ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে এসেছে আমার দ্বারে; একমাত্র অস্ত্র তার দেখেছিনু, কষ্টের বিকৃত ভাল, ত্রাসের বিকট ভঙ্গি যত, অন্ধকারে ছলনার ভূমিকা তাহার॥...’ কবিতাটি কি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের লেখা সর্বশেষ কবিতা? কবিতাপ্রেমী নামের কলকাতাকেন্দ্রিক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ কবিতা’ শিরোনামে গত ৩০ জানুয়ারি ফটোকার্ড হিসেবে এটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটিতে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রিঅ্যাকশন পড়েছে ১৭ হাজারের বেশি। শেয়ার হয়েছে সাড়ে ৪ হাজারের কাছাকাছি। বাংলাদেশি বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকেও এটি প্রচার করা হয়েছে। ‘রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ কবিতা’ শীর্ষক ফটোকার্ডটিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘গত ৩০ শে জুলাই অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার সময় রবীন্দ্রনাথ নিম্নলিখিত কবিতাটি মুখে মুখে বলিয়া যান এবং সঙ্গে সঙ্গে উহা লিপিবদ্ধ করা হয়।’ সূত্র হিসেবে লেখা রয়েছে ‘বিশ্বভারতীর সৌজন্যে’।
আসলেই কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা শেষ কবিতা এটি? যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বিভাগ বিশ্বভারতী গ্রন্থন থেকে প্রকাশিত ‘শেষ লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ নামে একটি বই পাওয়া যায়। বাংলা ১৩৪৮ সালের (১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) ভাদ্র মাসে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির শুরুতে বিজ্ঞপ্তি আকারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই গ্রন্থের নামকরণ পিতৃদেব করিয়া যাইতে পারেন নাই। শেষ লেখা’র কয়েকটি কবিতা তাঁহার স্বহস্তলিখিত; অনেকগুলি শয্যাশায়ী অবস্থায় মুখে মুখে রচিত, নিকটে যাঁহারা থাকিতেন তাঁহারা সেগুলি লিখিয়া লইতেন, পরে তিনি সেগুলি সংশোধন করিয়া মুদ্রণের অনুমতি দিতেন।’
রবীন্দ্রনাথের লেখা শেষ কবিতা দাবিতে ভাইরাল কবিতাটি বইটির সূচিপত্রে ১৪ নম্বর কবিতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বইটির ২৯ নম্বর পৃষ্ঠায় কবিতাটি রয়েছে। কবিতাটির শিরোনাম ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে’। ১২ চরণের কবিতাটির শেষে সময় ও তারিখ উল্লেখ আছে—জোড়াসাঁকো, কলিকাতা, ২৯ জুলাই, ১৯৪১, বিকাল।
বইটিতে এই কবিতার পরে আরও একটি কবিতা রয়েছে। কবিতাটির নাম ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি’। এটি বইয়ের ১৫ নম্বর কবিতা। ২৪ চরণের কবিতাটির শেষে সময় ও তারিখ উল্লেখ আছে—জোড়াসাঁকো, কলিকাতা, ৩০ জুলাই, ১৯৪১, সকাল সাড়ে নয়টা। এটিই বইটিতে শেষ কবিতা।
‘শেষ লেখা’ বইটিতে সব কটি কবিতার শেষেই সময়, তারিখ ও স্থান উল্লেখ করা রয়েছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, রবীন্দ্রনাথের লেখা শেষ কবিতা দাবিতে ভাইরাল কবিতাটির আগে লিখিত রবীন্দ্রনাথের আরেকটি কবিতা রয়েছে।আরও অনুসন্ধানে বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ থেকেই প্রকাশিত রানী চন্দের লেখা ‘গুরুদেব’ নামে আরেকটি বই পাওয়া যায়। রানী চন্দ রবীন্দ্রনাথের একান্ত সচিব অনিল কুমার চন্দের স্ত্রী। রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনে রানী চন্দ সার্বক্ষণিক তাঁর পাশেই ছিলেন। তিনি শ্রুতলেখক হিসেবেও কাজ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর তাঁর লিখিত স্মৃতিচারণমূলক বই ‘গুরুদেব’ প্রকাশিত হয় ১৯৬২ সালে।
বইটির ১৬০ নম্বর পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, দিনটি ছিল ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই। ওই দিনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অস্ত্রোপচারের তারিখ ছিল। অস্ত্রোপচার শুরুর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিছু ভাবছিলেন। তা দেখে তিনি কাগজ নিয়ে তাঁর পাশে বসে পড়েন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ইশারা করে বললেন লেখা শুরু করতে। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলতে শুরু করেন, ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি/ বিচিত্র ছলনা-জালে/ হে ছলনাময়ী। মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে/ সরল জীবনে।...অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে/ সে পায় তোমার হাতে/ শান্তির অক্ষয় অধিকার।’
১৬৩ নম্বর পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, ওই দিন বেলা ১১টার সময় রবীন্দ্রনাথকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচারে নেওয়ার আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতাটি আবার শুনতে চান। শুনে তিনি বলেন, কবিতাটিতে কিছু গোলমাল আছে। অস্ত্রোপচারের পর ভালো হয়ে ঠিক করবেন।
পরের পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, অস্ত্রোপচারের পর রবীন্দ্রনাথ তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘দ্বিতীয়া (রানী চন্দ), জ্যোতি নাকি একটি কবিতার জন্য দুঃখ করছিল।’ রানী চন্দ বলেন, ‘তা হলে বলবেন আপনি? আমি লিখে নিই!’ রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘খেপেছিস তুই! এখন কবিতা বলব!’
রানী চন্দ তাঁকে অস্ত্রোপচারের আগে সকালবেলা লেখা কবিতাটি দিয়ে দিতে পরামর্শ দেন। উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘না, তাতে যে গোলমাল আছে একটু। কাল যেটা লিখেছি, একবার পড়ে শোনা আমাকে।’
এরপর রানী চন্দ তাঁকে আগের দিন অর্থাৎ ২৯ জুলাই বিকেলে লেখা কবিতাটি পড়ে শোনান। রবীন্দ্রনাথ কবিতাটি শুনে রানী চন্দের উদ্দেশে বলেন, ‘ঠিক আছে, এটাই ঠিক হবে। লিখে জ্যোতিকে দে।’
এরপর রানী চন্দ আলাদা আরেকটি কাগজে কবিতাটি লেখেন, ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে এসেছে আমার দ্বারে; একমাত্র অস্ত্র তার দেখেছিনু, কষ্টের বিকৃত ভাল, ত্রাসের বিকট ভঙ্গি যত, অন্ধকারে ছলনার ভূমিকা তাহার॥’ এরপর কবিতাটি তিনি ‘জ্যোতি দা’র হাতে পৌঁছে দেন।
এরপরের ঘটনা বর্ণনা করে রানী চন্দ লেখেন, ‘কবিতাটি পেয়ে সবাই আনন্দে হৈ হৈ করে উঠলেন। কবিতাটি সকলে নিজের নিজের জন্য কপি করে নিতে লাগলেন। সকলেই ভাবলেন, গুরুদেব এখুনি এই কবিতাটি লিখে পাঠালেন। কিছু না বলে গুরুদেবের কাছে ফিরে এলাম।’
রানী চন্দের লেখা বইটি থেকে জানা যায়, ৩০ জুলাইয়ের পর রবীন্দ্রনাথ আর কিছু লেখাননি। অস্ত্রোপচারের পর স্বাস্থ্যেরও অবনতি হতে থাকে। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
‘গুরুদেব’ বইয়ের রানী চন্দের বিবরণ এবং রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষ মুহূর্তের লেখাগুলোর সংকলন ‘শেষ লেখা’ পর্যালোচনা থেকে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা শেষ কবিতা ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি/ বিচিত্র ছলনা-জালে/ হে ছলনাময়ী’। তাঁর শেষ লেখা দাবিতে যে কবিতা ভাইরাল হয়েছে, সেটি মূলত এটির আগের দিন বিকেলে লেখা।
‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে এসেছে আমার দ্বারে; একমাত্র অস্ত্র তার দেখেছিনু, কষ্টের বিকৃত ভাল, ত্রাসের বিকট ভঙ্গি যত, অন্ধকারে ছলনার ভূমিকা তাহার॥...’ কবিতাটি কি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের লেখা সর্বশেষ কবিতা? কবিতাপ্রেমী নামের কলকাতাকেন্দ্রিক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ কবিতা’ শিরোনামে গত ৩০ জানুয়ারি ফটোকার্ড হিসেবে এটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটিতে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রিঅ্যাকশন পড়েছে ১৭ হাজারের বেশি। শেয়ার হয়েছে সাড়ে ৪ হাজারের কাছাকাছি। বাংলাদেশি বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকেও এটি প্রচার করা হয়েছে। ‘রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ কবিতা’ শীর্ষক ফটোকার্ডটিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘গত ৩০ শে জুলাই অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার সময় রবীন্দ্রনাথ নিম্নলিখিত কবিতাটি মুখে মুখে বলিয়া যান এবং সঙ্গে সঙ্গে উহা লিপিবদ্ধ করা হয়।’ সূত্র হিসেবে লেখা রয়েছে ‘বিশ্বভারতীর সৌজন্যে’।
আসলেই কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা শেষ কবিতা এটি? যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বিভাগ বিশ্বভারতী গ্রন্থন থেকে প্রকাশিত ‘শেষ লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ নামে একটি বই পাওয়া যায়। বাংলা ১৩৪৮ সালের (১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) ভাদ্র মাসে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির শুরুতে বিজ্ঞপ্তি আকারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই গ্রন্থের নামকরণ পিতৃদেব করিয়া যাইতে পারেন নাই। শেষ লেখা’র কয়েকটি কবিতা তাঁহার স্বহস্তলিখিত; অনেকগুলি শয্যাশায়ী অবস্থায় মুখে মুখে রচিত, নিকটে যাঁহারা থাকিতেন তাঁহারা সেগুলি লিখিয়া লইতেন, পরে তিনি সেগুলি সংশোধন করিয়া মুদ্রণের অনুমতি দিতেন।’
রবীন্দ্রনাথের লেখা শেষ কবিতা দাবিতে ভাইরাল কবিতাটি বইটির সূচিপত্রে ১৪ নম্বর কবিতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বইটির ২৯ নম্বর পৃষ্ঠায় কবিতাটি রয়েছে। কবিতাটির শিরোনাম ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে’। ১২ চরণের কবিতাটির শেষে সময় ও তারিখ উল্লেখ আছে—জোড়াসাঁকো, কলিকাতা, ২৯ জুলাই, ১৯৪১, বিকাল।
বইটিতে এই কবিতার পরে আরও একটি কবিতা রয়েছে। কবিতাটির নাম ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি’। এটি বইয়ের ১৫ নম্বর কবিতা। ২৪ চরণের কবিতাটির শেষে সময় ও তারিখ উল্লেখ আছে—জোড়াসাঁকো, কলিকাতা, ৩০ জুলাই, ১৯৪১, সকাল সাড়ে নয়টা। এটিই বইটিতে শেষ কবিতা।
‘শেষ লেখা’ বইটিতে সব কটি কবিতার শেষেই সময়, তারিখ ও স্থান উল্লেখ করা রয়েছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, রবীন্দ্রনাথের লেখা শেষ কবিতা দাবিতে ভাইরাল কবিতাটির আগে লিখিত রবীন্দ্রনাথের আরেকটি কবিতা রয়েছে।আরও অনুসন্ধানে বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ থেকেই প্রকাশিত রানী চন্দের লেখা ‘গুরুদেব’ নামে আরেকটি বই পাওয়া যায়। রানী চন্দ রবীন্দ্রনাথের একান্ত সচিব অনিল কুমার চন্দের স্ত্রী। রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনে রানী চন্দ সার্বক্ষণিক তাঁর পাশেই ছিলেন। তিনি শ্রুতলেখক হিসেবেও কাজ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর তাঁর লিখিত স্মৃতিচারণমূলক বই ‘গুরুদেব’ প্রকাশিত হয় ১৯৬২ সালে।
বইটির ১৬০ নম্বর পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, দিনটি ছিল ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই। ওই দিনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অস্ত্রোপচারের তারিখ ছিল। অস্ত্রোপচার শুরুর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিছু ভাবছিলেন। তা দেখে তিনি কাগজ নিয়ে তাঁর পাশে বসে পড়েন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ইশারা করে বললেন লেখা শুরু করতে। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলতে শুরু করেন, ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি/ বিচিত্র ছলনা-জালে/ হে ছলনাময়ী। মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে/ সরল জীবনে।...অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে/ সে পায় তোমার হাতে/ শান্তির অক্ষয় অধিকার।’
১৬৩ নম্বর পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, ওই দিন বেলা ১১টার সময় রবীন্দ্রনাথকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচারে নেওয়ার আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতাটি আবার শুনতে চান। শুনে তিনি বলেন, কবিতাটিতে কিছু গোলমাল আছে। অস্ত্রোপচারের পর ভালো হয়ে ঠিক করবেন।
পরের পৃষ্ঠায় রানী চন্দ লেখেন, অস্ত্রোপচারের পর রবীন্দ্রনাথ তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘দ্বিতীয়া (রানী চন্দ), জ্যোতি নাকি একটি কবিতার জন্য দুঃখ করছিল।’ রানী চন্দ বলেন, ‘তা হলে বলবেন আপনি? আমি লিখে নিই!’ রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘খেপেছিস তুই! এখন কবিতা বলব!’
রানী চন্দ তাঁকে অস্ত্রোপচারের আগে সকালবেলা লেখা কবিতাটি দিয়ে দিতে পরামর্শ দেন। উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘না, তাতে যে গোলমাল আছে একটু। কাল যেটা লিখেছি, একবার পড়ে শোনা আমাকে।’
এরপর রানী চন্দ তাঁকে আগের দিন অর্থাৎ ২৯ জুলাই বিকেলে লেখা কবিতাটি পড়ে শোনান। রবীন্দ্রনাথ কবিতাটি শুনে রানী চন্দের উদ্দেশে বলেন, ‘ঠিক আছে, এটাই ঠিক হবে। লিখে জ্যোতিকে দে।’
এরপর রানী চন্দ আলাদা আরেকটি কাগজে কবিতাটি লেখেন, ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে এসেছে আমার দ্বারে; একমাত্র অস্ত্র তার দেখেছিনু, কষ্টের বিকৃত ভাল, ত্রাসের বিকট ভঙ্গি যত, অন্ধকারে ছলনার ভূমিকা তাহার॥’ এরপর কবিতাটি তিনি ‘জ্যোতি দা’র হাতে পৌঁছে দেন।
এরপরের ঘটনা বর্ণনা করে রানী চন্দ লেখেন, ‘কবিতাটি পেয়ে সবাই আনন্দে হৈ হৈ করে উঠলেন। কবিতাটি সকলে নিজের নিজের জন্য কপি করে নিতে লাগলেন। সকলেই ভাবলেন, গুরুদেব এখুনি এই কবিতাটি লিখে পাঠালেন। কিছু না বলে গুরুদেবের কাছে ফিরে এলাম।’
রানী চন্দের লেখা বইটি থেকে জানা যায়, ৩০ জুলাইয়ের পর রবীন্দ্রনাথ আর কিছু লেখাননি। অস্ত্রোপচারের পর স্বাস্থ্যেরও অবনতি হতে থাকে। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
‘গুরুদেব’ বইয়ের রানী চন্দের বিবরণ এবং রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষ মুহূর্তের লেখাগুলোর সংকলন ‘শেষ লেখা’ পর্যালোচনা থেকে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা শেষ কবিতা ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি/ বিচিত্র ছলনা-জালে/ হে ছলনাময়ী’। তাঁর শেষ লেখা দাবিতে যে কবিতা ভাইরাল হয়েছে, সেটি মূলত এটির আগের দিন বিকেলে লেখা।
শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিচ্ছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘ইউনুস তুই তওবা কর, শেখ হাসিনার পায়ে ধর. . শেখ হাসিনা বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’।
১৭ মিনিট আগেসম্প্রতি শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া একটি অডিও কল নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আজ শনিবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে হরতাল পালন করতে বলা হয়েছে। সেসঙ্গে প্রত্যেক এলাকায় মিছিল-মিটিংয়ের আয়োজনের কথা বলতে শোনা যায়। তবে শেখ হাসিনার পরিবার কিংবা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে হরতালের বিষয়ে এখনও কিছু
৬ ঘণ্টা আগেএকটি কার্ডে ‘সেইফ এক্সিট চেয়ে দেশ ছাড়তে চান ড. ইউনুস, পাইলস জনিত রোগ তীব্র আকার ধারন’ এবং আরেকটিতে ‘পাইলস জনিত রোগে উন্নত চিকিৎসায় আগামী সপ্তাহে ফ্রান্সে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা’—এমন লেখা রয়েছে। পরের কার্ডে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের বরাত দেওয়া হয়েছে।
২ দিন আগেশেখ হাসিনা ভারতে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এসেছেন, এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘ভারতে প্রথমবার প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
৩ দিন আগে