ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
সুইডেনে একাধিকবার কোরআন পোড়ানো যুবক সালওয়ান মোমিকা মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য দেশীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যম সময় টিভি, দেশ টিভি, নয়া দিগন্ত, যায়যায়দিন, ঢাকা প্রকাশসহ স্থানীয় কতিপয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে গত মঙ্গল ও বুধবার (২ ও ৩ এপ্রিল। প্রতিবেদনে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস ও ইন্ডিয়া টুডেকে।
তবে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি যে সত্য নয়, তা ইতিমধ্যেই নরওয়ে ও সুইডেনের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বর্তমানে নরওয়ের পুলিশের হাতে বন্দী। কিন্তু কীভাবে সংবাদ মাধ্যমে উঠে এল তাঁর মৃত্যুর গুজব? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
দাবিটির সম্ভাব্য সূত্রপাত অনুসন্ধানে দেখা যায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গত সোমবার (১ এপ্রিল) থেকেই ফেসবুকে পাওয়া যায়। ওইদিন বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে ‘Vasıf Ay’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবি নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে দাবি করা হয়, সালওয়ান মোমিকা নরওয়েতে একজন কুর্দির হাতে নিহত হয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুর এই দাবি ব্যাপকতা পায় পরের দিন মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) থেকে। ওইদিন ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টের টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং দ্য ইকোনমিক টাইমস।
‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ সম্পর্কে অনুসন্ধানে এক্স অ্যাকাউন্টটির পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইতালির লিগুরিয়ার রাজধানী জেনোয়া থেকে পরিচালিত হয়। এক্স অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে ২০২১ সালের আগস্টে। ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টটির ফলোয়ার ৫ লাখ ৯২ হাজার। অ্যাকাউন্টটির প্রোফাইলে রেডিওটির কোনো ওয়েবসাইটের উল্লেখ নেই। একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক রয়েছে।
পরে রেডিও জেনোয়া নিয়ে গুগল অনুসন্ধানে ইউরোপিয়ান ডিজিটাল মিডিয়া অবজারভেটরির (ইডিএমও) ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ইডিএমও হলো, ইতালির ফ্লোরেন্সে অবস্থিত ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত অপতথ্য মোকাবিলায় কাজ করা একটি প্রকল্প। ইডিএমওর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২১ জুন প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে রেডিও জেনোয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ইতালীয় রাজনীতি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অপতথ্য প্রচার হতে দেখেছে বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান।
ওই বছরের জুনে এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে টুইট করে দাবি করা হয়, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মিলানি দেশটিতে সমকামিতার সমর্থনে ‘ফ্যামিলি প্রাইড মান্থ’ ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইডিএমও, এপিসহ একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ও সংবাদ সংস্থার যাচাইয়ে দাবিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ইতালিতে এমন কোনো রেডিও স্টেশন আছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধানেও ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামে কোনো রেডিও স্টেশনের নাম পাওয়া যায়নি। এসব তথ্য ‘রেডিও জেনোয়া’ বিশ্বস্ততাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে।
অপরদিকে রেডিও জেনোয়া থেকে মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ভাইরাল হওয়ার পর ওইদিনই নরওয়ের ডকুমেন্ট নামের একটি সংবাদমাধ্যম দাবিটি সত্য নয় উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রেডিও জেনোয়ার এ সম্পর্কিত টুইটটিতে কমিউনিটি নোট হিসেবে এ তথ্য যুক্ত করে দেওয়া হয়, যা এক্স ব্যবহারকারীদের কাছে দৃশ্যমান। এই প্রতিবেদনে ডকুমেন্ট সংবাদ মাধ্যমটি নরওয়ে পুলিশের ইমিগ্রেশন ইউনিটের বরাত দিয়ে জানায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গুজব।
সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত তুরস্কের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান dogrulukpay। dogrulukpay প্রতিবেদনে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবিটি কীভাবে ছড়িয়েছে তার বর্ণনা তুলে ধরেছে।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ছড়িয়েছে তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধনের মাধ্যমে। গত সোমবার (১ এপ্রিল) তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধন করে দাবি করা হয় তিনি ওইদিন মারা গেছেন। তবে ওই সময় এই সংশোধনের বিপরীতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছিল না। পরে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসকে সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে মিথ্যা খবর শেয়ারের অভিযোগে দ্য ইকোনমিক টাইমসকে পরে সূত্র থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ পুনরায় সংশোধন করে মৃত্যুর তথ্য মুছে ফেলা হয়।
প্রসঙ্গত, উইকিপিডিয়ায় যে তথ্য পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবী প্রদায়কেরা যুক্ত করেন। শুধু কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে যে কোনো পেশার ব্যক্তি উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখতে পারেন। উইকিপিডিয়ায় কোনো বিষয়ের ওপর লেখা একটি নিবন্ধ একাধিক প্রদায়ক মিলে সম্পূর্ণ করেন। অর্থাৎ অনেকের কাছে থাকা তথ্য সংকলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ নিবন্ধ তৈরি হয়। তাই উইকিপিডিয়াকে শতভাগ নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম।
তবে সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পুড়িয়ে আলোচনায় আসা ইরাকি শরণার্থী সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি সম্পর্কিত প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ‘রেডিও জেনোয়া’কেই উৎস হিসেবে ব্যবহার করেছে।
বিভিন্ন সময়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের কাছে অপতথ্য ছড়ানোর জন্য চিহ্নিত ‘রেডিও জেনোয়া’ এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেই সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো যাচাই না করেই এই টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। পরে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
তবে এক্স থেকে মৃত্যুর সংবাদ ভাইরাল হওয়ার এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ভুয়া এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন খ্যাতিমান আলোচিত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরে সরিয়ে ফেলতে হয়েছে সংবাদমাধ্যমকে। যেমন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ও দেশীয় সংবাদ মাধ্যমে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোলডিনের নামে খোলা একটি ভুয়া এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে এ খবর দেওয়া হয়।
সেই টুইটের বরাত দিয়েই অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। ডেকান হেরাল্ড, ডেকান ক্রনিকল, জি–নিউজ এবং বিজনেস টুডের মতো সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ওই টুইটের বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশ করা হয়। এরপর বাংলাদেশের প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত এমন ভুল বা ভুয়া তথ্য থেকে বাঁচতে তাই সূত্র যাচাই করে নেওয়া, একক সূত্রের ওপর নির্ভর না করে একাধিক সূত্রের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া, তথ্য প্রদানকারী সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়ার মতো বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
সুইডেনে একাধিকবার কোরআন পোড়ানো যুবক সালওয়ান মোমিকা মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য দেশীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যম সময় টিভি, দেশ টিভি, নয়া দিগন্ত, যায়যায়দিন, ঢাকা প্রকাশসহ স্থানীয় কতিপয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে গত মঙ্গল ও বুধবার (২ ও ৩ এপ্রিল। প্রতিবেদনে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস ও ইন্ডিয়া টুডেকে।
তবে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি যে সত্য নয়, তা ইতিমধ্যেই নরওয়ে ও সুইডেনের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বর্তমানে নরওয়ের পুলিশের হাতে বন্দী। কিন্তু কীভাবে সংবাদ মাধ্যমে উঠে এল তাঁর মৃত্যুর গুজব? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
দাবিটির সম্ভাব্য সূত্রপাত অনুসন্ধানে দেখা যায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গত সোমবার (১ এপ্রিল) থেকেই ফেসবুকে পাওয়া যায়। ওইদিন বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে ‘Vasıf Ay’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবি নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে দাবি করা হয়, সালওয়ান মোমিকা নরওয়েতে একজন কুর্দির হাতে নিহত হয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুর এই দাবি ব্যাপকতা পায় পরের দিন মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) থেকে। ওইদিন ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টের টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং দ্য ইকোনমিক টাইমস।
‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ সম্পর্কে অনুসন্ধানে এক্স অ্যাকাউন্টটির পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইতালির লিগুরিয়ার রাজধানী জেনোয়া থেকে পরিচালিত হয়। এক্স অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে ২০২১ সালের আগস্টে। ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টটির ফলোয়ার ৫ লাখ ৯২ হাজার। অ্যাকাউন্টটির প্রোফাইলে রেডিওটির কোনো ওয়েবসাইটের উল্লেখ নেই। একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক রয়েছে।
পরে রেডিও জেনোয়া নিয়ে গুগল অনুসন্ধানে ইউরোপিয়ান ডিজিটাল মিডিয়া অবজারভেটরির (ইডিএমও) ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ইডিএমও হলো, ইতালির ফ্লোরেন্সে অবস্থিত ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত অপতথ্য মোকাবিলায় কাজ করা একটি প্রকল্প। ইডিএমওর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২১ জুন প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে রেডিও জেনোয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ইতালীয় রাজনীতি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অপতথ্য প্রচার হতে দেখেছে বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান।
ওই বছরের জুনে এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে টুইট করে দাবি করা হয়, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মিলানি দেশটিতে সমকামিতার সমর্থনে ‘ফ্যামিলি প্রাইড মান্থ’ ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইডিএমও, এপিসহ একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ও সংবাদ সংস্থার যাচাইয়ে দাবিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ইতালিতে এমন কোনো রেডিও স্টেশন আছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধানেও ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামে কোনো রেডিও স্টেশনের নাম পাওয়া যায়নি। এসব তথ্য ‘রেডিও জেনোয়া’ বিশ্বস্ততাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে।
অপরদিকে রেডিও জেনোয়া থেকে মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ভাইরাল হওয়ার পর ওইদিনই নরওয়ের ডকুমেন্ট নামের একটি সংবাদমাধ্যম দাবিটি সত্য নয় উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রেডিও জেনোয়ার এ সম্পর্কিত টুইটটিতে কমিউনিটি নোট হিসেবে এ তথ্য যুক্ত করে দেওয়া হয়, যা এক্স ব্যবহারকারীদের কাছে দৃশ্যমান। এই প্রতিবেদনে ডকুমেন্ট সংবাদ মাধ্যমটি নরওয়ে পুলিশের ইমিগ্রেশন ইউনিটের বরাত দিয়ে জানায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গুজব।
সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত তুরস্কের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান dogrulukpay। dogrulukpay প্রতিবেদনে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবিটি কীভাবে ছড়িয়েছে তার বর্ণনা তুলে ধরেছে।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ছড়িয়েছে তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধনের মাধ্যমে। গত সোমবার (১ এপ্রিল) তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধন করে দাবি করা হয় তিনি ওইদিন মারা গেছেন। তবে ওই সময় এই সংশোধনের বিপরীতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছিল না। পরে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসকে সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে মিথ্যা খবর শেয়ারের অভিযোগে দ্য ইকোনমিক টাইমসকে পরে সূত্র থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ পুনরায় সংশোধন করে মৃত্যুর তথ্য মুছে ফেলা হয়।
প্রসঙ্গত, উইকিপিডিয়ায় যে তথ্য পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবী প্রদায়কেরা যুক্ত করেন। শুধু কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে যে কোনো পেশার ব্যক্তি উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখতে পারেন। উইকিপিডিয়ায় কোনো বিষয়ের ওপর লেখা একটি নিবন্ধ একাধিক প্রদায়ক মিলে সম্পূর্ণ করেন। অর্থাৎ অনেকের কাছে থাকা তথ্য সংকলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ নিবন্ধ তৈরি হয়। তাই উইকিপিডিয়াকে শতভাগ নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম।
তবে সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পুড়িয়ে আলোচনায় আসা ইরাকি শরণার্থী সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি সম্পর্কিত প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ‘রেডিও জেনোয়া’কেই উৎস হিসেবে ব্যবহার করেছে।
বিভিন্ন সময়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের কাছে অপতথ্য ছড়ানোর জন্য চিহ্নিত ‘রেডিও জেনোয়া’ এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেই সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো যাচাই না করেই এই টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। পরে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
তবে এক্স থেকে মৃত্যুর সংবাদ ভাইরাল হওয়ার এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ভুয়া এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন খ্যাতিমান আলোচিত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরে সরিয়ে ফেলতে হয়েছে সংবাদমাধ্যমকে। যেমন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ও দেশীয় সংবাদ মাধ্যমে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোলডিনের নামে খোলা একটি ভুয়া এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে এ খবর দেওয়া হয়।
সেই টুইটের বরাত দিয়েই অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। ডেকান হেরাল্ড, ডেকান ক্রনিকল, জি–নিউজ এবং বিজনেস টুডের মতো সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ওই টুইটের বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশ করা হয়। এরপর বাংলাদেশের প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত এমন ভুল বা ভুয়া তথ্য থেকে বাঁচতে তাই সূত্র যাচাই করে নেওয়া, একক সূত্রের ওপর নির্ভর না করে একাধিক সূত্রের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া, তথ্য প্রদানকারী সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়ার মতো বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারকে ঘিরে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নাম বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল...
২ ঘণ্টা আগেছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর তিনদিন পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয় ৮ আগস্ট। এরপর ১০০ দিন পার করেছে এই সরকার...
৭ ঘণ্টা আগেবর্তমানে দিল্লিতেই অবস্থান করছেন হাসিনা। ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুতির পর তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। সম্প্রতি ফেসবুকে তাঁর ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে।
২ দিন আগেসম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এমন একটি কল রেকর্ডে শেখ হাসিনার কণ্ঠে দাবি করা হয়, ‘চাকরির বয়স নিয়ে আন্দোলন করতে যমুনার সামনে গেল, সাথে সাথে গুলি করল। সেখানে একজন মারা গেল এবং পিটিয়ে উঠিয়ে দিল।’
২ দিন আগে