Ajker Patrika

ডিঙি নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ৬০ অভিবাসীর মৃত্যু

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪, ১৪: ৫৯
ডিঙি নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ৬০ অভিবাসীর মৃত্যু

রাবারের ডিঙি নৌকা দিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৬০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নৌকা থেকে জীবিত ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে ইউরোপের একটি মানবাধিকার সংস্থা এসওএস মেডিটেরানি পরিচালিত ওশান ভাইকিং নামের একটি জাহাজ। 

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, জীবিতরা উদ্ধারকারীদের জানায়, উদ্ধারের বেশ কয়েক দিন আগে তাঁরা লিবিয়ার উপকূলের জাওইয়া থেকে যাত্রা করেছিল। যাত্রার তিন দিন পর ডিঙির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় নৌকাটি খাবার ও পানি ছাড়াই সাগরে ভাসতে থাকে। 

মৃতদের মধ্যে নারী ও এক শিশু রয়েছে। সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার কারণে নয়, বরং খাওয়ার পানি ও ক্ষুধার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এসওএস মেডিটেরানি বলছে, গত বুধবার ওশান ভাইকিং দলটি বাইনোকুলারের মাধ্যমে ডিঙিটি দেখতে পায়। ইতালির কোস্ট গার্ডের সহযোগিতায় তারা উদ্ধারের ব্যবস্থা করে। জীবিতরা অনেক দুর্বল অবস্থায় ছিল বলে জানায় উদ্ধারকারীরা। তাদের এখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত শুক্রবার থেকে তারা ওই ডিঙিতে করে সাগরে ভাসছিল বলে জানায় জীবিতরা। 

তাদের মধ্যে দুজনকে অচেতন ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের হেলিকপ্টারে করে সিসিলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ২৩ জন এখনো ওশান ভাইকিং জাহাজে রয়েছেন। এ ছাড়া জাহাজটিতে আরও দুই শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছে, যাদের ভিন্ন দুটি নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

জাহাজটি ইতালির আনকোনা বন্দরের দিকে যাত্রা করছে, যা প্রায় চার দিন দূরে। তবে দলটি নিরাপত্তার জন্য কাছাকাছি বন্দরে নোঙরের অনুরোধ করেছে। 

এসওএস মেডিটেরানির মুখপাত্র বলেন, ‘বেঁচে ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছেন, নৌকার মধ্যে তারা অনেক দুর্দশার মধ্যে ছিলেন এবং প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসছিলেন। দ্রুতই নৌকার খাওয়ার পানি ও খাবার ফুরিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘সাগরে ভেসেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আমার এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়েছে, যার এই যাত্রায় স্ত্রী ও দেড় বছর বয়সী সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি প্রথম দিনই মারা যায় এবং যাত্রার চতুর্থ দিন তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তাঁরা সেনেগালের নাগরিক এবং প্রায় দুই বছর ধরে লিবিয়ায় বসবাস করছিলেন।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স বিবিসিকে জানায়, গত শুক্রবার লিবিয়া উপকূলের কাছে ৫০ জনেরও বেশি আরোহী নিয়ে একটি নৌকা দেখতে পাওয়ার পর তারা সতর্কতা জারি করে। তবে এটি ওশান ভাইকিংয়ের উদ্ধার করা একই রাবারের ডিঙি কি না, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

ফ্রন্টেক্স বলছে, তাদের একটি উড়োজাহাজ নিয়মিত নজরদারির জন্য বের হলে লিবিয়ার রেসকিউ জোনের মধ্যে জাহাজটি দেখতে পায় এবং তখনই লিবিয়ার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেয়। 

গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, এক দশক আগে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সাল ছিল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। এ বছর বিশ্বব্যাপী অভিবাসন রুটে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

জাতিসংঘ বলছ, এর আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত