ডা. মোহাম্মদ হেদায়েত আলী খান
মানুষের সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ একটি সুন্দর নাক। সাধারণত মুখের গঠন অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্দর নাক সবারই কাম্য। তাই এ রকম একটি সুন্দর নাক তৈরির প্রক্রিয়াটি কী এবং কাদের দরকার, সেটা জানা জরুরি। কৃত্রিম উপায়ে নাকের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রক্রিয়া রাইনোপ্লাস্টি নামে পরিচিত।
রাইনোপ্লাস্টি
নাকের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য অপারেশনের মাধ্যমে নাকের যে গঠনগত সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়, তাকে রাইনোপ্লাস্টি বলে। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত, নাকের গঠন কার্যকর করে তোলার জন্য যে সার্জারি হয়, সেটি রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি এবং অন্যটি হলো কার্যত ভালো নাকের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য যে অপারেশন, সেটি কসমেটিক রাইনোপ্লাস্টি।
কেন কোন অপারেশন
জন্মগত ত্রুটি বা জন্মগত ঠোঁটকাটা রোগী, আঘাতজনিত কারণের ক্ষতি, টিউমার, ক্যানসার বা অন্যান্য রোগজনিত কারণে নাকের ক্ষতি হতে পারে। আবার কারও নাকের ভেতরের হাড় বেঁকে নাকের সৌন্দর্যহানি ঘটাতে পারে। সাধারণত এসব সমস্যার সমাধান করার
জন্য রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি করা হয়। মূলকথা, কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নাকের অবয়ব ফিরিয়ে আনার জন্য রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি করা হয়।
স্বাভাবিক নাক কিন্তু সৌন্দর্যপূর্ণ নয়, যেমন অতিরিক্ত খাটো বা লম্বা নাক, বেশি খাড়া বা দেবে যাওয়া নাক, নাকের অগ্রভাগের অস্বাভাবিকতা, বোঁচা বা চওড়া টিপ, দ্বিখণ্ডিত টিপ, ঠোঁট ও নাকের ডগার মধ্যে কম দূরত্ব ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে কসমেটিকস রাইনোপ্লাস্টি অপারেশন করা হয়। নাকের ওপরের হাড় বা এর আকৃতি, যেমন উঁচু বা অতিরিক্ত নিচু, কপাল ও নাকের সংযোগস্থলের অতিরিক্ত দেবে থাকা, এমনকি নাকের ছিদ্রের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি সমস্যা হলে কসমেটিকস রাইনোপ্লাস্টির মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
অপারেশনের আগে
সাধারণত মেয়েদের ১৫ ও ছেলেদের ১৮ বছর বয়সের পরে এই সার্জারি করা যায়। সাধারণত হাড়ের বৃদ্ধির পরে রাইনোপ্লাস্টি সার্জারি করা যায়, যেটা স্থায়ী হয়। রাইনোপ্লাস্টির আগে ওই ব্যক্তির পরিপূর্ণ মেডিকেল হিস্ট্রি ও পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাগুলো হলো রক্তপাত, পরিবারের কারও মধ্যে অতিরিক্ত রক্তপাতের ঘটনা, হাইপারটেনশন, হার্টের সমস্যা ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ইত্যাদি। এ ছাড়া রোগী ওষুধ গ্রহণ করেন কি না, বিশেষ করে অ্যাসপিরিন-জাতীয় ওষুধ, কাটাছেঁড়া হলে কেলয়েড হয় কি না অথবা এর আগে নাকের কোনো অপারেশন হয়েছে কি না এবং ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে সুস্থ কি না, সেসবও পরীক্ষা করা হয়। এই অপারেশন সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বা সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে করা হয়। তবে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া বা শুধু নাক অবশ করেও করা যায়। এটাতে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে।
অপারেশনের আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ফটোগ্রাফি, অর্থাৎ ছবি তুলে রাখা। ছবি বিশ্লেষণ করে রোগী কোন ধরনের পরিবর্তন চান তার সম্ভাব্যতা সেট করা হয়।
অপারেশনের পদ্ধতি
রাইনোপ্লাস্টি করার দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হলো ওপেন রাইনোপ্লাস্টি। এখানে নাকের বাইরের অংশে কলুমেলা কাটা পড়বে এবং নাকের ভেতরের অংশ কাটা পড়বে। আরেকটি হলো, ক্লোজড রাইনোপ্লাস্টি। এ ক্ষেত্রে কলুমেলা কাটা পড়বে না। আবার কলুমেলা কাটা পড়লেও দাগ খুব বোঝা যায় না।
অপারেশনের ঝুঁকি
সাধারণত সব ধরনের কাটাছেঁড়াতেই কিছু ঝুঁকি থাকে। আর সাধারণ যেকোনো অপারেশনের যে ঝুঁকিগুলো আছে তা-ও হতে পারে এ ধরনের অপারেশনে। তবে নিয়মমাফিক সব প্রস্তুতি যদি যথাযথভাবে নেওয়া হয় এবং ভালো সেন্টারে করা হয়, তবে ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়।
অনেকের মনে জিজ্ঞাসা, অপারেশনে কোনো সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয় কি না। এ ক্ষেত্রে বলব, কোনো কোনো সময় সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করা হয়। আবার শরীরের অন্য অংশ থেকে কার্টিলেজ এনেও পুনর্গঠন করা হয়। আবার কেউ যদি অপারেশন করাতে না চান, তবে নাকের ওপরের অংশে সামান্য পুনর্গঠনের জন্য সিলিকন বা হায়ালুরুনিক অ্যাসিড ইনজেকশন দিয়েও করা সম্ভব।
যিনি রাইনোপ্লাস্টি করতে চান, তাঁকে তাঁর সমস্যা নির্ধারণ করতে হবে। মুখমণ্ডলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সম্ভাব্য পুনর্গঠন তাঁর আশানুরূপ হলেই তিনি এই পদ্ধতি গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন। অনেকেই এ রকম অপারেশন করাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অথচ তিনি নিজে নিজে বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাবে কষ্টে থাকেন। তাই লজ্জা বা ভয় না করে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনমতো রাইনোপ্লাস্টি অপারেশন করাতে পারেন।
যেসব কারণে রাইনোপ্লাস্টি
অপারেশন করানো যাবে না
অপারেশনের পরে
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক এবং বার্ন, প্লাস্টিক ও কসমেটিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
মানুষের সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ একটি সুন্দর নাক। সাধারণত মুখের গঠন অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্দর নাক সবারই কাম্য। তাই এ রকম একটি সুন্দর নাক তৈরির প্রক্রিয়াটি কী এবং কাদের দরকার, সেটা জানা জরুরি। কৃত্রিম উপায়ে নাকের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রক্রিয়া রাইনোপ্লাস্টি নামে পরিচিত।
রাইনোপ্লাস্টি
নাকের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য অপারেশনের মাধ্যমে নাকের যে গঠনগত সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়, তাকে রাইনোপ্লাস্টি বলে। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত, নাকের গঠন কার্যকর করে তোলার জন্য যে সার্জারি হয়, সেটি রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি এবং অন্যটি হলো কার্যত ভালো নাকের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য যে অপারেশন, সেটি কসমেটিক রাইনোপ্লাস্টি।
কেন কোন অপারেশন
জন্মগত ত্রুটি বা জন্মগত ঠোঁটকাটা রোগী, আঘাতজনিত কারণের ক্ষতি, টিউমার, ক্যানসার বা অন্যান্য রোগজনিত কারণে নাকের ক্ষতি হতে পারে। আবার কারও নাকের ভেতরের হাড় বেঁকে নাকের সৌন্দর্যহানি ঘটাতে পারে। সাধারণত এসব সমস্যার সমাধান করার
জন্য রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি করা হয়। মূলকথা, কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নাকের অবয়ব ফিরিয়ে আনার জন্য রিকনস্ট্রাকটিভ রাইনোপ্লাস্টি করা হয়।
স্বাভাবিক নাক কিন্তু সৌন্দর্যপূর্ণ নয়, যেমন অতিরিক্ত খাটো বা লম্বা নাক, বেশি খাড়া বা দেবে যাওয়া নাক, নাকের অগ্রভাগের অস্বাভাবিকতা, বোঁচা বা চওড়া টিপ, দ্বিখণ্ডিত টিপ, ঠোঁট ও নাকের ডগার মধ্যে কম দূরত্ব ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে কসমেটিকস রাইনোপ্লাস্টি অপারেশন করা হয়। নাকের ওপরের হাড় বা এর আকৃতি, যেমন উঁচু বা অতিরিক্ত নিচু, কপাল ও নাকের সংযোগস্থলের অতিরিক্ত দেবে থাকা, এমনকি নাকের ছিদ্রের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি সমস্যা হলে কসমেটিকস রাইনোপ্লাস্টির মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
অপারেশনের আগে
সাধারণত মেয়েদের ১৫ ও ছেলেদের ১৮ বছর বয়সের পরে এই সার্জারি করা যায়। সাধারণত হাড়ের বৃদ্ধির পরে রাইনোপ্লাস্টি সার্জারি করা যায়, যেটা স্থায়ী হয়। রাইনোপ্লাস্টির আগে ওই ব্যক্তির পরিপূর্ণ মেডিকেল হিস্ট্রি ও পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাগুলো হলো রক্তপাত, পরিবারের কারও মধ্যে অতিরিক্ত রক্তপাতের ঘটনা, হাইপারটেনশন, হার্টের সমস্যা ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ইত্যাদি। এ ছাড়া রোগী ওষুধ গ্রহণ করেন কি না, বিশেষ করে অ্যাসপিরিন-জাতীয় ওষুধ, কাটাছেঁড়া হলে কেলয়েড হয় কি না অথবা এর আগে নাকের কোনো অপারেশন হয়েছে কি না এবং ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে সুস্থ কি না, সেসবও পরীক্ষা করা হয়। এই অপারেশন সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বা সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে করা হয়। তবে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া বা শুধু নাক অবশ করেও করা যায়। এটাতে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে।
অপারেশনের আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ফটোগ্রাফি, অর্থাৎ ছবি তুলে রাখা। ছবি বিশ্লেষণ করে রোগী কোন ধরনের পরিবর্তন চান তার সম্ভাব্যতা সেট করা হয়।
অপারেশনের পদ্ধতি
রাইনোপ্লাস্টি করার দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হলো ওপেন রাইনোপ্লাস্টি। এখানে নাকের বাইরের অংশে কলুমেলা কাটা পড়বে এবং নাকের ভেতরের অংশ কাটা পড়বে। আরেকটি হলো, ক্লোজড রাইনোপ্লাস্টি। এ ক্ষেত্রে কলুমেলা কাটা পড়বে না। আবার কলুমেলা কাটা পড়লেও দাগ খুব বোঝা যায় না।
অপারেশনের ঝুঁকি
সাধারণত সব ধরনের কাটাছেঁড়াতেই কিছু ঝুঁকি থাকে। আর সাধারণ যেকোনো অপারেশনের যে ঝুঁকিগুলো আছে তা-ও হতে পারে এ ধরনের অপারেশনে। তবে নিয়মমাফিক সব প্রস্তুতি যদি যথাযথভাবে নেওয়া হয় এবং ভালো সেন্টারে করা হয়, তবে ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়।
অনেকের মনে জিজ্ঞাসা, অপারেশনে কোনো সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয় কি না। এ ক্ষেত্রে বলব, কোনো কোনো সময় সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করা হয়। আবার শরীরের অন্য অংশ থেকে কার্টিলেজ এনেও পুনর্গঠন করা হয়। আবার কেউ যদি অপারেশন করাতে না চান, তবে নাকের ওপরের অংশে সামান্য পুনর্গঠনের জন্য সিলিকন বা হায়ালুরুনিক অ্যাসিড ইনজেকশন দিয়েও করা সম্ভব।
যিনি রাইনোপ্লাস্টি করতে চান, তাঁকে তাঁর সমস্যা নির্ধারণ করতে হবে। মুখমণ্ডলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সম্ভাব্য পুনর্গঠন তাঁর আশানুরূপ হলেই তিনি এই পদ্ধতি গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন। অনেকেই এ রকম অপারেশন করাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অথচ তিনি নিজে নিজে বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাবে কষ্টে থাকেন। তাই লজ্জা বা ভয় না করে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনমতো রাইনোপ্লাস্টি অপারেশন করাতে পারেন।
যেসব কারণে রাইনোপ্লাস্টি
অপারেশন করানো যাবে না
অপারেশনের পরে
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক এবং বার্ন, প্লাস্টিক ও কসমেটিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
রোগে-শোকে মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে জীবন আরও ওষ্ঠাগত। দেশে এখন নিম্নআয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের মোট আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতেই।
২ দিন আগেদেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় ও ডাক্তারের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর দেশের মানুষ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। স্বাস্থ্যেসেবার উন্নয়ন না হলে এর পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে।
২ দিন আগেআমাদের দেশে শীত উপভোগ্য মৌসুম। কিন্তু অনেকের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা যাদের আছে, তাদের এই মৌসুমে কষ্ট বেড়ে যায়।
২ দিন আগেত্বক অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সংক্রমণ এবং যেকোনো ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই এর যত্নে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও টানটান হলে দুশ্চিন্তা করবেন না। চুলকানি হলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক তেল কমিয়ে দেয়।
২ দিন আগে