বারকোডের শুরুতে ৮৯০ থাকলেই কি সেটি ভারতীয় পণ্য

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩: ০১
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৩২

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশি নাগরিকেরা ‘ইন্ডিয়া আউট’ নামে ভারত বয়কটের প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব প্রচারণায় ভারতীয় পণ্য ও ব্র্যান্ডের তালিকা দিচ্ছেন অনেকে। আবার অনেকে ভারতীয় পণ্য চেনার উপায় বাতলে দিচ্ছেন। 

এমনই একটি পোস্টে বলা হচ্ছে, কোনো পণ্যের বারকোড ৮৯০ দিয়ে শুরু হলে সেটি ভারতীয় পণ্য। তিন দিন আগে শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে তাসলিমা নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এমন তথ্য সংবলিত একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৪০ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ২৫০ বারের বেশি। রিয়েকশন পড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। 

ফেসবুকের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকেও তথ্যটি প্রচার হতে দেখা গেছে। যেমন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সালেহীন সালেহ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেই এমন তথ্য সংবলিত একটি পোস্ট শতাধিক শেয়ার হয়েছে। 

বারকোড কী?
বারকোড হলো বেশ কিছু সমান্তরাল সাদা ও কালো রেখার সমন্বয়ে গঠিত একটি ছবি; রেখাগুলোর নিচে কিছু সংখ্যা বা অক্ষর অথবা উভয়ই থাকতে পারে। বারকোড স্ক্যান করা হলে একটি পণ্যের দামসহ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। বারকোডের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো ইউনিভার্সাল প্রোডাক্ট কোড (ইউপিসি)। ১৯৭০–এর দশকে মুদি দোকানের বিভিন্ন পণ্যে এটির ব্যবহার শুরু হয়।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ ধরনের বারকোড চালু আছে। এর মধ্যে ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করা ইউপিসি বারকোড পদ্ধতির জন্য সাধারণত কোড সরবরাহ করে জিএস ওয়ান (GS1)। ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বারকোডটি জিএস ওয়ান (GS1) সরবরাহকৃত।

জিএস ওয়ানের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১০০টির বেশি অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই অঞ্চলগুলোর জন্য প্রতিষ্ঠানটি  নির্দিষ্ট সংখ্যার একটি কোড সরবরাহ করে। সংখ্যাটি দিয়ে ওই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর বারকোড শুরু হয়। যেমন, ভারতের বারকোড ৮৯০, অনুরূপভাবে ইসরায়েলের বারকোড ৭২৯, ফ্রান্সের বারকোড ৩০০ থেকে ৩৭৯। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জিএস ওয়ানের কার্যক্রম নেই।

বারকোডের শুরুর অংশ প্রতিষ্ঠানটি কোথায় নিবন্ধিত সে সম্পর্কে তথ্য  দেয়। কিন্তু পণ্যটি কোনো  দেশে উৎপাদিত হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয় না। ছবি: জিএস ওয়ানের ওয়েবসাইট থেকেভারতের বারকোড ৮৯০–এর অর্থ কী?
জিএস ওয়ানের ওয়েবসাইটে দেওয়া বারকোডের তালিকাটির শুরুতেই বলা আছে, পণ্যের প্যাকেটের গায়ে জিএস ওয়ান কোডগুলো ব্র্যান্ডের উৎস দেশ নির্দেশ করে। তবে সব সময় পণ্যটির উৎস দেশ সম্পর্কে বারকোডে তথ্য থাকে না। অর্থাৎ কোনো দেশের প্যাকেজিং প্রতিষ্ঠান বা খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান পণ্যের গায়ে নিজস্ব বারকোড যুক্ত করতে পারে। সেই বারকোডটির শুরুতে সংশ্লিষ্ট দেশের কোডই থাকবে।

যেমন, কোনো পণ্যের বারকোড ৮৯০ দিয়ে শুরু হলে পণ্যটি ভারতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু পণ্যটি তাদের উৎপাদিত নাও হতে পারে।

জিএস ওয়ানের ওয়েবসাইটের প্রশ্নোত্তর অংশে জিএস ওয়ান বারকোডের প্রথম দুই বা তিন সংখ্যা উৎপাদনকারী দেশ নির্দেশ করে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরেও একই তথ্য দেওয়া রয়েছে। 

এ ছাড়া জিএস ওয়ান ইউএসের জনসংযোগ শাখার  সিনিয়র পরিচালক শ্যানন সুলিভান বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগকে ২০২০ সালে বলেন, বারকোডের শুরুর অংশ প্রতিষ্ঠানটি কোথায় নিবন্ধিত সে সম্পর্কে তথ্য দেয়। কিন্তু পণ্যটি কোন দেশে উৎপাদিত হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয় না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত