ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ঘটা করে দিবসটি সারা বিশ্বেই উদযাপন করা হয়। এই দিনে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিনিময় হয় ফুল, নানা উপহার। আর সব কিছুই করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন’ নামে একজন সাধুর নামে। কে এই সাধু? তাঁর কি কোনো অস্তিত্ব ছিল? কীভাবে এলো ভ্যালেন্টাইনস ডে?
ইতিহাস বিষয়ক ওয়েবসাইট হিস্ট্রির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যালেন্টাইন নামের একাধিক সাধু সম্পর্কে জানা যায়। তাঁদের একজন রোমান সাধু সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতকে রোমান সম্রাটের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে সৈন্যদের বিয়ে পড়াতেন। এই অভিযোগে তাঁকে কারাবন্দী করা হয়। ওই সময় তিনি কারা প্রধানের অন্ধ মেয়েকে সুস্থ করে তোলেন, এতে কারা প্রধানের পরিবার খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে। সাধু ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে মেয়েটিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন ভ্যালেন্টাইন। প্রযত্নে অংশে লিখেছিলেন ‘তোমার ভ্যালেন্টাইন’ (ইওর ভ্যালেন্টাইন)। অনেকে বলেন, পৃথিবীর প্রথম প্রেমপত্র এটি।
কোনো কোনো বর্ণনা মতে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন ইতালির তারনি শহরের একজন বিশপ। তিনিও গোপনে বিয়ে পড়ানোর জন্য পরিচিত। এই অভিযোগে তাঁকেও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিরশ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তবে ইতিহাসবিদেরা বলছেন, ভ্যালেন্টাইনের নামে প্রচলিত গল্পগুলোর সপক্ষে খুব বেশি প্রমাণ পাওয়া যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়ার মর্নিংসাইড কলেজের ধর্মীয় অধ্যয়নের অধ্যাপক ব্রুস ফোর্বস হিস্ট্রি ডটকমকে বলেন, ‘বিশপ এবং সাধু ভ্যালেনটাইনের যে দুটি গল্প নিয়ে সবাই কথা বলে, ওই গল্পগুলোতে এতটাই মিল যে, এটির সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগায়।’
প্রাচীন রোমে ভ্যালেনটাইন খুব জনপ্রিয় নাম ছিল। এই নামে অন্তত ৫০টি ভিন্ন ভিন্ন গল্প পাওয়া যায়। এর মধ্যে যে দুজন ভ্যালেন্টাইনের গল্প খুব বেশি প্রচলিত, ওই গল্পগুলোতে খুব বেশি মিল পাওয়া যায়। দুটি গল্পেই একজন শিশু অন্ধত্ব থেকে আরোগ্য লাভ করে। এর ফলে ওই শিশুর পরিবার খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে এবং একই দিনে দুই ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করা হয়।
ব্রুস ফোর্বস বলেন, ভ্যালেনটাইন বিশপ এবং সাধুর গল্পের এবং তাঁদের অস্তিত্বের ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যযুগীয়, রেনেসাঁ সাহিত্য এবং ইতিহাসের গবেষক হেনরি কেলি বলেন, ‘ভ্যালেনটাইনের যে চরিত্রগুলো সম্পর্কে জানা যায়, তাঁরা উভয়ই কাল্পনিক এবং প্রেমের সঙ্গে তাঁদের সংযোগটি আরও বেশি মনগড়া।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ভ্যালেনটাইন ডে’র সূচনা কীভাবে হলো তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতানৈক্য আছে। কারও মতে, ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি হতে পারে প্যাগানদের অনুষ্ঠান ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব থেকে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রজনন উর্বরতা প্রাপ্তির আশায় তাঁরা এই উৎসব করতেন।
লুপারক্যালিয়া উৎসবের সময়, পুরুষেরা উলঙ্গ হয়ে উৎসর্গ করার উদ্দেশ্যে পশুবলি দিত এবং তরুণেরা উর্বরতা প্রাপ্তির আশায় নারীদের চাবুক মারত। রোমানরা এক সময় প্যাগান বা পৌত্তলিক ছিল। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের ১৫০ বছর পরও ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব জনপ্রিয় ছিল। পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে গেলাসিয়াস পোপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর লুপারক্যালিয়া নিষিদ্ধ করেন।
এরপরেই ক্যাথলিক চার্চ ১৪ ফেব্রুয়ারি সাধু ভ্যালেন্টাইনের স্মরণে উৎসবের আয়োজন করে। সেদিন পানাহার ও নানাভাবে উদযাপন করা হতো।
কারও মতে, ভ্যালেনটাইন ডের সূচনা হাজার বছরের পুরোনো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জ্যাক বি আউরুচ বলেন, ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারই প্রথম রোমান্সের সঙ্গে ভ্যালেনটাইন ডের সংযোগ ঘটান তাঁর ‘দ্য পার্লামেন্ট অব ফৌলেস’ কবিতায়।
আউরুচ বলেন, চসার হয়তো ভ্যালেন্টাইন ডে’কে রোমান্সের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে যুক্ত করেছেন। যেমন, ভ্যালেন্টাইন ডে’র ঋতুটি ইউরোপীয় পাখিদের প্রজননের সময়। শেক্সপিয়ারসহ পরবর্তী কবিরা চসারের এই পথ অনুসরণ করেছিলেন এবং ভ্যালেন্টাইন ডে’র আজকের রোমান্টিক অর্থ তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন, অলাভজনক সংবাদ মাধ্যম ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর ওয়েবসাইটেও ভ্যালেন্টাইন ডে’র সূচনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, আজকের দিনে ভ্যালেন্টাইন ডে ভালোবাসার জন্য পরিচিত হলেও এর শুরুর ইতিহাস অস্পষ্ট। দিনটির উৎস লুকিয়ে আছে প্রাচীন রোমে। যদিও সঠিক উৎস সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ফেব্রুয়ারি ১৩ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত রোমানরা ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব উদ্যাপন করত। এই সময় রোমান পুরুষেরা দেবতার উদ্দেশে ছাগল এবং কুকুর বলি দিত। এরপর ওই পশুর চামড়া দিয়ে বানানো চাবুক নারীদের মারা হতো।
এই প্রথা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির ধর্মীয় অধ্যয়নের অধ্যাপক নোয়েল লেনস্কি বলেন, ওই সময় তরুণীরা চাবুকের মার খেতে লাইনে দাঁড়াত। বিশ্বাস ছিল, এর ফলে তারা উর্বরতা লাভ করবে।
তবে পঞ্চম শতাব্দীতে পোপ গেলাসিয়াস সেইন্ট ভ্যালেনটাইন ডের উদযাপনের নির্দেশ দিয়ে ‘লুপারক্যালিয়া’ নিষিদ্ধ করেন।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, তৃতীয় শতাব্দীতে ভিন্ন ভিন্ন বছরে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ভ্যালেন্টাইন নামে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। পরে তাঁদের সম্মানে ক্যাথলিক চার্চ ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন ডে কীভাবে এলো?
বিবিসি বাংলায় ২০২০ সালে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ‘শফিক রেহমান: কখনো ভাবিনি যে এই ভালোবাসা দিবস এত বড় রূপ নেবে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে নব্বই দশকের আগে কখনো ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ উদ্যাপনের কথা শোনাই যায় না।
বাংলাদেশে এই দিনটিকে ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে উদ্যাপনের রীতি চালু করার কৃতিত্ব যাকে দেওয়া হয়, তিনি হচ্ছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। তাঁর সম্পাদিত যায়যায় দিন পত্রিকা ১৯৯৩ সালে প্রথম এই দিনটিকে উপলক্ষ করে ‘ভালোবাসা সংখ্যা’ বের করেছিল। এরপর বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস ক্রমে উৎসবে রূপ নিয়েছে।
ভালোবাসা দিবস ছাড়াও একইদিনে বাংলাদেশে পালিত হয় স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। ১৯৮৩ সালের এই দিনে তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী ড. মজিদ খানের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পূর্বঘোষিত একটি কর্মসূচি পালন করতে গেলে সেখানে পুলিশ গুলি করলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া ২০০১ সাল থেকে এই দিনে পালন করা হয় সুন্দরবন দিবস। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়।
আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ঘটা করে দিবসটি সারা বিশ্বেই উদযাপন করা হয়। এই দিনে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিনিময় হয় ফুল, নানা উপহার। আর সব কিছুই করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন’ নামে একজন সাধুর নামে। কে এই সাধু? তাঁর কি কোনো অস্তিত্ব ছিল? কীভাবে এলো ভ্যালেন্টাইনস ডে?
ইতিহাস বিষয়ক ওয়েবসাইট হিস্ট্রির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যালেন্টাইন নামের একাধিক সাধু সম্পর্কে জানা যায়। তাঁদের একজন রোমান সাধু সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতকে রোমান সম্রাটের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে সৈন্যদের বিয়ে পড়াতেন। এই অভিযোগে তাঁকে কারাবন্দী করা হয়। ওই সময় তিনি কারা প্রধানের অন্ধ মেয়েকে সুস্থ করে তোলেন, এতে কারা প্রধানের পরিবার খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে। সাধু ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে মেয়েটিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন ভ্যালেন্টাইন। প্রযত্নে অংশে লিখেছিলেন ‘তোমার ভ্যালেন্টাইন’ (ইওর ভ্যালেন্টাইন)। অনেকে বলেন, পৃথিবীর প্রথম প্রেমপত্র এটি।
কোনো কোনো বর্ণনা মতে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন ইতালির তারনি শহরের একজন বিশপ। তিনিও গোপনে বিয়ে পড়ানোর জন্য পরিচিত। এই অভিযোগে তাঁকেও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিরশ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তবে ইতিহাসবিদেরা বলছেন, ভ্যালেন্টাইনের নামে প্রচলিত গল্পগুলোর সপক্ষে খুব বেশি প্রমাণ পাওয়া যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়ার মর্নিংসাইড কলেজের ধর্মীয় অধ্যয়নের অধ্যাপক ব্রুস ফোর্বস হিস্ট্রি ডটকমকে বলেন, ‘বিশপ এবং সাধু ভ্যালেনটাইনের যে দুটি গল্প নিয়ে সবাই কথা বলে, ওই গল্পগুলোতে এতটাই মিল যে, এটির সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগায়।’
প্রাচীন রোমে ভ্যালেনটাইন খুব জনপ্রিয় নাম ছিল। এই নামে অন্তত ৫০টি ভিন্ন ভিন্ন গল্প পাওয়া যায়। এর মধ্যে যে দুজন ভ্যালেন্টাইনের গল্প খুব বেশি প্রচলিত, ওই গল্পগুলোতে খুব বেশি মিল পাওয়া যায়। দুটি গল্পেই একজন শিশু অন্ধত্ব থেকে আরোগ্য লাভ করে। এর ফলে ওই শিশুর পরিবার খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে এবং একই দিনে দুই ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করা হয়।
ব্রুস ফোর্বস বলেন, ভ্যালেনটাইন বিশপ এবং সাধুর গল্পের এবং তাঁদের অস্তিত্বের ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যযুগীয়, রেনেসাঁ সাহিত্য এবং ইতিহাসের গবেষক হেনরি কেলি বলেন, ‘ভ্যালেনটাইনের যে চরিত্রগুলো সম্পর্কে জানা যায়, তাঁরা উভয়ই কাল্পনিক এবং প্রেমের সঙ্গে তাঁদের সংযোগটি আরও বেশি মনগড়া।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ভ্যালেনটাইন ডে’র সূচনা কীভাবে হলো তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতানৈক্য আছে। কারও মতে, ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি হতে পারে প্যাগানদের অনুষ্ঠান ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব থেকে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রজনন উর্বরতা প্রাপ্তির আশায় তাঁরা এই উৎসব করতেন।
লুপারক্যালিয়া উৎসবের সময়, পুরুষেরা উলঙ্গ হয়ে উৎসর্গ করার উদ্দেশ্যে পশুবলি দিত এবং তরুণেরা উর্বরতা প্রাপ্তির আশায় নারীদের চাবুক মারত। রোমানরা এক সময় প্যাগান বা পৌত্তলিক ছিল। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের ১৫০ বছর পরও ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব জনপ্রিয় ছিল। পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে গেলাসিয়াস পোপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর লুপারক্যালিয়া নিষিদ্ধ করেন।
এরপরেই ক্যাথলিক চার্চ ১৪ ফেব্রুয়ারি সাধু ভ্যালেন্টাইনের স্মরণে উৎসবের আয়োজন করে। সেদিন পানাহার ও নানাভাবে উদযাপন করা হতো।
কারও মতে, ভ্যালেনটাইন ডের সূচনা হাজার বছরের পুরোনো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জ্যাক বি আউরুচ বলেন, ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারই প্রথম রোমান্সের সঙ্গে ভ্যালেনটাইন ডের সংযোগ ঘটান তাঁর ‘দ্য পার্লামেন্ট অব ফৌলেস’ কবিতায়।
আউরুচ বলেন, চসার হয়তো ভ্যালেন্টাইন ডে’কে রোমান্সের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে যুক্ত করেছেন। যেমন, ভ্যালেন্টাইন ডে’র ঋতুটি ইউরোপীয় পাখিদের প্রজননের সময়। শেক্সপিয়ারসহ পরবর্তী কবিরা চসারের এই পথ অনুসরণ করেছিলেন এবং ভ্যালেন্টাইন ডে’র আজকের রোমান্টিক অর্থ তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন, অলাভজনক সংবাদ মাধ্যম ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর ওয়েবসাইটেও ভ্যালেন্টাইন ডে’র সূচনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, আজকের দিনে ভ্যালেন্টাইন ডে ভালোবাসার জন্য পরিচিত হলেও এর শুরুর ইতিহাস অস্পষ্ট। দিনটির উৎস লুকিয়ে আছে প্রাচীন রোমে। যদিও সঠিক উৎস সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ফেব্রুয়ারি ১৩ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত রোমানরা ‘লুপারক্যালিয়া’ উৎসব উদ্যাপন করত। এই সময় রোমান পুরুষেরা দেবতার উদ্দেশে ছাগল এবং কুকুর বলি দিত। এরপর ওই পশুর চামড়া দিয়ে বানানো চাবুক নারীদের মারা হতো।
এই প্রথা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির ধর্মীয় অধ্যয়নের অধ্যাপক নোয়েল লেনস্কি বলেন, ওই সময় তরুণীরা চাবুকের মার খেতে লাইনে দাঁড়াত। বিশ্বাস ছিল, এর ফলে তারা উর্বরতা লাভ করবে।
তবে পঞ্চম শতাব্দীতে পোপ গেলাসিয়াস সেইন্ট ভ্যালেনটাইন ডের উদযাপনের নির্দেশ দিয়ে ‘লুপারক্যালিয়া’ নিষিদ্ধ করেন।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, তৃতীয় শতাব্দীতে ভিন্ন ভিন্ন বছরে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ভ্যালেন্টাইন নামে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। পরে তাঁদের সম্মানে ক্যাথলিক চার্চ ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন ডে কীভাবে এলো?
বিবিসি বাংলায় ২০২০ সালে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ‘শফিক রেহমান: কখনো ভাবিনি যে এই ভালোবাসা দিবস এত বড় রূপ নেবে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে নব্বই দশকের আগে কখনো ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ উদ্যাপনের কথা শোনাই যায় না।
বাংলাদেশে এই দিনটিকে ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে উদ্যাপনের রীতি চালু করার কৃতিত্ব যাকে দেওয়া হয়, তিনি হচ্ছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। তাঁর সম্পাদিত যায়যায় দিন পত্রিকা ১৯৯৩ সালে প্রথম এই দিনটিকে উপলক্ষ করে ‘ভালোবাসা সংখ্যা’ বের করেছিল। এরপর বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস ক্রমে উৎসবে রূপ নিয়েছে।
ভালোবাসা দিবস ছাড়াও একইদিনে বাংলাদেশে পালিত হয় স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। ১৯৮৩ সালের এই দিনে তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী ড. মজিদ খানের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পূর্বঘোষিত একটি কর্মসূচি পালন করতে গেলে সেখানে পুলিশ গুলি করলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া ২০০১ সাল থেকে এই দিনে পালন করা হয় সুন্দরবন দিবস। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়।
ফ্যাক্টচেক, সোশ্যাল মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভাইরাল, ভুয়া পোস্ট, সংঘর্ষ, রাজধানী, সেনাবাহিনী, বিক্ষোভ, রিকশা
১ ঘণ্টা আগেদীপ্তির বক্তব্য দাবিতে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নাম ও লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। দীপ্তি চৌধুরীর ছবিযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, ‘আমার নানীর ফুফাতো বোনের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
৫ ঘণ্টা আগেআজ শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। তাতে হাসিনাকে কথা বলতে শোনা যায়, গুলি খাওয়ার পর আবু সাঈদকে চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
১ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকও। সম্প্রতি সারজিস শিশু মডেল অভিনেত্রী সিমরিন লুবাবাকে ফেসবুকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
১ দিন আগে