আশিকুর রহমান সমী

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)
আশিকুর রহমান সমী

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।
আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।
আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকায় অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত। তাপমাত্রাও গতকালের মতো রয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকায় অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত। তাপমাত্রাও গতকালের মতো রয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, সাধারণত আধুনিক জলবায়ু বিশ্লেষণে ১৮৫০ সালের তাপমাত্রাকে ‘প্রাক-শিল্পযুগ’ বা শিল্পযুগ শুরুর আগের তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী, বিশ্ব এখন প্রাক শিল্প যুগের আগের তুলনায় প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিন্তু ‘গ্লোসেট’ (GloSAT) নামে নতুন ডেটা-সেট প্রাক-শিল্পযুগের তাপমাত্রার হিসেবটিকে নিয়ে গেছে আরও পেছনে, ১৭৮১ সাল পর্যন্ত। গবেষকদের মতে, এই বাড়তি সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যেই বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রায় ২.৫ শতাংশ বেড়েছিল, যা ওই সময়ের মধ্যেও কিছুটা উষ্ণতা বাড়িয়েছিল।
গ্লোসেট ডেটা দেখাচ্ছে—১৮ শতকের শেষভাগ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবী ১৮৫০–১৯০০ সময়কালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ঠান্ডা ছিল। ফলে সেই সময়ের বিপরীতে বর্তমান উষ্ণতা হিসেব করতে গেলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আরও বেশি মাত্রায় ঘটেছে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, প্রাক শিল্প যুগে যে উষ্ণতাটুকু বেড়েছিল, তার সবটাই মানুষের কারণে নয়। ১৮০০ সালের শুরুর দিকে তাম্বোরা সহ একাধিক বড় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীকে সাময়িকভাবে ঠান্ডা করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সেই শীতলতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বিরাজ করেছে, সেটিও উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যানেল (আইপিসিসি) আগেই জানিয়েছিল, ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে মানুষের কারণে উষ্ণতা বেড়েছিল ০ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। নতুন গবেষণাগুলো সেই সীমার মাঝামাঝি অবস্থান করছে—প্রায় ০.০৯ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই গবেষণার বড় দিক হলো—পুরোনো তাপমাত্রা রেকর্ড। ইউরোপের বিভিন্ন শহর যেমন, সুইডেনের উপসালা, জার্মানির হোহেনপাইসেনবার্গের মতো স্থানে শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত তথ্য এবং ১৮ শতকের জাহাজযাত্রার সময় নথিভুক্ত সামুদ্রিক বায়ুর তাপমাত্রা একত্র করে তৈরি হয়েছে এই বৈশ্বিক চিত্র। যদিও প্রাচীন তথ্যগুলো অসম্পূর্ণ এবং অনিশ্চয়তা বেশি, তবু বিজ্ঞানীদের মতে একটি বিষয় স্পষ্ট—পৃথিবী তখন আরও ঠান্ডা ছিল।
তাহলে এর অর্থ কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন তথ্যের প্রেক্ষাপটে প্যারিস চুক্তির মতো বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্যগুলো অর্থাৎ প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে রাখার নৈতিক সিদ্ধান্ত অকার্যকর হয়ে যায় না। এই উপলব্ধি ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বোঝা ও মোকাবিলায় আরও সতর্ক হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে।

পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, সাধারণত আধুনিক জলবায়ু বিশ্লেষণে ১৮৫০ সালের তাপমাত্রাকে ‘প্রাক-শিল্পযুগ’ বা শিল্পযুগ শুরুর আগের তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী, বিশ্ব এখন প্রাক শিল্প যুগের আগের তুলনায় প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিন্তু ‘গ্লোসেট’ (GloSAT) নামে নতুন ডেটা-সেট প্রাক-শিল্পযুগের তাপমাত্রার হিসেবটিকে নিয়ে গেছে আরও পেছনে, ১৭৮১ সাল পর্যন্ত। গবেষকদের মতে, এই বাড়তি সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যেই বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রায় ২.৫ শতাংশ বেড়েছিল, যা ওই সময়ের মধ্যেও কিছুটা উষ্ণতা বাড়িয়েছিল।
গ্লোসেট ডেটা দেখাচ্ছে—১৮ শতকের শেষভাগ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবী ১৮৫০–১৯০০ সময়কালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ঠান্ডা ছিল। ফলে সেই সময়ের বিপরীতে বর্তমান উষ্ণতা হিসেব করতে গেলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আরও বেশি মাত্রায় ঘটেছে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, প্রাক শিল্প যুগে যে উষ্ণতাটুকু বেড়েছিল, তার সবটাই মানুষের কারণে নয়। ১৮০০ সালের শুরুর দিকে তাম্বোরা সহ একাধিক বড় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীকে সাময়িকভাবে ঠান্ডা করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সেই শীতলতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বিরাজ করেছে, সেটিও উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যানেল (আইপিসিসি) আগেই জানিয়েছিল, ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে মানুষের কারণে উষ্ণতা বেড়েছিল ০ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। নতুন গবেষণাগুলো সেই সীমার মাঝামাঝি অবস্থান করছে—প্রায় ০.০৯ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই গবেষণার বড় দিক হলো—পুরোনো তাপমাত্রা রেকর্ড। ইউরোপের বিভিন্ন শহর যেমন, সুইডেনের উপসালা, জার্মানির হোহেনপাইসেনবার্গের মতো স্থানে শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত তথ্য এবং ১৮ শতকের জাহাজযাত্রার সময় নথিভুক্ত সামুদ্রিক বায়ুর তাপমাত্রা একত্র করে তৈরি হয়েছে এই বৈশ্বিক চিত্র। যদিও প্রাচীন তথ্যগুলো অসম্পূর্ণ এবং অনিশ্চয়তা বেশি, তবু বিজ্ঞানীদের মতে একটি বিষয় স্পষ্ট—পৃথিবী তখন আরও ঠান্ডা ছিল।
তাহলে এর অর্থ কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন তথ্যের প্রেক্ষাপটে প্যারিস চুক্তির মতো বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্যগুলো অর্থাৎ প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে রাখার নৈতিক সিদ্ধান্ত অকার্যকর হয়ে যায় না। এই উপলব্ধি ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বোঝা ও মোকাবিলায় আরও সতর্ক হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে