ডা. মুনতাসীর মারুফ
মানসিক রোগের ওষুধ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি আমাদের দেশে এই রোগের চিকিৎসার অন্যতম অন্তরায়। মানসিক রোগের ধরন অনুযায়ী ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও অন্যান্য বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে। কোন রোগের জন্য কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তার গবেষণাভিত্তিক দিকনির্দেশনা রয়েছে। কিছু রোগের চিকিৎসায়, যেমন সাইকোথেরাপি প্রথম পছন্দ, আবার সিজোফ্রেনিয়া, ম্যানিয়া, তীব্র বিষণ্নতাসহ আরও কিছু রোগে ওষুধ অপরিহার্য।
সাইকিয়াট্রিস্ট রোগীর রোগ নির্ণয় করেন এবং তার জন্য কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, সেই পরামর্শ দেন। মানসিক কোনো সমস্যা হলেই যে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, সেটা যেমন ঠিক নয়, তেমনি সব মানসিক রোগ ওষুধ ছাড়াই ভালো করা যাবে, তা-ও সত্য নয়।
মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে সেবনের উপদেশ মেনে চলতে অনেকে দ্বিধাবোধ করেন। অনেকের ধারণা, মানসিক রোগের ওষুধে আসক্তি তৈরি হয়। কিন্তু এ ধারণার সপক্ষে কোনো গবেষণালব্ধ প্রমাণ নেই। রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমতো নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনকে আসক্তি বলা যায় না। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজমসহ বেশ কিছু শারীরিক রোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে এবং অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আজীবন ওষুধ সেবন করতে হয়। মৃগীরোগ, বাতজ্বর প্রভৃতি রোগের উপসর্গ কমে যাওয়ার পর কয়েক বছর ওষুধ সেবনের জন্য রোগীরা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। বিভিন্ন মাধ্যম ও পর্যায়ে দীর্ঘদিনের প্রচারণা, তথ্য সরবরাহ ও শিক্ষার কারণে এসব রোগের চিকিৎসা এবং ওষুধের ব্যাপারে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি অনেকখানিই ইতিবাচক। কিন্তু মানসিক রোগে ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে সেবনের ব্যাপারে সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো নেতিবাচক। কিছুদিন ওষুধ সেবনের পর রোগী যখন ভালো বোধ করেন বা উপসর্গ কমে যায়, তখন রোগী বা তাঁর আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বন্ধ করে দেন। ফলে রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হয়। কিছুদিন পর উপসর্গ আবার ফিরে আসে।
বাস্তবতা হচ্ছে, মানসিক রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলোর ভেতর শুধু বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ও নিয়মিত তত্ত্বাবধান ছাড়া টানা দীর্ঘদিন খেলে আসক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিষণ্নতানাশী, আবেগ স্থিতকারী বা জটিল মানসিক রোগে ব্যবহৃত ওষুধে আসক্তির কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই। দেখা যায়, আসক্তির ভ্রান্ত আশঙ্কায় প্রয়োজন ও চিকিৎসকের পরামর্শ থাকা সত্ত্বেও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ সেবন করতে চান না যিনি, তিনিই মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ঘুমের সমস্যার জন্য সেবন করে যাচ্ছেন বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ! চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এই গ্রুপের ওষুধ কারও কাছে বিক্রি করা নিষিদ্ধ হলেও অনেক ওষুধের দোকানেই এর ব্যত্যয় ঘটতে দেখা যায়। নেপথ্যের মানসিক রোগটি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধু অনিদ্রার উপসর্গ কমাতে ওষুধ সেবনের কারণে প্রকৃত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন রোগী। রোগ ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রিস্ট, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
মানসিক রোগের ওষুধ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি আমাদের দেশে এই রোগের চিকিৎসার অন্যতম অন্তরায়। মানসিক রোগের ধরন অনুযায়ী ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও অন্যান্য বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে। কোন রোগের জন্য কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তার গবেষণাভিত্তিক দিকনির্দেশনা রয়েছে। কিছু রোগের চিকিৎসায়, যেমন সাইকোথেরাপি প্রথম পছন্দ, আবার সিজোফ্রেনিয়া, ম্যানিয়া, তীব্র বিষণ্নতাসহ আরও কিছু রোগে ওষুধ অপরিহার্য।
সাইকিয়াট্রিস্ট রোগীর রোগ নির্ণয় করেন এবং তার জন্য কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, সেই পরামর্শ দেন। মানসিক কোনো সমস্যা হলেই যে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, সেটা যেমন ঠিক নয়, তেমনি সব মানসিক রোগ ওষুধ ছাড়াই ভালো করা যাবে, তা-ও সত্য নয়।
মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে সেবনের উপদেশ মেনে চলতে অনেকে দ্বিধাবোধ করেন। অনেকের ধারণা, মানসিক রোগের ওষুধে আসক্তি তৈরি হয়। কিন্তু এ ধারণার সপক্ষে কোনো গবেষণালব্ধ প্রমাণ নেই। রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমতো নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনকে আসক্তি বলা যায় না। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজমসহ বেশ কিছু শারীরিক রোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে এবং অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আজীবন ওষুধ সেবন করতে হয়। মৃগীরোগ, বাতজ্বর প্রভৃতি রোগের উপসর্গ কমে যাওয়ার পর কয়েক বছর ওষুধ সেবনের জন্য রোগীরা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। বিভিন্ন মাধ্যম ও পর্যায়ে দীর্ঘদিনের প্রচারণা, তথ্য সরবরাহ ও শিক্ষার কারণে এসব রোগের চিকিৎসা এবং ওষুধের ব্যাপারে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি অনেকখানিই ইতিবাচক। কিন্তু মানসিক রোগে ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে সেবনের ব্যাপারে সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো নেতিবাচক। কিছুদিন ওষুধ সেবনের পর রোগী যখন ভালো বোধ করেন বা উপসর্গ কমে যায়, তখন রোগী বা তাঁর আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বন্ধ করে দেন। ফলে রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হয়। কিছুদিন পর উপসর্গ আবার ফিরে আসে।
বাস্তবতা হচ্ছে, মানসিক রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলোর ভেতর শুধু বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ও নিয়মিত তত্ত্বাবধান ছাড়া টানা দীর্ঘদিন খেলে আসক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিষণ্নতানাশী, আবেগ স্থিতকারী বা জটিল মানসিক রোগে ব্যবহৃত ওষুধে আসক্তির কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই। দেখা যায়, আসক্তির ভ্রান্ত আশঙ্কায় প্রয়োজন ও চিকিৎসকের পরামর্শ থাকা সত্ত্বেও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ সেবন করতে চান না যিনি, তিনিই মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ঘুমের সমস্যার জন্য সেবন করে যাচ্ছেন বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ! চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এই গ্রুপের ওষুধ কারও কাছে বিক্রি করা নিষিদ্ধ হলেও অনেক ওষুধের দোকানেই এর ব্যত্যয় ঘটতে দেখা যায়। নেপথ্যের মানসিক রোগটি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধু অনিদ্রার উপসর্গ কমাতে ওষুধ সেবনের কারণে প্রকৃত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন রোগী। রোগ ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রিস্ট, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
‘দেখতে দেখতে আমার বাবুটা বড় হয়ে গেল।’ এ বাক্য যেমন শিশুকে কোলে ধরে রাখতে না পারার আক্ষেপ, পাশাপাশি একটা নিশ্চয়তাও যে শিশু স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠছে। শিশুরা দুরন্ত হবে, খেলায় মেতে থাকবে, আবদার করবে আর ‘দেখতে দেখতে’ বেড়ে উঠবে।
১৪ ঘণ্টা আগেএপ্রিল মাস এসে গেছে। তীব্র গরমের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবার। গরম একা আসে না, সঙ্গে কিছু অসুখ-বিসুখও নিয়ে আসে। এই গরমে যে যতই লেবুর শরবত আর ফ্যানের বাতাসে নিজেকে বাঁচাতে চান না কেন, রোগবালাই কিন্তু লুকিয়ে বসে আছে ঠিকই! তাই জানতে হবে গরমের বিশেষ পাঁচ রোগ এবং এর সমাধান।
১৪ ঘণ্টা আগেআমাদের চারপাশে ঘাপটি মেরে থাকা নীরব ঘাতক ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করছে মানবস্বাস্থ্য। শব্দদূষণ বা অতিরিক্ত কোলাহল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর বিষয়টি আমরা খুব একটা পাত্তা দিই না। কিন্তু এটি হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, এমনকি ডিমেনশিয়ার মতো রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গবেষণা বলছে, শুধু ইউরোপেই প্রতিবছর ১২ হাজার মানুষ
১৫ ঘণ্টা আগেশেষ হলো আনন্দের উৎসব। প্রচুর খাওয়াদাওয়া হলো। খেয়াল করলে দেখবেন, সেসব খাবারের বেশির ভাগই ছিল গুরুপাক, মিষ্টিজাতীয়, ভাজাপোড়া কিংবা রোস্ট করা খাবার। উৎসবের দিনে সেসব খাবার এক দিনের জন্য খেলে ঠিক আছে। কিন্তু সেই অভ্যাস প্রতিদিনের জন্য করা যাবে না। মসলাদার, ভারী খাবার শরীরের ওজন, কোলেস্টেরল বাড়ানোসহ
১৫ ঘণ্টা আগে