তাসমিয়া নয়, ছবিটি এক ভারতীয় শিশুর

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ৪১
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১৮: ২৬

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি শিশুর ছবি পোষ্ট করে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। তাসমিয়া নাম দাবি করা ওই শিশুর চিকিৎসায় সাহায্য চেয়ে পোস্ট করা ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা নেহাত কম নয়।

ফ্যাক্টচেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফেসবুকে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, কয়েক হাজার আইডি, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই তথ্য এবং ওই শিশুর ছবি পোস্ট করা হয়েছে। 

পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, মো. রহিম ইসলামের ওই শিশুসন্তান পঞ্চগড়ের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। ওই শিশুর চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

দাবি করা হচ্ছে, শিশু তাসমিয়ার লিভার ৯৫ শতাংশ নষ্ট। অপারেশন করলে সুস্থ হয়ে যাবে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের তাঁদের ধর্মীয় রীতির কথা স্মরণ করিয়ে সুকৌশলে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। সাহায্য পাঠানোর জন্য মোবাইল নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের গণ-অর্থায়ন বিষয়ক ওয়েবসাইট মিলাপ-এ শিশুটির ছবি পোস্ট করে অর্থ সাহায্য যাওয়া হয়ফ্যাক্টচেক
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে গুগলে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, পঞ্চগরের তাসমিয়া নাম দিয়ে যে শিশুর ছবি প্রচার করা হচ্ছে, সেটি মূলত ভারতের একটি শিশুর ছবি।

ভারতের গণ-অর্থায়ন বিষয়ক ওয়েবসাইট মিলাপ-এ ২০১৮ সালের ২০ জুন শিশুটির ছবি পোস্ট করে অর্থ সাহায্যের আহ্বান করা হয়েছিল। ওই সাহায্যের আবেদনে বলা হয়, ৭ মাস বয়সী কন্যাশিশুটি লিভারের জটিল রোগে ভুগছে।

হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করাতে ১৬ লাখ রূপি প্রয়োজন ছিলশিশুটির নাম মানাসবি। তার মায়ের নাম নীলকমল। হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করাতে ১৬ লাখ রুপি প্রয়োজন ছিল। ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি টুইট বার্তায় ১৩৭৮ জন সহায়তাকারীকে ধন্যবাদ জানায় মিলাপ কর্তৃপক্ষ। সে সময় মানাসবির লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।

বাংলাদেশে শিশুটির ছবি দিয়ে সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোতে যে ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিতে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগেও আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগে প্রকাশিত এরকম প্রতারণামূলক সাহায্যের আবেদন নিয়ে করা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নম্বরগুলো বন্ধ। ধারণা করা যায়, প্রতারণার ছলে কেবল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই নম্বরগুলো ব্যবহার করা হয়। 

পোস্টগুলোতে দেওয়া ফোন নম্বরে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়আজকের পত্রিকার পঞ্চগড় প্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন যে ওই জেলায় জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেই। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই নামে একটি হাসপাতাল কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় অবস্থিত।

সিদ্ধান্ত
ফেসবুকে তাসমিয়া নামে পঞ্চগড়ের অসুস্থ শিশুর ছবি দাবিতে যে ছবিটি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি মূলত এক ভারতীয় শিশুর। প্রতারণার উদ্দেশ্যে শিশু ও হাসপাতালের ভুয়া নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে, তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা—[email protected]

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত