা গল্পেই ওদের কথা পড়বে আমাদের শিশুরা।
তাই আসুন সবাই মিলে একটা শেষ চেষ্টা করি আমাদের বন-পাহাড় ও পরিবেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণীটিকে বাঁচানোর। অন্তত যদি এদের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঠেকানো যায় আর পাহাড়ে হাতিদের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা যায় তাহলেই হয়তো বা আশ্চর্য সুন্দর ও বুদ্ধিমান এই প্রাণীটিকে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারব।
এবারের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে ‘কপ অব দ্য ফিন্যান্স’ বা অর্থায়নের কপ বলা হলেও সেটি কেবল কাগজে-কলমেই ঠেকেছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলো বার্ষিক ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জলবায়ু ক্ষতিপূরণের যে দাবি জানিয়েছিল, সম্মেলনের ১১তম দিনেও সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। এমনকি বিগত বছরগুলোর ক্ষতিপূ
৬ ঘণ্টা আগেকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৯৫, যা অস্বাস্থ্যকর। অন্যদিকে একদিন পরই আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর পরে আছে পাকিস্তানের লাহোর। এ ছাড়া শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে ইজিপট ও চীন...
৭ ঘণ্টা আগেপাঁচ বছর আগে প্লাস্টিক দূষণ রোধের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের এক জোট গড়ে তুলেছিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল ও রাসায়নিক কোম্পানিগুলো। কিন্তু নতুন তথ্য বলছে, এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ নতুন প্লাস্টিক উৎপাদন করেছে, তা তাদের অপসারিত বর্জ্যের তুলনায় ১ হাজার গুণ বেশি।
২১ ঘণ্টা আগেঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক কমলেও অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৮১, অবস্থান ষষ্ঠ। অন্যদিকে দুদিনের ব্যবধানে আবারও পাকিস্তানের লাহোর বায়ুদূষণের শীর্ষে পাকিস্তানের লাহোর। এরপরে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এ ছাড়াও শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে মঙ্গোলিয়া ও ই
১ দিন আগে