ডা. মো. মনিরুল ইসলাম ফাহিম
আমাদের শরীরের যে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী অঙ্গগুলো রয়েছে, তার মধ্যে কিডনি বা বৃক্ক অন্যতম। কিডনি একদিকে যেমন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো শোষণ করে নেয় ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, তেমনি শরীরের জন্য হরমোন তৈরি বা অম্ল ও ক্ষারের সামঞ্জস্যও বজায় রাখতে কাজ করে। এগুলো ছাড়াও কিডনির আরেকটি মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সেটা হচ্ছে ওষুধ খাওয়ার পরে তার বর্জ্যকেও শরীর থেকে নিষ্কাশন করে দেওয়া।
বিভিন্ন সহজ ও কঠিন রোগের জন্য আমরা যেসব ওষুধ খেয়ে থাকি, সেগুলো কাজ শেষ করার পরে যে বর্জ্য তৈরি হয়, তা শরীর থেকে বের করে দেওয়া প্রয়োজন। সুস্থ কিডনি এ কাজটি প্রতিনিয়ত সুচারুরূপে পালন করে। ফলে ওষুধ শরীরে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। কিন্তু কিডনি অসুস্থ থাকলে প্রাণঘাতী অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
ওষুধের সঙ্গে কিডনির বিভিন্ন সমস্যার সম্পর্ক। কিডনির সমস্যা মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে–একিউট কিডনি ইনজুরি (AKI), যা দ্রুততার সঙ্গে কিডনির সমস্যা তৈরি করে এবং ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD), যেটাতে কিডনির সমস্যা হতে অনেক সময় প্রয়োজন। অনেকের ধারণা, দীর্ঘ মেয়াদে ওষুধ খেলেই কিডনির সমস্যা হয়, যেটি আদতে সত্য নয়। এমনকি মাত্র এক ওষুধের একটি ডোজ খেয়েও কিডনির সমস্যা তৈরি হতে পারে। যাঁদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ আছে, তাঁদের ওষুধ নিষ্কাশনের ক্ষমতা কমে যায়। তাই স্বাভাবিক পরিমাণ ওষুধের বর্জ্যও পুরোপুরি নিষ্কাশন না হতে পেরে শরীরে রয়ে যায় এবং সেটা পক্ষান্তরে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে এর ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে কিছু ওষুধ আছে, যেগুলোয় খুব তাড়াতাড়ি এমনকি একটি মাত্র ডোজে একিউট কিডনি ইনজুরি হতে পারে। এসব ওষুধে অ্যালার্জিজনিত কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কিডনি অকেজো হতে পারে।
কোন ধরনের ওষুধ কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে
ব্যথানাশক ওষুধ
বিভিন্ন সমস্যায় আমরা প্রায়ই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু নিয়ম মেনে ওষুধ না খাওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের কিডনির সমস্যা তৈরি হয়। যেসব ওষুধ কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নন-স্টেরইডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস, যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, ডাইক্লোফেনাক ইত্যাদি। এমনকি হালের সেলেক্সিব-জাতীয় ওষুধ কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক
যেসব অ্যান্টিবায়োটিক কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তার মধ্যে আছে সচরাচর ব্যবহৃত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক।
যেমন পেনিসিলিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, মেথিসিলিন, ভ্যানকোমাইসিন, অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড (যেমন জেন্টামাইসিন, ক্যানামাইসিন ইত্যাদি), সেফালোস্পোরিন, সেফুরক্সিম, সেফটাজিডিম, সেফাক্লোর, সেফালেক্সিন।
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ
এনজিওটেনসিন রিসেপ্টর ব্লকার ও এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহিবিটর–এ ধরনের ওষুধ হঠাৎ করেই কিডনিকে অকেজো করে
দিতে পারে।
বাতজ্বরের ওষুধ
হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন-জাতীয় ওষুধ কিডনির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
পাকস্থলীর আলসারের ওষুধ
পাকস্থলীর আলসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি, যেগুলোর মধ্যে একধরনের ওষুধ হচ্ছে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর। এই ওষুধ কিডনির রোগীদের ক্ষতি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিভিন্ন রোগ নির্ধারণ করার জন্য সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করতে গিয়ে কিছু রং বা কন্ট্রাস্ট ব্যবহার করা হয়, যেগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি-জাতীয় ওষুধ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। মদ ও বিভিন্ন মাদক যেগুলো কিডনি দিয়ে নিঃসরণ হয়, সেগুলো কিডনিকে ধীরে ধীরে অকেজো করে দেয়।
বিপদ এড়াতে যা করবেন
লেখক: রেসিডেন্ট, নেফ্রোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
আমাদের শরীরের যে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী অঙ্গগুলো রয়েছে, তার মধ্যে কিডনি বা বৃক্ক অন্যতম। কিডনি একদিকে যেমন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো শোষণ করে নেয় ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, তেমনি শরীরের জন্য হরমোন তৈরি বা অম্ল ও ক্ষারের সামঞ্জস্যও বজায় রাখতে কাজ করে। এগুলো ছাড়াও কিডনির আরেকটি মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সেটা হচ্ছে ওষুধ খাওয়ার পরে তার বর্জ্যকেও শরীর থেকে নিষ্কাশন করে দেওয়া।
বিভিন্ন সহজ ও কঠিন রোগের জন্য আমরা যেসব ওষুধ খেয়ে থাকি, সেগুলো কাজ শেষ করার পরে যে বর্জ্য তৈরি হয়, তা শরীর থেকে বের করে দেওয়া প্রয়োজন। সুস্থ কিডনি এ কাজটি প্রতিনিয়ত সুচারুরূপে পালন করে। ফলে ওষুধ শরীরে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। কিন্তু কিডনি অসুস্থ থাকলে প্রাণঘাতী অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
ওষুধের সঙ্গে কিডনির বিভিন্ন সমস্যার সম্পর্ক। কিডনির সমস্যা মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে–একিউট কিডনি ইনজুরি (AKI), যা দ্রুততার সঙ্গে কিডনির সমস্যা তৈরি করে এবং ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD), যেটাতে কিডনির সমস্যা হতে অনেক সময় প্রয়োজন। অনেকের ধারণা, দীর্ঘ মেয়াদে ওষুধ খেলেই কিডনির সমস্যা হয়, যেটি আদতে সত্য নয়। এমনকি মাত্র এক ওষুধের একটি ডোজ খেয়েও কিডনির সমস্যা তৈরি হতে পারে। যাঁদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ আছে, তাঁদের ওষুধ নিষ্কাশনের ক্ষমতা কমে যায়। তাই স্বাভাবিক পরিমাণ ওষুধের বর্জ্যও পুরোপুরি নিষ্কাশন না হতে পেরে শরীরে রয়ে যায় এবং সেটা পক্ষান্তরে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে এর ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে কিছু ওষুধ আছে, যেগুলোয় খুব তাড়াতাড়ি এমনকি একটি মাত্র ডোজে একিউট কিডনি ইনজুরি হতে পারে। এসব ওষুধে অ্যালার্জিজনিত কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কিডনি অকেজো হতে পারে।
কোন ধরনের ওষুধ কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে
ব্যথানাশক ওষুধ
বিভিন্ন সমস্যায় আমরা প্রায়ই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু নিয়ম মেনে ওষুধ না খাওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের কিডনির সমস্যা তৈরি হয়। যেসব ওষুধ কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নন-স্টেরইডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস, যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, ডাইক্লোফেনাক ইত্যাদি। এমনকি হালের সেলেক্সিব-জাতীয় ওষুধ কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক
যেসব অ্যান্টিবায়োটিক কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তার মধ্যে আছে সচরাচর ব্যবহৃত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক।
যেমন পেনিসিলিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, মেথিসিলিন, ভ্যানকোমাইসিন, অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড (যেমন জেন্টামাইসিন, ক্যানামাইসিন ইত্যাদি), সেফালোস্পোরিন, সেফুরক্সিম, সেফটাজিডিম, সেফাক্লোর, সেফালেক্সিন।
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ
এনজিওটেনসিন রিসেপ্টর ব্লকার ও এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহিবিটর–এ ধরনের ওষুধ হঠাৎ করেই কিডনিকে অকেজো করে
দিতে পারে।
বাতজ্বরের ওষুধ
হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন-জাতীয় ওষুধ কিডনির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
পাকস্থলীর আলসারের ওষুধ
পাকস্থলীর আলসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি, যেগুলোর মধ্যে একধরনের ওষুধ হচ্ছে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর। এই ওষুধ কিডনির রোগীদের ক্ষতি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিভিন্ন রোগ নির্ধারণ করার জন্য সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করতে গিয়ে কিছু রং বা কন্ট্রাস্ট ব্যবহার করা হয়, যেগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি-জাতীয় ওষুধ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। মদ ও বিভিন্ন মাদক যেগুলো কিডনি দিয়ে নিঃসরণ হয়, সেগুলো কিডনিকে ধীরে ধীরে অকেজো করে দেয়।
বিপদ এড়াতে যা করবেন
লেখক: রেসিডেন্ট, নেফ্রোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস হলে নবজাতকের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পূর্ববর্তী ২০২টি গবেষণার ৫ কোটি ৬০ লাখের মা-শিশু জোড়ার ডেটা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন গবেষকেরা।
৬ ঘণ্টা আগেঅনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশ, ভারত, লাওস ও ভিয়েতনামে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবজি ও পানিতে আশঙ্কাজনক মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে বিষাক্ত উপাদান। সম্প্রতি পেস্টিসাইড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এশিয়া প্যাসিফিকের (পানাপ) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়ংকর এই তথ্য। গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ব স
৭ ঘণ্টা আগেক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ার একদল গবেষক। তাঁরা ডিএনএ মেরামতের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রোটিন ‘আরএডি ৫২’-তে অপ্রত্যাশিত এক গঠন (স্ট্রাকচার) খুঁজে পেয়েছেন, যা ক্যানসার কোষকে বাঁচিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখে।
১ দিন আগেপুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য
২ দিন আগে