Ajker Patrika

পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না ইরান: তুলসী গ্যাবার্ড

অনলাইন ডেস্ক
তুলসী গ্যাবার্ড। ছবি: এএফপি
তুলসী গ্যাবার্ড। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (ডিএনআই) পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন বলছে যে, ইরান বর্তমানে সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। তবে তেহরানের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মহলে পরমাণু অস্ত্র তৈরি নিয়ে আলোচনা বেড়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, ‘আইসি (গোয়েন্দা সংস্থা) এখনো মনে করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অনুমোদন দেননি।’

তবে গ্যাবার্ড যোগ করেন, গত কয়েক বছরে দেখা গেছে ইরানের জন পরিসরে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে কয়েক দশকের পুরোনো একটি ট্যাবু ভেঙে পড়েছে। সম্ভবত এটি ইরানের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী গোষ্ঠীর ভেতরে যারা পারমাণবিক অস্ত্রের পক্ষের তাদের উৎসাহিত করছে।

তুলসী বলেন, ‘ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে এবং পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন কোনো রাষ্ট্রের জন্য এটি নজিরবিহীন।’ ডিএনআই পরিচালক আরও যোগ করেন, ইরানের ওপর নতুন করে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার সম্পূর্ণ প্রভাব এখনো কার্যকর হয়নি, তবে তেহরান ‘অবশ্যই’ সেই ‘বার্তা’ শুনেছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইসরায়েলের হাতে হিজবুল্লাহ নেতাদের নিহত হওয়া এবং ইসরায়েলে দুটি বড় ধরনের ব্যর্থ হামলার মতো কৌশলগত ধাক্কা সত্ত্বেও তারা বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ডিএনআই শুনানির পাশাপাশি মার্কিন গোয়েন্দা গোষ্ঠীগুলোর বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ইরান তার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং সম্প্রসারিত পারমাণবিক কর্মসূচি, সেই সঙ্গে আঞ্চলিক রাষ্ট্র এবং মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে এবং শাসনব্যবস্থার টিকিয়ে রাখা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ—বিশেষ করে, ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা সবচেয়ে তাৎক্ষণিক—ইরানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘আইসি (মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্মিলিত জোট) মূল্যায়ন করেছে, স্বল্প মেয়াদে ইরানের সশস্ত্রবাহিনী পুনরুদ্ধার এবং বিশেষ করে ইসরায়েলি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।’

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইরানের সামরিক খাতে বিনিয়োগ তার বিভিন্ন হুমকির মোকাবিলা এবং যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে রক্ষা ও প্রতিরোধ করার প্রচেষ্টার একটি মূল ভিত্তি। ইরান বিশ্বব্যাপী মার্কিন নাগরিকদের সরাসরি হুমকি দেওয়া অব্যাহত রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নিজস্ব অনুগত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য তাদের দশক-ব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তেহরান অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন প্রতিপক্ষ এবং গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দেশটির ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ভোঁতা করতে এবং শাসনব্যবস্থাকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমেরিকার প্রচেষ্টাকে হ্রাস করতে চায়।

এতে বলা হয়েছে, ‘তেহরানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা—মাঝে মাঝে ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগসহ—বিভিন্ন মাত্রার সাফল্য নিয়ে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তবে, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ইরানের ভেতরে নতুন করে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে, যদি না ইরানকে নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে যে, রাশিয়া একটি নতুন স্যাটেলাইট তৈরি করছে যা পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য ‘বিধ্বংসী পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত