Ajker Patrika

গিরায় সংক্রমণ শিশুদেরও হতে পারে

অধ্যাপক ডা. ইমনুল ইসলাম ইমন 
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৭: ২০
গিরায় সংক্রমণ শিশুদেরও হতে পারে

সচেতনতা, দ্রুত শনাক্তকরণ এবং যথাযথ চিকিৎসায় এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।

গিরায় সংক্রমণ বা সেপটিক আর্থ্রাইটিস একটি সংক্রমণজনিত রোগ। এটি দ্রুত শনাক্ত করে যথাযথ চিকিৎসা করা না হলে বিভিন্ন জটিলতায় শিশু আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি ব্যাপকভাবে দেখা না গেলেও এটির দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এটি নবজাতক থেকে শুরু করে কিশোর বয়স পর্যন্ত হতে পারে। তবে সাধারণত রোগটি ২ বছর থেকে ৫ বছরের শিশুদের হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাসের তো বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।

ছেলেশিশুদের গিরায় সংক্রমণ মেয়েশিশুদের তুলনায় বেশি হয়। বড়দের তুলনায় শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। রোগটি সাধারণত একটি গিরায় হয়ে থাকে। তবে নবজাতকের বেলায় একসঙ্গে অনেকগুলো গিরায় আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে হাঁটু, গোড়ালি, নিতম্বে এটি হয়ে থাকে। তবে কবজি ও কাঁধও আক্রান্ত হতে পারে।

কারণ
»    রক্তের জীবাণু গিরায় প্রবেশ করা
»    হাড়ের সংক্রমণ গিরা আক্রান্ত করা
»    আঘাত বা হাড় ভাঙা
»    সংক্রমণজনিত চামড়ার ক্ষত
»    শিশুদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার দুর্বলতা।

লক্ষণ
»    গিরায় প্রচণ্ড ব্যথা
»    ব্যথার কারণে খুঁড়িয়ে হাঁটা
»    আক্রান্ত গিরা ফুলে লাল হয়ে যাওয়া
»    গিরার তাপমাত্রা বেড়ে যায়
»    জ্বর
নবজাতকের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই লক্ষণগুলো না-ও থাকতে পারে। তবে দেখা যায়, নবজাতক আক্রান্ত হলে হাত বা পায়ের নড়াচড়া কমে যায়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
রক্তের পরীক্ষা, যেমন রক্তকণিকার পরিমাণ, ইএসআর, সিআরপি, রক্তের কালচার পরীক্ষা করে এ রোগের ধারণা পাওয়া যায়। তবে গিরায় পানি থাকলে সে পানি নিয়ে পরীক্ষা করলেও এ রোগ প্রমাণ করা যায়। এ ছাড়া এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম করেও রোগটি শনাক্ত করা যায়।

চিকিৎসা
এ রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক দুই থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেওয়া হয়। যার প্রথম দুই সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি করে শিরাপথে প্রয়োগ করতে হয় এবং পরবর্তী সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক মুখ দিয়ে দিতে হয়। কখনো কখনো নিতম্ব এবং কাঁধের গিরা আক্রান্ত হলে অপারেশন করে পুঁজ বের করে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। আবার কখনো স্প্লিন্ট ব্যবহার করেও এই রোগের চিকিৎসা করা হয়।

জটিলতা
»    দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে তার ফল ভালো পাওয়া যায়। চিকিৎসা না করলে বা দেরিতে করলে
»    আক্রান্ত গিরার কার্যক্ষমতা কমে যায়
»    শিশুর পা ছোট বড় হতে পারে
»    স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে
»    হাড়ের সংক্রমণ হতে পারে
»    সেলুলাইটিস হতে পারে
»    রোগী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে

লেখক: অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, আলোক হেলথ কেয়ার লিমিটেড, মিরপুর-১০, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত