পারকিনসনস রোগ ও বিষণ্নতার সমাধান

অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭: ৫৮

পারকিনসনস ডিজিজ বা পিডি হলো মস্তিষ্কের একটি ক্ষয়জনিত অবস্থা। এটি মানুষের গতি ধীর করে দেওয়া, কাঁপুনি, অনমনীয়তা ইত্যাদি মোটর লক্ষণ এবং মানসিক রোগ, ঘুমের সমস্যা, ব্যথা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন অ-মোটর জটিলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এ রোগের কোনো না কোনো ধাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ লোক বিষণ্নতার সম্মুখীন হন। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ রোগী উদ্বেগজনিত রোগে ভোগেন, যা তাঁদের কর্মক্ষমতা ও জীবনের মান কমিয়ে দেয়। 

রোগের কারণ
জৈবিক কারণ: পারকিনসনস রোগ এবং বিষণ্নতা চিন্তাভাবনা ও আবেগের সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের একই অংশকে প্রভাবিত করে। উভয় অবস্থাতেই ডোপামিন, সেরোটোনিন এবং নরএপিনেফ্রিন এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্কের রাসায়নিকের ভারসাম্যহীনতা থাকে, যা মেজাজ ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। 

মনস্তাত্ত্বিক কারণ: নেতিবাচক চিন্তা একটি দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা। এটি মানুষের মধ্যে দুঃখ, অসহায়ত্ব এবং হতাশার অনুভূতি তৈরি করতে পারে। এ অবস্থা একজন ব্যক্তিকে বিষণ্নতার জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। সীমাবদ্ধ জীবনধারার ফলে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, সহায়ক সামাজিক যোগাযোগের অভাব, দ্রুত অবসর গ্রহণ, পরনির্ভরশীলতা এগুলো বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

পরিবেশগত কারণ: গুরুতর মানসিক চাপ কিংবা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার কারণে জীবনযাপনে কষ্ট কিছু লোকের বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে। 

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 
এ রোগের চিকিৎসায় দেওয়া ওষুধগুলো বিষণ্নতার মতো উপসর্গ তৈরি করতে পারে।

বিষণ্নতা নির্ণয়ের চ্যালেঞ্জ
১. ঘুমের সমস্যা কিংবা কর্মক্ষমতায় ধীরগতির অনুভূতি বিষণ্নতা ও পারকিনসনস উভয় রোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই অনেক সময় পারকিনসনস রোগের ক্ষেত্রে বিষণ্নতা শনাক্ত করা কঠিন হতে পারে। 

২. পারকিনসনসের বিষণ্নতা নির্ণয়কে জটিল করে তুলতে পারে, এমন অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে—
মুখের মাস্কিং ইফেক্ট। এটি মুখের পেশিতে পারকিনসনসের একটি উপসর্গ। এতে পারকিনসনস আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে দৃশ্যমানভাবে আবেগ প্রকাশ করা কঠিন হতে পারে। 
মেজাজের সমস্যা বা লক্ষণগুলো বুঝতে না পারা। পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই বিষয়গুলো বুঝতে পারেন না। ফলে চিকিৎসাও নিতে চান না

চিকিৎসা
পারকিনসনসের চিকিৎসা যেমন শরীরের কাঁপুনিসহ অন্যান্য লক্ষণ কমাতে পারে, তেমনি বিষণ্নতার উপশম করতে পারে। বিষণ্নতা যদিও এ রোগে সাধারণ লক্ষণ কিন্তু এটিকে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয় বলে এর চিকিৎসা কখনো কখনো ব্যাহত হয়। শারীরিক অক্ষমতা কমানো এবং জীবনের মান উন্নত করার জন্য এটির চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। 

মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলিং: জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি বা সিবিটি বিষণ্নতা ও উদ্বেগ কমাতে, চিন্তাভাবনা ও আচরণের ধরন চিনতে এবং পরিবর্তন করতে সহায়তা করে।

রুটিনমাফিক ব্যায়াম: হাঁটা, ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে চলা, যোগব্যায়াম, বাগান করা এবং রোগীর পছন্দের বিভিন্ন কাজ হতাশার লক্ষণগুলো কমিয়ে দিতে পারে।

পরামর্শ: ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, আগারগাঁও, ঢাকা

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত