অনলাইন ডেস্ক
বিশ্ব যখন রাশিয়ার সাম্প্রতিক ওরেশনিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করছে, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আসন্ন আক্রমণের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করছে। গত ২৮ নভেম্বর পুতিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, রাশিয়া কিয়েভের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্রগুলোতে হামলা করতে পারে কিনা? জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট সোভিয়েত আমলের একটি কৌতুক শুনিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সোভিয়েত আমলে আবহাওয়া পূর্বাভাস নিয়ে একটি কৌতুক প্রচলিত ছিল: আজকের পূর্বাভাস—আজ যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।’
পুতিনের ভাষ্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, রাশিয়া চাইলেই ইউক্রেনের কৌশলগত নীতি নির্ধারণী কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে পারে। তারই প্রমাণ দিতেই যেন, রাশিয়া আজ শনিবার কিয়েভের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ—এর প্রধান কার্যালয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনেছে।
রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ইউক্রেনে অতিসম্প্রতি ব্যবহার করা ওরেশনিক ছাড়াও আরও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—যেমন: কিনঝাল, বুলাভা, ইয়ারস, ইস্কান্দার এবং সারমাত। প্রতিটিরই দেশের কৌশলগত প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং এটি রাশিয়ার সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের প্রযুক্তিগত স্তরকেই উদ্ভাসিত করে।
ওরেশনিক
রুশ সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের কারখানাগুলোতে ওরেশনিক (হ্যাজেল গাছ) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর পর এই ক্ষেপণাস্ত্রটির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। পশ্চিমা বিশ্ব তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা করার অনুমতি ইউক্রেনকে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায়।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ওরেশনিক একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যা মাখ ১০ বা শব্দের গতির চেয়ে ১০ গুণ বেশি পর্যন্ত গতিতে চলতে সক্ষম। আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটিকে পরাস্ত করতে পারবে না। কিছু সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ওরেশনিককে আরএস-২৬ রুবেজের অনুরূপ বলে মনে করেন। ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছয়টি ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং এক মেগাটন ওজনের পারমাণবিক ওয়ারহেডও বহন করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৮ থেকে ১৯ মিনিটের মধ্যে ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
কিনঝাল
রাশিয়া কিনঝাল (ড্যাগার) ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথম ব্যবহার করে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে। তবে ২০১৮ সালের মার্চে কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্র রুশ ক্ষেপণাস্ত্র বহরে যুক্ত করা হয়। এটি মাক ১২ বা শব্দের গতির চেয়ে ১২ গুণ বেশি গতিতে চলতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে মিগ-৩১ এবং এসইউ-৩৪ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে টু-২২ এম ৩ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা হবে। ২০২২ সালে, একটি কিনঝাল মিসাইল কিয়েভে পাঁচটি প্যাট্রিয়ট লঞ্চার ধ্বংস করে। এটি ৫০০ কেজি ওজনের প্রচলিত বা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং এর পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।
বুলাভা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০২৪ সালের ৭ মে আর-৩০ বুলাভা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রুশ বাহিনীতে যুক্ত করার এক আদেশে স্বাক্ষর করেন। প্রাথমিকভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ১৯৯৮ সালে তৈরি করা হয়। তবে পরীক্ষা করা হয় ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে। মূলত সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপের জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তৈরি করা হয়। এটি এই ধরনের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র যা সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পরে তৈরি হয়। রাশিয়ার প্রজেক্ট-৯৫৫ এবং ৯৫৫-এ বোরেই সাবমেরিন এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রধান বাহক। বুলাভার পাল্লা ৯ হাজার ৩০০ কিলোমিটার এবং এটি ৬ থেকে ১০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
স্যাটান
আর-৩৬ এম স্যাটান একটি কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এর দৈর্ঘ্য ৩৩ দশমিক ৬৫ মিটার এবং ওজন ২০৮ টন। পাল্লা ১৬ হাজার কিলোমিটার। এটি দুটি ধাপের তরল জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ১৯৭৩ সালে প্রথম পরীক্ষা করা হয়। তখন থেকেই এটি সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। ১৯৮৮ সালে আর-৩৬ এম ২ ভোভোদা নামে একটি সংস্করণ চালু হয়। আধুনিক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এটি বেশ কার্যকর।
টোপল-এম
আরটি-২ এমপি ২ টোপল-এম একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল। যার দৈর্ঘ্য ২২ দশমিক ৭ মিটার এবং ব্যাস ১ দশমিক ৮৬ মিটার, ওজন ৪৭ দশমিক ১ টন। এর পাল্লা ১১ হাজার কিলোমিটার। এটি তিন-স্তর বিশিষ্ট সলিড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র। যার মূল কাঠামোটি ফাইবারগ্লাসের। এটি প্রথমবার ১৯৯৪ সালের শেষে নিক্ষেপ করা হয়। ২০১২ সালের শেষে রাশিয়ার ৬০টি সাইলোতে এবং ১৮টি মোবাইল মিসাইল সিস্টেমে এই ক্ষেপণাস্ত্র চালু ছিল।
ইয়ারস
আর-২৪ ইয়ারস ক্ষেপণাস্ত্রের দৈর্ঘ্য ২৩ মিটার এবং ব্যাস ২ মিটার, পাল্লা ১১ হাজার কিলোমিটার। প্রথম নিক্ষেপ করা হয় ২০০৭ সালে হয়। টোপল-এম এর তুলনায় ইয়ারসের একাধিক ওয়ারহেড এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অতিক্রমের ব্যবস্থা। এই বৈশিষ্ট্যগুলো ইয়ারসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে কার্যকর করে তোলে।
ইউআর-১০০এন
ইউআর-১০০এন তৃতীয় প্রজন্মের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল। এটি একাধিক স্বাধীনভাবে চলতে সক্ষম রিএন্ট্রি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এর দৈর্ঘ্য ২৪ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ এবং আড়াই মিটার ব্যাসের এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১০৫ দশমিক ৬ টন। এটি ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এটিকে প্রথম পরীক্ষা করা হয় ১৯৭৩ সালের ৯ এপ্রিল বাইকোনুর পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে।
মলোদেৎস
১৫জেডএইচ৬০ মলোদেৎস একটি কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এটি ২২ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ এবং ২ দশমিক ৪ মিটার ব্যাসের এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১০৪ দশমিক ৫ টন এবং এর পাল্লা ১০ হাজার কিলোমিটার। এটি একটি তিন-স্তরের সলিড ফুয়েল আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এটি রেল ও স্থির অবকাঠামো থেকে ব্যবহার করা যায়। এটি ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত আমলে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়।
কেএইচ-১০১—কেএইচ-১০২
এটি নতুন প্রজন্মের কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ৭ দশমিক ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যাস ৭৪২ মিলিমিটার এবং ওজন ২.২-২. ৪ টন। পাল্লা ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার। এটি ৪০০ কেজির দুটি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং দুটিই পৃথক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বুরিয়া
কেএইচ-২২ বুরিয়া ক্রুজ মিসাইল ১৯৬০-এর দশকে প্রথম প্রস্তুত করা হয়। এটি আধুনিক ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। এটি একটি দূর-পাল্লার সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। যা টু-২২ এবং টু-৯৫ বোম্বার থেকে নিক্ষেপ করা যায়। এর পাল্লা ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং গতি মাক ৫ বা শব্দের গতির চেয়ে ৫ গুণ বেশি। এটি শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—যেমন মার্কিন প্যাট্রিয়ট সিস্টেমকে ফাঁকি দিতে পারে।
ইস্কান্দার
রাশিয়া ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের সময় ইউক্রেনে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে। ২০০৭ সালে প্রথম এটিকে কমিশন করা হয়। ইস্কান্দার আকাশ প্রতিরক্ষা, কমান্ড পোস্ট এবং অবকাঠামোগত সুবিধা ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ৪৮০ কেজি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। পাল্লা ৫০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার।
জিরকন
৩ এম ২২ জিরকন একটি হাইপারসনিক অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র। এর গতি মাক ৯ এবং পাল্লা ১ হাজার কিলোমিটারের বেশি। এটি ফ্রিগেট ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য জাহাজ ও সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানা। এর পাল্লা ৪৫০-১০০০ কিলোমিটার, দৈর্ঘ্য ৮-৯.৫ মিটার এবং ৩০০-৪০০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
সারমাত
আরএস-২৮ সারমাত একটি পঞ্চম প্রজন্মের কৌশলগত মিসাইল সিস্টেম। এটি বহু-স্তরের তরল জ্বালানির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এটি বোম্বার্ডমেন্ট প্রযুক্তি এবং হাইপারসনিক আঁভাগার্দ ওয়ারহেডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বাইপাস করতে সক্ষম। ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল এর প্রথম পরীক্ষা করা হয় এবং একই বছর এর ধারাবাহিক উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৩ সালে এই কমপ্লেক্সটি যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়। কিন্তু ব্যবহার করা হয়নি।
ক্যালিব্র
ক্যালিব্র বা ক্যালিবার একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এই সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রকল্পগুলো ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে তৈরি। ২০১৯ সাল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার নৌবাহিনী ব্যবহার শুরু করেছে। ভূমি থেকে নিক্ষেপ করা যায়, এই ক্ষেপণাস্ত্রের এমন একটি সংস্করণ উন্নয়নের কাজ চলছে। এর সর্বোচ্চ পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটার।
তথ্যসূত্র: প্রাভদা
বিশ্ব যখন রাশিয়ার সাম্প্রতিক ওরেশনিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করছে, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আসন্ন আক্রমণের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করছে। গত ২৮ নভেম্বর পুতিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, রাশিয়া কিয়েভের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্রগুলোতে হামলা করতে পারে কিনা? জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট সোভিয়েত আমলের একটি কৌতুক শুনিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সোভিয়েত আমলে আবহাওয়া পূর্বাভাস নিয়ে একটি কৌতুক প্রচলিত ছিল: আজকের পূর্বাভাস—আজ যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।’
পুতিনের ভাষ্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, রাশিয়া চাইলেই ইউক্রেনের কৌশলগত নীতি নির্ধারণী কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে পারে। তারই প্রমাণ দিতেই যেন, রাশিয়া আজ শনিবার কিয়েভের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ—এর প্রধান কার্যালয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনেছে।
রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ইউক্রেনে অতিসম্প্রতি ব্যবহার করা ওরেশনিক ছাড়াও আরও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—যেমন: কিনঝাল, বুলাভা, ইয়ারস, ইস্কান্দার এবং সারমাত। প্রতিটিরই দেশের কৌশলগত প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং এটি রাশিয়ার সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের প্রযুক্তিগত স্তরকেই উদ্ভাসিত করে।
ওরেশনিক
রুশ সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের কারখানাগুলোতে ওরেশনিক (হ্যাজেল গাছ) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর পর এই ক্ষেপণাস্ত্রটির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। পশ্চিমা বিশ্ব তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা করার অনুমতি ইউক্রেনকে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায়।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ওরেশনিক একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যা মাখ ১০ বা শব্দের গতির চেয়ে ১০ গুণ বেশি পর্যন্ত গতিতে চলতে সক্ষম। আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটিকে পরাস্ত করতে পারবে না। কিছু সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ওরেশনিককে আরএস-২৬ রুবেজের অনুরূপ বলে মনে করেন। ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছয়টি ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং এক মেগাটন ওজনের পারমাণবিক ওয়ারহেডও বহন করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৮ থেকে ১৯ মিনিটের মধ্যে ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
কিনঝাল
রাশিয়া কিনঝাল (ড্যাগার) ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথম ব্যবহার করে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে। তবে ২০১৮ সালের মার্চে কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্র রুশ ক্ষেপণাস্ত্র বহরে যুক্ত করা হয়। এটি মাক ১২ বা শব্দের গতির চেয়ে ১২ গুণ বেশি গতিতে চলতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে মিগ-৩১ এবং এসইউ-৩৪ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে টু-২২ এম ৩ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা হবে। ২০২২ সালে, একটি কিনঝাল মিসাইল কিয়েভে পাঁচটি প্যাট্রিয়ট লঞ্চার ধ্বংস করে। এটি ৫০০ কেজি ওজনের প্রচলিত বা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং এর পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।
বুলাভা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০২৪ সালের ৭ মে আর-৩০ বুলাভা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রুশ বাহিনীতে যুক্ত করার এক আদেশে স্বাক্ষর করেন। প্রাথমিকভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ১৯৯৮ সালে তৈরি করা হয়। তবে পরীক্ষা করা হয় ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে। মূলত সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপের জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তৈরি করা হয়। এটি এই ধরনের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র যা সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পরে তৈরি হয়। রাশিয়ার প্রজেক্ট-৯৫৫ এবং ৯৫৫-এ বোরেই সাবমেরিন এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রধান বাহক। বুলাভার পাল্লা ৯ হাজার ৩০০ কিলোমিটার এবং এটি ৬ থেকে ১০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
স্যাটান
আর-৩৬ এম স্যাটান একটি কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এর দৈর্ঘ্য ৩৩ দশমিক ৬৫ মিটার এবং ওজন ২০৮ টন। পাল্লা ১৬ হাজার কিলোমিটার। এটি দুটি ধাপের তরল জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ১৯৭৩ সালে প্রথম পরীক্ষা করা হয়। তখন থেকেই এটি সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। ১৯৮৮ সালে আর-৩৬ এম ২ ভোভোদা নামে একটি সংস্করণ চালু হয়। আধুনিক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এটি বেশ কার্যকর।
টোপল-এম
আরটি-২ এমপি ২ টোপল-এম একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল। যার দৈর্ঘ্য ২২ দশমিক ৭ মিটার এবং ব্যাস ১ দশমিক ৮৬ মিটার, ওজন ৪৭ দশমিক ১ টন। এর পাল্লা ১১ হাজার কিলোমিটার। এটি তিন-স্তর বিশিষ্ট সলিড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র। যার মূল কাঠামোটি ফাইবারগ্লাসের। এটি প্রথমবার ১৯৯৪ সালের শেষে নিক্ষেপ করা হয়। ২০১২ সালের শেষে রাশিয়ার ৬০টি সাইলোতে এবং ১৮টি মোবাইল মিসাইল সিস্টেমে এই ক্ষেপণাস্ত্র চালু ছিল।
ইয়ারস
আর-২৪ ইয়ারস ক্ষেপণাস্ত্রের দৈর্ঘ্য ২৩ মিটার এবং ব্যাস ২ মিটার, পাল্লা ১১ হাজার কিলোমিটার। প্রথম নিক্ষেপ করা হয় ২০০৭ সালে হয়। টোপল-এম এর তুলনায় ইয়ারসের একাধিক ওয়ারহেড এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অতিক্রমের ব্যবস্থা। এই বৈশিষ্ট্যগুলো ইয়ারসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে কার্যকর করে তোলে।
ইউআর-১০০এন
ইউআর-১০০এন তৃতীয় প্রজন্মের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল। এটি একাধিক স্বাধীনভাবে চলতে সক্ষম রিএন্ট্রি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এর দৈর্ঘ্য ২৪ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ এবং আড়াই মিটার ব্যাসের এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১০৫ দশমিক ৬ টন। এটি ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এটিকে প্রথম পরীক্ষা করা হয় ১৯৭৩ সালের ৯ এপ্রিল বাইকোনুর পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে।
মলোদেৎস
১৫জেডএইচ৬০ মলোদেৎস একটি কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এটি ২২ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ এবং ২ দশমিক ৪ মিটার ব্যাসের এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১০৪ দশমিক ৫ টন এবং এর পাল্লা ১০ হাজার কিলোমিটার। এটি একটি তিন-স্তরের সলিড ফুয়েল আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এটি রেল ও স্থির অবকাঠামো থেকে ব্যবহার করা যায়। এটি ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত আমলে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়।
কেএইচ-১০১—কেএইচ-১০২
এটি নতুন প্রজন্মের কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ৭ দশমিক ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যাস ৭৪২ মিলিমিটার এবং ওজন ২.২-২. ৪ টন। পাল্লা ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার। এটি ৪০০ কেজির দুটি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং দুটিই পৃথক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বুরিয়া
কেএইচ-২২ বুরিয়া ক্রুজ মিসাইল ১৯৬০-এর দশকে প্রথম প্রস্তুত করা হয়। এটি আধুনিক ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। এটি একটি দূর-পাল্লার সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। যা টু-২২ এবং টু-৯৫ বোম্বার থেকে নিক্ষেপ করা যায়। এর পাল্লা ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং গতি মাক ৫ বা শব্দের গতির চেয়ে ৫ গুণ বেশি। এটি শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—যেমন মার্কিন প্যাট্রিয়ট সিস্টেমকে ফাঁকি দিতে পারে।
ইস্কান্দার
রাশিয়া ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের সময় ইউক্রেনে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে। ২০০৭ সালে প্রথম এটিকে কমিশন করা হয়। ইস্কান্দার আকাশ প্রতিরক্ষা, কমান্ড পোস্ট এবং অবকাঠামোগত সুবিধা ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ৪৮০ কেজি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। পাল্লা ৫০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার।
জিরকন
৩ এম ২২ জিরকন একটি হাইপারসনিক অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র। এর গতি মাক ৯ এবং পাল্লা ১ হাজার কিলোমিটারের বেশি। এটি ফ্রিগেট ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য জাহাজ ও সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানা। এর পাল্লা ৪৫০-১০০০ কিলোমিটার, দৈর্ঘ্য ৮-৯.৫ মিটার এবং ৩০০-৪০০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
সারমাত
আরএস-২৮ সারমাত একটি পঞ্চম প্রজন্মের কৌশলগত মিসাইল সিস্টেম। এটি বহু-স্তরের তরল জ্বালানির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এটি বোম্বার্ডমেন্ট প্রযুক্তি এবং হাইপারসনিক আঁভাগার্দ ওয়ারহেডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বাইপাস করতে সক্ষম। ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল এর প্রথম পরীক্ষা করা হয় এবং একই বছর এর ধারাবাহিক উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৩ সালে এই কমপ্লেক্সটি যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়। কিন্তু ব্যবহার করা হয়নি।
ক্যালিব্র
ক্যালিব্র বা ক্যালিবার একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এই সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রকল্পগুলো ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে তৈরি। ২০১৯ সাল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার নৌবাহিনী ব্যবহার শুরু করেছে। ভূমি থেকে নিক্ষেপ করা যায়, এই ক্ষেপণাস্ত্রের এমন একটি সংস্করণ উন্নয়নের কাজ চলছে। এর সর্বোচ্চ পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটার।
তথ্যসূত্র: প্রাভদা
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তারা নতুন ই-ভিসা সিস্টেমে যাচ্ছে। ৯৪টি রয়্যাল থাই দূতাবাস ও কনস্যুলেট জেনারেল অফিস একসঙ্গে এই সেবা দেবে।
১০ ঘণ্টা আগেমার্কিন কংগ্রেস শুক্রবার মধ্যরাতে শাটডাউন ঠেকাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করেছে। দীর্ঘ আলোচনার পর পাস হওয়া এই বিলটি ফেডারেল সংস্থাগুলোর অর্থায়ন আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত নিশ্চিত করেছে। মধ্যরাতের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সিনেটররা প্রথাগত নিয়ম এড়িয়ে দ্রুত ভোট দেন।
১২ ঘণ্টা আগে‘অবৈধ বাংলাদেশি’দের জন্য ভারতে ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দিশালা তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য মুম্বাইয়ে ভালো ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করা হবে।
১৩ ঘণ্টা আগেভারতীয় পুলিশের হাতে আটক আনসার-আল-ইসলাম বাংলাদেশের আট সন্দেহভাজন সদস্য ‘চিকেন নেক’ বা সিলিগুরি করিডরে হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সের সংযোগকারী একমাত্র অংশ এই সিলিগুড়ি করিডর।
১৩ ঘণ্টা আগে